ঢাকা ৩ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
English

কোচিংয়ের দিনগুলোতে প্রেম

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৩:১৬ পিএম
কোচিংয়ের দিনগুলোতে প্রেম
এঁকেছেন মাসুম

বর্তমান অবস্থান: নুরুল মিয়ার টং দোকান
আমি, রাজু আর তন্ময় বসে চা পান করছিলাম। রাজু ব্যাংকার। ছোটখাটো একটা ভুঁড়ি উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে ওর। তন্ময়কে আমরা ডাকতাম মৈনাক পর্বত। এখনো ডাকি। এমনই বিশাল সাইজ তার। আমি ছাড়া বাকি দুজনই বিয়ে সেরে ফেলেছে। আমরা এখন আর দেশের সব সুন্দরীকে নিয়ে আলোচনা করি না। আমাদের আলোচনার বিষয় দেশের সমস্যা, জাতিসংঘের অধিবেশন নিয়ে ফলোআপ, জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা ইস্যু আরও যত খবর। 
আজকের বিষয় ছিল কোচিং সেন্টার বন্ধ করা নিয়ে। খবর শুনে রাজু চায়ে চুমুক দিয়ে বলল, ‘বলে কী? কোচিং বন্ধ হয়ে গেলে দেশজুড়ে প্রেম-পিরিত হবে কেমনে?’
‘আর বেঞ্চ ভাঙা হবে কেমনে?’ 
রাজুর কথা শুনে দুজনেই হেসে ফেললাম। হাসতে হাসতে মৈনাক পর্বত আমার পিঠে একটা কিল বসিয়ে দিল। এটা ওর ছোটবেলার অভ্যাস। 

