ঢাকা ৩০ মাঘ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১

উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক বছরে অর্ধশত খুন

প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৩০ এএম
উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক বছরে অর্ধশত খুন
রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ছবি: খবরের কাগজ

কক্সবাজারের উখিয়ার বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে সশস্ত্র গোষ্ঠীর তৎপরতা বেড়েই চলেছে। এপিবিএন সূত্র জানায়, গত এক বছরে এসব আশ্রয়শিবিরে খুন হয়েছে ৪৯ জন রোহিঙ্গা নাগরিক। এসব আশ্রয়শিবিরে ৩০৭টি মামলায় এক বছরে ৭২৫ জন রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে বেশির ভাগ আসামি আশ্রয়শিবিরের বাইরে উখিয়ার গহিন পাহাড়ের আস্তানায় অবস্থান করায় তাদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না পুলিশ।

উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে উখিয়ার ২৬টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ৭ লাখ ৫৭৭ জন। 

রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, নিরাপত্তার স্বার্থে উখিয়ার ২৬টি আশ্রয়শিবিরের চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হলেও বর্তমানে শতাধিক স্থানে কাঁটাতার কেটে ফেলা হয়েছে। সশস্ত্র গোষ্ঠী সন্ধ্যার পর কাঁটাতারের ছেঁড়া অংশ দিয়ে আশ্রয়শিবিরে প্রবেশ করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।

স্থানীয়রা বলছেন, খুনের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ রোহিঙ্গার পাশাপাশি শরণার্থী সেবা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত অর্ধশতাধিক এনজিও-আইএনজিওর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। প্রাণনাশের আশঙ্কায় এনজিও কর্মচারীরা বিকেল ৪টার আগেই আশ্রয়শিবির ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছেন।

সম্প্রতি আশ্রয়শিবিরগুলোতে খুনের ঘটনা আগের চেয়ে কমছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। সর্বশেষ গেল বছরের ২১ অক্টোবর ভোর ৫টার দিকে ১৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি বসতবাড়িতে ঢুকে একই পরিবারের ৩ জনকে গুলি করে হত্যা করার ঘটনা ঘটেছে। নিহতরা হলেন ওই ক্যাম্পের আহমেদ হোসেন (৬০), সৈয়দুল আমিন (২৮) ও আসমা বেগম (১৩)।

পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোনো খুন-খারাবি বা সহিংসতা হয়নি। যদি প্রশাসন চায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তুচ্ছ ঘটনাও ঘটবে না।’

১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহাম্মদ সিরাজ আমিন বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গত দুই মাস ধরে কোনো ধরনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেনি। যার ফলে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। আমরা রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে দুষ্কৃতকারীদের নিয়ন্ত্রণে সর্বদা সতর্ক অবস্থানে আছি।’

তবে গত এক বছরে আশ্রয়শিবিরে মাদক চোরাচালান বেড়েছে অনেক। বেকার রোহিঙ্গারা মাদক চোরাচালানসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়নের ৮ ও ১৪ তথ্যমতে, গত বছর বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ ক্রিস্টাল মেথ (আইস), বিয়ার, গাঁজা ও চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়। মাদকের সঙ্গে বাংলাদেশি টাকা ও মায়ানমারের মুদ্রাও উদ্ধার করা হয়। ২০২৪ সালে মাদকের ১৩০টি মামলায় ১৫৮ জন রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে এপিবিএন। 

একই সঙ্গে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহারও বাড়ছে আশ্রয়শিবিরে। রোহিঙ্গা শিবির থেকে গেল বছর ওয়ান শুটারগান, বিদেশি পিস্তল ও বিভিন্ন বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে এপিবিএন। গত এক বছরে অস্ত্রের ১০২টি মামলায় ১৩০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সন্ত্রাসীদের ধরতে গিয়ে পুলিশের ওপর হামলাও থেমে নেই। পুলিশ আক্রান্তের চারটি মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এদিকে মাদক, সন্ত্রাস নির্মূল ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি এপিবিএনের সাইবার ক্রাইম সেল ১৬২টি হারানো মোবাইল উদ্ধার ও বিকাশে ভুলক্রমে চলে যাওয়া ১ লাখ ১৯ হাজার ৮০০ টাকা উদ্ধার করেছে।

অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি পালংখালীর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রবিউল হোসাইন বলেন, ‘ক্যাম্পের বাইরে রোহিঙ্গাদের অবাধে চলাচল বন্ধ করা না গেলে গুম-অপহরণ কোনোভাবেই রোধ করা সম্ভব না।’ ক্যাম্পের বাইরে রোহিঙ্গাদের অবাধে যাতায়াত ও বাসা ভাড়া বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

উখিয়া থানায় অফিসার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফ হোসাইন বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করতে এপিবিএনের পাশাপাশি আমরাও নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।’

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘গত দুই মাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কোনো বন্দুকযুদ্ধ ঘটেনি। টেকনাফে যে অপহরণের ঘটনা ঘটছে তা রোহিঙ্গাদের মধ্যে। স্থানীয় কেউ অপহৃত হয়নি। স্থানীয়দের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তারপরও আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করছি।’

 

দখলে দূষণে সংকুচিত ‘আগ্রাবাদ ডেবা’

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:২১ এএম
আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৯ এএম
দখলে দূষণে সংকুচিত ‘আগ্রাবাদ ডেবা’
চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ ডেবাটি দখল ও দূষণে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছ। ছবি: মোহাম্মদ হানিফ

দখলে ও দূষণে সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রামের ‘আগ্রাবাদ ডেবা’। প্রতিদিন ভেসে উঠছে মরা মাছ। চারপাশ দখল হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। নগরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত ‘আগ্রাবাদ ডেবা’ এখন দখলে-দূষণে মরণাপন্ন। ইজারা নেওয়া লোকের হাতে পড়ে ডেবাটি ক্রমান্বয়ে ভরাট হয়ে গড়ে উঠছে বাণিজ্যিক স্থাপনা। ডেবার অনেক মূল্যবান জায়গা ইতোমধ্যে চলে গেছে বেদখলে। সব মিলিয়ে এটি হয়ে উঠেছে লুটপাটের স্বর্গভূমি।

চট্টগ্রাম মহানগর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোক্তাদির হাসান খবরের কাগজকে বলেন, ‘আগ্রাবাদ ডেবার পানিদূষণের বিষয়ে আমাদের কেউ জানাননি। খাল, নদী এবং সাগরের পানির মাত্রা নির্ণয় করার কাজ করে পরিবেশ অধিদপ্তর। আগ্রাবাদ ডেবার মাছ মরার বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।’ 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আগ্রাবাদ ডেবার দক্ষিণ পাড়ে মরা মাছ ভেসে উঠেছে। বাঁশের খুঁটি গেড়ে দখল করা হচ্ছে ডেবার জলাশয়। দখল করার স্থানে তৈরি করা হচ্ছে সেমিপাকা ঘর। একশ্রেণির কর্মকর্তা এ ঘর ভাড়া দিচ্ছেন। চারপাশ থেকে ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে ডেবাতে। দক্ষিণ পাড়ে গড়ে উঠেছে বাজার। চারদিকে প্রায় এক হাজারেরও বেশি পরিবার ভাড়াটিয়া বসবাস করছেন। কেউ কেউ দোকান, সেলুন, হোটেল, গোডাউন দিয়ে ব্যবসা করছেন। পূর্ব পাড়ে ও পশ্চিম পাড়ে দুটি মসজিদও রয়েছে। 

পশ্চিম পাড়ে কেয়ারটেকার খোরশেদুল আলম ও মোহাম্মদ ফারুক বসবাস করছেন। তাদের পাহারাদার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ইজারাদার। বর্তমানের বন্দর এলাকার বিএনপি নেতা মোহাম্মদ সেলিম দেখাশোনা করছেন এ ডেবাটি। 

