ঢাকা ২ শ্রাবণ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

তাকবিরে তাশরিক কি, কখন ও কীভাবে পড়তে হয়?

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৫, ১২:০০ পিএম
তাকবিরে তাশরিক কি, কখন ও কীভাবে পড়তে হয়?
তাসবিহ আদায়রত মুসল্লির ছবি। সংগৃহীত

জিলহজ মাস মুসলিম উম্মাহর জন্য এক বিশেষ মহিমা ও ইবাদতের মাস। এই মাসে আল্লাহর মহিমা ঘোষণার জন্য কোরআন ও হাদিসে এক বিশেষ জিকিরের কথা বলা হয়েছে, যা শরিয়তের পরিভাষায় তাকবিরে তাশরিক নামে পরিচিত। এই তাকবিরের গুরুত্ব অপরিসীম এবং এর বিধানগুলো সঠিকভাবে জানা প্রতিটি মুসলিমের জন্য জরুরি।

তাকবিরে তাশরিক কী?
তাকবিরে তাশরিক হলো: আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর ওয়া লিল্লাহিল হামদ।
বাংলা অর্থ হলো: আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো ইলাহ নেই। আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; সব প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য।

তাকবিরে তাশরিকের গুরুত্ব ও ফজিলত
পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘যেন তারা নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে।’ (সুরা হজ, ২৮)। বিখ্যাত সাহাবি রইসুল মুফাসসিরিন হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, এখানে নির্দিষ্ট দিন বলতে আইয়ামে তাশরিক (জিলহজের ৯ থেকে ১৩ তারিখ) এবং আল্লাহর স্মরণ বলতে তাকবিরে তাশরিক বোঝানো হয়েছে। (সহিহ বুখারি)

রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকবিরে তাশরিকের ফজিলত সম্পর্কে বলেন, ‘(আইয়ামে তাশরিকের) এই দিনগুলোতে তাকবিরে তাশরিকের আমলের চেয়ে অন্য কোনো দিনের আমল উত্তম নয়।’ সাহাবিরা জানতে চাইলেন, আল্লাহর পথে লড়াইও কি (এর চেয়ে উত্তম) নয়? রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহর পথে লড়াইও নয়। তবে সে ব্যক্তির কথা ভিন্ন, যে নিজের জানমালের ঝুঁকি নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় লড়াইয়ে যায় এবং কিছুই নিয়ে ফিরে আসে না। (সহিহ বুখারি, ৯৬৯)। এই হাদিস তাকবিরে তাশরিকের অপার ফজিলতের ইঙ্গিত বহন করে।

তাকবিরে তাশরিক কখন পড়বেন
তাকবিরে তাশরিকের সময়কাল ৯ জিলহজ ফজর থেকে শুরু হয়ে ১৩ জিলহজ আসর পর্যন্ত মোট ২৩ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পর এটি পড়া আবশ্যক। জামাতে নামাজ আদায় করা হোক বা একাকী, ওয়াক্তের মধ্যে পড়া হোক বা কাজা, নামাজি ব্যক্তি মুকিম (স্থায়ী বাসিন্দা) হোক বা মুসাফির (পর্যটক), শহরের বাসিন্দা হোক বা গ্রামের, নারী হোক বা পুরুষ সবার ওপর ফরজ নামাজের পর একবার তাকবিরে তাশরিক বলা ওয়াজিব। (দুররে মুখতার, ২/১৮০)

তাকবিরে তাশরিক কীভাবে পড়বেন
১. পড়ার সঠিক নিয়ম: প্রতি ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর পরপরই, কোনো কথাবার্তা বা নামাজ পরিপন্থী কোনো কাজ করার আগেই তাকবিরে তাশরিক পড়তে হবে। (রদ্দুল মুহতার, ২/১৮০)

২.উচ্চস্বরে ও নিচুস্বরে: পুরুষরা উচ্চস্বরে একবার পড়বেন, আর নারীরা নিচুস্বরে পড়বেন, যাতে শুধু তারা নিজে শুনতে পান। (ফাতাওয়া শামি: ২/১৭৮)