১২ বছর আগে
এইচএসসি পরীক্ষার আগে আমরা একটা কোচিংয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। কোচিং সেন্টার বাছাই করার ব্যাপারে আমরা প্রাধান্য দিতাম সুন্দরী মেয়ের সংখ্যা, বাসা থেকে কোচিংয়ের দূরত্ব আর আশপাশের টং দোকানের অবস্থা বুঝে। পড়ালেখার মান খুব বেশি ভাবতাম না। 
‘পড়ালেখা সব নিজের কাছে!’ আমাদের কলেজের শিকদার স্যারের এই ডায়ালগ আমরা প্রায় ছাড়তাম।
মামুন কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়ে গেলাম আমরা তিনজন। আমাদের মধ্যে পড়ালেখায় সিরিয়াস বেশি তন্ময়। সে এই কোচিংয়ে আসতে চাইছিল না। তাকে রাজু ধমক দিয়ে বলে, ‘পাশেই দুইটা গার্লস কলেজ। তারপর মনু মিয়ার পেঁয়াজু-বেগুনি। এমন সুজলা সুফলা পরিবেশ পাবি আর কোথাও?’
সেই কোচিংয়ে ভর্তির পর একদিন পরীক্ষার সময় দেরি করে আসে তন্ময়। তাড়াহুড়ো করে বসতে গিয়ে ধড়াম করে পুরো বেঞ্চসহ ভেঙে পড়ে। তার পেছনে বেঞ্চে বসা এক মেয়ে অবাক হয়ে বলে, ‘কী হলো’?
তন্ময় আমাদের বন্ধু, তাই আমরা অনেক কষ্টে হাসি চেপে রেখেছিলাম। কিন্তু মেয়েটার ওই ‘কী হলো’ প্রশ্নে আর হাসি আটকে রাখতে পারিনি। সেই ‘কী হলো’ এতটাই হিট করে যে, পরে আমরা সেটি অনেকবারই ব্যবহার করেছি। মনে আছে এইচএসসি পরীক্ষায় হিসাববিজ্ঞান প্রশ্ন ভয়ানক কঠিন করে। ওটা দেখে পরীক্ষার হলে আমার পেছনে বসা রাজু ফিসফিস করে বলে, ‘কীরে কী হলো?’ 
রাজু কোচিংয়ে যেত অন্য কারণে। সে একটা মেয়েকে পছন্দ করে। নাম পিয়া। সে ওই মেয়েকে ইম্প্রেস করবে। ওই মেয়ে আবার মারাত্মক ট্যালেন্টেড। এদিকে রাজু প্রায় সময় বরাবর ৩৫ পায়। আর এক গ্রেস দিয়ে ওকে পাস করানো হয়। একদিন রাজু খবর আনল সকালের ব্যাচে যে প্রশ্নে পরীক্ষা হয়, বিকেলেও সেই একই প্রশ্নে। ‘আমরা যদি সকালের প্রশ্ন জোগাড় করতে পারি আর ঠেকায় কে!’
শুনে তন্ময় বলল, ‘এইভাবে পাস করে কি লাভ হবে?’
‘তুই গারো পাহাড়ের হাতি চুপ থাক।’
শরীর নিয়ে কেউ খোঁটা দিলে খুবই মাইন্ড করত তন্ময়, তাই ও চুপ হয়ে গেল। কীভাবে কীভাবে প্রশ্ন জোগাড় করে ফেলল রাজু। ফলাফল হলো ভয়াবহ। অর্থনীতি পরীক্ষায় রাজু ৭৭ আর আমি ৬৫। তন্ময় সৎ থেকে পেয়েছে ৫৯। পিয়া পেয়েছে ৬৮। মার্কস শুনে পুরো ক্লাস হা করে রাজুর দিকে তাকিয়ে থাকল। রাজু দুদিন টি-শার্টের কলার তুলে হাঁটাচলা করল। পরের সব পরীক্ষায় রাজু ফাটিয়ে দিল। প্রায় সর্বোচ্চ পাচ্ছিল। ঝামেলা লেগে গেল ব্যবস্থাপনা পরীক্ষার দিন। বিকেলের প্রশ্নটা বদলে দিল। প্রশ্ন দেখে সেই ক্ষেপে গেল রাজু। ‘এইসব কী? এগুলা কি ভদ্রলোকের কাজ। সকালে এক কথা বিকেলে আরেক কথা!’
আমি বললাম, ‘হালা আস্তে। কেউ শুনে ফেললে তোর সব অ্যাচিভমেন্ট যাবে।’
যদিও ততদিনে পিয়া রাজুর ওপর ইম্প্রেস। এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। রাজু প্রপোজ করবে পিয়াকে। কোচিংয়ের ওয়াশরুমের সামনে গিয়ে সে অবস্থান নিল। যেভাবে এখন ডি-বক্সের ভেতরে অবস্থান নেয় মেসি। আমি গিয়ে পিয়াকে বললাম, ‘তোমার সঙ্গে নাকি তন্ময়ের কী কথা আছে। ওয়াশরুমের ওখানে যাও।’
পিয়া কেমন একটা মুচকি হেসে রওনা দিল। প্রায় ১৫-২০ মিনিট পর এসে পিয়া বলল, ‘কই তোমার বন্ধু?’
তন্ময় ছিল আমার পাশে। সে ফিসফিস করে বলল, ‘কী হলো?’
দৌড়ে গিয়ে দেখলাম রাজু বাথরুমের ভেতরে। আমরা গেলে সে বের হলো। 
‘কী হইছে তোর?’ অবাক আমি।
‘কেমন যেন পেটটা মোচড় দিয়ে উঠল!’
হো হো করে হেসে ফেললাম আমরা। সেই পিয়াকেই পরে বিয়ে করে রাজু। 
বর্তমান অবস্থান: নুরুল মিয়ার টং দোকান
‘তোদের বিয়ের দিন স্টেজে আমি কি বলেছিলাম মনে আছে?’ জিজ্ঞাসা করলাম রাজুকে।
‘পেট মোচড় দিচ্ছে নাকি রাজু?’ তন্ময় মনে করিয়ে দিল।
হাসতে হাসতে সেই শুরুতে বলা কথাটাই রাজু আবার বলল, ‘কোচিং বন্ধ হয়ে গেলে দেশজুড়ে প্রেম পিরিত হবে কেমনে?’

আজকের সেরা জোকস: মাছ ধরা

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২২ পিএম
আজকের সেরা জোকস: মাছ ধরা
ছবি এআই

▶ পুকুরের মালিক: ‘এখানে মাছ ধরা নিষেধ’- লেখাটা দেখেন নাই? 
শিকারি: আমি মাছ ধরি না তো, কেঁচোটাকে গোসল করাচ্ছি। 
পুকুরের মালিক: তাহলে বড়শিতে আটকাচ্ছেন ক্যান?
শিকারি: যদি ভাইগা যায়!

