ঢাকা ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

শান্তি কাহাকে বলে

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০০ এএম
শান্তি কাহাকে বলে
ছবি এআই

চোর: একবার চুরি করার জন্য ঘরে ঢুকছি। হঠাৎ লোকজন জেগে গেল। আমি জানালা দিয়ে দিলাম দৌড়। ওরাও পেছন পেছন দৌড়াল। ধরা পড়তে পড়তে একসময় বেঁচে গেলাম। তার পর মনে এত শান্তি লাগল যে কী বলব।


বাবুর্চি: হইছে কী, সুন্নতে খতনার প্রোগ্রামে রেজালায় ড্যাগের ওপর কাউয়া বইসা দিছে কাম সাইরা। আমি দেখি নাই, দেখছে আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট। ও আমারে বলতে বলতে সেই জিনিস ঘুটা দিয়া মাখাইয়া ফালাইছি। আমি তো পাইলাম ভয়, কারণ লোকে কী জানি কয়! কিন্তু তারা খাইয়া আমার এত প্রশংসা করল যে, তখন দিলে বিরাট শান্তি পাইলাম। সেই থেকে আমি রেজালায় কাউয়ার জিনিস দেই। সবাই আমার রেজালার তারিফও করে।


গোয়ালা: গরুর ৫ লিটার দুধরে যখন ১০ লিটার বানাই তখন চোখে ডাবল টাকার নোট ভাসে। সেই শান্তির কথা বলে বোঝানো সম্ভব না।
মাছ বিক্রেতা: অনেক সময় যেই দিনের মাছ সেই দিনে বিক্রি করতে পারি না। আড়তেই মাছ প্যাকেট করে চলে যাই। পরদিন আড়তে এসে যখন দেখি মাছ পচার বদলে আগের দিনের মতোই তরতাজা, তখন যে শান্তি লাগে। তবে ফরমালিন দিয়ে যদি শান্তিটাও তরতাজা রাখা যেত তাহলে ভালো হতো। 


সারেং: যাত্রী ওভারলোড করার পরও যখন লঞ্চ ডোবে না তখন একটা শান্তি শান্তি ভাব আসে বটে।


পানি বিক্রেতা: সাপ্লাইয়ের মাগনা পানি বোতলে ঢুকিয়ে প্রতি গ্লাস এক টাকা করে বিক্রি করলে সবসময়ই মনে একটা শান্তির আভা বিরাজমান থাকে।
আবহাওয়াবিদ: আমাদের শান্তি আসে তখন, যখন আমাদের ভবিষ্যদ্বাণী মেলে। তবে এই শান্তি আমরা বছরে দুই-একবার পাই তো, তাই শান্তির মর্ম ততটা অনুধাবন করতে পারি না।


স্ত্রী: ও যেদিন বেতনটা নিয়ে বাসায় আসে, সেদিন আমি আগে থেকেই কেমন করে যেন বুঝতে পারি। ঘরে ঢোকার পর পকেট হাতিয়ে যখন সত্যি সত্যি বেতনের টাকা পাই, তখন মার্কেটে যাওয়ার কথা মনে করে বিরাট একটা শান্তির স্পর্শ অনুভব করি ভাইজান।


নেতা: পাবলিক দেখলেই গলায় কুক্কুর কুক্কুর কু করে। বুঝলেন না তো, মানে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য গলা চুলকায়। তখন যদি একটা মাইক পাওয়া যায় তাহলেই মনে শান্তি পাই ভাইজান।


দখলবাজ: সবাই মনে করে আমরা দখল করলেই বুঝি শান্তি পাই। আসলে তা না। দখলের পরে আরও অনেক ফরমালিটিস আছে। যেমন নেতাদের ম্যানেজ করা, পুলিশ ম্যানেজ করা, আশপাশের রংবাজ ম্যানেজ করা। সবশেষে দখল করা জায়গা বিক্রি করতে পারলে, তবেই একটু শান্তি পাই।

 
পাগল: দুটি জৈব ও অজৈব বস্তু যখন হাইড্রোজেনের সংকেতকে দুর্বল প্রমাণ করে আছাড় খায়, তখন দোকানের সামনে ঝোলানো বারবিকিউ চানাচুরের প্যাকেটকে শান্তি বলে।


বেকার: জনৈক মহা মনীষী বলে গেছেন, ত্যাগেই শান্তি। তার বাণীকে সত্য মনে করে আমরাও ত্যাগেই শান্তি পাই।


