স্নায়ু-যুদ্ধোত্তর এককেন্দ্রিক পৃথিবীতে সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রই সারা বিশ্বে প্রাধান্য বিস্তার করে আছে। এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যিনি জয়ী হবেন তিনিই বিশ্বমঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করবেন। কিন্তু কোন নীতিতে, কীভাবে- সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে এই নিবন্ধে।
‘আমেরিকা একটা বিপজ্জনক রাষ্ট্র,’ ২০১৭-এ এক সাক্ষাৎকারে এই কথাটা বলেছিলেন বিশ্বজুড়ে খ্যাতিমান মার্কিন বুদ্ধিজীবী নোয়াম চমস্কি। মনে করতে পারছি, তখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামল চলছে। আমরা জানি, চমস্কি যুক্তরাষ্ট্রের একজন কট্টর সমালোচক। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রবল সমর্থকদের অন্যতম তাত্ত্বিক ও ভাবুক হচ্ছেন সভ্যতাকে সাংঘর্ষিক হিসেবে বিবেচনা করে দেখা স্যামুয়েল পি. হান্টিংটন।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে সবসময় সভ্যতার কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করেছেন আর বলেছেন, আমেরিকাই ‘মানবিক ইতিহাসের কেন্দ্রীয় নাটকটি লিখছে।’ এবারের নির্বাচনের পর সেই নাটক যে পুনরাবৃত্ত হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট দুই প্রার্থী- কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে প্রাক-নির্বাচনি নাটক মঞ্চস্থ হয়। উভয়েই তাদের বৈশ্বিক নীতিকে ভোটারদের সামনে তুলে ধরেছেন। ট্রাম্প এক মেয়াদে প্রেসিডেন্ট ছিলেন, ফলে তার বিদেশনীতির বিষয়টি বিশেষজ্ঞদের কাছে স্পষ্ট। ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলার বিদেশনীতির বিষয়টিও প্রতিফলিত হয়েছে বাইডেন প্রশাসনের মধ্যদিয়ে। কমলা যে আগামীতে বাইডেন বা ডেমোক্র্যাটদের পররাষ্ট্রনীতিই অনুসরণ করবেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু কী ট্রাম্প, কী হ্যারিস- তাদের পররাষ্ট্রনীতি বিশ্বে কি শান্তি ও স্থিতি দিতে পারবে? বিশেষ করে এই মুহূর্তে বড় দুটো যুদ্ধ চলছে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন-ইরানে আর ইউক্রেন-রাশিয়ায়।
প্রচলিত প্রজ্ঞা অনুসারে মার্কিন ভোটাররা মূলত অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয়কে বিবেচনায় নিয়েই ভোট দিয়ে থাকেন। সেদিক থেকে বলতে গেলে অর্থনীতি নিয়েই সবচেয়ে বেশি ভাবছেন মার্কিনিরা। নোবেলজয়ী প্রখ্যাত মার্কিন অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিগলিৎজও ঠিক এই বিষয়টির ওপরই গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি এও বলেছেন যে, এবারের নির্বাচনে অর্থনীতিই ভোটারদের কাছে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে। গত সেপ্টেম্বরে একটা জরিপেও ভোটারদের বিবেচনার শীর্ষে ছিল বৈদেশিক নীতি। ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দুই দলই বলছে যে, অভিবাসন ও গর্ভপাতের তুলনায় বৈদেশিক নীতির বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। এদিক থেকে বিবেচনা করলে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প আর তার ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিস আন্তর্জাতিক বিষয়ে কে কোন অবস্থানে আছেন সেটা বোঝা জরুরি। এটি বোঝার উপায় হচ্ছে তাদের প্রশাসনিক উদ্যোগগুলো দেখলে। দুজনই বৈশ্বিকভাবে তিনটি অঞ্চলকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন আর সেগুলো হচ্ছে ইন্দো-প্যাসিফিক, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্য।
২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্প হোয়াইট হাউস থেকে যে উদ্বোধনী ভাষণ দিয়েছিলেন, তাতে তিনি এক ধরনের অন্ধকারের ছবি এঁকেছিলেন। বলেছিলেন, আমেরিকা অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবিলা না করে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা নিয়ে বেশি ব্যস্ত থেকেছে। সেই থেকেই তার নীতি হচ্ছে ‘প্রথমে আমেরিকা’, তার পর অন্যকিছু। এই নীতির আলোকেই তিনি তার শাসনামলে প্রশাসনিক কাজগুলো করেছেন।
প্রায়োগিক ক্ষেত্রে, অর্থাৎ বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে তিনি বহু বছর ধরে চলে আসা মার্কিননীতি থেকে সরে আসেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেকটা তছনছ করে দেন। তিনি ঐতিহ্যের প্রতি পক্ষপাত দেখিয়েছেন আর প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্বাক্ষরিত কিছু নীতি বাতিল করে দিয়েছেন। ওবামা ইরানের সঙ্গে যে পারমাণবিক চুক্তি করেছিলেন, যে চুক্তিতে তেহরানের অভ্যন্তরীণ পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল, তিনি সেটা বাতিল করে দেন। এতে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়া অনেক সহজ হয়। আরেকটি চুক্তি তিনি বাতিল করেছিলেন, সেটি হলো ট্রান্স-প্যাসিফিক বাণিজ্য বিনিময় চুক্তি। এটি করতে গিয়ে একই সঙ্গে মিত্র ও শত্রুদের মধ্যে সাড়া পড়ে গিয়েছিল।