৩. ভুলে গেলে: যদি কেউ নামাজের পর তাকবির বলতে ভুলে যান। পুরুষেরা মসজিদ থেকে বের হওয়ার আগে এবং নারীরা নামাজের স্থান ত্যাগ করার আগে তা মনে পড়লে তাকবির আদায় করে নিতে হবে। তবে যদি মসজিদ বা নামাজের স্থান থেকে বের হয়ে যান, তাহলে এই ওয়াজিব ছুটে যাবে। আর এই ওয়াজিবের কোনো কাজা নেই এবং ওয়াজিব ছেড়ে দেওয়ার কারণে ওই ব্যক্তি গুনাহগার হবেন। (মাবসুত সারাখসি, ২/৪৫)

৪. কাজা নামাজে: ৯ তারিখ থেকে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত কোনো নামাজ কাজা হয়ে গেলে এবং সে কাজা নামাজ যদি এই দিনগুলোর মধ্যেই আদায় করা হয়, তাহলে সেই কাজা নামাজের পরও তাকবিরে তাশরিক পড়তে হবে। (ফাতাওয়া শামি: ২/১৭৮)।

৫. ছুটে যাওয়া রাকাত: যদি কোনো ব্যক্তির জামায়াতে নামাজ আদায়কালে প্রথম দিকে এক বা একাধিক রাকাত ছুটে যায়, তাহলে ইমাম সাহেব সালাম ফেরানোর পর ওই ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নিজের নামাজ আদায় করার পর তাকবিরে তাশরিক বলবেন। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫২)।

৬. ইমামের ভুলে গেলে: জামাতে নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে ইমাম সাহেব তাকবির বলতে ভুলে গেলে ইমামের জন্য অপেক্ষা না করে মুক্তাদিদের তাকবির বলা উচিত। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৫২)।

৭. কতবার পড়বেন: তাকবিরে তাশরিক একবার পড়া ওয়াজিব। তিনবার বলার কোনো ভিত্তি নেই। সুন্নত মনে করে তিনবার পড়লে মাকরুহ হবে। (ফাতাওয়া নাওয়াজেল: ১৪/৫৯৪)

তাকবিরে তাশরিক জিলহজ মাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল। এর সঠিক নিয়ম জেনে ও বুঝে তা আদায় করার মাধ্যমে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায় এবং অশেষ সওয়াবের অধিকারী হওয়া যায়। আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে এই গুরুত্ব আমল সঠিকভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন । আমিন।

 

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক

৩, ৭, ১৪, ২১ টাকা দেনমোহর দিয়ে বিবাহ করলে বৈধ হবে কী?

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৭:৩০ পিএম
৩, ৭, ১৪, ২১ টাকা দেনমোহর দিয়ে বিবাহ করলে বৈধ হবে কী?
বিবাহের ছবি । সংগৃহীত

প্রশ্ন: বর্তমানে আমাদের সমাজে দেখা যায়, অনেক বিয়েতে দেনমোহর হিসেবে নামমাত্র অর্থ ধার্য করা হয় যেমন: ৭, ১৪, ২১ টাকা, এমনকি ৩ টাকা। অথচ হাদিসে সর্বনিম্ন দেনমোহরের পরিমাণ ১০ দিরহামের কথা বলা হয়েছে। আমার প্রশ্ন হলো, ১০ দিরহামের সমপরিমাণ অর্থ বাংলাদেশের মুদ্রায় কত এবং এর চেয়ে কম দেনমোহর ধার্য করলে বিয়ে সহিহ হবে কি না? যদি সহীহ হয়, তবে এর বিধান কী?


