সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) বিভিন্ন সেতু এবং সড়কের টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজে ৯৫০ কোটি টাকা লোপাটের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে পাঁচ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো ইউডিসি, শামীম এন্টারপ্রাইজ, র্যাগনাম, তানভির ও সিএনএস। এসব প্রতিষ্ঠান ২০১২ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এ পরিমাণ অর্থ লোপাট করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এসব কাজে সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্পবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মির্জা আজম, সাবেক চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন, সাবেক এমপি মুজিবুর রহমান চৌধুরীর (নিক্সন চৌধুরী) মদদ ছিল বলে জানান সওজের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা জানান, সর্বনিম্ন দরদাতা না হয়েও কার্যাদেশ বাগিয়ে নিত পাঁচ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সাবেক সরকারের প্রভাবশালী নেতাদের পাশাপাশি সওজের অসাধু কর্মকর্তারা এসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অসাধু উপায়ে কাজ পেতে সহযোগিতা করেছেন। তৃতীয় দরদাতা হয়েও কাজ পেয়ে যায় ইউডিসি
জানা গেছে, তৃতীয় দরদাতা হয়েও কাজ পেয়ে যায় ইউডিসি। এতে রাষ্ট্রের ক্ষতি হয় ৩৩ কোটি টাকা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা-গোমতী সেতু, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী সেতু (শাহ আমানত সেতু) ও পোর্ট এক্সেস সড়কের টোল, ঈশ্বরদীর পাকশী সেতু (লালন শাহ সেতু), নাটোরের নলকা-হাটিকুমরুল রোডের টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজটি পেয়েছিল ইউডিসি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার মো. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন বলে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, মির্জা আজমের সঙ্গে যোগসাজশে কামাল হোসেন সর্বনিম্ন দরদাতা না হয়েও সওজের গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাগিয়ে নেন। বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ, প্রযুক্তি সহায়তা করতে তিনি এই কার্যাদেশ পান।
২০২১-২২ সালে সওজের অধীনে থাকা নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ এলাকার মেঘনা সেতু, কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকার মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ পায় ইউডিসি। অভিযোগ রয়েছে, এসব কার্যাদেশের প্রথম দরদাতাকে (দর ৩৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা) টপকে কাজ দেওয়া হয় তৃতীয় দরদাতা ইউডিসিকে (দর ৬৭ কোটি ৪৭ লাখ)। এই কার্যাদেশ পেতে ইউডিসিকে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন যুগ্ম সচিব মনিন্দ্র কিশোর মজুমদার, সওজের ঢাকা জোনের তৎকালীন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান (এখন ঢাকা বাইপাস প্রকল্পের পরিচালক), নারায়ণগঞ্জ সড়ক সার্কেলের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. নাজমুল হকের বিরুদ্ধে। সওজের নানা সূত্র বলছে, যোগ্য ঠিকাদারকে কাজ বুঝিয়ে না দেওয়ায় রাষ্ট্রের ৩৩ কোটি ৪৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
সড়ক ও সেতু বিভাগের টেন্ডার জালিয়াতিতে ইউডিসির সঙ্গী হয়েছিল ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটুর প্রতিষ্ঠান শামীম এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড। টিটুর ভাই মো. আমিনুল ইসলাম এই প্রতিষ্ঠান দেখভাল করতেন। তিনি সড়ক ও সেতু বিভাগ থেকে লোপাট করা অর্থে কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্রসৈকতে সি পার্ল বিচ রিসোর্চ অ্যান্ড স্পা লিমিটেড নামে একটি পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ করেন, যা রয়েল টিউলিপ নামে পরিচিত।
