ঢাকা ৫ চৈত্র ১৪৩১, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
English

বই অনেক কাজের জিনিস

প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:৪৮ পিএম
বই অনেক কাজের জিনিস
এঁকেছেন মাসুম

একা থাকলে আমাকে কেমন যেন বিষণ্নতায় পেয়ে বসে। তাই একা একা কোথাও যেতে একেবারেই ভালো লাগে না। একুশের বইমেলা চলছে। তাই অফিস কলিগ প্লাস আমার ক্লোজ বন্ধু ফিরোজকে বললাম, দোস্ত একুশের বইমেলা চলছে। চল, সেখান থেকে বেড়িয়ে আসি। 
ফিরোজ হিসাবের খাতা থেকে মাথা তুলে বলল, বইমেলা! আমার ভাই বইমেলায় যেতে একেবারেই ভালো লাগে না।
আমি অবাক, এটা আবার কেমন কথা? বই ভালো লাগবে না কেন? 
ফিরোজ বলল, আমার কাছে সব বই একই রকম লাগে। তা ছাড়া একবার বই পড়ে ফেললে সেটা আর কোনো কাজে লাগে না। শুধু শোকেসে সাজিয়ে রাখতে হয়। শোকেসেই যদি সাজাব, তাহলে শোপিস দিয়ে সাজাই, কী বলেন?
আমি ফিরোজের সঙ্গে একমত হতে পারলাম না, এটা কী বললে, ভাই? তোমার মতো শিক্ষিত লোকের কাছ থেকে এমন কিছু আশা করিনি। পড়ে ফেললে বই কোনো কাজে লাগে না, এটা কে বলল? বই আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের একটা অংশ। বই ছাড়া আমাদের এক দিনও কি চলে? চলে না। এই যেমন আলম সাহেবের কথাই ধরো। তিনি আমাদের পাশের বাসায়ই থাকেন। গত শুক্রবারের কথা। হঠাৎ কী মনে করে তাদের বাসায় উপস্থিত হলাম। তিনি আমাকে অন্দরমহলে নিয়ে বসালেন। বাসায় আর কাউকে না দেখে জিজ্ঞেস করলাম, ভাবি-বাচ্চারা বেড়াতে গেছে নাকি? কাউকে দেখছি না যে?
আলম সাহেব বললেন, আর বলবেন না, ভাইসাহেব, গতকাল আপনার ভাবি আমার ওপর রাগ করে তার বাবার বাড়ি চলে গেছে। 
আমি বললাম, তাই নাকি? তা রান্নাবান্না করে কে? 
আলম সাহেব বললেন, আমিই করি। আমার রান্নার হাত বেশ ভালো। দাঁড়ান, আপনাকে চা বানিয়ে খাওয়াই।
কথা শেষ করেই তিনি রান্নাঘরের দিকে রওনা হলেন। বাসায় কেউ নেই দেখে আমিও তার পেছন পেছন গেলাম। আলম সাহেব চুলার পাশে রাখা একটা বই থেকে পাতা ছিঁড়ে তাতে ম্যাচ দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে চুলা ধরালেন। এমন সময় চুলার কোনা থেকে একটা তেলাপোকা বেরিয়ে দৌড় দিতেই আলম সাহেবের হাত বিদ্যুৎগতিতে সেই বইটা তুলে নিল। তারপর বইটা ধপাস করে পড়ল তেলাপোকার পিঠে। ততক্ষণে তেলাপোকার কম্ম সাবাড়। আলম সাহেবকে বিরক্ত না করে আমি আবার বসার রুমে ফিরে এলাম। 
