ঢাকা ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫
English

টাকা দান

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪, ০৬:৫৯ পিএম
টাকা দান

এক বৃদ্ধ ভদ্রলোক খবরের কাগজে একদিন একটি বিজ্ঞাপন দিলেন: আমার বর্তমান বয়স ৮৯ বছর। মৃত্যুর সময় আগত। আমার ৫ কোটি টাকা আছে। আমার কোনো উত্তরাধিকারী নেই। এই টাকাটি আমি চার প্রকার লোকের মধ্যে সমভাবে বণ্টন করে দিতে চাই।

১। সৎ ও নির্লোভ ২৫%
২। সৎ ও লোভী ২৫%
৩। অসৎ ও নির্লোভ ২৫%
৪। অসৎ ও লোভী ২৫%

প্রমাণসহ আগ্রহী ব্যক্তিদের স্থানীয় স্কুলের মাঠে উপস্থিত হতে বলা হচ্ছে। ১ নম্বর ব্যক্তিরা ডান হাত তুলে, ২ নম্বর ব্যক্তিরা ডান পা তুলে, ৩ নম্বর ব্যক্তিরা বাঁ হাত তুলে ও ৪ নম্বর ব্যক্তিরা বাঁ পা তুলে উপস্থিত হবেন আগামীকাল বিকেল ৪ ঘটিকায়।
পরদিন স্কুলের মাঠে কয়েক হাজার লোক উপস্থিত হতে দেখা গেল। তবে সবারই ডান হাত তোলা।
বৃদ্ধ ভদ্রলোকটি সব দেখেশুনে বললেন, এত নির্লোভ মানুষ একঙ্গে দেখার সৌভাগ্য সবার হয় না। আমার চোখে আনন্দাশ্রু প্লাবিত হচ্ছে। তবে কি না কথাটা হলো- নির্লোভ মানুষ টাকা নিতে আসবে কেন? আমি লোভীদেরই টাকাটা দেব স্থির করেছি। যারা ওই জাতীয় তাদের দুই হাত তুলতে অনুরোধ করছি।

দেখা গেল সিংহভাগ লোক চটজলদি দুই হাত তুলে ফেলল। বৃদ্ধ ভদ্রলোক হেসে বললেন, দুহাত তোলা চোখ পাল্টি করা মিথ্যুকরা বাড়ি যান। আর যে গুটিকয় ব্যক্তি চক্ষুলজ্জার খাতিরে দুহাত তুলতে পারেননি, তাদের জানাই, অপরের টাকায় লোভ ভালো নয়। আর সত্যি কথা বলতে কী, আমার ৫ কোটি তো দূরের কথা, ১০ হাজার টাকাও নেই। আপনারা যদি ১০০ টাকা করে আমায় ডোনেট করেন তা হলে বর্তে যাই।

পত্রপাঠ জায়গাটা সুনসান হয়ে গেল। কিন্তু একটা ছেলে এগিয়ে এলো ১০০ টাকার নোট হাতে।

বৃদ্ধ বললেন, সে কী! তুমি আবার কোন দলের হে?

ছেলেটি বলল, দাদু যেখানে ভিড় সেটাই আমার কর্মস্থল। আমি পকেটমার। আপনি আমার কাজের সুযোগ করে দিয়েছেন তাই বকশিশ দিচ্ছি।