 

▶ প্রথম বন্ধু: বল তো সকাল আর বিকালের মধ্যে পার্থক্য কি? 
দ্বিতীয় বন্ধু: আমার কাছে দুটোই সমান। সকালে টিচাররা বকে, বিকেলে বাবা বকে।

 

▶ বাবা: কাঁদে না সোনামণি। বল, তোমাকে কে মেরেছে? 
মেয়ে: ওই যে লাল গেটওয়ালা বাড়ির ছেলেটি। 
বাবা: ওই বাড়িতে যমজ দুটি ছেলে থাকে। কোনটি মেরেছে বল। 
মেয়ে: যার গালে খামচির দাগ আছে, সে।

আজকের সেরা জোকস: তিন বন্ধু

প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:১৯ পিএম
আজকের সেরা জোকস: তিন বন্ধু
ছবি এআই

প্রথম বন্ধু: আমার বউ তানিয়ার কোনো তুলনা হয় না। চা খেতে গিয়ে আমার হাত থেকে কাপ পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে গেল। তানিয়া সেটা নিয়ে এমনভাবে আঠা লাগিয়ে দিল যে, বোঝারই উপায় নেই ওটা ভেঙেছিল।
দ্বিতীয় বন্ধু: একবার আমার প্যান্ট ছিঁড়ে গেল। আমার বউ সেই প্যান্ট এমনভাবে সেলাই করে দিলো যে, দেখে বুঝতেই পারবে না ওটা কোনোকালে ছিঁড়ে গিয়েছিল।
তৃতীয় বন্ধু: আমার বউ আমার শার্টটা ধুয়ে দিয়েছে। তাকিয়ে দেখ, বোঝার উপায়ই নেই যে ওটা ধোয়া হয়েছে।

ইরাকি শিশু

প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৯ পিএম
ইরাকি শিশু
এঁকেছেন মাসুম

আমেরিকার ইরাক আক্রমণের শুরুর দিকের কথা। যুদ্ধের ভয়াবহতার হাত থেকে বাঁচতে এক ইরাকি শিশু তার বাবা-মায়ের সঙ্গে আমেরিকা চলে গেল। সেখানে গিয়ে তাকে এক ইংলিশ স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হলো। যথাসময়ে শিক্ষক ক্লাসে এসে নতুন ছাত্রকে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার নাম কী বাবা?’ 
শিশুটি বলল, ‘আমার নাম জসিম।’
শিক্ষক বললেন, ‘তুমি এখন আমেরিকায় আছ। এখানে জসিম নাম ভালো শোনায় না। আজ থেকে তোমার নাম দিলাম জিমি, কেমন।’ 
জসিম বলল, ‘ঠিক আছে স্যার, আজ থেকে আমি একজন আমেরিকান এবং আমার নাম জিমি।’ 
বাসায় ফেরার পর মা জসিমকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আজ স্কুল কেমন কাটল?’ 
জসিম বলল, ‘খুব ভালো কেটেছে। তবে একটা বিষয় তোমাকে জানিয়ে রাখা দরকার যে, আমার নাম এখন আর জসিম নেই মা। আমি আমেরিকায় আছি, তাই আমার নাম এখন থেকে জিমি।’ 
জসিমের কথা শুনে তার মা সত্যিই রেগে গেলেন এবং বললেন, ‘এভাবে নাম পরিবর্তন করে তুমি তোমার ইতিহাস এবং সংস্কৃতিকে অপমান করেছ। তোমার কাছে আমি এটা আশা করিনি।’ 
অতঃপর রাগের একপর্যায়ে মা জসিমকে কয়েক ঘা লাগিয়ে দিলেন।
রাতে জসিমের বাবা বাসায় ফিরে এলেন। বাসায় ঢুকে ছেলেকে মনমরা হয়ে বসে থাকতে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কী ব্যাপার, এভাবে মনমরা হয়ে বসে আছ কেন?’ 
জসিম তাকে সব খুলে বললেন। কিন্তু এবার ফলাফল আরও খারাপ হলো। তিনি সব শুনে মায়ের চেয়ে বেশি ধোলাই করলেন।
পরদিন স্কুলে গিয়ে জসিমকে মন খারাপ করে বসে থাকতে দেখে সেই শিক্ষক জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমার কী হয়েছে জিমি?’ 
জসিম কাঁদো কাঁদো হয়ে বললেন, ‘ম্যাডাম, আমি আমেরিকান হওয়ার চার ঘণ্টার মধ্যে দুজন আরব আমাকে আক্রমণ করেছে।’

এক ঢিলে দুই পাখি

প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৬ পিএম
এক ঢিলে দুই পাখি
এঁকেছেন মাসুম