শিশু: পড়ার টাইমে কার্টুন দেখতে দিলেই শান্তি লাগে, হি হি হি। 


আঁতেল: শান্তি কখন পাই জানার আগে আমাদের জানতে হবে শান্তি কাকে বলে, কত প্রকার ও কী কী? বিভিন্ন মনীষীর পুস্তিকা ঘেঁটে আমরা শান্তির নানাবিধ সংজ্ঞা নির্ণয় করার প্রয়াস পাই। চিকেন মনির তার ‘জেলের চার দেয়াল’ গ্রন্থে শান্তির সংজ্ঞায়ন করতে গিয়ে বলেন...(সংক্ষেপিত)।


কসাই: ভেড়াকে খাসি এবং মহিষকে গরু বানানোর মধ্যেই অপার শান্তি নিবেদিত। এটা করতে পারলেই আমরা শান্তি পাই।


কবি: শান্তি, তব বিবিধ দুর্শখ বলিহারি
আজি প্রজন্ম থেকে লোহিত সাগরের সফেদ ফেনায়
ইউরিয়া সারের দানায় দানায়, মতিহারী লোলুপ চিকেন শাশলিক কাবাব। কি বুঝলেন?


টকশোর নিয়মিত আলোচক: শান্তি খুব সহজ কোনো বিষয় নয়। এটার আগমন কখন ঘটে তা বলার আগে আপনি বলেন যে আমার উত্তরের জবাব দেওয়ার জন্য আরেকজন আলোচক দরকার, তিনি কই?

 

মেহেদী

আজকের সেরা জোকস

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৫৫ এএম
আজকের সেরা জোকস
সংগৃহীত

১. ম্যাজিস্ট্রেট: গতবারও তোমাকে বলেছিলাম, আমি চাই না তুমি পুনরায় এখানে আসো।
চোর: স্যার, ঠিক এই কথাটাই আমি পুলিশকে বলেছিলাম, বিশ্বাস করল না।

 

২. এক কৃষকের ছিল তরমুজের খেত। খেতে অনেক ফলন হত। কিন্তু রাত হলেই কিছু দুষ্টু ছেলেপুলে এসে কৃষকের তরমুজ খেয়ে যেত। একদিন কৃষক একটা বুদ্ধি আঁটলেন। তরমুজের খেতে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিলেন।
রাতের বেলা ছেলেরা তরমুজ চুরি করতে এসে দেখে, তরমুজের খেতে সাইনবোর্ড লাগানো। তাতে লেখা আছে, ‘সাবধান! এই খেতের একটি তরমুজে বিষ মেশানো আছে!’
পরদিন কৃষক দেখলেন, তাঁর সব তরমুজই অক্ষত। খুশিমনে বাড়ি যাওয়ার পথ ধরবেন, হঠাৎ লক্ষ করলেন, খেতে আরও একটা সাইনবোর্ড লাগানো। তাতে লেখা, ‘সাবধান! এখন দুইটি তরমুজে বিষ মেশানো আছে!’

 

৩. ডাক্তার রোগীকে প্রশ্ন করলেন, অপারেশন করাটা যদি জরুরি হয়ে পড়ে, আপনি তার খরচ দিতে পারবেন?
পাল্টা প্রশ্ন করল রোগী, খরচ যদি দিতে না পারি, অপারেশনটা কি তবু জরুরি হয়ে পড়বে?

 

৪. দশতলা থেকে পড়া আর একতলা থেকে পড়ার মধ্যে পার্থক্য কী?
একতলা থেকে পড়লে আওয়াজ হয়, ধপাস! আ আ আ আ আ আ আ!
দশতলা থেকে পড়লে আওয়াজ হয়, আ আ আ আ আ আ আ আ আ আ আ আ ধপাস!

 

৫. ১ম বন্ধু: কী রে, তোর পা ভাঙল কীভাবে?
২য় বন্ধু: সিগারেটের জন্য!
১ম বন্ধু: সিগারেটের জন্য পা ভাঙে নাকি?
২য় বন্ধু: সিগারেটটা ছুড়ে মেরেছিলাম খোলা ম্যানহোলে।
১ম বন্ধু: তাতেই বা পা ভাঙবে কেন?
২য় বন্ধু: পা দিয়ে মাড়িয়ে নেভাতে গিয়েছিলাম যে!