কলি 

জঙ্গলে একদিন

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ০৬:৪৫ পিএম
জঙ্গলে একদিন

কয়েক দিন আগের কথা। আফ্রিকার এক জঙ্গলে সবে বিকেল নেমেছে। জঙ্গলের বাসিন্দা জিরাফের মন খারাপ। প্রেমিকা কিছুক্ষণ আগে তাকে ছ্যাঁকা দিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে মন ভালো করার একটাই উপায় জানা আছে তার। সেটা হচ্ছে গাঁজা। গাঁজার নেশায় বুঁদ হয়ে থাকলে মনের দুঃখ নিমিষে উধাও হয়ে যায়। তাই সময় নষ্ট না করে গাঁজা ধরালেন তিনি। মাত্র কল্কেতে একটান দিয়েছেন, এমন সময় খরগোশ হাজির।
খরগোশ: ছিঃ জিরাফ। এইটা কী করছ?
জিরাফ চুপ। গাঁজা ধরানোয় লজ্জা লাগছে তার।
খরগোশ বলল, এর চেয়ে চলো বনের ভেতর একটু দৌড়াদৌড়ি করি। দৌড়ালে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
জিরাফ গাঁজার কল্কে রেখে দিয়ে খরগোশের সঙ্গে দৌড়াতে শুরু করল। তারা দুজন দৌড়াতে দৌড়াতে এক জায়গায় এসে ভালুকের সঙ্গে দেখা। ভালুক শিরায় সুঁই ফুটাচ্ছে। সেই দৃশ্য দেখে খরগোশ মন খারাপ করল।
খরগোশ: ছিঃ ভালুক। এই বয়সে নেশা করা কি ঠিক। ছেলে মেয়েরা কী বলবে? 
ভালুক চুপ করে থাকে।
খরগোশ: তোমার শরীরের জন্য ড্রাগ খারাপ। এর চেয়ে বরং চলো বনের ভেতর একটু দৌড়াই। রক্ত চলাচল বাড়ুক।
ভালুক লজ্জা পেল এবং তার ভুল বুঝতে পারল। খরগোশ আর জিরাফের সঙ্গে সেও দৌড় শুরু করল। কিছুক্ষণ পর বাঘের সঙ্গে দেখা। বাঘ মাত্র আফিম নেওয়ার জোগাড়যন্ত্র রেডি করছে।
খরগোশ: ছিঃ বাঘ।
বাঘ কিছু বলে না।
খরগোশ: এইসব ছাইপাঁশ না নিয়ে বরং একটু দৌড়াই চলো...
বাঘ এই কথা শুনেই খরগোশকে ধরে মারতে লাগল। ভালুক আর জিরাফ এসে তাকে থামাল। শেষবারের মতো খরগোশকে একটা লাথি মেরে বাঘ বলল, তুই আজকে জাস্ট বাইচ্যা গেলি।
ভালুক বলল, ছিঃ বাঘ ভাই। খরগোশ তো ভালো কথাই বলছে।
বাঘ: হ! তা তো বলছেই। বদমাইশটা যখন ইয়াবা খায় তখন ভালো ভালো কথা বলে আর সবাইকে নিয়ে পুরো জঙ্গল দৌড়ায়।

উপদেশ

প্রকাশ: ৩০ মে ২০২৫, ০৪:৩৫ পিএম
উপদেশ
ছবি এআই

বাতেন আলী সাহেব রসমালাই কিনতে মিষ্টির দোকানে যাচ্ছিলেন। তখনই ঘটল দুর্ঘটনাটা। একটা ট্রাক এসে ধাক্কা দিল পেছন থেকে। বাতেন আলী সাহেব ছিটকে রাস্তার পাশের ড্রেনে গিয়ে পড়লেন। মুহূর্তেই জ্ঞান হারালেন তিনি।
রাস্তার পাশের মুদি দোকানদার জানে আলমের চোখের সামনে ঘটল পুরো ঘটনাটা। একটা লোককে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে গেল বিরাট এক ট্রাক। জানে আলম দেরি না করে দোকানের শাটার বন্ধ করে ছুটে গেলেন ড্রেনের দিকে। শার্টের কলার ধরে টেনে তুললেন আহত ভদ্রলোককে। তারপর দ্রুত সিএনজি নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছালেন।
হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে ঢুকিয়ে দিয়ে জানে আলম আহত ভদ্রলোকের মোবাইল ফোনটা হাতে নিলেন। কল লিস্ট বের করে লাস্ট ডায়ালে থাকা নাম্বারে ফোন করলেন তিনি। দুইবার রিং হতেই কলটা রিসিভ হলো। জানে আলম কিছু বলার আগেই ওপাশ থেকে এক ভদ্রলোক বললেন, ‘হ্যালো বাবা, একটু আগেই তো কথা হলো। আবার ফোন করলে যে...!’
জানে আলম গলার স্বর যতটা সম্ভব নামিয়ে এনে বললেন, ‘আমি আপনার বাবা না ভাইজান। একটু আগে আপনার বাবা...।’
আধঘণ্টার মধ্যে বাতেন আলী সাহেবের চার ছেলে, তিন মেয়ে এবং দুই বউ হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে হাজির হলেন। ততক্ষণে বাতেন সাহেবের জ্ঞান ফিরেছে। ছেলে মেয়েদের দেখে বাতেন সাহেব নার্সকে বললেন, ‘সিস্টার, একটা শলার ঝাড়ু দেন তো।’
মুহূর্তেই ঝাড়ু হাজির হলো। বাতেন সাহেব একটি ঝাড়ুর কাঠি নিয়ে পট করে ভেঙে ফেললেন। এটা দেখিয়ে তিনি ছেলেদের বললেন, ‘দেখলি তো, একটা কাঠি সহজেই ভেঙে যায়।’
এরপর দশটি ঝাড়ুর কাঠি হাতে নিয়ে ছেলেদের সেদিকে তাকাতে বললেন। তারপর চেষ্টা করলেন সেটা ভাঙতে। ভেঙে গেল। এভাবে কাঠি ভেঙে যেতে দেখে বাতেন সাহেব দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, ‘ধুর! ভেবেছিলাম, খুব ভালো একটা উপদেশ দেব তোদের! হলো না!’

