উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা নিয়ে গঠিত কক্সবাজার-৪ আসনের গডফাদার ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি। শুধু টেকনাফবাসী নয়, গোটা দেশবাসী তাকে ইয়াবা বদি হিসেবে জানে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অনেক বিতর্কিত হওয়ার পরও বদি টিকে থাকতে পেরেছিলেন শুধু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের আশকারার কারণে। দলটির কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা খবরের কাগজকে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড বেশ কয়েকবার বদির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিলেও কাদেরের বাধার কারণে তা সফল হয়নি। ফলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছিলেন বদি।
দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় ইয়াবা ব্যবসার পাশাপাশি কর ফাঁকি দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি, মাদক-স্বর্ণ চোরাচালান, হুন্ডির ব্যবসা, মানব পাচারসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা সমানতালে করতে পেরেছেন বদি। তার অবৈধ ব্যবসার কারণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বদিকে বাদ দিয়ে স্ত্রী শাহীন আক্তার চৌধুরীকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়নে শাহীন আক্তার এমপি হলেও তিনি ছিলেন স্বামীর কাঠের পুতুল। স্থানীয় প্রশাসন থেকে সাধারণ মানুষ তাদের প্রয়োজনে এমপির কাছে না গিয়ে বদির কাছে যেতেন। কারণ, এলাকায় অঘোষিত এমপি ও নিয়ন্ত্রক ছিলেন আব্দুর রহমান বদি ওরফে ইয়াবা বদি।
ওবায়দুল কাদেরের প্রশ্রয়ে লাগামহীন বদি: এক সময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল বদির পরিবার। বদির বাবা বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০০৮ সালের আগ থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়ান বদি। ২০০৮ সালে নৌকার মনোনয়নে এমপি হয়ে এলাকায় গড়ে তোলেন মাদকের সাম্রাজ্য। ওবায়দুল কাদের যখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন, তখন তার সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন বদি। ওবায়দুল কাদেরের আস্থাভাজন পরিচয় দিয়ে তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তার কুকীর্তি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লে টেকনাফে নিজের প্রভাব ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেন বদি। অবৈধ পথে উপার্জিত মোটা অঙ্কের টাকা ব্যয় করেন ওবায়দুল কাদেরের পেছনে। গত প্রায় ১৬ বছরে উখিয়া ও টেকনাফে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে (ইউনিয়ন-উপজেলা-মেম্বার) বদি তার মাদক সিন্ডিকেটের লোকদের জনপ্রতিনিধি বানিয়েছেন। বিনিময়ে তিনি মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বদির শাসনের অবসান চেয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দপ্তরে একাধিক অভিযোগও দিয়েছেন। কিন্তু বদি দুই হাতে টাকা ছিটিয়ে দলের কেন্দ্রীয় দপ্তরও নিয়ন্ত্রণ করতেন। ফলে অনেক অভিযোগই দলের হাইকমান্ডের কাছে পৌঁছতো না। তার আগেই দপ্তর থেকে অভিযোগ সরিয়ে ফেলা হতো। সারা দেশে ইয়াবা বদি ও তার পরিবারকে নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠলেও অবস্থার কোনো হয়নি। বরং ওবায়দুল কাদেরের আশীর্বাদে বদির পরিবর্তে তার স্ত্রী নৌকার মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। ফলে এই এলাকা ঘুরে-ফিরে বদির কথাই ছিল শেষ কথা।
