গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর সম্ভবত রাজনীতিতে এতটা উত্তাপ আর কখনো দেখা যায়নি। সংস্কার নাকি নির্বাচন, কোনটি আগে- এ নিয়ে রাজনীতিতে তর্ক-বিতর্ক থাকলেও আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন ইস্যুতে দেশে এই প্রথম প্রচণ্ড রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়েছে। বিশেষ করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) আওয়ামী লীগবিরোধী বলে পরিচিত দলগুলোর মধ্যে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি অস্থিরতা দৃশ্যমান।
বস্তুত, আওয়ামী লীগ ইস্যুতে রাজনীতিকদের বক্তব্য এক জায়গায় স্থির থাকছে না, বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিপরীতমুখী অবস্থান দৃশ্যমান হচ্ছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো; এই ইস্যুতে আবার সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, খোদ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধেও বক্তব্য উঠে আসছে। ফলে জনমনে প্রচণ্ড উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ছে। রাজনৈতিক অঙ্গনেও ছড়িয়ে পড়ছে একধরনের অস্থিরতা। অফিস-আদালত থেকে শুরু করে সচেতন জনগোষ্ঠীর মধ্যে সবর্ত্র একটাই আলোচনা, কী হচ্ছে, কী হবে?
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা-সংশ্লিষ্ট দুটি পোস্ট গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নানা গুঞ্জন তৈরি হয়। গত দুই দিন কিছু কিছু জায়গায় সেনাবাহিনীর টহল জোরদার করায় এই গুঞ্জন কিছুটা বিশ্বাসযোগ্যতা পেয়ে আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করে। গতকাল শনিবার সুশীল সমাজের দু-একজন নাগরিকও সিনিয়র সাংবাদিকদের কাছে ফোন করে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। তবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ সেনাবাহিনী সম্পর্কে ইতিবাচক বক্তব্য দেওয়ায় পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।
বিদ্যমান পরিস্থিতি বিচেনায় নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গতকাল বলেছেন, ‘রাজনীতিতে মতভিন্নতা থাকলেও ফ্যাসিবাদ পুনর্বাসন প্রশ্নে কোনো আপোস হবে না।’ তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভিন্নমত থাকতে পারে, তবে সমস্যা সৃষ্টি হলে আলোচনায় বসব। যেকোনো মূল্যে ঐক্য ধরে রাখতে হবে, যাতে করে পতিত স্বৈরাচার শক্তি আমাদের কাঁধে চেপে বসতে না পারে।’
পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ খবরের কাগজকে বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন চায়, এটা আমার কাছে মনে হয় না। সবাই ফ্যাসিবাদী রাজনীতির কবর কামনা করে। এখানে মতপার্থক্যটা হলো, আওয়ামী লীগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত কীভাবে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি বলেছে জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। আমার মনে হয় এটাই বিএনপির অবস্থান। আওয়ামী লীগ জনগণের ওপর যে অত্যাচার-নির্যাতন করেছে, দেশের ক্ষতি করে বিদেশে অর্থ পাচার করেছে, এসব কারণেই তাদের আর গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে রাখবে না। গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে পরিত্যাগ করেছে, ছুড়ে ফেলে দিয়েছে জনগণ। সেই অবস্থা এখনো অব্যাহত রয়েছে।’
‘সবাই আওয়ামী লীগের অপরাধের বিচার চায়। এখানে কারও দ্বিমত নেই। কাজেই যত দ্রুত বিচার হবে, ততই দেশের জন্য ভালো। কারণ একটা সমস্যার কিছুটা ফয়সালা হয় এবং সেটা হওয়া উচিত’ যোগ করেন দেশের বিশিষ্ট এই নাগরিক। তিনি বলেন, ‘যারা বিচারের দায়িত্বে আছেন, তাদের আরও তৎপরতার সঙ্গে কাজ করে এর সমাধান করা উচিত। আমি মনে করি, বিচার-প্রক্রিয়া নিষ্পত্তি হলে এ-সংক্রান্ত যে মতপার্থক্য আছে তা অনেকটাই কেটে যাবে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে। তারা নির্বাচনে অংশ নিতে চায়, তারা তাদের অধিকার চায়। কিন্তু তারা তো দায়িত্ব পালন করেনি। কোনো দায়ও নেয়নি। তাই সহিংসতা, খুন ও বহু মানুষকে আহত করার ঘটনায় বহু লোক ক্ষুব্ধ। মানুষের মধ্যে এখনো ক্ষোভ আছে।’ তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভেদ বাড়লে জনমনে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়বে, এটাই স্বভাবিক। তাই জনমনে যাতে উদ্বেগ না দেখা যায়, সে জন্য সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী খবরের কাগজকে বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ছাত্রদের অনৈক্য অনেক দিন ধরেই চলছে। এটা অস্বাভাবিক নয়। বাংলাদেশের এলিট শ্রেণি- বিএনপি, আওয়ামী লীগ, সেনাবাহিনী বা সিভিল সার্ভিসের বিরুদ্ধেই ছিল ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান। কারণ তারা একটা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চায়। যেখানে এলিট শ্রেণির কোনো রুল থাকবে না। এ জন্য এই এলিট শ্রেণিরা এখন এক হয়ে যাচ্ছে। ফলে আমার কাছে মনে হচ্ছে, এটা এখন শ্রেণি বিভাজন। শ্রেণিগত অনৈক্য দেখা দিলে একটা ভয় বা শঙ্কা থাকে।’
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে এখন সবচেয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। গণ-অভ্যুত্থানের ছাত্রদের চাওয়া-পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে দলগুলোকে ধারণ করতে হবে। সেটাকে ধারণ না করতে পারলে আগামী দিনে হয়তো ভয়াবহ সংঘর্ষময় পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। আমি মনে করি, ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত মেনে নিলে সংঘাতের আশঙ্কা থাকবে না।
রাজনীতিতে অনৈক্য
গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে তোলপাড় শুরু হয়। এতে তিনি লিখেছেন, “রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের। আমিসহ আরও দুইজনের কাছে ক্যান্টনমেন্ট থেকে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয় ১১ই মার্চ দুপুর ২:৩০-এ।”
হাসনাত আবদুল্লাহর এই পোস্টকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এ রকম পরিস্থিতির মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতেই ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।
প্রধান উপদেষ্টার এমন বক্তব্যের পর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে এনসিপি। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ কর্তৃক সংঘটিত পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা হত্যাকাণ্ড, আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড, গুম-ক্রসফায়ার, ভোট ডাকাতিসহ জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রশ্নে কার্যকর অগ্রগতি দৃশ্যমান হওয়ার আগে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পদ থেকে এ ধরনের বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত। এরপর গতকাল নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের চেষ্টা কঠোর হস্তে দমন করা হবে।’ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করে বিচার-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দলটিকে নিষিদ্ধ করারও দাবি জানান তিনি।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘গণহত্যার বছর না ঘুরতেই আওয়ামী লীগকে ফেরানোর খায়েশ বিপজ্জনক।’
এরই মধ্যে আগুনে ঘি ঢালে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্য। তিনি বলেন, হত্যা ও লুটপাটে জড়িত নয়, এমন কারও নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বাধা নেই। পরবর্তী সময়ে তার এই বক্তব্য নিয়ে বিএনপির মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়। পাশাপাশি ফেসবুকেও এই বক্তব্যের পক্ষে-বিপক্ষে নানা মতও তুলে ধরেন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা। যদিও রিজভীর এই বক্তব্য ব্যক্তিগত, দলের নয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘রিজভীর বক্তব্য তার একান্ত ব্যক্তিগত। বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে কোনো আলোচনা হয়নি।’ তবে গণমাধ্যম রিজভীর বক্তব্য আংশিক তুলে ধরেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তারেক রহমানের বক্তব্য উদ্ধৃত করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘পলাতক স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের সুযোগ দেওয়া যাবে না। এটাই দলীয় অবস্থান। গণহত্যার দায়ে অভিযুক্তদের রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই।’
অন্যদিকে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘জনগণ আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন কোনোভাবেই মেনে নেবে না। তার মতে, জনগণের প্রধান চাওয়া গণহত্যার বিচারের নিশ্চয়তা।