কিছুক্ষণ পর বইকে ট্রে বানিয়ে সেটার ওপর চায়ের কাপ রেখে আলম সাহেব বসার রুমে এসে বললেন, নিন, চা রেডি। আমি চা নিয়ে এক চুমুক দিয়ে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আলম সাহেব আসলেই চমৎকার চা বানান। চুমুক দেওয়া শেষে চায়ের কাপটা সামনের টি-টেবিলে রাখতেই টেবিলটা একপাশে কাত হয়ে যেতে চাইল। কাত হওয়ার কারণে কাপ থেকে একটু চা ছলাৎ করে পড়ে গেল, তবে আমি কাপটা সামলে নিলাম। আলম সাহেব বইয়ের একটা পাতা ছিঁড়ে টিস্যু পেপার বানিয়ে পড়ে যাওয়া চাটুকু মুছে নিতে নিতে বললেন, সরি, ভাই! টেবিলের একটা পা কয়েক দিন আগে সামান্য ভেঙে গেছে। অতঃপর বইটা সেই ভাঙা পায়ের নিচে ঢুকিয়ে দিয়ে আপাতত টেবিলের হেলে যাওয়া থামালেন। 
আমি আস্তে আস্তে চা শেষ করে আলম সাহেবকে জিজ্ঞেস করলাম, ভাবির সঙ্গে ঝগড়া কী নিয়ে?
তিনি বললেন, সামান্য ব্যাপার, বুঝলেন। গত রাতে ছোট ছেলেটা হিসু করে বালিশ ভিজিয়ে ফেলেছিল। কোনো কিছু না পেয়ে গোটা সাতেক মোটা মোটা বইকে বালিশ বানিয়ে শুতে গেছি। সে নিয়েছে তিনটা বই আর আমি চারটা। আমি কেন চারটা নিলাম, এ ইস্যুতে কথাকাটাকাটি। তারপর ফাটাফাটি, মানে মারামারি। 
আমি বললাম, তার মানে আপনি ভাবিকে মারলেন? 
আলম সাহেব বললেন, আরে না ভাই, ও-ই আমাকে বই দিয়ে আচ্ছামতো পেটাল। তারপর নিজেই রাগ করে চলে গেল। 
আমি অবাক হলাম, ভাবির সঙ্গে পারলেন না! ছি! বাজারে এই কথা ছড়ালে আপনার মান-ইজ্জত কোথায় যাবে, একবার ভেবে দেখেছেন? 
আলম সাহেব কিছুটা লজ্জিত হলেন। মাথাটা নিচের দিকে রেখে আস্তে আস্তে বললেন, আসলে ও যে বইটা নিয়ে আক্রমণ করেছিল, সেটা পাতলা ছিল। আমার হাতে ছিল মোটা বই। মোটা বইয়ের কারণে আমি আসলে ফাইটিংয়ে সুবিধা করতে পারিনি। ব্যাপারটা দেখে ছেলে-মেয়েরাও লজ্জা পেয়েছিল। কিন্তু কী করব বলেন, বাস্তবতা তো মেনে নিতে হবে। 
আমি আর কিছু বললাম না। আলম সাহেবের বাসায় বইয়ের বহুবিধ ব্যবহার দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। এবারও কি আপনি বলবেন যে, পড়ার পর বই কাজে লাগে না?
ফিরোজ হার মানলেন, আচ্ছা ঠিক আছে। বই যখন এত কাজের জিনিস, চল তাহলে বইমেলায় যাই।

