ঢাকা ২৯ আষাঢ় ১৪৩২, রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫
English

আজকের সেরা জোকস: বাবা-ছেলে

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৫, ০২:২০ পিএম
আজকের সেরা জোকস: বাবা-ছেলে
ছবি এআই

▶ ছেলে: বাবা, আমাকে আরেক গ্লাস পানি দাও।
বাবা: তোমার এত পানি লাগে কেন? তোমাকে ইতিমধ্যে ১০ গ্লাস পানি দিয়েছি।
ছেলে: কিন্তু বাবা, বিছানায় যে আগুন ধরিয়েছি, সেটা তো নিভছে না!

 

▶ বাবা: জানিস, তোর পড়ালেখার পিছনে আমার কত খরচ হয়?
ছেলে: হ্যাঁ বাবা, জানি বলেই তো কম কম পড়ালেখা করে তোমার খরচ কমানোর চেষ্টা করি।

ব্রিজের নিচে একদিন

প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০২৫, ০২:১৭ পিএম
ব্রিজের নিচে একদিন
এঁকেছেন মাসুম

ফার্মগেটের ব্রিজের নিচে এক ল্যাংড়া নিয়মিত ভিক্ষা করে। তার একটা পা নাই, হাঁটুর ওপর থেকে কেটে ফেলা হয়েছে। 
একদিন সেই ল্যাংড়া ভিক্ষুক সকালে ল্যাংচাতে ল্যাংচাতে এসে দেখে, তার জায়গায় বসে ভিক্ষা করছে এক কানা। কানার দুই চোখই নষ্ট। পিচ্চি নাতনি তাকে হাত ধরে নিয়ে এসেছে। 
ল্যাংড়া তো রেগেমেগে ফায়ার। সে উত্তেজিত হয়ে বলল, রে কানা, তোর সাহস তো কম না! তুই আমার জায়গা দখল করছোস! আমার জায়গা ছাইড়া দে! ফোট কইলাম! 
কানাও রেগে গিয়ে বলল, কেন রে ল্যাংড়া, এই জায়গা কি তোর শ্বশুরের কেনা? আমি যেখানে খুশি সেখানে বসুম। তোর কী?
ল্যাংড়া ল্যাংচাতে ল্যাংচাতে বলল, এই সাবধান শ্বশুর নিয়া কথা কবি না। লাত্থি মাইরা কিন্তু তোর টেংরি ভাইঙা দিমু। জানোস আমি কে? ল্যাংড়া সমিতি যদি জানতে পারে, তোর খবর আছে কইলাম। সমিতির সভাপতি আমার খুবই পেয়ারের মানুষ। 
কানাও লাফিয়ে উঠে বলল, আর আমাগো কানা সমিতি বুঝি ঘাস খাইব? সাহস থাকলে লাত্থি মাইরা দেখ, নিজেই উল্টাইয়া চিৎপটাং হইয়া যাবি। আমি অনেক জায়গা ঘোরাঘুরি কইরা শেষমেশ এই জায়গাটা চয়েজ করছি। সহজে ছাড়ুম না। কানা মজিদ যদি জানতে পারে, তুই আমার লগে বেয়াদবি করছোস, তোর অবস্থা কিন্তুক ছেঁড়াবেড়া হইয়া যাইব।
নাতনি কানার দিকে তাকিয়ে বলল, দাদা, কানা মজিদ কে?
কানা নাতনির কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলল, চুপ থাক, ল্যাংড়ারে ভয় দেখাইছি।
ল্যাংড়া লাফিয়ে উঠে বলল, এই ব্যাটা কানা, তুই তো চোখে দেখছ না। এই জায়গা চয়েস করলি কেমনে? বিটলামি করছ আমার লগে? ফোট কইতাছি। সমিতির লোক আইলে দৌড় দেওয়ার টাইম কিন্তু পাবি না।
কানা কিছুতেই যাবে না। দুজনেই কথার যুদ্ধ চালিয়ে গেল। ল্যাংড়া এক ঠ্যাং উঁচিয়ে লাথি দেখায়, কানা আন্দাজে অন্যদিকে ঘুষি পাকায়!
পাশ দিয়ে যাচ্ছিল এক রিকশাওয়ালা। সে ল্যাংড়ার পরিচিত। ল্যাংড়াকে সে এই জায়গায় বহুদিন যাবৎ দেখছে। একসঙ্গে একদিন দুজনে ভাগাভাগি করে বিড়িও খাইছে। এই ঝগড়ায় অংশগ্রহণ করা কর্তব্য মনে করল।
সে রিকশা থেকে নেমে এসে সব শুনে কানাকে ঘাড় ধরে সরিয়ে দিয়ে ল্যাংড়াকে বসিয়ে দিল। 