ইউডিসির অর্থ লোপাটের কর্মকাণ্ডে মোহাম্মদ হুসেইন জনির র্যাগনাম রিসোর্স লিমিটেড ও তানভির আহমেদ সানুর তানভির কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের বিভিন্ন নথি বলছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডু, মানিকগঞ্জের বাথুলী, নরসিংদীর চরসিন্দুর, ময়মনসিংহের শ্যামগঞ্জ-ঝারিয়া-বিরিশিরি-দুর্গাপুর সড়ক, খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কের ওজন স্কেল স্থাপনের কাজ বাগিয়ে নিয়েছে র্যাগনাম রিসোর্স ও তানভির কনস্ট্রাকশন। এতে প্রচ্ছন্ন মদদ ছিল সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের, যার নির্দেশে সওজের অনেক প্রকৌশলীও এই অপকর্মে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সওজে জমা হওয়া বিভিন্ন অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, র্যাগনাম ও তানভির কনস্ট্রাকশন, ইউডিসি ও এম এম বিল্ডার্সের নামে দরপত্র কিনে এসব প্রতিষ্ঠানের অসাধু কর্মকর্তারাই পূরণ করতেন ও সমর্থনকারী হিসেবে জমা দিতেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটির কর্মীরা সড়কে মালামালবাহী গাড়ি থেকে চাঁদাবাজিও করেছেন। অতিরিক্ত মালামালবোঝাই গাড়ি থেকে সরকার যে জরিমানার অর্থ পেত, তাও এই দুই প্রতিষ্ঠান ভাগাভাগি করে নিয়েছে বলে সওজে অভিযোগ রয়েছে।
ইউডিসি কনস্ট্রাকশনের প্রশাসন বিভাগের পরিচালক এহসানুল হক মুকুল এ বিষয়ে বলেন, ‘এখন তো একটি বিশেষ সময় চলছে। আর আমাদের তো শত্রুর অভাব নেই। কে কী অভিযোগ করেছে তা আমরা জানি না। তবে সওজের কাজ পেতে ইউডিসি কখনো কোনো অনিয়ম করেনি।’
গত ৫ আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্যান্য অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধাররা গা ঢাকা দিয়েছেন। মোবাইল ফোন, হোয়াটসঅ্যাপ ও ই-মেইলে বার্তা পাঠালেও একটি ছাড়া অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে উত্তর আসেনি। ঠিকাদার র্যাগনাম রিসোর্সের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান বলেন, ‘সওজের প্রতিটা টেন্ডার ছিল উন্মুক্ত পদ্ধতিতে। এখানে আমরা যত কাজ পেয়েছি, তার সব কটিতেই আমরা লোয়েস্ট প্রাইস বিড করেছি। আমাদের টেন্ডার স্পেসিফিকেশনের কাজগুলো করেছেন সওজের প্রকৌশলীরা। সড়কে আমরা যত ওজন যন্ত্র বসিয়েছি তার সব কটিই করেছি সওজের পরামর্শে। তারা যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের ওজন যন্ত্র কিনতে বলতেন, আমরা সেসব প্রতিষ্ঠান থেকেই কিনেছি। টেন্ডার জালিয়াতির অভিযোগ ভিত্তিহীন।’
অভিযুক্ত সওজ কর্মকর্তা সবুজ উদ্দিন খানের বক্তব্য জানতে তার কার্যালয়ে গেলে তিনি তার কক্ষে প্রবেশের অনুমতি দেননি।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. নাজমুল হক জানান, ইউডিসি কনস্ট্রাকশনের সঙ্গে সওজের চুক্তি রয়েছে আগামী জুন মাস পর্যন্ত। ইউডিসি, শামীম এন্টারপ্রাইজসহ অন্যান্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম সম্পর্কে নাজমুল হক বলেন, ‘এখন কোথাও কোনো অনিয়ম হয় না। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা-গোমতী সেতু বলেন আর মেঘনা সেতুর কথা বলেন, আর মহাসড়কের নানা টোল; সবকিছু এখন সময়মতো সওজ কোষাগারে জমা হচ্ছে।’ আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে যোগসাজশের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এগুলো মিথ্যা অভিযোগ।’
দরপত্র ছাড়াই কাজ পায় সিএনএস, আর্থিক ক্ষতি ৩০০ কোটি টাকা
মেঘনা সেতু ও মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ে আর্থিক দুর্নীতিতে নাম এসেছে সিএনএস লিমিটেডের। সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ভাইয়ের এ প্রতিষ্ঠানের প্রতি সদয় দৃষ্টি ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্পবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানেরও। জানা যায়, ২০১৫ সালে কোনো টেন্ডার আহ্বান না করে অভিজ্ঞতাবিহীন প্রতিষ্ঠান সিএনএসকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুটি সেতুর টোল আদায়ের কাজ পাইয়ে দেওয়া হয়। ১৯ শতাংশ কমিশনে সিএনএসকে ৫ বছরের জন্য কাজ দেওয়া হয়। জানা যায়, এতে ৩০০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে কাজ পেলে মাত্র ৫-৬ শতাংশ কমিশনে ঠিকাদার পাওয়া যেত।
এ ছাড়া চট্টগ্রামের শাহ আমানত সেতু, খুলনার খান জাহান আলী সেতু (রূপসা সেতু), পাকশীর লালন শাহ সেতু, চট্টগ্রাম বন্দর সংযোগ সড়ক, নাটোরের নলকা-হাটিকুমরুল সড়ক, ঘোড়াশালের শহিদ ময়েজ উদ্দিন সড়ক সেতু, ভৈরবের ব্রহ্মপুত্র সেতু, মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর সেতু, যমুনা সেতু এবং পটুয়াখালীর লেবুখালী সেতুর টোল আদায় থেকেও কোটি কোটি টাকা সিএনএস বাগিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এসব সেতুর মালামাল সরবরাহ, প্রযুক্তি সংযোগ-পরিচালন-রক্ষণাবেক্ষণসংক্রান্ত বিভিন্ন দরপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এসব সেতুতে ওজন পরিমাপক যন্ত্র স্থাপন এবং যন্ত্র স্থাপনের পর আদায় করা জরিমানার টাকাও লোপাট করেছেন সিএনএসের কর্মীরা।