গতকাল চলমান সাম্প্রতিক আলোচনা প্রসঙ্গে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘রাজনীতিতে আবার ফেরার জন্য আওয়ামী লীগ নিজে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা কেউ কেউ, যারা খুব গুরুত্বপূর্ণ লোকজন, ঝগড়া করে ফোকাস করে তাদের সবার সামনে নিয়ে আসছি।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে আমি এখনই কোনো কমেন্ট করব না। দয়া করে ওদিকে ডাইভার্ট করবেন না।’
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু খবরের কাগজকে বলেন, “আমরাও ‘ইনক্লুসিভ’ ইলেকশন চাই। আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনতে আমাদের আপত্তি নেই। তবে তার আগে তারা আমাদের ভাইবোনদের জীবনগুলো ফেরত দিতে হবে। বিদেশে পাচার করা অর্থের হিসাব দিতে হবে। ইনক্লুসিভ ইলেকশনের নামে আবার ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে আমাদের লাশ ও রক্তের ওপর দিয়ে করতে হবে।’
গতকাল এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেছেন, ‘দেশের মানুষ জীবন দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, আওয়ামী লীগ এ দেশে আর রাজনীতি করতে পারবে না। যে ভাইয়েরা রাজপথে জীবন দিয়েছেন, তাদের রক্তের শপথ আমাদের শরীরে একবিন্দু রক্ত থাকতে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না।’
গত দুই দিনে নেতাদের এই নানামুখী প্রতিক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্যের চিত্র ফুটে উঠছে। আর এ কারণেই জনমনে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। বলা হচ্ছে, যারা একসঙ্গে শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়েছে, তাদের মধ্যে এই অনৈক্যের শেষ কোথায়? তাহলে কি নির্বাচন পিছিয়ে যাবে, সংস্কার কি বাধাগ্রস্ত হবে- এমন প্রশ্ন উঠছে জনমনে।
এ প্রসঙ্গে ড. মাহবুব উল্লাহ আরও বলেন, ‘হাসনাত আবদুল্লাহর ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে একটা ঘটনা বেরিয়ে আসছে। এটার ভালো-মন্দ দুই দিকই আছে। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের যে উপায়ের কথা বলা হয়েছে তা বন্ধ হয়ে যাবে; এবং যারা চিন্তাভাবনা করছে তাদের নতুন করে চিন্তাভাবনা করতে হবে। সামগ্রিকভাবে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কারও কোনো অভিযোগ থাকা উচিত নয়। ছাত্রদের আবেগ ও অনুভূতিকে মূল্য দিতে হবে। তাহলে বিষয়টা সহজ হবে। দেশের জন্য তারুণ্যর এই শক্তির প্রয়োজন আছে।’
সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে বিতর্ক
৫ আগস্টের ঘটনায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা সবদিক থেকেই ইতিবাচক ছিল। বলা হয়, সেনাবাহিনী ছাত্রদের পক্ষে না দাঁড়ালে ছাত্র-জনতার এই অভ্যুত্থান সফল নাও হতে পারত। তবে হঠাৎ করেই হাসনাত আবদুল্লাহর পোস্টকে কেন্দ্র করে কিছুটা বিতর্ক তৈরি হয়।
তবে গতকাল হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘সেনাবাহিনীর ওপর পূর্ণ আস্থা ও সমর্থন আছে। তবে কেউ তাদের ব্যবহার করে চক্রান্ত করতে চাইলে মানা হবে না। ক্যান্টনমেন্ট থেকে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে হস্তক্ষেপ ২৪-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি মেনে নেব না।’
তবে এই বিতর্কে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী সরাসরি কোনো কথা বলেনি। বরং গতকাল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সরকার এবং সেনাবাহিনীর ভূমিকার প্রতি বিএনপির আস্থা আছে। সেনাবাহিনী আগেও সহযোগিতা করেছে, আগামীতেও করবে।
ফাউন্ডেশন ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (এফএসডিএস) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি, এটা কারোরই কাম্য নয়। ছাত্র-জনতা ও সেনাবাহিনীর একে অপরের প্রতিপক্ষ হওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং এখানে আমাদের আরও সতর্ক ও সংযত থাকতে হবে। জনসমর্থন কিন্তু ম্যাচুরিটি প্রমাণ করে না। দেশের বহুমাত্রিকতাকে রক্ষা ও গতিশীলতা রক্ষার জন্য সব থেকে দূরে থাকা বাঞ্ছনীয়।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত দেশের বর্তমান বাস্তবতা দেখে করতে হবে। দেশের ১৮ কোটি সাধারণ জনগণ কী চায়? নির্বাচনে অংশ নিলে তারা ক্যাম্পেইন করতে পারবে কি না? তাই সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। দেশের অস্থিরতা রুখতে বাস্তবতার নিরিখে অন্তর্বর্তী সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।