দূর থেকে সেই দৃশ্য দেখে এগিয়ে এলো এক সিএনজিওয়ালা। সিএনজিওয়ালা রিকশাওয়ালা থেকে মর্যাদার দিক দিয়ে কিছুটা হলেও ওপরে। সে এই মানহানিকর কাজ মেনে নেয় কীভাবে? সে আবার কানার মামাবাড়ির প্রতিবেশীর আত্মীয়। সিএনজিওয়ালা এসেই রিকশাওয়ালাকে হুমকি দিয়ে বসল, ব্যাটা মাস্তানি করস? সিএনজি দিয়া তোর রিকশারে এমন ধাক্কা দিমু না! বাঁচতে চাইলে দৌড় দে।
তুই দৌড় দে হালার পো...
তবে রে হমুন্দির পো...
রিকশাওয়ালা সিএনজিওয়ালা দুজনেই লেগে গেল তুমুল হাতাহাতি, মারামারিতে। 
দূর থেকে এই দৃশ্য দেখল এক টেম্পোওয়ালা। সিএনজি থেকে টেম্পোর বডি শক্তিশালী। সে আবার রিকশাওয়ালার দূরসম্পর্কে ভাতিজার বন্ধু। টেম্পোওয়ালা এসেই সিএনজিওয়ালার ঘাড় চেপে ধরে বলল, টেম্পো দিয়া তোর সিএনজিরে এমন ডলা দিমু, একেবারে ভর্তা বানাইয়া দিমু কইলাম, গেলি?
এবার মারামারি চলছে সিএনজিওয়ালা-টেম্পোওয়ালার মধ্যে। 
রাস্তার ওপাশ দিয়ে যাচ্ছিল এক বাসওয়ালা। সে সিএনজিওয়ালার বোনের জামাইয়ের বন্ধুর খালু। বাস ফেলে দৌড়ে এসে সে টেম্পোওয়ালাকে ধুরুম ধুরুম কিলাতে শুরু করল। হুমকি দিয়ে বলল, ব্যাটা রংবাজি করস? বাস দিয়ে তোর টেম্পোরে ডলা দিয়া চানাচুর বানাইয়া দিমু কইলাম! 
এখন মারামারি চলছে বাস আর টেম্পোতে।
তুমুল মারামারি চলছে। কানা আর ল্যাংড়া একপাশে বসে ঝগড়া উপভোগ করছে। নাতনি বলল, দাদা, এরা মারামারি করতেছে কেন?
কানা থুহ করে একদলা থুতু ফেলে বলল, কইতে পারি না, মনে লয় হুদাই!
একপর্যায়ে কানা একটা বিড়ি ধরিয়ে দু-এক টান খেয়ে ল্যাংড়ার দিকে এগিয়ে দিল। ল্যাংড়া সেই বিড়ি নিয়ে আয়েস করে খেতে খেতে ঝগড়া দেখতে লাগল।
ঝগড়ার একপর্যায়ে টেম্পোওয়ালার দাঁত একটা হাওয়া। মুখ গড়িয়ে রক্ত পড়ছে। বাসওয়ালার হাঁটু ছিলেছে, থুঁতনি কেটেছে। দুজনেরই জামাকাপড় ছেঁড়া। 
টেম্পোওয়ালা ফোন করেছে টেম্পো মালিককে। বাসওয়ালা আবার ফোন করেছে বাস মালিককে।
দুই মালিক মুহূর্তে এসে হাজির। দুজনেই আবার দুই এলাকায় ডাকসাইটে নেতা।
টেম্পো মালিক বাস মালিককে দেখে হুংকার দিয়ে বলল, এই ব্যাটা আমারে তুই চিনস? চিনস আমারে?
বাস মালিক ততোধিক হুংকার দিয়ে বলল, এই ব্যাটা, তুই গালকাটা ফরিদরে চিনস? আমি কইলাম তার ছোট ভাই। 
টেম্পোওয়ালা বুঝল, হুংকার দিয়ে কাজ হবে না। সে গলা নরম করে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল, না তো ভাই, আমি ফরিদকে চিনি না। আসেন পরিচিত হই!
দুই মালিক মীমাংসা করতে বসল।
কানা আর ল্যাংড়া আবার বিড়ি ধরিয়ে দুইজনে ভাগ করে খেতে খেতে সালিশ দেখতে লাগল।
সালিশে ফয়সালা হলো, কানা এবং ল্যাংড়া দুজনেই বাদ। বাস মালিক এবং টেম্পো মালিক নিজেদের পছন্দের একজন লোককে এখানে বসাবে। সেই লোক মাসে মাসে দুজনকেই বাসায় গিয়ে মাসোহারা দিয়ে আসবে।
ফয়সালার কথা কানা আর ল্যাংড়াকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। 
ল্যাংড়া কানাকে ডেকে বলল, এইটা কী হইল রে কানা? 
কানা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল, কী আর হইব, আমরা আমাগো শক্তি দেহাইছি। এখন ওরা অগো শক্তি দেখাইতেছে!