এরও তিন বছর আগে ২০১২ সালে এই দুই সেতুর টোলপ্লাজার কাজ বাগিয়ে নিয়েছিল সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠ রতনের প্রতিষ্ঠান ইনফ্রাটেক কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড। এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিনা টেন্ডারে প্রায় ৬৫০ কোটি টাকার কাজ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সেতুর টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ রয়েছে মো. মহিউদ্দিন মঈনের এম এম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের বিরুদ্ধে। জানা যায়, সাবেক চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন, সাবেক এমপি মুজিবুর রহমান চৌধুরীর (নিক্সন চৌধুরী) সহায়তায় মো. মহিউদ্দিন সওজ ও সেতু বিভাগে টেন্ডার সিন্ডিকেট তৈরি করেছিলেন। ছোট ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিতে তিনি কোটি কোটি টাকা ঘুষ নিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
জাল সার্টিফিকেট, ওয়েবসাইটে তথ্যের কারসাজি
সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঠিকাদারদের নানা অনিয়ম তদন্ত করেছেন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (প্রকিউরমেন্ট সার্কেল) মো. আহসান হাবিব। তিনি জানান, গত কয়েক বছর ধরে ১৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অভিজ্ঞতার জাল সনদ দিয়ে বারবার কাজ পেয়ে যাচ্ছে। এতে সওজের কিছু দায় আছে। এসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সওজের ওয়েবসাইটে খেয়াল-খুশিমতো তথ্য ও সনদ আপলোড করেন। দেখা গেছে, কোনো প্রতিষ্ঠান তার অভিজ্ঞতার প্রমাণ হিসেবে কয়েক শ সনদ আপলোড করেছেন। পরবর্তী সময়ে সব সনদ নিরীক্ষা করার সুযোগ থাকে না সওজের কর্মকর্তাদের। অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব সনদের অধিকাংশই ভুয়া।
আহসান হাবিব বলেন, ‘এই ১৫টি প্রতিষ্ঠানই সওজের কাজগুলো পাওয়ার জন্য যথোপযুক্ত প্রতিষ্ঠান ছিল। অভিজ্ঞতার দিক থেকে তারা এগিয়ে থাকত বলে বারবার তারা কাজ পেয়েছে। যেমন টোলপ্লাজার কাজের সিএনএস থেকে দক্ষ প্রতিষ্ঠান সওজ খুঁজে পায়নি। কারণ সওজের তখন নিজস্ব টোল কালেকশন সফটওয়্যার বা সিস্টেম ছিল না। বাধ্য হয়ে তাদের সেবা নিতে হয়েছে। তবে এখন আমরা টোল কালেকশনের টেন্ডারে নন-স্ট্যান্ডার্ড টেন্ডার ডকুমেন্ট সিস্টেম চালু করে দিচ্ছি। এতে করে যারা সফটওয়্যার বেইজড ফাইন্যান্স কালেকশনের কাজ করছে তারা সবাই আবেদন করতে পারবে। আর এখন টোল কালেকশন সফটওয়্যারও সওজ তৈরি করেছে। এতে এখন দুর্নীতি থাকবে না।’
উন্মুক্ত দরপত্র প্রক্রিয়ায় কোনো কার্যক্রমের প্রাক্কলিত দাপ্তরিক দর যদি ১০০ টাকা হয়, তাহলে দরপত্রে অংশ নেওয়া ঠিকাদাররা যদি ওই দরের ১০ শতাংশ কম বা বেশির মধ্যে দর না দেন, তাহলে ওই ঠিকাদারকে অযোগ্য বিবেচনা করা হবে।
এটিকে দরসীমা বা প্রাইস ক্যাপও বলা হয়। সরকারি কেনাকাটার একটি পদ্ধতির কারণেও সওজের ঠিকাদাররা দুর্নীতির আশ্রয় নেন বলে মন্তব্য করেন আহসান হাবিব। তিনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ার কারণে ঠিকাদারদের মধ্যে একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। সবাই তো জানেই কোন কাজের রেট কত। এখানে টেন্ডার বিড করে দক্ষতা প্রমাণ করতে ভুল কাগজ, সার্টিফিকেট জমা দিচ্ছেন ঠিকাদাররা। তবে ১০ পার্সেন্ট প্রাইস ক্যাপ সিস্টেমটা সরকার তুলে দিতে চায়। তখন হয়তো এই টেন্ডার জালিয়াতি, ভুয়া সার্টিফিকেটের রমরমা বাণিজ্য বন্ধ হবে।’
সওজ বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ঠিকাদারদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিলেও সুফল মেলেনি। যাদের কালো তালিকাভুক্ত করা হয় তারা উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে এসে আবার কাজ বাগিয়ে নিচ্ছেন। এতে করে সওজের দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন সওজের তদন্ত কমিটির এই সদস্য।