আজকের সেরা জোকস

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০০ পিএম
আজকের সেরা জোকস
সংগৃহীত

১. প্রেমিকা: তুমি কি আমায় ভালোবাস?
প্রেমিক: বিশ্বাস না হলে পরীক্ষা করো?
প্রেমিকা: ধরো তোমার শার্টের পকেটে মাত্র বিশ টাকা আছে, তা থেকে আমি ১৫ টাকা চাইলাম, তুমি দিতে পারবে?
জরুরি টাকাটায় প্রেমিকা চোখ পরেছে দেখে, বিব্রত প্রেমিক নিজেকে সামলে নিয়ে বললো, কেন পারবো না, একশো বার পারবো। তবে পরীক্ষার তারিখটা একটু পিছানো যায় না?

২. খোকন: জানেন স্যর, গতকাল আমার দাদীকে আপনার কথা বলছিলাম।
স্যার: তাই নাকি? তা তোমার দাদী কী বললেন?
খোকন: দাদী খুব আফসোস করলেন। বললেন, ‘আহা, আমার যদি এমন একজন শিক্ষক থাকত!’
স্যার: বাহ্! এ বয়সেও তোমার দাদীর পড়ালেখায় এত আগ্রহ!
খোকন: না স্যার, তা না। ঠাকুমার অনেক দিন ভালো ঘুম হয় না কি না…

৩. এক লেখকের বই হু-হু করে বিক্রি হতে লাগল। তিনি দু’হাতে লিখতে লাগলেন। তাতেও কুলাতে না পেরে শেষটায় ভাড়াটিয়া লেখকদের লেখাতে লাগলেন। ভূমিকাটা শুধু তিনি লিখে দেন। একবার তাঁর একটা নতুন বই প্রকাশিত হলে তিনি তাঁর ছেলেকে বললেন, তুমি কি আমার সর্বশেষ বইটি পড়েছ?
ছেলে বলল, আপনি নিজে কি ওই বইটি পড়েছেন, বাবা?

৪. এক ভিক্ষুক রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভিক্ষা করছিল। এই দেখে এক লোকের খুব দয়া হল।
সে ভিক্ষুকের কাছে গিয়ে বলল: তুমি যদি ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দাও, তাহলে তোমাকে আমি মাসে ১০০০ টাকা করে দেব।
জবাবে ভিক্ষুক লোকটিকে বলল: তুমি যদি আমার সঙ্গে ভিক্ষা করো তাহলে প্রতি মাসে আমি তোমাকে ৫০০০ টাকা দেব।

প্রতিশোধ

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০০ এএম
প্রতিশোধ
এঁকেছেন মাসুম

দোকানে লোড দিতে গেলাম। গিয়ে দেখি একটা মেয়েও এসেছে লোড নেওয়ার জন্য। আমি মেয়েটার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম।
দোকানদার: কি মামা লোড লাগবে?
আমি: হুমম লাগবে।
দোকানদার: নাম্বার বলো।
আমি: জিরো ওয়ান...
সেই মুহূর্তে মেয়েটা বলে উঠল, মামা আমি আগে এসেছি, তাই আমার নাম্বারটা আগে নিন।
দোকানদান: আচ্ছা বলুন।
মেয়েটা: জিরো ওয়ান...
এইটুকু বলতেই মেয়েটা আমার দিকে তাকাল। দেখে কী বুঝল জানি না, তবে বলল, ‘মামা লোড লাগবে না, কার্ড দিন।’
দোকানদার এবার বিরক্ত হয়ে মেয়েটাকে কার্ড বের করে দিল। কার্ড নিয়ে মেয়েটা দাঁড়িয়েই রইল আর কী সব হাবিজাবি নেড়েচেড়ে দেখতে লাগল।
দোকানদার: কী মামা নাম্বার বলো।
আমি: জিরো ওয়ান...
এইটুকু বলতেই আমি মেয়েটার দিকে তাকালাম। মেয়েটা দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি মেয়েটার চোখে চোখ রেখে বললাম, মামা লোড লাগবে না, কার্ড দিন।
প্রতিশোধ নিলাম।

আলুভর্তা আবিষ্কারের কাহিনি

প্রকাশ: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০০ এএম
আলুভর্তা আবিষ্কারের কাহিনি
সংগৃহীত

