
ইবলিসকে কীভাবে জাহান্নামে শাস্তি দেওয়া হবে, তা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে। বিশেষত এই প্রশ্নটি জাগে যে, শয়তান যেহেতু আগুন থেকে সৃষ্ট, তবে জাহান্নামের আগুন তাকে কীভাবে পোড়াবে? আগুন কি কখনো আগুনকে পোড়াতে পারে?
বিষয়টি গভীরভাবে অনুধাবন করলে এর উত্তর খুঁজে পাওয়া যায়। আল্লাহতায়ালা মানুষকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু সৃষ্টির পর মানুষ আর শুধু মাটি নয়। তেমনিভাবে, শয়তান ও জিনজাতির মূল উপাদান আগুন হলেও সৃষ্টির পর তারা এখন আর আগুনের অনল নয়, বরং স্বতন্ত্র সত্তা লাভ করেছে।
মাটি থেকে সৃষ্ট মানুষকে যদি মাটির ঢেলা বা পোড়া ইট দিয়ে আঘাত করা হয়, তবে সে অবশ্যই ব্যথা পাবে। এমনকি, মাটি দিয়ে গর্ত করে কাউকে চাপা দিলে তার শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মৃত্যুও হতে পারে। প্রথম মানব হত্যাকারী কাবিল মাটি থেকে তৈরি পাথর দিয়েই হাবিলকে হত্যা করেছিল।
কেউ যদি এমন প্রশ্ন করে যে, আগুন থেকে তৈরি শয়তানকে আগুনের শাস্তি দেওয়া যায় না, তবে তাকে পাল্টা প্রশ্ন করা যেতে পারে, মাটি থেকে সৃষ্ট হয়েও মাটির আঘাতে মানুষ কেন ব্যথা পায়?
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, জাহান্নামের আগুন এই দুনিয়ার আগুনের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। তবে বিশুদ্ধ হাদিস থেকে জানা যায়, দুনিয়ার আগুনের চেয়ে জাহান্নামের আগুনের দহনক্ষমতা ৭০ গুণ বেশি। সুতরাং যদি ধরেও নেওয়া হয় যে শয়তান ও জিনজাতির শরীর আগুনেরই তৈরি, তবুও জাহান্নামের সেই বহুগুণ শক্তিশালী আগুন তাদের শাস্তি দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আল্লাহতায়ালা যখন তাদের শাস্তির ঘোষণা দিয়েছেন, তখন তিনি অবশ্যই সেই শাস্তি প্রদানে সম্পূর্ণরূপে সক্ষম। তিনি সর্বশক্তিমান এবং পরাক্রমশালী। কোনো কিছুই তাঁর ইচ্ছার বাইরে নয়। তাই ইবলিসের জাহান্নামের শাস্তি নিয়ে কোনো সংশয় রাখা উচিত নয়। আল্লাহতায়ালার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং ন্যায়সঙ্গত।
লেখক: আলেম ও সাংবাদিক