কক্সবাজার জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহ খবরের কাগজকে বলেন, ‘বদির বাবা একসময় জাতীয় পার্টি করেছেন। এরপর বিএনপির রাজনীতি করে উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছেন। আসলে এরা হচ্ছেন মাফিয়া। নির্দিষ্ট কোনো দলের রাজনীতি তাদের জন্য না। যে সময় যারা ক্ষমতায় থাকে এই পরিবারও সেদিকে চলে। তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক হলে বদি তার সঙ্গে সখ্য বাড়ান। এতে করে টেকনাফে তার অবৈধ ব্যবসা আরও বাড়তে থাকে। কাউকেই তোয়াক্কা করতেন না বদি।
টেকনাফের স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কক্সবাজারের এই এলাকায় ইয়াবাসহ সব অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বদি ও তার পরিবারের সদস্যরা জড়িত। টেকনাফ সীমান্তে ইয়াবা পাচারের সূত্রপাত হয় বদির পরিবারের হাত ধরেই। বিভিন্ন চোরাকারবারে অঘোষিত অনুমতি দিতেন বদির ভাই মৌলভী মুজিবুর রহমান। বদির ছেলে শাওন আরমানও এসবের মধ্যে জড়িয়ে পড়েন। বদির ভগ্নিপতি কথিত সিআইপি ফারুকও সমানতালে মাদকের কারবার করতেন। তার মাধ্যমে নতুন ভয়ংকর মাদক ক্রিস্টাল মেথ বা আইস, স্বর্ণ চোরাচালানসহ অবৈধভাবে মায়ানমারে পণ্য আদান প্রদানের সিন্ডিকেট পরিচালিত হতো। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে গত প্রায় ১৬ বছর ধরে চলা তাদের মাদকের কারবারে কিছুটা ভাটা পড়ে। তবে আড়ালে থেকে ভিন্ন লোকদের মাধ্যমে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে বদির সিন্ডিকেট।
স্ত্রী এমপি হওয়ার সুবাদে বদির দাপট: স্ত্রী এমপি হওয়ায় বদি দাপট দেখাতেন। তার দাপটে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ ছিলেন। সংসদ সদস্য স্টিকারযুক্ত গাড়ি করে তিনি চট্টগ্রাম-ঢাকা শহরের বিভিন্ন বিভাগে স্বর্ণসহ অবৈধ পণ্য সরবরাহ করতেন। তার একটি বড় মাফিয়া সিন্ডিকেট ছিল। তারা প্রশাসনকে হুমকি দিত। সাধারণ লোকজন বদির ভয়ে মুখ খুলতেন না। তার পছন্দমতো কাউন্সিলর, ইউপি সদস্য, চেয়ারম্যান বানিয়ে তাদেরকে ব্যবহার করে এলাকায় অপকর্ম করতেন। নিজের টাকা খরচ করে ভালো মানুষকে অবৈধ কাজে ফাঁসানোর অনেক অভিযোগ রয়েছে বদির বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা বলেন, তার জন্য আজ পুরো টেকনাফ কলঙ্কিত হয়ে গেছে।
বেপরোয়া ভাই মুজিবুর: বদির বাবা টেকনাফের বহুল আলোচিত এজাহার মিয়া ওরফে এজাহার কোম্পানি। অক্ষরজ্ঞানহীন হলেও তিনি ছিলেন টেকনাফের রাজনীতির নিয়ন্ত্রক। বাবার প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম শুরু করেন বদি। এমপি হওয়ার পরে নিজেই গড়ে তোলেন মাদক চোরাচালানের সিন্ডিকেট। মাথার ওপরে বদির ছায়া থাকায় উখিয়া ও টেকনাফে লাগামহীন ছিলেন তার ভাই মুজিবুর। মুজিবুর রহমান বদির সৎভাই। তার নানার বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি মায়ানমারের মংডু শহরে। এর ফলে টেকনাফ এবং মায়ানমারে গত ১৬ বছর ধরে সীমান্ত চোরাচালান ও মাদক কারবারের স্বর্গরাজ্য গড়েছেন দুই ভাই। সকলের নাগের ডগায় এসব অপকর্ম চললেও অদৃশ্য কারণে নীরব ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ছাড়াও সরকারি খাস জায়গা দখল, বিচারের নামে সাধারণ লোকদের হয়রানি, দলীয় নেতা-কর্মীদের নামে-বেনামে মামলা দিয়ে ঘরছাড়াও করেন এই মুজিবুর।