স্টিফেন জেরক্স হাসপাতালের বারান্দায় বসে আছেন। হাসপাতালে বসেও তার মন খুব ভালো। কারণ মিসেস স্টিফেন জেরক্স এখন লেবার রুমে আছেন। যেকোনো সময় ডাক্তার সুসংবাদ নিয়ে আসবেন।
বলতে না বলতেই লেবার রুমের দরজা খোলার আওয়াজ পাওয়া গেল। ডাক্তার না, একজন নার্স হাসতে হাসতে তার দিকে এগিয়ে আসছেন। নার্সের হাসি দেখে স্টিফেন জেরক্সের মনের টেনশন এক মুহূর্তে উড়ে গেল। 
নার্স এসে বললেন, ‘কনগ্র্যাচুলেশনস মি. জেরক্স, আপনার পুত্রসন্তান হয়েছে। তাও আবার একটা নয়, দুটো।’ 
এক ঢিলে দুই পাখির খবর শুনে জেরক্স সাহেব খুশিতে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলেন। মনে মনে তখনই দুই ছেলের নাম ঠিক করে ফেললেন, বড়টা হবে টিন আর ছোটটা হবে মার্টিন। একটা ধাতু অন্যটা পাখি।
সেই থেকে শুরু। কয়েক বছর পরের কথা। স্টিফেন জেরক্স একই ভাবে হাসপাতালের বারান্দায় পায়চারি করছেন। তবে এবার একা না, সঙ্গে টিন এবং মার্টিন আছে। মিসেস জেরক্স যথারীতি লেবার রুমে। এবারও নার্সকে লেবার রুম থেকে হাসি মুখে বের হতে দেখে স্টিফেন জেরক্সের টেনশন দূর হয়ে গেল। নার্স জানালেন ‘এবারও ডাবল সুসংবাদ আছে। দুটো ফুটফুটে ছেলে হয়েছে। তবে যমজ হলেও এবারের ছেলে দুটো দেখতে দুই রকম।’ 
আবারও যমজ ছেলের খবর শুনে স্টিফেন জেরক্স খুশিতে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলেন। তবে মনে মনে তাদের নাম ঠিক করতে ভুললেন না। এবার বড়টার নাম দাঁড়াল পিট, ছোটটার রিপিট।
আরও কয়েক বছর পরের কথা। স্টিফেন জেরক্স সাহেব টিন, মার্টিন, পিট ও রিপিটকে নিয়ে হাসপাতালের বারান্দায়। মিসেস জেরক্স লেবার রুমে। নার্স জানালেন আবারও ডাবল ছেলে। এবার জেরক্স সাহেব একটু হতাশ। অগত্যা ছেলেদের নাম দাঁড়াল ম্যাক্স এবং ক্লাইম্যাক্স।
কয়েক বছর পরে আবার যমজ ছেলে হলো, জেরক্স এবার ফেডআপ হয়ে পড়লেন। বাচ্চাদের নামেই সেটা প্রকাশ পেল। নতুন অতিথিদের নাম ছিল টায়ার্ড ও রিটায়ার্ড।

