
সকাল ১০টা বাজতেই জাফর আহমেদ চৌধুরী এবং তার স্ত্রী সুলতানা বেগম লেনদেন ব্যাংকের শিয়ালবাড়ি শাখায় প্রবেশ করলেন। জাফর আহমেদ সাহেব এই শাখায় ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছেন। তার স্ত্রী সুলতানা বেগমও এখানেই চাকরি করেন। তিনি জুনিয়র অফিসার হিসেবে কর্মরত। সত্যি কথা বলতে, চাকরি করতে এসে তাদের পরিচয়। সেখান থেকে বিয়ে। তবে প্রথম দিকে দুজনের সংসারে শান্তি থাকলেও এখন তা নেই। প্রতিদিন স্বামী-স্ত্রীতে খিটিমিটি লেগেই আছে। গত রাতেও মশারি টাঙানো নিয়ে দুজনে ঝগড়া করেছেন। ঝগড়ার একপর্যায়ে জাফর আহমেদ চৌধুরী মশারি ছিঁড়ে ফেললে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়।
জাফর আহমেদ চৌধুরী তার রুমে প্রবেশ করতেই কালো ষণ্ডামতো এক লোক বন্দুক হাতে হুড়মুড় করে ঢুকে পড়লেন। বন্দুক দেখে বুঝতে বাকি রইল না যে কোনো একটা ঝামেলা হয়েছে। রুমের বাইরে তাকিয়ে দেখেন আরও ছয়-সাতজন লোক সেখানে বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে আছে। সম্ভবত এরা ডাকাতি করতে এসেছে।
ডাকাতরা কাজে বেশ পটু। আধা ঘণ্টার মধ্যে ব্যাংকের ভল্ট খুলে ২ কোটি টাকা তাদের বস্তায় ঢুকিয়ে ফেলেছে। ব্যাংকের কর্মকর্তারা সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে ফ্যালফ্যাল করে শুধু দেখেছেন। বন্দুকের সামনে তাদের করার কিছুই নেই। সবাই যার যার কাঁধে টাকার বস্তা তুলে বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে লাগলেন। এমন সময় ডাকাতদের সর্দার ক্যাশিয়ার সোলেমানকে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুই কি আমাকে ডাকাতি করতে দেখেছিস?’
সোলেমান মিনমিনিয়ে বলল, ‘জি স্যার, দেখেছি।’
তারপরই দুম করে গুলির শব্দ হলো। সোলেমান শেষ। এবার সে দাঁড় করাল ডিউটি অফিসারকে। তাকেও একই প্রশ্ন করতেই সে জবাব দিল, ‘দেখেছি’। আওয়াজ হলো, ‘দুম’। এবার দাঁড় করালেন ম্যানেজার জাফর আহমেদ চৌধুরীকে। সর্দার জিজ্ঞেস করলেন, ‘তুই দেখেছিস আমাকে ডাকাতি করতে?’
জাফর আহমেদ চৌধুরী বললেন, ‘না স্যার, দেখিনি। তবে আমার বউ মনে হয় দেখেছে!’