নাফ নদের প্রধানমুখ টেকনাফের কায়ুকখালী খাল দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেন মুজিবুর। খরস্রোতা খালটি বদি ও মুজিবুর সিন্ডিকেট সদস্যদের কারণে এখন কোথাও নিশ্চিহ্ন আবার কোথাও সরু নালায় পরিণত হয়েছে। খালের ৩ শতক জায়গার ওপর মার্কেট নির্মাণ করেছেন মুজিবুর। টেকনাফের সরকারি ১নং খাস খতিয়ানের খালের জায়গা ও খালের মুখ পৌরসভার বর্জ্য ফেলে বাকি অংশটুকুও ভরাট করে মার্কেট নির্মাণের কাজ চলছে।
অর্থপাচার ও চোরাচালানের রুট: টেকনাফে স্থলবন্দর থাকা সত্ত্বেও শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার জন্য মায়ানমার থেকে আসা মাদক, রিচ কফি, বিভিন্ন রকমের ক্যালসিয়াম, কসমেটিক্স পণ্য রাতের আঁধারে চোরাই পথ দিয়ে টেকনাফে আসত। এসব দেশে আনার জন্য ব্যবহার হতো জালিয়াপাড়ার জেটিঘাট (বদির জেটি), মুজিবের নিজস্ব ঘাট (২ বিজিবি বিউপি ১০০ মিটার পরে), টেকনাফ স্থলবন্দর, কায়ুকখালী খাল, বড়ই তুলি ঘাট, নাইট্যংপাড়ার ঘাট ও মেরিন ড্রাইভসহ বিভিন্ন রুট। এসব পথে প্রতি রাতেই কোটি কোটি টাকার দেশীয় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও খাদ্যসামগ্রী পাচার হতো মুজিবুরের শ্বশুরের এলাকা মায়ানমারের মংডুতে। আর বিনিময়ে ওপার (মায়ানমার) থেকে নিয়ে আসা হতো বিদেশি অস্ত্র, মাদক, স্বর্ণ, কফি ও রোহিঙ্গা।
স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যমতে, এ মাদকগুলো বিক্রি করে মায়ানমারের বিদ্রোহী সংগঠনের সদস্যরা। তাদের সঙ্গে যোগসাজশ থাকায় এ পারের মাদক কারবারিরা হুন্ডি ও সিঅ্যান্ডএফ ড্রাফটের মাধ্যমে লেনদেন করত। এক্ষেত্রে সুকৌশলে মায়ানমারে বছরে পাচার হতো প্রায় কয়েক লাখ কোটি টাকা। এসব কিছু্র মূল হোতা ইয়াবা বদি।
সিন্ডিকেটের অবৈধ টাকা হুন্ডিতে লেনদেন করতেন আব্দুর রহমান বদির পার্টনার ও হিসাবরক্ষক ব্যবসায়ী ফারুক ও সজিব। বদির সিন্ডিকেটের কালো টাকা সাদা করার জন্য সিঅ্যান্ডএফের ড্রাফট ব্যবহার করে মায়ানমারে টাকা পাচার হতো। গত ১৬ বছর স্থানীয় এবি ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক তারাই নিয়ন্ত্রণ করেছে। ফলে অর্থ লেনদেনের সব কিছুই ধামাচাপা পড়ে যেত। গেল দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বদির স্ত্রী শাহিনা আক্তার নমিনেশন পাওয়ার পর তাকে ২ কোটি টাকা উপহারও দিয়েছিলেন তারা।
নাফ নদেও একক প্রভাব: স্থানীয় জেলেরা জানান, দীর্ঘ ৮ বছর নাফ নদে মাছ ধরায় সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ইয়াবা পাচারের পাশাপাশি অবাধে মাছ ধরত মুজিবুরের লোকেরা। বদির ক্ষমতার দাপটকে কাজে লাগিয়ে মুজিবুরের ২০টির বেশি ট্রলার মায়ানমার সীমান্তে মাছ শিকার করে। যদিও নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে টেকনাফের ১০ হাজারের বেশি জেলে পরিবার মাছ ধরতে পারছে না। কিন্তু বদি ও তার ভাইয়ের জেলেরা নির্বিঘ্নে মাছ শিকারের পাশাপাশি মায়ানমার নাগরিক পারাপার, ইয়াবা পাচার, স্বর্ণ ও অস্ত্র পাচার করে যাচ্ছিলেন।
এসব বিষয়ে মুজিবুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি সব অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি কোনো চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িত না। কেউ প্রমাণ করতে পারবে না, রাতের আঁধারে কে বা কারা কী করে আমি জানি না।