আজকের সেরা জোকস: মোবাইল ফোন

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৩:০৯ পিএম
আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৩:১২ পিএম
আজকের সেরা জোকস: মোবাইল ফোন
ছবি এআই

মা: মোবাইল নিয়া কই যাইতাছোস?
ছেলে: বাথরুমে।
মা: কেন?
ছেলে: যদি কারেন্ট যায়, তাই।
মা: তো হেডফোন নিতাছোস ক্যান?
ছেলে: ভয় লাগলে গান শুনুম তাই।
মা: কাঁথা-বালিশও নিয়া যা, গান শুনতে শুনতে যদি ঘুম আসে!

হাসির গল্প ড্রাইভিং লাইসেন্স

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৩:২৩ পিএম
ড্রাইভিং লাইসেন্স
ছবি এআই

মাসুম আর নিতু একে অন্যকে ভালোবাসে। তাই ভালোবাসা দিবসে তারা দুজনে মোটরসাইকেলে চেপে চলে গেল সেই পদ্মার পাড়ে। সারা দিন সেখানে কাটিয়ে সন্ধ্যার একটু আগে তারা আবার নিজের শহরে ঢুকে পড়ল। তারপর ভালো একটা চাইনিজে ঢুকে ভেজিটেবল রাইস, ফ্রাইড চিকেন, বিফ ওনিয়ন কারকুরি আর মাসালা শ্রিম্প দিয়ে ভূরিভোজ সেরে বাড়ি যাওয়ার জন্য রেডি হলো। মাসুম তার বাইকে উঠতে যাবে এমন সময় নিতু বলল, ‘আজ আমি বাইক চালাই না, প্লিজ?’ 
ভ্যালেন্টাইন দিবসে প্রেমিকার অনুরোধ রক্ষা না করে কি পারা যায়। অগত্যা মাসুমকে পেছনে বসিয়ে নিতু বাইক চালানো শুরু করল। সবকিছু ভালোই চলছিল। সমস্যা শুরু হলো কারওয়ান বাজারে এসে।
সেখানে আসতেই এক ট্রাফিক সার্জেন্ট মোটরসাইকেল থামানোর নির্দেশ দিলেন। ঘটনাচক্রে মাসুম জানত যে এই সার্জেন্টের মাথায় ঘিলু একটু কম আছে। সে কানে কানে নিতুকে তথ্যটা জানিয়ে বলল, ‘ভয় পেও না। বুদ্ধি করে মানিয়ে নাও।’ 
মিতুও চালাক কম না। সে মাসুমকে অভয় দিয়ে সার্জেন্টকে জিজ্ঞাসা করল, ‘কী সমস্যা?’ 
সার্জেন্ট বললেন, ‘হে হে হে ম্যাডাম, আপনি নির্ধারিত গতির চেয়ে বেশি জোরে বাইক চালাচ্ছিলেন। আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সটা একটু দেখি হে হে হে...।’ 
মিতু ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবে কোথায়। তবুও নিজের পার্সে সেটা খোঁজার ভান করে বলল, ‘মনে হয় বাসায় ফেলে এসেছি অফিসার।’ 
অফিসার বললেন, ‘হে হে হে বাসায় ফেলে আসলে কেমনে হবে খালাম্মা? অন্য কোনো পরিচয়পত্র আছে নাকি, হে হে হে?’ 
এমন সময় মিতুর মাথায় এক বুদ্ধি এল। সে পার্স থেকে ছোট আয়নাটা বের করে অফিসারের হাতে দিল। অফিসার আয়নাটাকে পরিচয়পত্র ভেবে নিজের সামনে মেলে ধরে বলল, ‘ও! আপনাকে দেখে না চিনলেও পরিচয়পত্রে আপনার ছবি দেখে কেমন যেন চেনা চেনা লাগছে। ছবি দেখে বুঝতে পারছি আপনি আমার মতো পুলিশে চাকরি করেন। ওকে, আপনি পুলিশ বলে ছেড়ে দিলাম। ভবিষ্যতে বাইকের গতিটা একটু কমিয়ে চালাবেন।’

হাসির গল্প গণিতবিদ এবং তার স্ত্রী

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৩:২০ পিএম
আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৩:২০ পিএম
গণিতবিদ এবং তার স্ত্রী
ছবি এআই

