১. ছোট ছেলেটি স্কুলে যেতে দেরি করেছে। চুপি চুপি ক্লাসে ঢুকতে গিয়েছিল সুপারিনটেনডেন্টের নজর এড়িয়ে। কিন্তু ধরা পড়ে গেল। সুপার খপ করে তাকে ধরলেন এবং দেরির জবাবদিহি চাইলেন। আমতা আমতা করে সে জবাব দিল, আমি আজ মাছ ধরতে যাব ঠিক করেছিলাম, কিন্তু বাবা যেতে দিল না।
সুপারের মুখ মৃদু হাসিতে উদ্ভাসিত হলো। বিচক্ষণ পিতা- তিনি বললেন।
তোমাকে মাছ ধরতে যেতে না দিয়ে তিনি ঠিক কাজই করেছেন। কারণটাও তিনি নিশ্চয়ই ব্যাখ্যা করেছেন, তাই না?
ছোট ছেলেটি জবাব দেয়, হ্যাঁ নিশ্চয়ই স্যার! তিনি বললেন, যা টোপ আছে, তাতে আমাদের দুজনের কুলোবে না!
২. মৎস্য শিকারিদের আড্ডায় অত্যন্ত বিমর্ষ হয়ে বসেছিল স্যাম। তা দেখে তার বন্ধু প্রশ্ন করল, কী দোস্ত! আজ দেখছি মুড অফ! নতুন করে কিছু হলো নাকি?
বন্ধু বলল, আর বলো কেন? বউ আল্টিমেটাম দিয়েছে, হয় বরাবরের মতো আমাকে মাছ ধরা ছাড়তে হবে, নইলে সে আমাকে শেষবারের মতো ছেড়ে চলে যাবে। হায় ভগবান! এত ভালো বউটাকে আমি হারাতে চলেছি!
৩. সমুদ্রতীরে মাছ ধরছেন এক দম্পতি। স্বামীর বড়শিতে টোপ গিলল এক বিশাল স্যামন মাছ। কিন্তু হুইল গুটিয়ে সেটাকে তীরে আনার আগেই সুতা-মাছ সব জড়িয়ে গেল সমুদ্র শৈবালের স্তূপে। স্বামী চিৎকার করে স্ত্রীকে বললেন, ওগো জলদি করো। ঝাঁপ দাও! সাঁতরে চলে যাও ওই শ্যাওলাগুলোর কাছে! ডুব দিয়ে সুতাটা ছাড়াও। নইলে হাঙরগুলো মাছটাকে টুকরো টুকরো করে ফেলবে।
৪. মৎস্যশিকারির প্রতিবেশী: এই যে রাম বাবু! কাল নাকি আপনারা কয়জন মিলে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন? হে হে! তা মেজো মাছটা কে ধরলেন? হে হে!
রাম বাবু: মেজো মাছ? সেটা আবার কী?
প্রতিবেশী: হে হে! মানে সবচেয়ে বড় মাছের পরেরটা। সবচেয়ে বড় মাছটা তো নির্ঘাত আপনিই ধরেছেন, হে হে! তার পরের বড় মাছটা কে ধরলেন, সেটাই জানতে চাইছি! হে হে!
৫. এক মেছুড়ে গপ্পো বলছে, সেদিন জেটির ধারে ছিপ নিয়ে বসেছি। বসে আছি তো বসেই আছি। হঠাৎ ফাতনা নড়ে উঠল। স্বচ্ছ জলের ভেতর দিয়ে দেখি একটা পুঁটিমাছ টোপ গিলছে। এই তোমার কড়ে আঙুলের সাইজ। ওইটুকু মাছটাকে তুলব কি না ভাবছি। এমন সময় দেখি বেশ বড় একটা রুইমাছ পুঁটিটাকে গিলে ফেলল। সবে টান দেওয়ার উপক্রম করেছি। দেখি কী একটা বিশাল বোয়াল রুইটাকে কপাত করে খেয়ে ফেলল। শাবাশ বলে দিলাম ছিপে টান।
তারপর?- অধৈর্য শ্রোতা জানতে চান, ‘তারপর কী হলো? আপনি কি বোয়ালটাকে তুললেন?’
-না, আর তোলা হলো কই? পুঁটিমাছটাই যে বড়শি থেকে ছিঁড়ে গেল!
