এঁকেছেন মাসুম
▶ বনে ঘুরতে ঘুরতে হুট করে হারিয়ে গেল ছোট্ট একটা কুকুরছানা। হাঁটতে হাঁটতে ও চলে গেল একেবারে সিংহের এলাকায়। আচমকা ১০ হাত সামনেই উদয় হলো ক্ষুধার্ত এক সিংহ। কিন্তু কুকুরছানার বুদ্ধি অনেক। সিংহটাকে দেখতে পায়নি এমন একটা ভাব করে এগিয়ে গেল পড়ে থাকা কয়েকটা হাড়ের দিকে। একটা হাড় নিয়ে আয়েশ করে চিবিয়ে জোরে জোরে বলল, বাহ্, সিংহটা তো খুব মজার।
এ কথা শুনে ঘাবড়ে গেল সিংহ। কুকুরছানাটা সাধারণ কিছু নয়! আস্ত সিংহ চিবিয়ে খেয়ে ফেলল!
ভয়ে লেজ গুটিয়ে গাছের আড়ালে চলে গেল সিংহটা। আড়াল থেকে সব খেয়াল করছিল একটা বানর। পুরো ব্যাপারটাই বুঝেছে সে। ভাবল, সিংহকে সব বলে দিলে সে হয়তো তাকে খানিকটা পিঠে চড়ার সুযোগ দেবে। ওর ভীষণ শখ সিংহের পিঠে চড়ার।
দেরি না করে গেল সিংহের কাছে। তারপর বলল, ‘সিংহ মামা, কুকুরছানাটা আসলে মহাপাজি। তোমাকে ভয় দেখানোর জন্য মিছেমিছি সিংহ খাবার কথা বলেছে।’
বানরের কথা শুনে সিংহ গেল ভীষণ রেগে। রেগে যাওয়ায় তার খিদে আরও বেড়ে গেল। বানর ছিল এই সুযোগে। সে বলল, ‘তা এই তথ্য যখন দিলাম, আমাকে একটু পিঠে চড়াও।’
বানরের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে সিংহ তার প্রতি কৃতজ্ঞ ছিল। তাই সে বলল, ‘আয়, আমার পিঠে চড়। তোকে নিয়েই যাব বজ্জাত কুকুরটাকে খেতে।’
ওদিকে কুকুরছানা দেখল, সিংহের পিঠে চড়ে বানর আসছে। সিংহের চোখের দিকে তাকিয়েই বুঝে গেল কী ঘটতে যাচ্ছে। কিন্তু আগের ট্রিকস আর কাজে আসবে বলে মনে হলো না। অস্থিরচিত্তে পায়চারি শুরু করল কুকুরছানাটা। সিংহ যখন ঠিক ১০ হাত দূরে, তখনই কাউকে না দেখার ভান করে রাগে চেঁচিয়ে উঠল কুকুরছানা, ‘এক ঘণ্টা হয়ে গেল! বজ্জাত বানরটাকে বললাম আরেকটা সিংহ নিয়ে আসতে। কেন যে এত দেরি করছে!’
শুনে সিংহ পড়িমরি করে ছুটে পালাল।
▶পাঁচু ব্যাংকের বিভিন্ন ডেস্কের সামনে লম্বা লাইন। ব্যাংক কর্মকর্তারা যার যার মতো চেষ্টা করছেন। কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে মকবুলকে নিয়ে। তিনি নিজের কাজের পাশাপাশি কানে ব্লুটুথ লাগিয়ে গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে কথা বলছেন। কাস্টমাররা এই দৃশ্য দেখে যারপরনাই বিরক্ত। এদেরই মধ্যে একজনকে দেখে মনে হলো তিনি তার ধৈর্যের সীমা হারিয়ে ফেলেছেন। কারণ, একটু পরপর তিনি বলছেন, ‘আর কত দাঁড়িয়ে থাকব? ভালো লাগে না।’
এভাবে বলতে বলতেই একপর্যায়ে তার মধ্যে বিস্ফোরণ হলো। তিনি লাইন ভেঙে সবার সামনে এসে মকবুলকে বললেন, ‘এই যে মিয়াভাই, তাড়াতাড়ি করেন। আমি সারা দিন দাঁড়িয়ে থাকতে পারব না।’
মকবুল তার কান থেকে ব্লুটুথটা সরিয়ে বললেন, ‘লাইন ধরেন। সময়মতো কাজ হয়ে যাবে।’
ভদ্রলোক বললেন, ‘এই ঘোড়ার ডিমের লাইন আমি ধরব না।’
মকবুল বললেন, ‘বাজে কথা বলবেন না। এটা ভদ্রলোকের জায়গা।’
ভদ্রলোক এবার আরও গরম হয়ে গেলেন। আপনি থেকে তিনি নেমে আসলেন তুই তে, ‘তুই ভদ্রলোক! একটা চেক জমা দেওয়ার জন্য আমাকে দেড় ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রেখেছিস, তারপরও বলছিস তুই ভদ্রলোক?’
মকবুল বললেন, ‘খবরদার। আপনি কিন্তু বাজে ভাষা ব্যবহার করছেন। আমি কিন্তু ম্যানেজারকে ডাকব।’
ভদ্রলোক চেঁচিয়ে বললেন, ‘গাধার বাচ্চা কোথাকার, যা তোর ম্যানেজারকে ডাক।’
মকবুল তার ম্যানেজারকে ঠিকই ডেকে আনলেন। ম্যানেজার এসেই বললেন, ‘খারাপ ভাষায় কথা বলছেন কেন? এখানে সবাই সম্ভ্রান্ত লোক। আজেবাজে লোকদের এই ব্যাংকে কোনো কাজ থাকে না। এখন বলুন আপনার সমস্যা কী?’
ভদ্রলোক বললেন, ‘আমি ১০ কোটি টাকার এই চেকটা জমা দিতে এসে গত দেড় ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আছি।’
ম্যানেজার চেকটা হাতে নিলেন। টাকার অঙ্ক দেখলেন। ছোট্ট একটা শিস দিলেন। এরপর বললেন, ‘আচ্ছা, আপনি চেক নিয়ে এসেছেন, আর এই গাধার বাচ্চা আপনার চেক জমা নিচ্ছে না?’