-1747470872.png)
হজ শুধু একটি ইবাদত নয়, এটি ইসলাম ধর্মের পঞ্চম স্তম্ভ এবং মুসলমানদের জীবনের এক তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায়। এই পবিত্র সফর বিশ্বজুড়ে মুসলিম উম্মাহকে এক কাতারে শামিল করে, যেখানে আল্লাহর প্রতি পরম আনুগত্য ও দাসত্বের সুর প্রতিধ্বনিত হয়। হজের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, এর গভীর তাৎপর্য এবং মানবজীবনে এর প্রভাব অনন্য। কোরআন ও হাদিসের আলোকে আমরা হজের উৎপত্তি ও মাহাত্ম্য অনুধাবন করব। ইনশাআল্লাহ।
হজের ইতিহাস ও ইসলামের পূর্ণতা
হজের ইতিহাস সুপ্রাচীন, যা ইসলামের আবির্ভাবের বহু আগে থেকেই এই অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় প্রথা হিসেবে প্রচলিত ছিল। প্রাক-ইসলামিক যুগে আরবের বিভিন্ন গোত্র পবিত্র কাবাঘরের প্রতি অগাধ ভক্তি প্রদর্শন করত। যদিও সেই সময় শিরক ও কুসংস্কারে পরিপূর্ণ ছিল তাদের আচার-অনুষ্ঠান। কালের বিবর্তনে হজের মূলনীতি থেকে সরে গিয়ে নানাবিধ কুপ্রথা সেখানে স্থান করে নিয়েছিল।
১. জাহেলিয়া যুগ: ইসলাম আগমনের আগে কাবাঘর বিভিন্ন আরব জাতির মিলনকেন্দ্র হলেও, সেখানে পৌত্তলিকতা ও নানা অপকর্ম বিস্তার লাভ করেছিল। অশ্লীলতা, পাপাচার ও নৈতিক অবক্ষয় ছিল সেই সময়ের হজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ইসলামের আগে হজের অনেক নিয়ম পরিবর্তিত হয়ে বিকৃত রূপ ধারণ করেছিল। যা মহান আল্লাহতায়ালার নির্দেশে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ বিধিবিধানের মাধ্যমে সংশোধিত হয়।
২. ইসলামের আবির্ভাব (সপ্তম শতাব্দী): ইসলামের আগমন হজের বিধানকে সুস্পষ্টভাবে কোরআন ও হাদিসের আলোকে প্রতিষ্ঠা করে। হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা মূলত আল্লাহর নির্দেশে হজরত ইব্রাহীম (আ.) ও তার ছেলে হজরত ইসমাইল (আ.) কর্তৃক শুরু হয়েছিল। যখন ইব্রাহীম (আ.) আল্লাহর আদেশে কাবাঘরের পুনর্নির্মাণ করেন, তখনই আল্লাহ তাঁকে হজের বিধান দান করেন।
কোরআনে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে ওই ঘরের হজ করা তার জন্য আবশ্যক।’ (সুরা ইমরান, ৯৭) এই আয়াতের মাধ্যমে ইসলামিক যুগে হজের ফরজ হওয়া স্পষ্ট হয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় হিজরত করার পর হজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য আরও বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। যা ইসলামের পঞ্চস্তম্ভ হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়।
লেখক: আলেম ও সাংবাদিক