ব্যাংক ডাকাতি

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫, ১২:৫২ পিএম
ব্যাংক ডাকাতি

সকাল ১০টা বাজতেই জাফর আহমেদ চৌধুরী এবং তার স্ত্রী সুলতানা বেগম লেনদেন ব্যাংকের শিয়ালবাড়ি শাখায় প্রবেশ করলেন। জাফর আহমেদ সাহেব এই শাখায় ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন। তার স্ত্রী সুলতানা বেগমও এখানেই চাকরি করেন। তিনি জুনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত। সত্যি কথা বলতে, চাকরি করতে এসে তাদের পরিচয়। সেখান থেকে বিয়ে। তবে প্রথম দিকে দুজনের সংসারে শান্তি থাকলেও এখন তা নেই। প্রতিদিন স্বামী-স্ত্রীতে খিটিমিটি লেগেই আছে। গত রাতেও মশারি টাঙানো নিয়ে দুজনে ঝগড়া করেছেন। ঝগড়ার একপর্যায়ে জাফর আহমেদ চৌধুরী মশারি ছিঁড়ে ফেললে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়।
জাফর আহমেদ চৌধুরী তার রুমে প্রবেশ করতেই কালো ষণ্ডামতো এক লোক বন্দুক হাতে হুড়মুড় করে ঢুকে পড়লেন। বন্দুক দেখে বুঝতে বাকি রইল না যে কোনো একটা ঝামেলা হয়েছে। রুমের বাইরে তাকিয়ে দেখেন আরও ছয়-সাতজন লোক সেখানে বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে আছে। সম্ভবত এরা ডাকাতি করতে এসেছে।
ডাকাতরা কাজে বেশ পটু। আধা ঘণ্টার মধ্যে ব্যাংকের ভল্ট খুলে ২ কোটি টাকা তাদের বস্তায় ঢুকিয়ে ফেলেছে। ব্যাংকের কর্মকর্তারা সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে ফ্যালফ্যাল করে শুধু দেখেছেন। বন্দুকের সামনে তাদের করার কিছুই নেই। সবাই যার যার কাঁধে টাকার বস্তা তুলে বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে লাগলেন। এমন সময় ডাকাতদের সর্দার ক্যাশিয়ার সোলেমানকে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুই কি আমাকে ডাকাতি করতে দেখেছিস?’
সোলেমান মিনমিনিয়ে বলল, ‘জি স্যার, দেখেছি।’
তারপরই দুম করে গুলির শব্দ হলো। সোলেমান শেষ। এবার সে দাঁড় করাল ডিউটি অফিসারকে। তাকেও একই প্রশ্ন করতেই সে জবাব দিল, ‘দেখেছি’। আওয়াজ হলো, ‘দুম’। এবার দাঁড় করালেন ম্যানেজার জাফর আহমেদ চৌধুরীকে। সর্দার জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুই দেখেছিস আমাকে ডাকাতি করতে?’ 
জাফর আহমেদ চৌধুরী বললেন, ‘না স্যার, দেখিনি। তবে আমার বউ মনে হয় দেখেছে!’

প্রাণ

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ০১:৩৯ পিএম
প্রাণ
এঁকেছেন মাসুম