নোয়াখালী শহরে এক নামকরা গণিতবিদ বাস করতেন। তিনি দিনরাত গণিত নিয়ে এতই ব্যস্ত থাকতেন যে, গণিত ছাড়া দুনিয়ার আর কোনো প্র্যাক্টিকাল বিষয় সম্পর্কে তার পরিষ্কার ধারণা ছিল না। এই নিয়ে তার স্ত্রী সব সময়ই তার ওপর চোটপাট করতেন। কাজেই স্ত্রীর মন রক্ষা করার জন্য একদিন তিনি আশ্বাস দিয়ে বললেন, ‘যাও এখন থেকে আমি তোমার কাছ থেকে টুকটাক সংসারের কাজকর্ম শিখব।’ 
স্বামীর পরিবর্তন দেখে স্ত্রী খুবই আনন্দিত হয়ে প্রথমেই তাকে চা তৈরি করা শিখিয়ে দিলেন।
স্ত্রী জানতেন, তার স্বামী চাইলেও গণিত থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারবেন না। তাই চা তৈরির নিয়মটা স্বামীর মনে আছে কি না, সেটা পরীক্ষা করার জন্য দুদিন পরে স্ত্রী জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আচ্ছা বলো তো, তোমাকে যদি একটা কেটলি আর একটা দেশলাই দেওয়া হয়, আর বলা হয় ঘরে গ্যাসের স্টোভ আছে এবং কলে পানি আছে, তাহলে তুমি ঠিক কীভাবে চায়ের পানি গরম করবে?’
জটিল সব গণিতের সমস্যায় বেচারা স্বামী নিয়মটা ভুলেই গিয়েছিলেন। কিন্তু অনেক ভেবে কিছুটা স্মরণশক্তি থেকে আর বাকিটা অনুমান থেকে ভয়ে ভয়ে বললেন, ‘প্রথমে কেটলিতে পানি নেব। তারপর দেশলাই জ্বালিয়ে গ্যাসের স্টোভটা চালাব। তারপর কেটলিটা স্টোভের ওপর বসিয়ে পানিটা গরম করলেই তো মনে হয়ে যাবে। তাই না?’
‘হ্যাঁ, হয়েছে’ স্ত্রী বললেন। ‘আচ্ছা এবার বলো তো, যদি তোমাকে একটা পানিভর্তি কেটলি, একটা দেশলাই এবং একটা গ্যাসের স্টোভ দেওয়া হয়, তাহলে কী করবে?’
গণিতজ্ঞ এবার হাসিমুখে উত্তর দিলেন, ‘এটা তো খুবই সহজ। প্রথমে কেটলি থেকে পানিটা ফেলে দেব। তাহলেই সমস্যাটা ঠিক আগের সমস্যাটার মতো হয়ে যাবে। আর সেটার সমাধান তো একটু আগেই করেছি।

কোচিংয়ের দিনগুলোতে প্রেম

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৩:১৬ পিএম
কোচিংয়ের দিনগুলোতে প্রেম
এঁকেছেন মাসুম

বর্তমান অবস্থান: নুরুল মিয়ার টং দোকান
আমি, রাজু আর তন্ময় বসে চা পান করছিলাম। রাজু ব্যাংকার। ছোটখাটো একটা ভুঁড়ি উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে ওর। তন্ময়কে আমরা ডাকতাম মৈনাক পর্বত। এখনো ডাকি। এমনই বিশাল সাইজ তার। আমি ছাড়া বাকি দুজনই বিয়ে সেরে ফেলেছে। আমরা এখন আর দেশের সব সুন্দরীকে নিয়ে আলোচনা করি না। আমাদের আলোচনার বিষয় দেশের সমস্যা, জাতিসংঘের অধিবেশন নিয়ে ফলোআপ, জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা ইস্যু আরও যত খবর। 
আজকের বিষয় ছিল কোচিং সেন্টার বন্ধ করা নিয়ে। খবর শুনে রাজু চায়ে চুমুক দিয়ে বলল, ‘বলে কী? কোচিং বন্ধ হয়ে গেলে দেশজুড়ে প্রেম-পিরিত হবে কেমনে?’
‘আর বেঞ্চ ভাঙা হবে কেমনে?’ 
রাজুর কথা শুনে দুজনেই হেসে ফেললাম। হাসতে হাসতে মৈনাক পর্বত আমার পিঠে একটা কিল বসিয়ে দিল। এটা ওর ছোটবেলার অভ্যাস। 