পাঁচ হাজার বর্ষ আগের ঘটনা। উক্ত বর্ষে আলুর বাম্পার উৎপাদন ঘটাইয়া কৃষক বিপদে নিপতিত হইলেন। তখন কোল্ডস্টোরেজ না থাকার কারণে আলু সংরক্ষণে সমস্যা দেখা দিল। ফলে আলুর দাম কমিয়া গেল। আলুর পাইকাররা আলু খরিদ করিতে নারাজ।

হাজার হাজার মণ আলু পচিয়া গেল এবং আরও হাজার হাজার মণ আলু পচার উপক্রম হইল। আলু লইয়া কৃষকের এই বিপদ দেখিয়া রাজা খাদ্যে আলুর ব্যবহার বাড়ানোর ঘোষণা দিলেন। সেই সঙ্গে জনগণকে জানাইলেন যে, আলু দিয়া সবচেয়ে মজাদার খাবার যে বানাইতে পারিবে তাহাকে অর্ধেক রাজ্য ও রাজকন্যার সহিত বিবাহ দেওয়া হইবে।
এই ঘোষণা শুনিয়া সবাই আলুর নয়া নয়া খাবার বানাইতে লাগিয়া গেল। সাদ্দাম নামের এক পাচকও প্রতিযোগিতায় অংশ লইবার জন্য খাবার বানাইতে ছিলেন। আলুর নানা পদ তৈরির সময় উচ্ছিষ্ট আলু মর্দন করিয়া পাশে ফালাইয়া রাখিয়াছিলেন। রাজা আসিয়া তাহাই চাখিয়া বিমোহিত হইলেন এবং সাদ্দামকে প্রথম পুরস্কারে ভূষিত করিয়া রাজকন্যার সঙ্গে তাহার বিবাহ দিলেন। উল্লেখ্য, যে রাজা তখন যাহা খাইয়াছিলেন তাহাকে আজ আমরা আলুভর্তা নামে ডাকি।

রইছ চাচার বাণী

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০০ এএম
রইছ চাচার বাণী
এঁকেছেন মাসুম