উত্তর: দেনমোহর হলো বিয়ের একটি অপরিহার্য শর্ত, যা স্ত্রীর প্রতি স্বাদমীর একটি আর্থিক সম্মাননা। ইসলামে এর একটি সর্বনিম্ন পরিমাণ নির্ধারণ করা আছে, যাতে নারীর মর্যাদা অক্ষুণ্ণ থাকে। হাদিস অনুযায়ী, দেনমোহরের সর্বনিম্ন পরিমাণ হলো দশ দিরহাম।

১০ দিরহামের মূল্যমান
ইসলামি ফিকাহ অনুযায়ী, ১০ দিরহাম রূপার মূল্যের সমতুল্য। দেশীয় হিসাব অনুযায়ী, এর পরিমাণ হলো দুই ভরি বা দুই তোলা এবং দশ আনা রূপা। বর্তমানে প্রতি ভরি রূপার বাজারমূল্য প্রায় ১,৫০০ থেকে ২,০০০ টাকা বা এর কাছাকাছি হতে পারে। সেই হিসেবে, দুই ভরি দশ আনা রূপার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ টাকার মতো। এই মূল্য বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তনশীল হতে পারে, তাই সঠিক হিসাবের জন্য রূপার বর্তমান বাজারমূল্য জেনে নেওয়া উত্তম।


দেনমোহর কম হলে বিয়ের বিধান
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে, যদি কেউ ১০ দিরহামের চেয়ে কম দেনমোহর ধার্য করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, তবে কি সেই বিয়ে সহিহ হবে? ফিকাহ শাস্ত্রের আলোকে এর উত্তর হলো  হ্যাঁ, বিয়ে সহিহ হয়ে যাবে।দেনমোহরের সর্বনিম্ন পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে স্ত্রীর অধিকার নিশ্চিত করার জন্য। যদি স্বামী-স্ত্রী উভয়ই ১০ দিরহামের কম দেনমোহরে সম্মত হন, তবুও বিয়েটি বৈধ বলে গণ্য হবে। তবে এক্ষেত্রে স্বামীর ওপর শরীয়তসম্মতভাবে সর্বনিম্ন পরিমাণ, অর্থাৎ ১০ দিরহামের সমমূল্য দেনমোহর হিসেবে স্ত্রীকে পরিশোধ করা আবশ্যক।

উদাহরণস্বরূপ, যদি দেনমোহর ২১ টাকা ধার্য করা হয়, তবে এই বিয়ে শুদ্ধ। কিন্তু স্বামীকে তার স্ত্রীকে ১০ দিরহামের সমপরিমাণ অর্থ, অর্থাৎ দুই ভরি দশ আনা রূপার মূল্যের টাকা দেনমোহর হিসেবে পরিশোধ করতে হবে। এই বিধানটি নারীর অধিকার রক্ষার জন্য এবং দেনমোহরের উদ্দেশ্য পূরণ নিশ্চিত করার জন্য দেওয়া হয়েছে।

[তথ্যসূত্র: ফাতাওয়া হিন্দিয়া (১/৩০৩), ফাতাওয়া তাতারখানিয়া (১/৩৭৫), আলবাহরুর রায়েক (৩/১৪৩) এবং আদ্দুররুল মুখতার (৩/১০২)]

পকেটে নাপাকির শিশি নিয়ে নামাজ পড়লে কি নামাজ হবে?

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৩:০০ পিএম
পকেটে নাপাকির শিশি নিয়ে নামাজ পড়লে কি নামাজ হবে?
ইউরিন টেস্টের ছবি। সংগৃহীত

প্রশ্ন: কিছুদিন আগে আমি ইউরিন টেস্টের জন্য নাপাকিভর্তি একটি শিশি ভুল করে পকেটে রেখেই যোহরের নামাজ পড়ে ফেলি। আমার এই নামাজ কি সহিহ হয়েছে?