আজকের সেরা জোকস: বীমার লোক

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪৩ পিএম
আজকের সেরা জোকস: বীমার লোক
ছবি এআই

◉ বীমার লোক: আপা, যতগুলো পলিসির কথা বললাম, আমার মনে হয় একটা হাত আর একটা পা ভাঙলে পঞ্চাশ হাজার টাকা নগদ পাওয়া যাবে—এই পলিসিটাই আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে।
মহিলা: তাইলে আমারে এই পলিসিটাই কইরা দেন। তার আগে একটা প্রশ্নের জবাব দেন—আমার ভাঙা হাত, পা নিয়া আপনারা কী করবেন?

 

◉ লোক: এখানে মাছ ধরা নিষেধ—আপনি এই লেখাটা দেখেন নাই?
শিকারি: আমি মাছ ধরি না তো, কেঁচোটারে গোসল করাচ্ছি।
লোক: তাইলে বড়শিতে আটকাইছেন ক্যান?
শিকারি: যদি ভাইগা যায়!

সেতারা বেগমের পরিবার

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৫, ১২:০৪ পিএম
সেতারা বেগমের পরিবার

মিসেস বিলকিস এ মাসেই নতুন ফ্ল্যাটে উঠেছেন। কিছুদিন আগে পাক্কা ২ কোটি টাকা খরচ করে ফ্ল্যাটটা কিনেছেন তিনি। চার বেড, ড্রইং ডাইনিং, সঙ্গে দুটো বারান্দা। টয়লেট তিনটি। পরিবারের সবাই দুই দিন ধরে ফ্ল্যাটের মালামাল গোছগাছ করছেন। কোনটা কোথায় রাখা হবে তা নিয়ে মতবিরোধ হলে টস করে সমাধান করা হচ্ছে। 
কিছুক্ষণ আগে সোফা রাখা হয়েছে। মিসেস বিলকিস পরবর্তী পরিকল্পনা করতে যাবেন, ঠিক এমন সময় কলিংবেলটা বেজে উঠল। 
দরজা খুলতেই মোটা মতো নারী হাসতে হাসতে বললেন, ‘আমি সেতারা বানু, আপনাদের পাশের ফ্ল্যাটেই থাকি।’ 
প্রতিবেশীকে পেয়ে মিসেস বিলকিস খুশিই হলেন, ‘আরে আসুন আসুন। কয়েকদিন হলো আমরা উঠেছি। এখনো কারও সঙ্গে পরিচিত হতে পারিনি।’
সেতারা বানু বললেন, ‘তাড়াহুড়োর কী আছে। আস্তে আস্তে সবার সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন। তা আপনারা কে কে থাকবেন এখানে?’ 
মিসেস বিলকিস হাসি দিয়ে বললেন, ‘আমার দুই ছেলে আর এক মেয়ে। ওদের বাবা আর আমি। সব মিলিয়ে আমরা পাঁচজন।’ 
সেতারা বানু বললেন, ‘আমিও ছেলে, ছেলের বউ, মেয়ে আর তার জামাইকে নিয়ে থাকি।’
মিসেস বিলকিস একটু অবাক হলেন, ‘মেয়ের জামাইও আপনাদের সঙ্গে থাকে! এটা আবার কেমন কথা?’ 
সেতারা বানু বললেন, ‘ওভাবে বলবেন না। আমার মেয়ের জামাই খুব ভালো। সকালে মেয়ের জন্য নাশতা বানিয়ে বিছানায় দিয়ে আসে। অফিস থেকে ফিরে রান্নাঘরে ঢোকে। রাতে বিছানার মশারিটাও টাঙায়।’
মিসেস বিলকিস হেসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তাই নাকি? আর ছেলের বউ?’ 
সেতারা বেগম মুহূর্তেই হতাশ হয়ে গেলেন, ‘বউটার কথা আর বলবেন না। অলসের এক শেষ। ডাইনি আমার ছেলের হাড়-মাংস জ্বালিয়ে খেল। সকালে ঘুম থেকে উঠার সঙ্গে সঙ্গে ছেলে গিয়ে বেড টি দিয়ে আসে। অফিস থেকে ফেরার পরও নিস্তার নেই। রান্নাঘরে ঢুকে। আর নবাবজাদি পায়ের ওপর পা তুলে বসে বসে টিভি দেখে, ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলে।’

ঘুম আসে না

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৫, ১২:০৮ পিএম
ঘুম আসে না
ছবি এআই