১২ বছর আগে
এইচএসসি পরীক্ষার আগে আমরা একটা কোচিংয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। কোচিং সেন্টার বাছাই করার ব্যাপারে আমরা প্রাধান্য দিতাম সুন্দরী মেয়ের সংখ্যা, বাসা থেকে কোচিংয়ের দূরত্ব আর আশপাশের টং দোকানের অবস্থা বুঝে। পড়ালেখার মান খুব বেশি ভাবতাম না। 
‘পড়ালেখা সব নিজের কাছে!’ আমাদের কলেজের শিকদার স্যারের এই ডায়ালগ আমরা প্রায় ছাড়তাম।
মামুন কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়ে গেলাম আমরা তিনজন। আমাদের মধ্যে পড়ালেখায় সিরিয়াস বেশি তন্ময়। সে এই কোচিংয়ে আসতে চাইছিল না। তাকে রাজু ধমক দিয়ে বলে, ‘পাশেই দুইটা গার্লস কলেজ। তারপর মনু মিয়ার পেঁয়াজু-বেগুনি। এমন সুজলা সুফলা পরিবেশ পাবি আর কোথাও?’
সেই কোচিংয়ে ভর্তির পর একদিন পরীক্ষার সময় দেরি করে আসে তন্ময়। তাড়াহুড়ো করে বসতে গিয়ে ধড়াম করে পুরো বেঞ্চসহ ভেঙে পড়ে। তার পেছনে বেঞ্চে বসা এক মেয়ে অবাক হয়ে বলে, ‘কী হলো’?
তন্ময় আমাদের বন্ধু, তাই আমরা অনেক কষ্টে হাসি চেপে রেখেছিলাম। কিন্তু মেয়েটার ওই ‘কী হলো’ প্রশ্নে আর হাসি আটকে রাখতে পারিনি। সেই ‘কী হলো’ এতটাই হিট করে যে, পরে আমরা সেটি অনেকবারই ব্যবহার করেছি। মনে আছে এইচএসসি পরীক্ষায় হিসাববিজ্ঞান প্রশ্ন ভয়ানক কঠিন করে। ওটা দেখে পরীক্ষার হলে আমার পেছনে বসা রাজু ফিসফিস করে বলে, ‘কীরে কী হলো?’ 
রাজু কোচিংয়ে যেত অন্য কারণে। সে একটা মেয়েকে পছন্দ করে। নাম পিয়া। সে ওই মেয়েকে ইম্প্রেস করবে। ওই মেয়ে আবার মারাত্মক ট্যালেন্টেড। এদিকে রাজু প্রায় সময় বরাবর ৩৫ পায়। আর এক গ্রেস দিয়ে ওকে পাস করানো হয়। একদিন রাজু খবর আনল সকালের ব্যাচে যে প্রশ্নে পরীক্ষা হয়, বিকেলেও সেই একই প্রশ্নে। ‘আমরা যদি সকালের প্রশ্ন জোগাড় করতে পারি আর ঠেকায় কে!’
শুনে তন্ময় বলল, ‘এইভাবে পাস করে কি লাভ হবে?’
‘তুই গারো পাহাড়ের হাতি চুপ থাক।’
শরীর নিয়ে কেউ খোঁটা দিলে খুবই মাইন্ড করত তন্ময়, তাই ও চুপ হয়ে গেল। কীভাবে কীভাবে প্রশ্ন জোগাড় করে ফেলল রাজু। ফলাফল হলো ভয়াবহ। অর্থনীতি পরীক্ষায় রাজু ৭৭ আর আমি ৬৫। তন্ময় সৎ থেকে পেয়েছে ৫৯। পিয়া পেয়েছে ৬৮। মার্কস শুনে পুরো ক্লাস হা করে রাজুর দিকে তাকিয়ে থাকল। রাজু দুদিন টি-শার্টের কলার তুলে হাঁটাচলা করল। পরের সব পরীক্ষায় রাজু ফাটিয়ে দিল। প্রায় সর্বোচ্চ পাচ্ছিল। ঝামেলা লেগে গেল ব্যবস্থাপনা পরীক্ষার দিন। বিকেলের প্রশ্নটা বদলে দিল। প্রশ্ন দেখে সেই ক্ষেপে গেল রাজু। ‘এইসব কী? এগুলা কি ভদ্রলোকের কাজ। সকালে এক কথা বিকেলে আরেক কথা!’
আমি বললাম, ‘হালা আস্তে। কেউ শুনে ফেললে তোর সব অ্যাচিভমেন্ট যাবে।’
যদিও ততদিনে পিয়া রাজুর ওপর ইম্প্রেস। এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। রাজু প্রপোজ করবে পিয়াকে। কোচিংয়ের ওয়াশরুমের সামনে গিয়ে সে অবস্থান নিল। যেভাবে এখন ডি-বক্সের ভেতরে অবস্থান নেয় মেসি। আমি গিয়ে পিয়াকে বললাম, ‘তোমার সঙ্গে নাকি তন্ময়ের কী কথা আছে। ওয়াশরুমের ওখানে যাও।’
পিয়া কেমন একটা মুচকি হেসে রওনা দিল। প্রায় ১৫-২০ মিনিট পর এসে পিয়া বলল, ‘কই তোমার বন্ধু?’
তন্ময় ছিল আমার পাশে। সে ফিসফিস করে বলল, ‘কী হলো?’
দৌড়ে গিয়ে দেখলাম রাজু বাথরুমের ভেতরে। আমরা গেলে সে বের হলো। 
‘কী হইছে তোর?’ অবাক আমি।
‘কেমন যেন পেটটা মোচড় দিয়ে উঠল!’
হো হো করে হেসে ফেললাম আমরা। সেই পিয়াকেই পরে বিয়ে করে রাজু। 
বর্তমান অবস্থান: নুরুল মিয়ার টং দোকান
‘তোদের বিয়ের দিন স্টেজে আমি কি বলেছিলাম মনে আছে?’ জিজ্ঞাসা করলাম রাজুকে।
‘পেট মোচড় দিচ্ছে নাকি রাজু?’ তন্ময় মনে করিয়ে দিল।
হাসতে হাসতে সেই শুরুতে বলা কথাটাই রাজু আবার বলল, ‘কোচিং বন্ধ হয়ে গেলে দেশজুড়ে প্রেম পিরিত হবে কেমনে?’

