
মিসেস বিলকিস এ মাসেই নতুন ফ্ল্যাটে উঠেছেন। কিছুদিন আগে পাক্কা ২ কোটি টাকা খরচ করে ফ্ল্যাটটা কিনেছেন তিনি। চার বেড, ড্রইং ডাইনিং, সঙ্গে দুটো বারান্দা। টয়লেট তিনটি। পরিবারের সবাই দুই দিন ধরে ফ্ল্যাটের মালামাল গোছগাছ করছেন। কোনটা কোথায় রাখা হবে তা নিয়ে মতবিরোধ হলে টস করে সমাধান করা হচ্ছে।
কিছুক্ষণ আগে সোফা রাখা হয়েছে। মিসেস বিলকিস পরবর্তী পরিকল্পনা করতে যাবেন, ঠিক এমন সময় কলিংবেলটা বেজে উঠল।
দরজা খুলতেই মোটা মতো নারী হাসতে হাসতে বললেন, ‘আমি সেতারা বানু, আপনাদের পাশের ফ্ল্যাটেই থাকি।’
প্রতিবেশীকে পেয়ে মিসেস বিলকিস খুশিই হলেন, ‘আরে আসুন আসুন। কয়েকদিন হলো আমরা উঠেছি। এখনো কারও সঙ্গে পরিচিত হতে পারিনি।’
সেতারা বানু বললেন, ‘তাড়াহুড়োর কী আছে। আস্তে আস্তে সবার সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন। তা আপনারা কে কে থাকবেন এখানে?’
মিসেস বিলকিস হাসি দিয়ে বললেন, ‘আমার দুই ছেলে আর এক মেয়ে। ওদের বাবা আর আমি। সব মিলিয়ে আমরা পাঁচজন।’
সেতারা বানু বললেন, ‘আমিও ছেলে, ছেলের বউ, মেয়ে আর তার জামাইকে নিয়ে থাকি।’
মিসেস বিলকিস একটু অবাক হলেন, ‘মেয়ের জামাইও আপনাদের সঙ্গে থাকে! এটা আবার কেমন কথা?’
সেতারা বানু বললেন, ‘ওভাবে বলবেন না। আমার মেয়ের জামাই খুব ভালো। সকালে মেয়ের জন্য নাশতা বানিয়ে বিছানায় দিয়ে আসে। অফিস থেকে ফিরে রান্নাঘরে ঢোকে। রাতে বিছানার মশারিটাও টাঙায়।’
মিসেস বিলকিস হেসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তাই নাকি? আর ছেলের বউ?’
সেতারা বেগম মুহূর্তেই হতাশ হয়ে গেলেন, ‘বউটার কথা আর বলবেন না। অলসের এক শেষ। ডাইনি আমার ছেলের হাড়-মাংস জ্বালিয়ে খেল। সকালে ঘুম থেকে উঠার সঙ্গে সঙ্গে ছেলে গিয়ে বেড টি দিয়ে আসে। অফিস থেকে ফেরার পরও নিস্তার নেই। রান্নাঘরে ঢুকে। আর নবাবজাদি পায়ের ওপর পা তুলে বসে বসে টিভি দেখে, ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলে।’