ঘুম আসে না। কোনোভাবেই ঘুম আসে না। রহিম বাদশা অস্থির হয়ে উঠলেন। টানা তিন মাস না ঘুমালে শরীর কী রকম হতে পারে তা যে কেউ বুঝবে। রহিম বাদশার অবস্থা হয়ে উঠল সে রকম। একটা ঘণ্টা ঘুমানোর জন্য দিন-রাত বিছানায় গড়াগড়ি করেন কিন্তু কিছুতেই ঘুম হয় না। এরকম পরিস্থিতিতে সবাই পরামর্শ দিলেন ডাক্তারের কাছে যেতে। 
পাশের ভবনে একজন ডাক্তার বসেন। রহিম বাদশা পরের দিনই সেখানে হাজির হলেন। সমস্যা শুনে ডাক্তার এন্ডোসকপি, এক্স-রে, ইসিজি, কিডনির বায়োপসি, ব্লাড, ইউরিন, স্টুলসহ চোখের তিনটি পরীক্ষা দিলেন। সাত দিন পর সব পরীক্ষার রেজাল্ট নিয়ে আবার উপস্থিত হলেন ডাক্তারের চেম্বারে। রিপোর্ট দেখে ডাক্তার বললেন, ‘রিপোর্টে তো কিছুই পেলাম। আপনার শরীর একদম ফিট। তারপরও কয়েকটা ওষুধ লিখে দিচ্ছি। আশা করি ঘুম আসবে।’
ওষুধ খাবার পর সাত দিন কেটে গেল। তবু ঘুমের দেখা নেই। রহিম বাদশা আবার ডাক্তারের কাছে গেলেন। ডাক্তার বললেন, কিছুতেই যখন কাজ হচ্ছে না, তখন ভেড়া গুনুন। বুদ্ধিটা পুরোনো। তবে মাঝে মধ্যে কাজে লাগে। ১০০টা ভেড়া গুনলেই হবে। দুদিন পরে বাদশা মিয়া এল ডাক্তারের কাছে।
ডাক্তার সাহেব, ‘আগে মাঝে মাঝে তন্দ্রা ভাব আসত। ভেড়া গোনার পর তো সেটাও গেছে।’ 
ডাক্তার বললেন, ‘কেন? ভেড়া গুনে কাজ হয়নি?’ 
রহিম বাদশা বললেন, ‘রাত দেড়টার মধ্যে ১০০ ভেড়া গোনা শেষ। সারা রাত পড়ে আছে। ভাবছি ভেড়াগুলো নিয়ে কী করা যায়? মহা ঝামেলা! রাত ২টার দিকে ভেড়াগুলোর গা থেকে পশম সংগ্রহ করলাম। তারপর উলের ফ্যাক্টরি দিলাম। ভোর পৌনে ৪টার দিকে আমেরিকা থেকে সোয়েটারের অর্ডারও পেলাম। কিন্তু শিপমেন্ট পাঠানোর সময় বন্দরে ঝামেলা লেগে গেল। শ্রমিক আন্দোলন। কোটি টাকার শিপমেন্ট আটকে আছে ডাক্তার সাহেব। এ অবস্থায় ঘুমাই কীভাবে?’

দুটি ঘটনা

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫, ০২:০৩ পিএম
দুটি ঘটনা
ছবি এআই

▶ রাতের খাবারের পর এক খিলি পান খাওয়া মোকসেদের পুরোনো অভ্যাস। সেই মোতাবেক হাকিমপুরি জর্দা দিয়ে বানানো পানটা মুখে চালান দিতেই চোখজুড়ে রাজ্যের ঘুম নেমে এল তার। পান খেতে খেতে টিভিতে খবর দেখতে ভালোবাসেন, কিন্তু আজ আর সেটা করতে ইচ্ছে করছে না। নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে জোগালির কাজ করেন তিনি। নিচ থেকে উপরে ইট, সিমেন্ট রড আনা-নেওয়া করতে হয়। সারা দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করার কারণে শরীরটা বিশ্রাম নিতে চাইছে। মোকসেদ দেরি করলেন না। মশারি টাঙিয়ে বাতি বন্ধের সুইচটা টিপে দিলেন। 
চোখ দুটো সবে লেগে এসেছে ঠিক তখনই শব্দটা শুনতে পেলেন মোকসেদ। এক নাগারে ডেকে চলেছে কুকুরগুলো। সেই শব্দে ঘুমের বারোটা বেজে গেল।
একই ঘটনা ঘটল পরপর কয়েক রাত। ঠিকমতো ঘুমাতে না পেরে শরীর ভেঙে যেতে শুরু করল মোকসেদের। কাজে মন লাগাতে পারলেন না। উপায় না দেখে শেষ পর্যন্ত ডাক্তারের কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। বাসার পাশেই একজন ডাক্তার বসেন। চমৎকার রোগ সারাতে পারেন বলে এলাকায় নাম-ডাক আছে তার। মোকসেদ পরদিন সকালেই ডাক্তারের চেম্বারে হাজির হলেন।
ডাক্তারকে সব খুলে বললেন তিনি, ‘বাসার পাশের রাস্তায় কুকুরগুলো রোজ রাতে নিয়ম করে হল্লা করে। কিছুতেই ঘুমাতে পারি না।’ 
ডাক্তার বললেন, ‘এই ঘুমের বড়িটা নতুন এসেছে। খুব ভালো কাজ দেয়। নিয়ে যান। রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করবেন।’
মোকসেদ ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরলেন। তবে এক সপ্তাহ না যেতেই আবার হাজির হলেন ডাক্তারের চেম্বারে, ‘এখনো আমার ঘুমের সমস্যা হচ্ছে ডাক্তার সাব।’
উদ্বিগ্ন হয়ে ডাক্তার জিজ্ঞেস করলেন, ‘কিন্তু ওষুধটা তো বেশ ভালো। অনেকেরই কাজ হয়েছে।’ 
মোকসেদ আক্ষেপ নিয়ে বললেন, ‘ভালো-মন্দ বুঝবারই তো পারলাম না। সারা রাত কুকুরগুলোকে ধাওয়া করে একটা যদিও ধরতে পারি, কিছুতেই বদমাশটাকে ওষুধ গেলানো যায় না। ওষুধের মোজেজা কেমনে বুঝুম, কন?’