৬. মেছুড়ের বাড়িতে অনেক দিন বাদে বন্ধু এসেছেন। ড্রয়িংরুমে দেখেন কাচের বাক্সে বড় একটা মাছ স্টাফ করে সাজিয়ে রাখা আছে। ব্যাপারটা কী জানতে চাইলে মেছুড়ে বললেন, গতবার মাছ ধরতে গিয়ে এটা পেয়েছিলাম। একা একটা ডিঙি নিয়ে বেরিয়েছিলাম। মাছটা টোপ গেলার পর কয়েক ঘণ্টা আমার তো নাকানিচুবানি অবস্থা। ডিঙি সামলাই, না মাছ সামলাই। ডিঙি প্রায় উল্টে যায় এমন অবস্থা! আর তুমি তো জানোই আমি সাঁতার জানি না। সে এক জীবন-মরণ অবস্থা! হয় মাছ, না হয় আমি- যেকোনো একজন বাঁচবে।
তবে- বন্ধু উত্তর দিলেন, ডেকোরেশনের দিক থেকে মাছটাই ভালো বলে আমার মনে হয়!
৭. মাছ ধরার নেশা নাকি সবকিছু ভুলিয়ে দেয়। কিন্তু বিয়ের কথা যে ভোলে না, নিচের গল্পটা তার প্রমাণ।
এক প্রৌঢ় এবং এক যুবক মাছ ধরতে বেরিয়েছে। সেদিন সত্যিই তাদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল। প্রচুর মাছ ধরে তারা দিনের শেষে যখন বাড়ি ফিরছে তখন প্রৌঢ় বললেন, দিনটা দারুণ ছিল! কি বলো?
: যা বলেছেন! এত বড় বড় মাছ কখনো তুলিনি। যুবকের উত্তর।
-তা হলে আগামীকাল সকালে ফের আসব! কি হে, রাজি আছ তো?
: আগামীকাল? আগামীকাল যে আমার বিয়ে! থাকগে, বিয়েটা না হয় এক দিন পিছিয়ে দেব।
৮. চার মহিলা ব্রিজ খেলছেন। ম্যান্টেলপিসের ওপর স্টাফ করা বিশাল হাঙরটা সবারই দৃষ্টি আকর্ষণ করছিল। গৃহকর্ত্রী বেশ গর্বের সঙ্গে বললেন, আমি এবং আমার স্বামী গভীর সমুদ্রে এই হাঙরটাকে ধরেছিলাম।
: কিন্তু হাঙরটাকে বেশ মোটা লাগছে। ওটার পেটের ভেতর কী পোরা আছে?
-আমার স্বামী!
৯. নদীর ধারে তাঁবু গেড়ে দুজন মাছ ধরছেন। ফিশিং ইন্সপেক্টর যথারীতি হাজির।
এই ছিপটা কার আমি জানতে চাই- ইন্সপেক্টর গম্ভীর গলায় বলেন।
-আমার।
: আপনি কি জানেন না এখানে মাছ ধরা নিষিদ্ধ?
-জানি! তবে সত্যি কথাই বলি, আমরা কিন্তু মাছ ধরছি না। আমরা একটা সুতায় বিয়ারের বোতল বেঁধে সেটাকে নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছি মাত্র! যাতে বিয়ারটা ঠাণ্ডা হয়। বুঝেছেন তো?
: হুম! ইন্সপেক্টরের গম্ভীর মুখ গম্ভীরতর হয়। আমার সারা জীবনের অভিজ্ঞতায় কখনো কোনো বিয়ারের বোতল দেখিনি যেটা কি না বৃত্তাকার ঘোরে আর মাঝে মাঝে নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য জলের ওপর ভেসে ওঠে!
১০. : আচ্ছা জিম, যে বিশাল মাছটা তোমার সুতা ছিঁড়ে পালিয়ে গিয়েছিল, সেটা ঠিক কত বড় ছিল?
-সে তো ভাই বলতে পারব না? এটুকু জানি, আমার হুইলে ৫০ গজ নতুন সুতা ছিল। মাছটা টোপ গিলেই উজানে ছুটল। হুইলের সুতাও শেষ হলো, আর আমি দেখলাম মাছের লেজ তখনো নৌকার ধার দিয়ে চলেছে।
১১. অনেকক্ষণ পাশে দাঁড়িয়ে অন্যের মাছ ধরা দেখছেন এক ভদ্রলোক। মাঝেমধ্যে ফুট কাটছেন। মৎস্য শিকারির মেজাজও স্ফুটনাঙ্কের কাছাকাছি চলে যাচ্ছে। এক সময় দর্শক ভদ্রলোক প্রশ্ন করেন, আচ্ছা, আজ কি মাছ ঠোকরাচ্ছে না?
ক্রুদ্ধ মৎস্যশিকারি উত্তর দিলেন, জানি না জনাব! আর যদি ঠুকরেও থাকে, তারা একে অন্যকে ঠোকরাচ্ছে!