বই-পুস্তকের কথা সব সময় ধরতে হয় না রে ছুডু মিয়াঁ- অনেক আগে আমাদের গ্রামের রইস চাচা একদিন বলেছিলেন। আমি ভাবতাম উনি মূর্খ মানুষ, পড়ালেখা করেননি। এমনিতেই এসব বলছেন। পরে আমি প্রায়ই উনার কথার সত্যতা খুঁজে পেয়েছি। 
তখন স্কুলে পড়তাম। আমার এক চাচা বলেছিলেন, উনি নাকি বইয়ে পেয়েছেন, কেউ যদি এক গালে থাপ্পড় মারে, তাহলে আরেক গাল পেতে দিবি। দেখবি সে লোক লজ্জা পেয়ে যাবে। আর মারবে না তোকে, বরং অনুতপ্ত হবে।
কিন্তু সেই উপদেশ পালনের জন্য চরম মূল্য দিতে হয়েছিল একবার। আমাদের ক্লাসের সবচেয়ে রাগী হলেন শিকদার স্যার। একবার কী এক কারণে আমার গালে এক থাপ্পড় বসিয়ে দেন। আমি আমার সেই চাচার কথা ধরে আরেকটা গাল পেতে দিয়ে বলি, স্যার এই গালেও একটা মারেন!
শিকদার স্যার রেগে ফেটে পড়ে আমার পেতে দেওয়া গালে তুমুল শব্দে বিপুল সমারোহে চড় বসিয়ে দেন। আমি সেই গালে শিকদারের স্যারের পাঁচ আঙুলের ছাপ নিয়ে কয়েকদিন ঘুরে বেড়িয়েছিলাম। 
এর পর আমাদের ক্লাসে পড়ানো হয়, স্বাস্থ্যই সব সুখের মূল। আরাফাত নামে আমাদের এক বন্ধুর স্বাস্থ্য ছিল দেখার মতো। সে ক্লাস এইটে থাকতেই সকালে ৩০টা বুকডাউন দিয়ে, দুটা কাঁচা ডিম খেয়ে, দাঁত ব্রাশ না করে স্কুলে এসে পড়ত। একদিন স্কুলে এক নড়বড়ে বেঞ্চে আমার পাশে সে বসতে গেলে পুরো বেঞ্চ হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে। সঙ্গে আমরা দুজন। এর ফলে আমার প্যান্ট ছিঁড়ে যায়, হাত ছিলে যায় আর ক্লাস টিচার পাটোয়ারি স্যার ক্লাসে এসে ভাঙা বেঞ্চ দেখে- ‘পড়ালেখা না করে জব্বরের বলি খেলা হচ্ছে, না?’ এই বলে আমাদের দুজনকে জালি বেত দিয়ে ধোলাই দেন। বলাই বাহুল্য, আরাফাতের বিশাল স্বাস্থ্যের জন্য সেদিন এই বিপদে পড়তে হয়েছিল।
ক্লাস টেনে উঠে স্কুল পালিয়ে বন্ধুরা মিলে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম। সিনেমার নাম ছিল, কুসুম কুসুম প্রেম।
পরদিনই আমাদের ডাক পড়ে হেড স্যারের রুমে। দপ্তরি কালিপদকে আমরা জিজ্ঞেস করি, কী ব্যাপার দাদা?
কালিপদ’দা আকাশের দিকে তাকিয়ে উদাস কণ্ঠে বললেন, ব্যাপারের কি আর শেষ আছে!
শুনে আমাদের মেরুদণ্ড দিয়ে শীতল স্রোত বয়ে যায়। হেড স্যারের রুমে যেতেই স্যার জলদ গম্ভীর কণ্ঠে বললেন, কাল ক্লাস পালিয়ে কই গিয়েছিলি?
আমাদের প্ল্যান ছিল আমরা বলব, পাবলিক লাইব্রেরিতে বই পড়তে গিয়েছিলাম। বই নিয়ে স্যারের আলাদা একটা দুর্বলতা ছিল, আমরা জানতাম। তাছাড়া মিথ্যা বলা মহাপাপ- এটা ছোটকাল থেকেই পড়ে আসছি। তাই আমি ফস করে সত্য বলে বসলাম, স্যার সিনেমা দেখতে। সিনেমার নাম কুসুম কুসুম প্রেম!
আমার জবাব শুনে হেড স্যার যত না চমকালেন, তার চেয়ে বেশি চমকালো আমার বন্ধুরা। বলাই বাহুল্য, সেদিন হেড স্যারের দার্জিলিং থেকে আনা বেতের প্রদর্শনী দেখেছিলাম আমরা। স্যারের রুম থেকে বের হয়ে বন্ধুদের হাতে আরেক প্রস্থ মার খেতে হয়েছিল আমার। 
এহ সত্যবাদী যুধিষ্ঠির আসছে!- পশ্চাৎদেশে লাথি হাঁকানোর আগে বিপুল বলেছিল। 
এই বিপদ কলেজ ভার্সিটি সব জায়গাতেই চলতে থাকে।
পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না, পরের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করিও- এই বাক্য পড়েছি। তার পর কী হলো দেখুন।
ভার্সিটির পুষ্প নামের এক মেয়েকে একটা কাগজে লিখে নীল খামে ভরে হাতে গুজে দিয়েছিলাম। সঙ্গে একটা হার্টের চিহ্ন, যার ভেতর দিয়ে একটা তির চলে গেছে। পরদিন পুষ্পের বড় ভাই তার দলবল নিয়ে এসে ভার্সিটির সবার সামনে আমাকে কেলিয়ে ভর্তা বানিয়ে ফেলে। আরেকটু হলেই নিজের জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছিলাম।
সাত দিন বাসায় বেড রেস্টে ছিলাম। এর পরও আমার শিক্ষা হলো না। এর কয়দিন আগে এক বিদেশি লেখকের বইয়ে পড়ি, আপনার সামনে কোনো বিপদ এলে, সেই বিপদের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিন। বিপদ পালিয়ে যাবে।
অফিসের গুরুত্বপূর্ণ একটা ফাইলে মারাত্মক একটা ভুল করে রাখায় ডাক পড়ে বসের রুমে। ফাইলটা আমার দিকে ছুড়ে দিয়ে বস বললেন, কী করেছেন এটা? বলি কী করেছেন? আপনাকে কি এই ফাইলের গুরুত্ব কতটুকু বলা হয়নি?
আমি হ্যাঁও বললাম না, নাও বললাম না। স্যারের দিকে তাকিয়ে আমার হলুদ দাঁতগুলো বের করে একটা মিষ্টি হসি দিলাম।
বলাই বাহুল্য, আজ চার মাস ধরে আমি বেকার।