আজকের সেরা জোকস: শিয়াল এবং সিংহ

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০২:০২ পিএম
আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০২:০৭ পিএম
আজকের সেরা জোকস: শিয়াল এবং সিংহ
ছবি এআই

সাত সকালে গর্ত থেকে বের হয়েই শিয়াল একবারে সিংহের মুখে পড়ে গেল। শিয়ালের পথ আগলে সিংহ বলল, ভালোই হল আজকের নাস্তাটা তোমাকে দিয়েই সারতে চাই। 
শিয়াল কোনোমতে মুখে হাসি ধরে রেখে বলল, আমাকে খেতে চান সে তো আমার সৌভাগ্য, কিন্তু শিয়ালনীর সাথে একটা ব্যাপার নিয়ে আমার তুমুল ঝগড়া হয়েছে। আপনি দয়া করে বিচারটা করে দেন, তারপর না হয় আমাদের দুজনকেই খাবেন। আফটার আল আপনি আমাদের রাজা।
সিংহ ভাবল এ তো সুখবর। একসঙ্গে দুটোকে খাওয়া যাবে। সে বলল, তোমার শিয়ালনী কোথায়?
— ঐ তো ঐ গর্তটার ভিতরে। চলুন না মহারাজ।
সিংহ গেল। গর্তের কাছে গিয়ে শিয়াল উচ্চস্বরে ডাকাডাকি শুরু করে দিল। 
— কইগো বেরিয়ে এস। মহারাজা নিজে এসেছেন আমাদের বিচার করবেন বলে তারপর খাবেন।
দু-একবার ডাকাডাকি করার পরও শিয়ালনী বের হয় না দেখে শিয়াল বলল, মহারাজা, মনে হয় ও ঘুমিয়ে পড়েছে। আপনি দাঁড়ান আমি ডেকে নিয়ে আসি। আমাদের ছোট গর্তে তো আর আপনি ঢুকতে পারবেন না। 
বলে গর্তে ঢুকে গেল শিয়াল।
গর্ত থেকে শিয়াল আর বের হয় না দেখে সিংহ হুঙ্কার দিল, কি হল বেরুচ্ছ না কেন? 
এ সময় গর্তের ভিতর থেকে আওয়াজ এল, মহারাজা আপনাকে আর বিচার করতে হবে না। আমাদের মধ্যে মিল মহব্বত হয়ে গেছে।