সিনেমার শুটিং চলছে আউটডোরে। মুভির নাম বরবাদের তুফান। পরিচালক আরিয়ান মির্জা ছবির দৃশ্য নায়ককে বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন। মুভির নায়ক নতুন মুখ। তার নাম নিশো খান।
— বস, এইটা মুভির ক্লাইমেক্স দৃশ্য। এই দৃশ্যে আপনি মারা যাবেন। দৃশ্যটা আমরা এমনভাবে শুট করব পাবলিক যেন হতবাক হয়ে যায়। তারা যেন এই ভাবনা মাথায় নিয়ে ঘরে ফেরে যে, নায়ক কেন মরল? আসলেই কি মারা গেল, নাকি তার ডামি মারা গেল? কে তাকে মারল?
— আমি নায়ক মারা যাব! তাহলে মানুষ মুভি দেখবে কেন?
— বস, মুভির সিকুয়েলের জন্য আমরা এই দৃশ্য রাখছি। যদি এই পর্বে আপনার মৃত্যুদৃশ্য থেকে থাকে, তাহলে এই মুভির সিকুয়েল দেখতেও পাবলিক আসবে। জানতে চাইবে মরা মানুষ জ্যান্ত হলো কীভাবে! 
— ওকে। ওকে। কীভাবে মরতে হবে আমাকে? 
— বস, পুলিশ অফিসার খারুশ মণ্ডল হাসতে হাসতে আপনার বুকে গুলি করবে। আপনি চিত হয়ে পড়ে যাবেন। 
কীভাবে পড়ে যেতে হবে সেটা অভিনয় করে দেখালেন পরিচালক। 
— রক্ত লাগবে না? বুকে রক্তের ব্যাগ সেট করতে হতে হবে না?
— লাগবে না বস। গ্রাফিক্সের সাহায্যে রক্তের ছবি বসাব আমরা। আপনি শুধু শটটা ওকে করে দেন বস।
— ওকে। 
পুলিশ অফিসার খারুশ মণ্ডল সেজে দাঁড়িয়ে ছিল সাজু আহমেদ। পরিচালক অ্যাকশন বলা মাত্র নায়ক চিত হয়ে পড়লেন। কাট বলার আগেই নিশোর চোখ পিটপিট করতে লাগল।
— বস, আমি কাট না বলতেই আপনি চোখ খুলে ফেললেন!
— আরে আমি কী করব! পায়ে যে মশা কামড়াচ্ছে।
— এই কে আছিস, বসের পায়ের কাছে অ্যারোসল স্প্রে কর।
— বস অ্যারোসল তো নেই। 
মুখ শুকনো করে বলল সহকারী পরিচালক। 
— আরে হাদারাম কিনে নিয়ে আয়। তাড়াতাড়ি যা।
তারপর হিরোর দিকে তাকিয়ে বললেন, বস অ্যারোসল আনতে পাঠিয়েছি। ততক্ষণ আপনি আর সাজু মিলে দৃশ্যটার রিহার্সাল যদি করে দিতেন।
ঠাণ্ডা চোখে পরিচালকের দিকে তাকালেন নিশো খান।
— বিরিয়ানি আনাও। বিরিয়ানি খেতে ইচ্ছে করছে। বিরিয়ানি খেয়ে শট দেব।
বিরিয়ানি আনতে আনতে দুপুর হয়ে গেল। সেই বিরিয়ানি খেয়ে নায়ক নিশো খান মৃত্যুদৃশ্য অভিনয়ের জন্য প্রস্তুত হলেন। এবার নায়ক গুলি খেয়ে পড়ে গেলেন ঠিকই, কিন্তু একটু পরই চোখ খুলে হেসে উঠলেন।
— বস, মৃত্যুর দৃশ্যে আপনি চোখ খুলে হাসছেন? 
করুণ কণ্ঠে বললেন পরিচালক। 
— আরে মাটিতে পড়ে যাওয়ার পর কী যেন শার্টের ভেতর ঢুকে সুড়সুড়ি দিচ্ছে। দেখ আমি মিথ্যা বলছি কি না। 
সবার সামনে শার্ট খুলে ফেললেন নায়ক নিশো খান। পরিচালক দেখলেন, কয়েকটি পিঁপড়ে নায়কের পিঠের ওপর।
পরিচালক বললেন, বস এই মৃত্যুদৃশ্যটা ইনডোরে শুটিং করব। আমি ব্যবস্থা করছি। ক্যামেরা, লাইট, প্রপস ইত্যাদি ইনডোরে সেট করতে করতে সন্ধ্যা পেরিয়ে গেল। পরিচালক আবার বসলেন নায়ক নিশো খানকে নিয়ে।
— বস, এই মৃত্যুদৃশ্যটা এই মুভির সিকুয়েল তৈরির টার্নিং পয়েন্ট। আমি চাই এই মৃত্যুদৃশ্যটাতে আপনি এমন প্রাণ সৃষ্টি করুন- যেন দর্শক মনে করে আপনি সত্যিই মারা গেছেন, ওকে?
নিশো খান মাথা নাড়লেন। এবার এক টেকেই নেওয়া গেল দৃশ্যটা। গুলি খেয়ে নিশো খান পড়ে গেলেন ঠিকই, কিন্তু আর উঠলেন না। পরিচালক কাট বলার পরও চোখ খুললেন না। সহকারী পরিচালক দৌড়ে এলেন পরিচালক আরিয়ান মির্জার কাছে।
— স্যার, বসের পালস পাচ্ছি না।
জান উড়ে গেল পরিচালকের।
— গেল! সিকুয়েলের পরিকল্পনা বোধহয় বাদই দিতে হবে।
তাড়াতাড়ি অ্যাম্বুলেন্স ডেকে আনা হলো। 
নায়ক নিশো খানকে নিয়ে যাওয়া হলো স্থানীয় হাসপাতালে। ডাক্তাররা ছুটে এলেন। স্টেথোস্কোপ  যখন বুকের ওপর বসালেন তখনই চোখ খুললেন নিশো খান। উঠে বসলেন। হাই তুললেন। তার পর পরিচালকের দিকে তাকিয়ে জানতে চাইলেন, কী! মৃত্যুদৃশ্যটা কেমন হয়েছে? 
পরিচালক এতক্ষণ মৃতপ্রায় হয়েছিলেন। মাত্র প্রাণ ফিরে পেলেন। 