বদির ব্যবসায়ী গ্যাং ও নিকটাত্মীয়: ইয়াবা বদির ম্যানেজার জাফর আহমেদকে সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে আটক করেছে র্যাব। তিনি টেকনাফ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক কারবারিদের একজন। বদি জাফরকে দিয়ে টেকনাফকে পরিণত করেছিলেন মাদক, চোরাচালান, চাঁদাবাজি, অপহরণ ও হত্যার স্বর্গরাজ্যে। বদির অপরাধ জগতের বিশ্বস্ত সহচর জাফর একসময় ছিলেন পান বাজারের শ্রমিক। সেখান থেকে হয়ে উঠেন শ্রমিক নেতা, পরে দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ। এই চাঁদাবাজির অর্থে তিনি টেকনাফ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করেন।
বদির সংস্পর্শে এসে ছেঁড়া জামা ও লুঙ্গি পরা আজগর মাঝি এখন বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়ির মালিক বনে গেছেন। বদির আশীর্বাদে টেকনাফ স্থলবন্দরের সব সেক্টর তার নিয়ন্ত্রণে চলে। তাকে মোটা অঙ্কের বকশিশ না দিলে আমদানি রপ্তানির মালামাল লোড আনলোড হয় না বলে ব্যবসায়ীরা জানান। স্থলবন্দরে দৈনিক ৭ ও ৮ শত রোহিঙ্গা শ্রমিক তার অধীনে কাজ করতেন এবং অবৈধ মালামাল বৈধ মালামালের মধ্যে মিশিয়ে গাড়িতে বোঝাই করে নিয়ে যেতেন বন্দর থেকে।
বদির ক্ষমতা ব্যবহার করে বন্দরসহ বিভিন্ন স্থান দিয়ে মাদক আনতেন বদির ভাই আব্দুস শুক্কুর। এভাবে তিনি হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। আরেক ভাই মৌলভী মুজিবুর রহমান সাবেক কাউন্সিলর রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, মাদক, চোরাচালান, সব কাজে বদির প্রভাব দেখিয়ে ট্রানজিট জেটি ব্যবহার করে অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা আয় করেন।
এ ছাড়াও বদির অবৈধ ব্যবসার দেখভাল করতেন গফুর আলম, চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আলম, ভাগিনা শাহেদ রহমান নিপু (সাগরপথে মাদক আমদানি করেন) ও ভাতিজা আদিব রহমান। তারা মায়ানমারে মালামাল পাচার ও মাদক আমদানি করতেন। ফুফাতো ভাই কামরুল হাসান রাসেল মাদক ব্যবসা করে অবৈধভাবে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। আরেক ফুফাতো ভাই মো. আব্দুল্লাহ বদির ক্ষমতার দাপটে বন্দর ও এলাকায় প্রভাব দেখিয়ে অবৈধভাবে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তার কয়েক কোটি টাকার জমি রয়েছে বলে জানা গেছে।
শ্রমিক নেতা আলী আজগর, সমশু আলম, মতলব, ফয়েজ উল্লাহসহ কয়েকজন বদির প্রতিদিনের আয়ের হিসাব রাখতেন। ভাগিনা কিং সালমান মামা বদির ক্ষমতার প্রভাবে মায়ানমার থেকে নাফ নদী দিয়ে মাদক আমদানি ও অবৈধ অস্ত্র দিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতেন।
এ ছাড়া বদির ব্যবসায়িক অংশীদার ওসমান গণি, শহিদ ও মো. শফিক, ভাগিনা ও সাবেক কাউন্সিলর রেজাউল করিম মানিক, বদির ভাই শুক্কুরের ম্যানেজার মারুফ বিন খলিল, বোনের জামাই ওমর ফারুক, বদির আস্থাভাজন মোহাম্মদ আলম বাহাদুর তার ক্ষমতা ব্যবহার করে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে বদি গ্রেপ্তার হন। তার পরিবার ও সিন্ডিকেট সদস্যরা গা-ঢাকা দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে যায়। তার স্ত্রী এমপি শাহীন আক্তার ভারতে পালিয়ে গেছেন। বদির ছেলে লন্ডনে চলে গেছেন। তারপরও স্থানীয় লোকজন তাদের বিষয়ে মুখ খুলতে চান না। বদির সিন্ডিকেটের ভয় এখনো স্থানীয় জনসাধারণের মনে বিরাজ করছে।