বরবাদ

প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৩ পিএম
বরবাদ
এঁকেছেন মাসুম

কী রে জান, কী করস? রুহেল জানতে চাইল। ক্লাসমেট হলেও মেহেরকে ও জান বলেই ডাকে।
আর বলিস না দোস্ত! জীবনটা লাইফ হয়ে যাচ্ছে! বাসায় খালি মেহমান আর মেহমান। আম্মা বলছে আমি যেন বাসা থেকে এক পা-ও না নড়ি।
তোদের বাসায় না অনেক কাজের লোক। তোকে কেন থাকতে হবে?
আরে দোস্ত তুই বুঝবি না। বাসায় মেহমান আসার কী যে প্যারা! যতগুলা মেহমান বাসায় আসল, সবার সঙ্গে একটা-দুইটা করে পিচ্চি। আর পিচ্চিগুলা যে কী পরিমাণ মিচকা শয়তান না দেখলে বুঝবি না। কেউ আমার ল্যাপটপ নিয়ে টানাটানি করে। কেউ আমার গিটার লইয়া টুংটাং করে। অসহ্য! জীবনটা একদম বরবাদ হয়ে যাচ্ছে দোস্ত।
বরবাদ দেখছস। তোর বাড়ির সামনেই তো সিনেপ্লেক্স। হেসে জানতে চাইল রুহেল।
আরে এই বরবাদই তো আমার জীবনটা বরবাদ কইরা দিতাছে! লতায় পাতায় যত মামাতো-খালাতো ভাইবোন আছে, সব এই সিনেপ্লেক্সে বরবাদ দেখতে আসতেছে আর আমাদের বাসায় ঢুইক্যা সেমাই-মিষ্টি খাইয়া হাইসা হাইসা বলতেছে, আপু তুমি কিন্তু বরবাদ দেইখো। নাইলে কিন্তু তোমার জীবনটাই বরবাদ। কেউ সিনেপ্লেক্সে যাওনের সময় জিগায়ও না আপু বরবাদ দেখবা! 
তুই তাইলে বরবাদ দেখস নাই, জান?
না রে দোস্ত! কোথাও টিকিটই পাচ্ছি না। সব জায়গায় সোল্ড আউট। সত্যি সত্যিই লাইফটা বরবাদ মনে হইতাছে রে দোস্ত। হতাশ গলায় বলল মেহের।
ঠিক আছে জান। ভাবছিলাম তোরে নিয়া বরবাদ দেখমু, কিন্তু তুই তো আবার ব্যস্ত। কী আর করা, একটা টিকিট নষ্টই হইব মনে হইতাছে। বিষণ্নতা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করল রুহেল।
এক মিনিট! তুই কই থিকা কথা কইতে আছস। আমাগো বাড়ির সামনের সিনেপ্লেক্স থাইক্যা?
না রে জান। আমি আছি বসুন্ধরায়। অনেক কষ্টে দুইটা টিকিট পাইছিলাম। তুই তো আবার আইতে পারবি না।
কয়টার শোয়ের টিকিট পাইছস? জানতে চাইল মেহের।
চারটার।
ঠিক আছে। আমি আইতাছি। তুই কিন্তু হারাইস না কইলাম।
হাতে সময় আছে মাত্র আধাঘণ্টা। এর মধ্যে তুই কি আইতে পারবি? রুহেল বলল।
আরে দোস্ত ঈদের পর রাস্তা তো খালিই আছে। ধানমন্ডি থাইক্যা বসুন্ধরা যাওন কুনো ব্যাপার হইলো! তুই থাক আমি আইতাছি।
সত্যি সত্যিই শো শুরুর ১০ মিনিট আগেই বসুন্ধরায় পৌঁছে গেল মেহের।
সিনেমা হলের সিটে বসে উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটতে শুরু করল ও।
দোস্ত কত কিছু বইল্যা যে আম্মারে ম্যানেজ করলাম, শুনলে বিশ্বাস করবি না। খালি বরবাদের টিকিট পাইছস শুইনা আমারে আইতে দিল। নাইলে দিত না।
তুই আম্মারে আমার কথা কইছস! বিস্ময়ের সঙ্গে জানতে চাইল রুহেল।
আরে পাগল নাকি!  আম্মারে কইছি লাইলি আমারে বরবাদ মুভি দেখাইব। 
আর তোর আম্মা যদি এখন লাইলিরে ফোন দেয়?
আচ্ছা, খাড়া অরে একটা ফোন দিয়া লই। সিনেমা শুরু হইলে তো আর কল দিবার পারুম না। ফোন বের করল মেহের।
লাইলি, আমি কিন্তু বরবাদ মুভি দেখবার আইছি। হ হ, টিকিট পাইছি। হ, আমি এহন বন্ধুগো লইয়া বরবাদ মুভি দেখতে আইছি। আম্মা তরে ফোন করলে কইস যে আমি তর লগেই আছি।
কল কাটতেই পেছন থেকে একজন দর্শক বলল, আপা আপনি মনে হয় ভুল সিনেমা হলে ঢুকে পড়েছেন। এই হলে বরবাদ মুভি দেখাবে না।
ঝট করে রুহেলের দিকে তাকাল মেহের।
তুই বরবাদ-এর টিকিট কাটস নাই?
পাই নাই।
তাইলে কি এই হলে জংলী মুভি দেখাইব?
না।
তাইলে কি দাগি মুভি?
না।
তাইলে এই হলে কোন মুভি চলতাছে? রুহেলের শার্ট খামছে ধরল মেহের।
জ্বীন-৩।
শয়তান! তুই জানস না আমি ভূত-প্রেত-জিনকে ভয় পাই। প্রায় চিৎকার করে বলল মেহের।
জানি তো। জানি বইলাই তো কাটছি। তুই এই মুভিটা দেখতে দেখতে ভয় পাইয়া আমারে জড়াইয়া ধরবি হের লাইগা এই মুভির টিকিট কাটছি, বুঝলিরে জান।
এক কথাতেই মেহেরের মুভি দেখার ইচ্ছেটাই বরবাদ করে দিল রুহেল।