চোর: একবার চুরি করার জন্য ঘরে ঢুকছি। হঠাৎ লোকজন জেগে গেল। আমি জানালা দিয়ে দিলাম দৌড়। ওরাও পেছন পেছন দৌড়াল। ধরা পড়তে পড়তে একসময় বেঁচে গেলাম। তার পর মনে এত শান্তি লাগল যে কী বলব।
বাবুর্চি: হইছে কী, সুন্নতে খতনার প্রোগ্রামে রেজালায় ড্যাগের ওপর কাউয়া বইসা দিছে কাম সাইরা। আমি দেখি নাই, দেখছে আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট। ও আমারে বলতে বলতে সেই জিনিস ঘুটা দিয়া মাখাইয়া ফালাইছি। আমি তো পাইলাম ভয়, কারণ লোকে কী জানি কয়! কিন্তু তারা খাইয়া আমার এত প্রশংসা করল যে, তখন দিলে বিরাট শান্তি পাইলাম। সেই থেকে আমি রেজালায় কাউয়ার জিনিস দেই। সবাই আমার রেজালার তারিফও করে।
গোয়ালা: গরুর ৫ লিটার দুধরে যখন ১০ লিটার বানাই তখন চোখে ডাবল টাকার নোট ভাসে। সেই শান্তির কথা বলে বোঝানো সম্ভব না।
মাছ বিক্রেতা: অনেক সময় যেই দিনের মাছ সেই দিনে বিক্রি করতে পারি না। আড়তেই মাছ প্যাকেট করে চলে যাই। পরদিন আড়তে এসে যখন দেখি মাছ পচার বদলে আগের দিনের মতোই তরতাজা, তখন যে শান্তি লাগে। তবে ফরমালিন দিয়ে যদি শান্তিটাও তরতাজা রাখা যেত তাহলে ভালো হতো।
সারেং: যাত্রী ওভারলোড করার পরও যখন লঞ্চ ডোবে না তখন একটা শান্তি শান্তি ভাব আসে বটে।
পানি বিক্রেতা: সাপ্লাইয়ের মাগনা পানি বোতলে ঢুকিয়ে প্রতি গ্লাস এক টাকা করে বিক্রি করলে সবসময়ই মনে একটা শান্তির আভা বিরাজমান থাকে।
আবহাওয়াবিদ: আমাদের শান্তি আসে তখন, যখন আমাদের ভবিষ্যদ্বাণী মেলে। তবে এই শান্তি আমরা বছরে দুই-একবার পাই তো, তাই শান্তির মর্ম ততটা অনুধাবন করতে পারি না।
স্ত্রী: ও যেদিন বেতনটা নিয়ে বাসায় আসে, সেদিন আমি আগে থেকেই কেমন করে যেন বুঝতে পারি। ঘরে ঢোকার পর পকেট হাতিয়ে যখন সত্যি সত্যি বেতনের টাকা পাই, তখন মার্কেটে যাওয়ার কথা মনে করে বিরাট একটা শান্তির স্পর্শ অনুভব করি ভাইজান।
নেতা: পাবলিক দেখলেই গলায় কুক্কুর কুক্কুর কু করে। বুঝলেন না তো, মানে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য গলা চুলকায়। তখন যদি একটা মাইক পাওয়া যায় তাহলেই মনে শান্তি পাই ভাইজান।
দখলবাজ: সবাই মনে করে আমরা দখল করলেই বুঝি শান্তি পাই। আসলে তা না। দখলের পরে আরও অনেক ফরমালিটিস আছে। যেমন নেতাদের ম্যানেজ করা, পুলিশ ম্যানেজ করা, আশপাশের রংবাজ ম্যানেজ করা। সবশেষে দখল করা জায়গা বিক্রি করতে পারলে, তবেই একটু শান্তি পাই।
পাগল: দুটি জৈব ও অজৈব বস্তু যখন হাইড্রোজেনের সংকেতকে দুর্বল প্রমাণ করে আছাড় খায়, তখন দোকানের সামনে ঝোলানো বারবিকিউ চানাচুরের প্যাকেটকে শান্তি বলে।
বেকার: জনৈক মহা মনীষী বলে গেছেন, ত্যাগেই শান্তি। তার বাণীকে সত্য মনে করে আমরাও ত্যাগেই শান্তি পাই।
শিশু: পড়ার টাইমে কার্টুন দেখতে দিলেই শান্তি লাগে, হি হি হি।
আঁতেল: শান্তি কখন পাই জানার আগে আমাদের জানতে হবে শান্তি কাকে বলে, কত প্রকার ও কী কী? বিভিন্ন মনীষীর পুস্তিকা ঘেঁটে আমরা শান্তির নানাবিধ সংজ্ঞা নির্ণয় করার প্রয়াস পাই। চিকেন মনির তার ‘জেলের চার দেয়াল’ গ্রন্থে শান্তির সংজ্ঞায়ন করতে গিয়ে বলেন...(সংক্ষেপিত)।
কসাই: ভেড়াকে খাসি এবং মহিষকে গরু বানানোর মধ্যেই অপার শান্তি নিবেদিত। এটা করতে পারলেই আমরা শান্তি পাই।
কবি: শান্তি, তব বিবিধ দুর্শখ বলিহারি
আজি প্রজন্ম থেকে লোহিত সাগরের সফেদ ফেনায়
ইউরিয়া সারের দানায় দানায়, মতিহারী লোলুপ চিকেন শাশলিক কাবাব। কি বুঝলেন?
টকশোর নিয়মিত আলোচক: শান্তি খুব সহজ কোনো বিষয় নয়। এটার আগমন কখন ঘটে তা বলার আগে আপনি বলেন যে আমার উত্তরের জবাব দেওয়ার জন্য আরেকজন আলোচক দরকার, তিনি কই?
মেহেদী