
কোরবানি আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক মহান ইবাদত। এই ইবাদত পালনের ক্ষেত্রে শরিয়তের বিধি-বিধান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি। কোরবানির পশু জবাই করার পর জবাইকারীকে পারিশ্রমিক দেওয়া-নেওয়া প্রসঙ্গে অনেকেই দ্বিধায় ভোগেন। এ বিষয়ে ইসলামের বিধান অত্যন্ত পরিষ্কার।
ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী, কোরবানির পশু জবাইকারীকে পারিশ্রমিক দেওয়া জায়েজ। অর্থাৎ, আপনি আপনার কোরবানির পশু জবাই করার জন্য কাউকে নিযুক্ত করলে তাকে তার শ্রমের বিনিময়ে অর্থ বা অন্য কোনো হালাল বস্তু পারিশ্রমিক হিসেবে দিতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা নেই। এটি শ্রমের মূল্যায়নের অন্তর্ভুক্ত।
তবে, একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখানে বিশেষভাবে লক্ষণীয়। কোরবানির পশুর কোনো অংশ, যেমন - গোশত, চামড়া, মাথা ইত্যাদি পারিশ্রমিক হিসেবে জবাইকারীকে দেওয়া যাবে না। এর কারণ হলো, কোরবানির পশু সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত। এর গোশত, চামড়া বা অন্য কোনো অংশ বিক্রি করা বা পারিশ্রমিক হিসেবে প্রদান করা জায়েজ নয়। যদি এমনটা করা হয়, তাহলে কোরবানির উদ্দেশ্য ব্যাহত হতে পারে। ফিকাহশাস্ত্রের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ 'কিফায়াতুল মুফতী' (৮/২৬৫) এবং 'খুলাসাতুল ফাতাওয়া' (৪/৩১৯) তে এই মাসআলাটি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
অতএব, কোরবানির পশু জবাইকারীকে তার কাজের বিনিময়ে পারিশ্রমিক দিতে চাইলে নগদ অর্থ প্রদান করা উচিত। কোরবানির পশুর কোনো অংশ পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য। এই বিধান মেনে চললে আমাদের কোরবানি আল্লাহর দরবারে মাকবুল হবে ইনশাআল্লাহ।
লেখক: আলেম ও সাংবাদিক