 

▶ ক্লাস শেষের ঘণ্টাটা বাজতেই হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন নীতু। জাভেদ স্যারের ক্লাস এতটাই বোরিং যে, ভার্সিটির কেউই তার ক্লাস করতে চায় না। কিন্তু পাস তো করতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে অনেকেই সময় মতো হাজির হন আর অপেক্ষা করতে থাকেন, কখন শেষ হবে এই বোরিং লেকচার।
ক্লাস থেকে বেরিয়ে সোজা শিমুল গাছের নিচে এসে দাঁড়ালেন নীতু। কিছুক্ষণের মধ্যে রিনি এসে পড়বেন। লাইব্রেরিতে গিয়ে কয়েকটা রেফারেন্স বই দেখে নোট করতে হবে তাদের। নীতু একা একা করতে পারতেন কাজটা, কিন্তু সঙ্গে একজন ভালো স্টুডেন্ট থাকলে নোটটা যেমন ভালো হয় তেমনি গল্পে গল্পে সময়টাও কেটে যায় দ্রুত।
বলতে না বলতে রিনি এসে হাজির হলেন শিমুল গাছের নিচে। তারপর আর দাঁড়িয়ে থাকা মানায় না। দুজনে হাঁটতে শুরু করলেন লাইব্রেরির দিকে। ঠিক এমন সময় অপরিচিত নাম্বার নীতুর মোবাইলে ফোন এল। রিসিভ করতেই আচমকা পাশ থেকে প্রশ্ন এল, ‘আপনার কি কোনো বয়ফ্রেন্ড আছে?’ 
থতমত খেয়ে নীতু বললেন, ‘হ্যাঁ, আছে, আপনি কে?’ 
‘আমি তোমার বড় ভাই! খবর আছে তোমার! ওয়েট করো, বাসায় এসে নিই আমি!’ জবাব এল ওপাশ থেকে।
‘ভাইয়া’ বলেই নীতু ভয়ে অস্থির হয়ে গেল। 
কিছুক্ষণ পর নীতুর মোবাইলে আরেকটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন এল, ‘তোমার কি কোনো বয়ফ্রেন্ড আছে?’ 
এবার নীতু ভুল করলেন না, ‘না না, কেউ নেই! আমি সিঙ্গেল!’ 
‘কী? আমি তোমার বয়ফ্রেন্ড মামুন, তুমি চিনতে পারোনি? মানুষকে তাহলে এই বলে বেড়াও?’ 
রাগ হয়ে বললেন কেউ ওপাশ থেকে। ‘না না, মামুন, আই অ্যাম সরি। আমি ভেবেছি তুমি আমার বড় ভাই! রাগ করে না, প্লিজ!’ বললেন নীতু। 
অপর প্রান্তের ভদ্রলোক বললেন, ‘হ্যাঁ, তুমি ঠিক ধরেছ! আমি তোমার বড় ভাই! দাঁড়াও বাসায় আসতেসি!’