তিন খাম

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৫, ০৫:০২ পিএম
আপডেট: ২৬ মে ২০২৫, ০৫:০৩ পিএম
তিন খাম
ছবি এআই

নগেন টেক্সটাইল মিলের ওপর দিয়ে খুব বড় রকমের ঝামেলা গেল। সেই ঝামেলার সমাধান করতে না পেরে মিলের জেনারেল ম্যানেজার মদন মোহন চৌধুরী পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিলেন। অতঃপর শুভ দিন দেখে মিলের মালিকের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে বাড়িতে চলে গেলেন।
এদিকে তার পদত্যাগের পর নতুন জেনারেল ম্যানেজার নিয়োগ দেওয়া হলো। মদন মোহন চৌধুরী তার সঙ্গে বিদায়ি সাক্ষাৎকার করতে আসলেন। অতঃপর তার হাতে তিনখানা বন্ধ খাম দিয়ে বললেন, ‘এই খামগুলোতে যে চিঠি আছে সেগুলো আমার পূর্ব অভিজ্ঞতার আলোকে লিখিত। কোম্পানি যখন প্রথমবার বিপর্যয়ের মুখে পড়বে, তখন প্রথম খামটি খুলবেন। তাহলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। দ্বিতীয়বার যখন বিপর্যয়ের মুখে পড়বেন তখন, দ্বিতীয় খামটি খুলবেন। দেখবেন সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। এভাবে যখন তৃতীয় বিপর্যয়ের সামনে হাজির হবেন, তখন তৃতীয় খাম খুলবেন।’
খাম বুঝিয়ে দিয়ে একসময় মদন মোহন চৌধুরী বিদায় নিলেন। ছয় মাস যেতে না যেতেই নতুন জেনারেল ম্যানেজার তার প্রথম বিপর্যয়ের মুখোমুখি হলেন। অগত্যা মদন মোহন চৌধুরীর বলে যাওয়া পরামর্শ মতো তিনি প্রথম খাম খুলে দেখতে পেলেন সেখানে লেখা, ‘নিজের ঘাড়ে কোনো দোষ চাপাবেন না। সব দোষ আগের জেনারেল ম্যানেজার মানে আমার ঘাড়ে দিন।’
অগত্যা নতুন জেনারেল ম্যানেজার আগের জেনারেল ম্যানেজারের নামে ইচ্ছামতো দোষ চাপালেন।
কোম্পানিতে যখন দ্বিতীয় বিপর্যয় ঘটল তখন দ্বিতীয় খাম খুলে নতুন জেনারেল ম্যানেজার দেখতে পেলেন তাতে লেখা, ‘পুরোনো কর্মী ছাঁটাই করে নতুন কর্মী নিয়োগ দাও। তাতে তোমার জন্য সমস্যা সমাধান করা সহজ হবে।’ নতুন জেনারেল ম্যানেজার সেটাই করলেন এবং একসময় দ্বিতীয় বিপর্যয় কাটিয়ে উঠলেন।
কোম্পানি যখন তৃতীয় বিপর্যয় ঘটল, তখন নতুন জেনারেল ম্যানেজার তৃতীয় খাম খুলে দেখতে পেলেন তাতে লেখা, ‘তোমার বিদায়ের সময় হয়েছে। দেরি না করে আমার মতো একইভাবে নতুন তিনটি খাম তৈরি করো।’