উত্তর: আপনার এই নামাজটি সহিহ হয়নি, এবং আপনাকে অবশ্যই তা আবার পড়ে নিতে হবে। শরিয়তের বিধান অনুযায়ী, নামাজের সময় শরীর, কাপড় এবং নামাজের স্থান পবিত্র থাকা আবশ্যক। যদি কোনো ব্যক্তি তার সাথে কোনো নাপাক বস্তু বহন করে, তাহলে নামাজ সহিহ হয় না, যদিও সেই নাপাকি কোনো শিশি বা কৌটার ভেতরে আবদ্ধ থাকে। পেশাবের শিশিটি আপনার পকেটে থাকার কারণে আপনার কাপড়ে নাপাকি বহন করা হয়েছে বলে গণ্য হবে, যা নামাজের জন্য একটি গুরুতর ত্রুটি।

[তথ্যসূত্র: আলফাতাওয়া মিন আকাবীলিল মাশায়িখ (পৃ. ৯৪), খুলাসাতুল ফাতাওয়া (১/৭৭), খিযানাতুল আকমাল (১/১৯৬), আততাজনীস ওয়াল মাজিদ (১/২৫৯), হালবাতুল মুজাল্লী (১/৫৬০), এবং রদ্দুল মুহতার (১/৪০৩)]

ও দিয়ে মেয়ে শিশুর শ্রুতিমধুর নামের তালিকা—পর্ব ১

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩০ এএম
ও দিয়ে মেয়ে শিশুর শ্রুতিমধুর নামের তালিকা—পর্ব ১
মেয়ে শিশুর ছবি। সংগৃহীত

সন্তানের জন্য একটি সুন্দর, অর্থবহ এবং শ্রুতিমধুর নাম নির্বাচন করা প্রতিটি বাবা-মায়েরই একান্ত আকাঙ্ক্ষা। নামের মাধ্যমেই শিশুর ব্যক্তিত্বের প্রথম বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ইসলামিক সংস্কৃতিতে ও অক্ষর দিয়ে শুরু হওয়া অসংখ্য চমৎকার নাম রয়েছে, তা যেমন অর্থবহ, তেমনি উচ্চারণেও সুমধুর। এই নামগুলো যেমন ঐতিহ্য বহন করে, তেমনি আধুনিক রুচির সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।

আমরা এখানে এমন কিছু নির্বাচিত নাম উপস্থাপন করছি, যা আপনার ছোট্ট রাজকন্যার জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যতের ইঙ্গিত বহন করবে। প্রতিটি নামের সঙ্গে তার অর্থও দেওয়া হয়েছে, যাতে নামটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে আপনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ হয়।

নাম

অর্থ

ওয়াতফা

ঘন ভ্রুবিশিষ্ট

ওয়াদহা

আলো

ওয়াদিদা

প্রেমিকা

ওয়াদিয়া

আমানতকারিণী, ভদ্রা

ওয়ানিয়া

মুক্তা

ওয়াফা

পূরণ, পূর্ণকারী

ওয়াফিকা

সঙ্গিনী, বান্ধবী

ওয়াফিদা

আগমনকারিণী

ওয়াফিয়া

বিশ্বস্ত

ওয়াফিরা

সমৃদ্ধা, পর্যাপ্ত

ওয়াযিয়া

নিয়ন্ত্রণকারিণী

ওয়ারদা

গোলাপ

ওয়ারদিয়া

গোলাপি

ওয়ারিফা

সবুজ, ছায়াময়

ওয়ালিয়া

দায়িত্বশীলা

ওয়াসফা

অনুগত দাসী, গুণের অধিকারিণী

ওয়াসিকা

আস্থাভাজন

ওয়াসিফা

প্রশংসাকারিণী, সহচরী

ওয়াসিমা

আকর্ষণীয় চেহারার অধিকারিণী

ওয়াসিলা

আল্লাহর প্রতি আকৃষ্টা, আগত

ওয়াহিদা

একা, বিচ্ছিন্ন

 

পূর্বের আদায়কৃত নামাজের কাজা আদায় করা যাবে কী?

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ০৭:৩০ পিএম
আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম
পূর্বের আদায়কৃত নামাজের কাজা আদায় করা যাবে কী?
সেজদারত মুমিনের ছবি । সংগৃহীত

প্রশ্ন: কোনো ব্যক্তির জিম্মায় কাজা নামাজ নেই। কিন্তু সে পূর্বে যে নামাজ পড়েছে তাতে কখনো কখনো বিভিন্ন ভুলভ্রান্তি (যেমন-অশুদ্ধ তিলাওয়াত, ঠিকমত রোকন আদায় না করা ইত্যাদি) হয়েছে। এখন কি তাকে সেসব নামাজের কাজা আদায় করতে হবে? 

