
সেকালে নবাব-বাদশাহরা খুশি হলেই কবিদের এক-আধটা ঘোড়াটোড়া উপহার দিতেন। আর ঘোড়া পেলে খুব সম্মানবোধ করতেন কবিরাও।
কবি আনোয়ারী ছিলেন বিখ্যাত ফার্সি কবি। সুলতান সঞ্চুর ছিলেন খুব গুণগ্রাহী আর আনোয়ারীকে বিশেষ পছন্দ করতেন তিনি। সুলতান একবার হুকুম দিলেন, আনোয়ারীকে এই কবিতার জন্যে একটা ঘোড়া দেওয়া হোক। হুকুম তামিল হলো সঙ্গে সঙ্গেই।
হুকুম তো তামিল হলো। আর যে ঘোড়া কবিকে দেওয়া হলো, অনেক দিন সেটার যত্ন হয়নি, সুলতানের আস্তাবলে ভালো করে দানাপানিও পায়নি। সে-বেচারা কবির বাড়িতে পৌঁছতে পৌঁছতেই…
কী ঘটল একটু পরে বলছি। পরদিন সুলতান দেখেন, কবি হেঁটেই সভায় হাজির।
কই হে, ঘোড়া কী হলো?
আজ্ঞে সেটায় চড়া আমার কর্ম নয়।
কেন?
হুজুর, যে রকম তার বেগ, তাতে পৃথিবীর কোনো মানুষ তার পিঠে চাপতে পারে না।
সে কী হে! সুলতান আশ্চর্য হয়ে গেলেন: আমিও পারব না?
আজ্ঞে না।
সুলতান চটে গেলেন: আমার আস্তাবলের ঘোড়া, আমি চাপতে পারব না? গোস্তাকি তো কম নয় তোমার।
আনোয়ারী বললেন, তা হলে শুনুন হুজুর:
কে দেখেছে এমন ঘোড়া–গজনী থেকে গৌড়ে,
মর্ত্য থেকে স্বর্গে গেল একটি রাতের দৌড়ে!
অর্থাৎ কবির বাড়িতে পৌঁছে একরাত্রেই ঘোড়াটা পটল তুলেছিলে। তখন সুলতানের কী হলো, বুঝতেই পারো।
জাহ্নবী