ট্রাম্পের সময়েই আন্ত-অতলান্তিক সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ ছিল, বিশেষ করে তিনি ন্যাটোর প্রতি শত্রুভাবাপন্ন হওয়ার কারণে এটা ঘটেছিল। তিনি আটলান্টিক জোটকে উপহাস করতেন এবং অব্যাহতভাবে উঁচু স্তরের বৈঠকে মিত্রদের অপমান করতেন। এমনকি ২০১৮ সালে জোট থেকে প্রায় বেরিয়ে আসার কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খুব ভালো যাচ্ছিল না। ২০১৮ সালে আমেরিকা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আমদানি শুল্ক আরোপ করে। লক্ষ্য ছিল বাণিজ্যিক ভারসাম্য কমিয়ে আনা। কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখার কথা।
এশীয় নীতির ক্ষেত্রেও ট্রাম্প পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্টেদের নীতিকেও অগ্রাহ্য করেছেন। তিনি ২০১৭ সালে যে ‘জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল’ গ্রহণ করেছিলেন তাতে চীনের সঙ্গে বারাক ওবামার করা ট্রান্স-প্যাসিফিক অংশীদারত্বের চুক্তি বাতিল করেন। তিনি চীনকে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ‘কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী’ হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং চীনের সঙ্গে সহযোগিতামূলক নীতি থেকে সরে আসেন। ট্রাম্পের প্রশাসন ২০১৮-১৯ সালে চীনের ক্ষেত্রে চার দফা শুল্কারোপ করেছে। বেইজিং অবশ্য এর প্রতিক্রিয়ায় নিজস্ব শুল্করীতি প্রবর্তন করে। তবে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে দুই দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ভারসাম্যমূলক এবং সহজ করার লক্ষ্যে ‘ফেজ-ওয়ান চুক্তি’তে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। কিন্তু কোভিড-১৯ শুরু হলে তিনি একে ‘চীনা জীবাণু’ বলে কটাক্ষ করলে আমেরিকা ও চীনের সম্পর্কের আবার অবনতি ঘটে।
মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্কেও পরস্পরবিরোধী আবেগ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। তিনি ওবামার মৌলিক নীতির বিরোধিতা করে তা থেকে অনেকটাই সরে আসেন। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। পরের বছর ইরানের সঙ্গে সম্পাদিত পারমাণবিক চুক্তি বাতিল করেন। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনার উপস্থিতির পরিসমাপ্তি ঘটানোর জন্য একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। উত্তর সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনাদের সরিয়ে নেন।
কিন্তু ওই একই সময়ে তিনি সিরিয়া ও ইরাকের ইসলামিক স্টেট (আইএস) গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বোমা হামলা চালিয়ে যান এবং ২০২০ সালে ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার অনুমোদন দেন। পরে তিনি ইরানকে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করার নীতি গ্রহণ করেন। তার কূটনৈতিক চাপের কারণে ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ড’ বা চুক্তি সম্পাদিত হয়। ইসরায়েলের সঙ্গে আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মরক্কো কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এর সবই ঘটেছিল ট্রাম্পের দূতিয়ালিতে।
কমলা হ্যারিস: কূটনৈতিক জোট ও সংযুক্তি
যদিও হ্যারিস পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে চালকের ভূমিকায় ছিলেন না, তবু বাইডেন প্রশাসনের নীতিগুলোই হ্যারিসের নীতি বলে মনে করা যেতে পারে। বাইডেন মূলত জোটগুলোর মধ্যকার সম্পর্ককে শক্তিশালী করা এবং বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বাইডেন প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে আবার যোগ দিয়েছেন এবং বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন। তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে বাইডেন প্রত্যাশার চাইতেও বেশি ট্রাম্পের নীতির ধারাবাহিকতা বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই রক্ষা করেছেন। যেমন- উদাহরণস্বরূপ বাইডেন চীনের সঙ্গে কৌশলগত প্রতিযোগিতা থেকে মৌলিকভাবে বিচ্যুত হয়নি, শুধু বাইডেনের কৌশলগুলো কিছুটা আলাদা। তিনি ট্রাম্পের শুল্কনীতি বজায় রেখেছেন, এমনকি বৈদ্যুতিক যানবাহনের ক্ষেত্রে নিজস্ব লক্ষ্যকে যুক্ত করেছেন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে উদ্যোগটি বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে ঘটেছে সেটি হচ্ছে তিনি চীনকে কোণঠাসা করার জন্য ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি, অর্থাৎ ‘কোয়াড’ গঠন করে অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও জাপানের মধ্যে সংলাপের পথ উন্মুক্ত করেছেন। ‘আকুস’ (AUKUS) গঠনের মাধ্যমে আবার যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় নিরাপত্তা সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। লক্ষ্য হচ্ছে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে নিয়ন্ত্রণ করে মার্কিন স্বার্থকে সমুন্নত রাখা। তবে চীনের সঙ্গেও সর্বোচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ রেখেছেন বাইডেন। শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বাইডেনের দুবার সরাসরি দ্বিপক্ষীয় সংলাপ হয়েছে।
বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য নীতিও মূলত ট্রাম্পের নীতিরই অনুসরণ। ট্রাম্প প্রত্যাহারের চুক্তি করেছিলেন আর বাইডেন আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহার করে নেন। বাইডেন প্রশাসন ট্রাম্পের মতো ইসরায়েলের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর সম্পর্ক স্থাপন, বিশেষ করে সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্কের দূতিয়ালি করেছে বাইডেন প্রশাসন।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ বেঁধে গেলে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি একেবারে বদলে যায়। ফিলিস্তিনিদের ওপর যে অমানুষিক বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল, তাতে প্রায় প্রত্যক্ষ সমর্থন রয়েছে বাইডেনের। যেহেতু হ্যারিস যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট, ফলে, এই বর্বরতার দায় তাকেও নিতে হচ্ছে। ট্রান্স-আটলান্টিক সম্পর্ক, অর্থাৎ ন্যাটোর সঙ্গে সম্পর্ক আবার গভীর করে তুলেছে বাইডেন প্রশাসন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বাইডেন ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
হ্যারিস বলেছেন, তিনি বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতিকেই অনুসরণ করবেন।
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বহুমুখী। আমাদের গার্মেন্টসশিল্প অনেকটাই মার্কিন বাজারের ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের বহু মানুষ আমিরকায় দুই-তিন প্রজন্ম ধরে বাস করছে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি ডায়াসপোরাদের সংখ্যা বেশ বড়। প্রতিবছর অসংখ্য শিক্ষার্থী আমেরিকায় পড়তে যান। আত্মীয়তা বা অন্য সূত্রে অনেকে অভিবাসীও হয়ে যান। নিকট অতীতে যারা আমেরিকায় গেছেন তাদের অনেকেই অভিবাসী হওয়ার অপেক্ষায় আছেন। মার্কিন-বাংলাদেশিদের অনেকেই বাংলাদেশে বড় অঙ্কের রেমিট্যান্স পাঠান। তবে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ভারসাম্য নেই। জিএসপি সুবিধা তুলে নেওয়ার পর এখনো সেই সুবিধা বাংলাদেশ পাচ্ছে না।
শেখ হাসিনার সময়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় চিহ্নিত কিছু নাগরিককে ভিসা না দেওয়ার নীতি আমেরিকা গ্রহণ করেছিল। এখনো তা অক্ষুণ্ণ আছে।
প্রত্যাশার কথা হচ্ছে, ডেমোক্র্যাটিক পার্টির হওয়ায় বাইডেনের সঙ্গে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সম্পর্ক বেশ ভালো। এবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন চলাকালে প্রায় নজিরবিহীনভাবে দুই দেশের দুই নেতা পার্শ্ব-আলোচনায় মিলিত হয়েছিলেন। ঐতিহ্যগতভাবে ড. ইউনূস বিল ক্লিনটন, হিলারি ক্লিনটন ও বারাক ওবামার ব্যক্তিগত বন্ধু আর তারা সবাই ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য। কমলা হ্যারিস যদি নির্বাচিত হন তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও গভীর হতে পারে বলে ধারণা করছি।
অন্যদিকে কয়েকদিন আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিয়ে যে টুইট করেছেন, তাতে ধর্ম উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন, সরকার বিব্রত। যদিও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব ট্রাম্পের এই টুইট বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে না বলে জানিয়েছেন। বিষয়টি আসলে অনেকটা এরকমই।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যে-ই হন না কেন, যুক্তরাষ্ট্রের মৌলিক পররাষ্ট্রনীতিতে বড় একটা পরিবর্তন ঘটে না। হ্যারিস অথবা ট্রাম্প- যিনিই প্রেসিডেন্ট হন না কেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ের ওপর একই থাকবে বলে ধারণা করা যায়। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে কিংবা বৈশ্বিকভাবে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতেও বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন ঘটবে না। আমরা শুধু হ্যারিস অথবা ট্রাম্পকে অভিনন্দিত করার জন্য অপেক্ষায় থাকব।