
ইসলামি বিধান অনুসারে, কোরবানি কোনো পরিবারের ওপর ওয়াজিব হয় না, বরং এটি ব্যক্তির ওপর ওয়াজিব হয়। এর অর্থ হলো, পরিবারের প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক সদস্য, যার নেসাব পরিমাণ সম্পদ রয়েছে, তার ওপর আলাদাভাবে কোরবানি ওয়াজিব হবে। এখানে যৌথ পরিবারে বসবাস বা আলাদা পরিবারে বসবাস কোনো পার্থক্য তৈরি করে না।
আমাদের সমাজে প্রায়ই দেখা যায়, যৌথ পরিবারে শুধু পরিবারের কর্তা কোরবানি দিয়ে থাকেন এবং অন্য উপার্জনক্ষম সদস্যরা মনে করেন যে তাদের কোরবানি আদায় হয়ে গেছে। এটি একটি প্রচলিত ভুল। যেমনটি ফিকহের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ আলমগিরী (৫/২৯২) তে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, যৌথ পরিবার হোক বা ভিন্ন পরিবার হোক, প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেই তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব।
কোরবানির নেসাব হলো সাড়ে সাত তোলা সোনা অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপা অথবা এর সমমূল্যের সম্পদ। যেকোনো ব্যক্তি, পুরুষ বা নারী, যার কাছে কোরবানি ঈদের দিনগুলোতে এই পরিমাণ সম্পদ (নগদ টাকা, ব্যবসায়িক পণ্য, সোনা-রুপা ইত্যাদি) অতিরিক্ত হিসেবে থাকবে, তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।
অতএব, যৌথ পরিবারে যদি একাধিক উপার্জনক্ষম সদস্য থাকেন এবং তাদের প্রত্যেকের কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে, তাহলে প্রত্যেককে আলাদাভাবে কোরবানি দিতে হবে। একজনের কোরবানি দ্বারা অন্যজনের ওয়াজিব আদায় হবে না। এটি কেবল আল্লাহতায়ালার নৈকট্য লাভের একটি ব্যক্তিগত ইবাদত।
এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি, যাতে কোরবানির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত সঠিকভাবে পালিত হয়।
লেখক: আলেম ও সাংবাদিক