
১. হারুন তার গরুর গাড়ি ভালোই চালাচ্ছিল কিন্তু পথের মাঝামাঝি এসে রাস্তার গর্তটা ঠিকমতো খেয়াল করতে পারেনি। তারপর যা হওয়ার তা-ই হলো। পুরো গাড়ি কাত হয়ে পড়ল। গাড়িতে যে ধানের বস্তা ছিল সেগুলোও গাড়ি থেকে একপাশে গড়িয়ে পড়ল।
ঠিক এমন সময় হারুনের স্কুলের বন্ধু সোলেমান পাশ দিয়েই যাচ্ছিল। সে হারুনকে দেখে বলল, ‘স্কুল মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা চলছে। চল দুজনে মিলে দেখে আসি।’ হারুন বলল, ‘না বাবা না, আমি এখন গেলে আব্বা রাগ করবে। পরে যাব।’
কিন্তু সোলায়মান এতই চাপাচাপি শুরু করল যে, সে না গিয়ে পারল না। এক ঘণ্টা পর যখন খেলা শেষ হলো তখন হারুন বলল, ‘আমি এখন যাই রে।’
সোলায়মান বলল, ‘এখনই যাবি কেন? মাত্র খেলা শেষ হলো। এখন ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার দেবে। সেটা দেখে না গেলে লোকে কী বলবে বল?’
হারুন বলল, ‘কিন্তু না গেলে যে আব্বা বকা দেবে।’
সোলায়মান বললেন, ‘আরে বকা দেবে না। পুরস্কার বিতরণীটা দেখেই যা।’
অগত্যা হারুন আরও আধা ঘণ্টা পুরস্কার বিতরণী দেখলেন।
এর মধ্যে সন্ধ্যা প্রায় ঘনিয়ে এল। আর থাকা যায় না। হারুন সোলায়মানকে বললেন, ‘দোস্ত আমি আর থাকব না। এখন যদি না যাই তবে আব্বা আমাকে আস্ত রাখবে না।’
হারুনের এই কথা শোনার পর সোলায়মান এমন ভাব করল যেন এই জীবনে সে এমন অদ্ভুত কথা শোনেনি।
সে বলল, ‘আরে এখন তো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে, মানে গান বাদ্য বাজনা। আর এই সময় তুই চলে যেতে চাইছিস। তোর মতো বোকা আমি কখনো দেখিনি।’
হারুন বলল, ‘বোকা-চালাকের বিষয় না। আমি এখন না গেলে আব্বা খুবই মাইন্ড করবে।’
সোলায়মান রাগ হয়ে বললেন, ‘খালি বাবা রাগ করবে, বাবা রাগ করবে বলছিস। কোথায় তোর বাবা?’
হারুন বললেন, ‘কেন, গাড়ি উল্টে যে ধানের বস্তা পড়ল, সেগুলোর নিচে।’
২. এটি ১৯৯৫ সালে একটি মার্কিন যুদ্ধ জাহাজের সঙ্গে কানাডা কর্তৃপক্ষের ওয়্যারলেস কথোপকথনের সত্য বিবরণ। রেডিও কথোপকথনটি ১০ অক্টোবর, ১৯৯৫ সালে কানাডিয়ান চিফ নেভাল অপারেশনস অফিসার প্রকাশ করেন।
কানাডিয়ান: হ্যালো, কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে বলছি। মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য অনুগ্রহ করে আপনারা আপনাদের জাহাজটি ১৫ ডিগ্রি দক্ষিণে ঘুরিয়ে ফেলুন। আপনাদের হাতে সময় আছে মাত্র ১৬ মিনিট। ওভার।
আমেরিকান: আমেরিকান কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে বলছি, আমরা আপনাদের মেসেজ পেয়েছি। আমরা আমাদের জাহাজ ঘুরাব না। সংঘর্ষ এড়াবার জন্য আপনারা ১৫ ডিগ্রি উত্তরে ঘুরে যান। ওভার।
কানাডিয়ান: এটা একবারেই অসম্ভব। সংঘর্ষ এড়াতে হলে আপনাদের ১৫ ডিগ্রি ঘুরতে হবে। ওভার।
আমেরিকান: আমি আমেরিকান যুদ্ধ জাহাজের ক্যাপ্টেন। আমরা নির্দেশ দিতে ভালোবাসি। কারও নির্দেশ শোনার অভ্যাস আমাদের নেই। সে কারণে আপনাদের জন্য এটাই ভালো হবে যে, আপনারা আপনাদের জাহাজ ঘুরিয়ে ফেলুন। ওভার।
কানাডিয়ান: তা হবে না। তা ছাড়া এটা কোনো নির্দেশ দেওয়ার ব্যাপার না। আমি আবার বলছি, আপনারা আপনাদের জাহাজ ঘুরিয়ে ফেলুন। সময় দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। সংঘর্ষ হলে আপনার ক্ষতিই বেশি হবে সেটা মাথায় রাখবেন। ওভার।
আমেরিকান: এটা আমেরিকান নৌবাহিনীর আটলান্টিক জোনের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানবাহী রণতরী ইউএস লিংকন। এ বহরে তিনটি ডেস্ট্রয়ার, তিনটি ক্রুজ জাহাজসহ বহু সাহায্যকারী যুদ্ধ জাহাজ আছে। আমাকে নির্দেশ দেওয়া আপনাদের মানায় না। আমি নির্দেশ দিচ্ছি আপনাদের জাহাজ ১৫ ডিগ্রি উত্তরে ঘুরিয়ে নিন। ওভার।
কানাডিয়ান: এটা আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত কানাডিয়ান সরকারের মালিকানাধীন একটা দ্বীপ। আমি সেই দ্বীপের লাইট হাউজের পরিচালক বলছি। আমরা এখান থেকে জাহাজের চলাচল পর্যবেক্ষণ করে কোন দিকে যেতে হবে তার পরামর্শ দিই। আপনাদের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়াবার জন্য দ্বীপ ঘুরানো সম্ভব না। ওভার।