 

উত্তর: আদায়কৃত নামাজের কাজা তখনই পড়তে হয় যখন নামাজ একেবারে নষ্ট হয়ে গিয়ে থাকে কিংবা কোনো ওয়াজিব ছুটে যাওয়ার কারণে তা অসম্পূর্ণ হয়ে যায়। প্রশ্নে বর্ণিত বিগত নামাজের কাজা পড়ার যে কারণ উল্লেখ করা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। যদি এমন অশুদ্ধ তিলাওয়াত করে থাকেন যার কারণে নামাজ ফাসেদ হয়ে যায় তাহলে তার কাজা আদায় করতে হবে। অন্যথায় শুধু সন্দেহের উপর ভিত্তি করে কাজা পড়া যাবে না।

নাপাক স্ট্যান্ড কি শুধু শুকিয়ে গেলে পাক হয়ে যায়?

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৫, ০৩:০০ পিএম
নাপাক স্ট্যান্ড কি শুধু শুকিয়ে গেলে পাক হয়ে যায়?
কাপড় শুকানোর ছবি। সংগৃহীত

প্রশ্ন: আমি মাঝে মাঝেই বাচ্চার পেশাবে ভেজা কাপড় বা কাঁথা বাথরুমের স্ট্যান্ডে ঝুলিয়ে রাখি, এতে স্ট্যান্ডটি ভিজে যায়। ধোয়ার পর ভেজা কাপড়গুলো ওই স্ট্যান্ডেই আবার রাখতে হয়। সাধারণত স্ট্যান্ডটি শুকিয়ে যায়, কিন্তু ধোয়ার পরপরই কাপড় রাখলে ভেজা কাপড় থেকে পানি তাতে ঝরবে। এই অবস্থায় কি ধোয়া কাপড় স্ট্যান্ডে রাখার আগে তা ধুয়ে নিতে হবে, নাকি শুকিয়ে গেলেই সেটা পাক হয়ে যাবে?


উত্তর: আপনার এই প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার একটি জরুরি বিষয়। উত্তর হলো, নাপাক স্ট্যান্ডটি শুধু শুকিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে পবিত্র হবে না।
শরিয়তের বিধান অনুযায়ী, কোনো নাপাক বস্তু থেকে নাপাকি দূর করতে হলে তা পানি দিয়ে ধুয়ে পবিত্র করতে হয়। শুধু শুকিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে সেটি পবিত্র হয় না। তাই, যখন আপনি পেশাবে ভেজা কাপড় স্ট্যান্ড থেকে সরিয়ে নেবেন, তখন স্ট্যান্ডটি পবিত্র করার জন্য সেটি পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। যদি পানি দিয়ে ধোয়ার সুযোগ না থাকে, তাহলে কমপক্ষে একটি পবিত্র ভেজা কাপড় বা টিস্যু দিয়ে ভালোভাবে মুছে নিতে হবে, যাতে নাপাকির কোনো চিহ্ন না থাকে।
এই প্রক্রিয়া শেষ করার পরই আপনি ধোয়া পবিত্র কাপড় সেই স্ট্যান্ডে রাখতে পারবেন। যদি স্ট্যান্ডটি পবিত্র না করে তাতে ভেজা কাপড় রাখা হয়, তাহলে কাপড় থেকে ঝরা পানি স্ট্যান্ডের নাপাকির সংস্পর্শে এসে কাপড়গুলো আবার নাপাক করে দেবে।


[তথ্যসূত্র: শরহু মুখতাসারিল কারখি (১/১৯৯), ফাতাওয়া হিন্দিয়া (১/৪৩), আলবাহরুর রায়েক (১/২২৫), এবং আদ্দুররুল মুখতার (১/৩১০)]