স্থানীয় মোহাম্মদ মনু খবরের কাগজকে বলেন, ‘চার পাশে ঘর, দোকান নির্মাণ করে বন্দর ও রেলওয়ের কর্মীরা ভাড়া দিচ্ছেন। ভাড়াটিয়ারা ময়লা-আবর্জনা ডেবায় ফেলছেন। সম্প্রতি সরকার পরিবর্তনের পর সাধারণ লোকজন এ ডেবার মাছ লুট করেছেন। প্রায় কয়েক দিন ধরে মাছ ধরেছি এ ডেবা থেকে। টনে টনে মাছ নিয়ে গেছেন স্থানীয়রা।’ 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম নগরীর প্রাণকেন্দ্রে ২৭ দশমিক ৪ একর আয়তনের বৃহৎ এই জলাশয়ের পাড়সহ একটি বড় অংশ দখল হয়ে গেছে। পাড় ছাড়া এর জলাধার রয়েছে প্রায় ২০ একর। এর মধ্যে ১৬ একর চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিএস খতিয়ানভুক্ত।

২০১৯ সালের ৬ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশন জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক লুৎফুল কবির চন্দনের নেতৃত্বে একটি টিম সেই এলাকায় অভিযান চালায়। ওই অভিযানে জলাশয়টি দখল হওয়ার প্রমাণ পায় দুদক। তবে শেষ পর্যন্ত এ নিয়ে আর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। 

স্থানীয়রা জানান, বিশাল এই জলাশয়টি অবহেলায়-অযত্নে একদিকে দখলবাজি আর অন্যদিকে দূষণের হুমকিতে পড়েছে। রেলওয়ে মৎস্য চাষের নামে এটি নিয়মিত ইজারা দিয়ে আসছে। অথচ এই বিশাল দৃষ্টিনন্দন জলাশয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ঠিক রেখে পরিবেশের কোনো ক্ষতি না করে একে বেড়ানোর নির্মল জায়গা হিসেবে গড়ে তোলা যেত। এর পাড়ে সবুজ উদ্যান আর নিরিবিলি হাঁটার পথ তৈরি করা গেলে জলাশয়টির চেহারাই পাল্টে যেত।

জানা গেছে, একসময় রেল ও বন্দর অভিন্ন সংস্থা ছিল। ১৯৬০ সালে এই দুটি সংস্থা পৃথক হওয়ার সময় চট্টগ্রাম প্রাণকেন্দ্রে ‘আগ্রাবাদ ডেবার’ পশ্চিমপাড়সহ জলাশয়টি বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব পাড়ের জায়গা রেলওয়ে ভোগ করবে, এমন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ২০ একর জায়গার জলাশয় ১৬ একর কাগজপত্রে বন্দরের হলেও দীর্ঘদিন ধরে সেটি দখলে রেখেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। শুরু থেকে তারাই সেটি ইজারা দিয়ে আসছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, রেলের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বসবাসের জন্য এ ডেবার পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছিল বেশ কিছু স্থাপনা। বর্তমানে সেগুলোও এখন স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে। সন্ধ্যা নামলেই ডেবার পাড়ে বসে ফেনসিডিলসহ মাদকের আসর।

সূত্র জানায়, আগ্রাবাদ ডেবা ৬০ বছর ধরে রেলওয়ের দখলে হলেও ভোগদখলে সেভাবে নেই, ইজারা নিয়ে পুরো ডেবাটিই অন্য লোকের দখলে থাকছে যুগের পর যুগ। আগ্রাবাদ ডেবার দখল ছাড়ার জন্য রেলওয়েকে দফায় দফায় চিঠি দিলেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, ইজারাদারের দখলে থাকা জলাশয় নিয়ে মামলা থাকায় বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে সেটি তারা হস্তান্তর করতে পারছে না। ওদিকে সেই মামলা চলছে কয়েক যুগ ধরে।

রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘প্রায় ২০ একরের ডেবাটি দীর্ঘদিন ধরেই ইজারা দিয়ে আসছে রেলওয়ে। এই ধারাবাহিকতায় ৫ বছর মেয়াদি ও ৩ বছর মেয়াদি ইজারা নিয়ে থাকে। এখন ইজারার মেয়াদ শেষ হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আশপাশের জায়গাগুলো রেলওয়ে কর্মচারীদের আবাসিক হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’ 

এদিকে আগ্রাবাদ ডেবার মালিকানা নিয়ে ৫৬ বছর ধরে বিরোধ চলছে চট্টগ্রাম বন্দর ও বাংলাদেশ রেলওয়ের মধ্যে। এ নিয়ে দুই মন্ত্রণালয় একাধিকবার বৈঠকে বসলেও আজও কোনো সমাধানে আসেনি। তাই ২০০৬ সালে বিরোধ নিষ্পত্তির আগ পর্যন্ত উভয় পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘১৯৬০ সালের ৩০ জুন নবগঠিত দ্য চিটাগাং পোর্ট ট্রাস্টকে ৪৭০ একর জমি হস্তান্তর করা হয়, যা পরবর্তী সময়ে গেজেটভুক্ত হয়। এরপর বন্দর কর্তৃপক্ষ বিএস খতিয়ানভুক্ত করে বছর বছর ওই জমির খাজনা পরিশোধ করে আসছে। এখানে ভুলবশত বন্দরের নামে রেকর্ড হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

একসময় চট্টগ্রাম বন্দর এবং রেলওয়ে একসঙ্গে ছিল। নাম ছিল চিটাগাং পোর্ট আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে। ১৯০৮ সালে নগরীর গোসাইলডাঙ্গা মৌজায় চিটাগাং পোর্ট আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়। চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে বন্দর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের সময় প্রয়োজন হয় লাখ লাখ টন মাটি। তৎকালীন চিটাগাং পোর্ট আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে জাহাজে সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য বর্তমান আগ্রাবাদ ডেবা খনন করা হয়। এই জলাশয় থেকে পানি সরবরাহ করা হতো জাহাজ, রেল ও আবাসিক এলাকায়। পরবর্তী সময় দেশ স্বাধীন হওয়ার পর চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রতিষ্ঠিত হলে ডেবা থেকে পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

ইলেকট্রিক বাস নামানোর তোড়জোড়

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:০০ এএম
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৫ পিএম
ইলেকট্রিক বাস নামানোর তোড়জোড়
ছবি: সংগৃহীত

পরিবহন খাত থেকে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে এনে রাজধানীর বায়ুর গুণগত মান ব্যবস্থাপনা (একিউএম) ও আরামদায়ক গণপরিবহনব্যবস্থা নিশ্চিত করতে দেশের সড়কে ইলেকট্রিক বাস আনার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রজেক্ট (বিসিএপি) প্রকল্পের আওতায় এই বাসগুলো সড়কে নামাতে ঢাকা সড়ক পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ), বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এবং পরিবেশ অধিদপ্তর সমন্বিতভাবে কাজ করবে।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ডিটিসিএ ভবনে এই প্রকল্প নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভায় ডিটিসিএ, বিআরটিএ, পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়াও ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পে পরিবেশ অধিদপ্তরকে ১০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগকে দেবে ২০০ মিলিয়ন ডলার। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ২০০ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ডিটিসিএ পাবে ১৫০ মিলিয়ন এবং বিআরটিএ পাবে ৫০ মিলিয়ন ডলার। ডিটিসিএ তার অংশে সিটি বাস সংস্কার কর্মসূচির আওতায় ইলেকট্রিক বাসের প্রবর্তন এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও কারিগরি সহায়তা, সক্ষমতা বৃদ্ধি, আইনগত সংস্কার ও নীতিমালা প্রণয়ন করবে।

সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, প্রকল্পের প্রধান উপাদানগুলোর মধ্যে নীতিমালা প্রণয়ন, বৈদ্যুতিক বাসের জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন, আধুনিক গণপরিবহনব্যবস্থা (ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম) এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কারিগরি সহায়তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এ প্রকল্পটি গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস করে টেকসই নগর পরিবহনকে উৎসাহিত করতে কাজ করবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার পাশাপাশি নগরে যানজটও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে শুরু হয়ে এ প্রকল্পটি ২০৩০ সালের ৩০ জুন শেষ হবে।

এই প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য হলো, ঢাকা শহরে ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক বাস পরিচালনা মডেলের মাধ্যমে গণপরিবহনব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনয়ন। এই প্রকল্পে সিটি বাস সার্ভিস ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন পরিকল্পনার পাশাপাশি ২০০-২৫০টি ইলেকট্রিক বাস কেনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই বাসগুলোর জন্য নতুন ১০টি বাস ডিপো স্থাপনের কথাও বলা হয়েছে প্রকল্প প্রস্তাবে।

ডিটিসিএর ডেপুটি ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানার ধ্রুব আলম বলেন, ‘ইলেকট্রিক বাসগুলো পরিচালনা করতে নতুন কোম্পানি গঠন করা যেতে পারে অথবা সরকার নিজস্ব উদ্যোগেও এসব বাস পরিচালনা করতে পারে। বাসগুলো দূরপাল্লায় নাকি স্বল্পপাল্লায় পরিচালনা করা হবে, তা এখনো ঠিক করা হয়নি।’

পরিবহন খাত বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) পরিচালক অধ্যাপক ড. শামছুল হক খবরের কাগজকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ইলেকট্রিক বাস আনার এই প্রকল্পে প্রথমে নজর দিতে হবে অবকাঠামো খাতে। ইলেকট্রিক বাসগুলো কোথায় চার্জ দেওয়া হবে, চার্জিং স্টেশনগুলো কোথায়-কীভাবে নির্মাণ করা হবে- এগুলো পরিকল্পনা করতে হবে। সরকারের গণপরিবহন খাতসংক্রান্ত নানা প্রকল্প পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, তারা কেনাকাটায় যত মনযোগী, রক্ষণাবেক্ষণে নন।’

একটি ইলেকট্রিক বাস তৈরি করতে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা খরচ হতে পারে, যা ডিজেলচালিত বাসের প্রায় পাঁচ গুণ। অর্থনৈতিক মন্দায় দেশে সবগুলো খাত যখন ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করছে, তখন সরকার কেন বিপুল ব্যয়ে এই ইলেকট্রিক বাস কিনতে যাবে- এমন প্রশ্ন করা হয় অধ্যাপক শামছুল হককে। তিনি বলেন, ‘এই বাসগুলো কিনতে বিপুল ব্যয় হলেও এগুলো পরিচালনায় ব্যয় কিন্তু অনেক কমে যাবে। রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারলে এই বাসগুলোর আয়ুষ্কালও অনেক বেশি। সব মিলিয়ে গণপরিবহন খাতের জন্যই সেটি লাভজনক প্রকল্প হতে পারে।’

২০২৩ সালে ‘এক্সিলারেটিং দ্য ট্রানজিশন টু ইলেকট্রিক মোবিলিটি ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ নামের একটি প্রকল্পের আওতায় বিআরটিসির বহরে ১০০টি ইলেকট্রিক বাস যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।

আয় বাড়াতে আন্তর্জাতিক রুটে বরিশাল-কলকাতা, চট্টগ্রাম-কলকাতা, ঢাকা-গ্যাংটক (সিকিম)-দার্জিলিং, ঢাকা-নেপাল বাস সার্ভিস চালুর কথাও ভেবেছিল বিআরটিসি। প্রথমে ভারতীয় লাইন ক্রেডিট (এলওসি) ও পরে কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংক এই প্রকল্পে ঋণ দিতে এগিয়ে এসেছিল। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে ভারতের ঋণপ্রাপ্তি এখন অনিশ্চিত হয়ে গেছে।

বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘ভারতের স্থলে এখন অন্য একটি ঋণদাতা দেশ খুঁজছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। কোরিয়ান ব্যাংক থেকে টাকা পাওয়া যাবে। আমরা আশা করছি ১০০টি ইলেকট্রিক বাস আমাদের বহরে যুক্ত করতে পারব।’ বাসগুলো দূরপাল্লার নাকি স্বল্পপাল্লার রুটে পরিচালনা করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেশের অনেক রুটে বিআরটিসির বাসের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। রুট বিবেচনা করে সেখানে ইলেকট্রিক বাস পরিচালনা করা হবে।’

ডিসি সম্মেলন ১৬-১৮ ফেব্রুয়ারি, আলোচনায় থাকবে ৩ শতাধিক প্রস্তাব

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:২৬ এএম
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:২৭ এএম
ডিসি সম্মেলন ১৬-১৮ ফেব্রুয়ারি, আলোচনায় থাকবে ৩ শতাধিক প্রস্তাব
জেলা প্রশাসক সম্মেলন

এবারের জেলা প্রশাসক বা ডিসি সম্মেলনে তিন শতাধিক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে ডিসিরা তাদের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করবেন। প্রধান উপদেষ্টা জুলাই অভ্যুত্থানের আলোকে সরকারের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য ডিসিদের প্রতি নির্দেশনা দেবেন। সম্মেলন আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, এবারের সম্মেলনে মারণাস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা জানতে চাইতে পারেন ডিসিরা। মাঠপর্যায়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক কেমন থাকবে, সে বিষয়েও এ সম্মেলনে আলোচনা হতে পারে। কেপিআই স্থাপনা সুস্পষ্টকরণের জন্যও ডিসিরা তাদের মতামত তুলে ধরবেন।

এবার কোনো রাজনৈতিক সরকারের পরিবর্তে অন্তর্বর্তী সরকার জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডিসি সম্মেলনে যে কয়েকটি ইস্যুতে আলোচনা হবে সেগুলো হলো সার্কিট হাউস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের বাসভবনকে কেপিআই স্থাপনা ঘোষণা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন তৈরির ক্ষমতা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে হস্তান্তর, কর্তব্যরত অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বাধ্যতামূলক বডি ক্যামেরা ব্যবহার নিশ্চিত করা, ডিসিদের অধীনে বিশেষ ফোর্স গঠন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক আনসার নিয়োগসংক্রান্ত প্রস্তাব।

আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলন। ওই দিন সকালে তেজগাঁওয়ের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে সকাল সাড়ে ১০টায় ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

ডিসি সম্মেলনের কার্যপত্র সূত্রে জানা গেছে, গতবারের মতো এবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ডিসিদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ও নৈশভোজের কোনো অধিবেশন নেই। 

সম্মেলন উদ্বোধনের পর চা বিরতি শেষে দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের করবী হলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেবেন ডিসিরা। ওই অধিবেশন শেষে প্রধান উপদেষ্টা টাইগার গেটে ডিসিদের সঙ্গে নিয়ে ফটোসেশনে অংশ নেবেন। পরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও এর আওতাধীন সংস্থাগুলোর বিষয়ে ডিসিদের দেওয়া প্রস্তাব ও এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা বা সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা হবে। 

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, সম্মেলনের প্রথম দিন উন্মুক্ত আলোচনায় ডিসিদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিটের আলোকে সরকারের দিকনির্দেশনা বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেবেন। সম্মেলন আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এ কথা জানিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের অনুষ্ঠানিকতা শেষে ডিসিরা অধিবেশনের অবশিষ্ট অধিবেশনগুলোর জন্য বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ওসমানী মিলনায়তনে পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য উপস্থিত হবেন। এখানে বিকেলে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, পরিকল্পনা বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগসংক্রান্ত অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।

এরপর তৃতীয় পর্বে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভা ও নৈশভোজ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ডিসিরা সম্মেলন কেন্দ্র থেকে শেরেবাংলা নগরের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে উপস্থিত হবেন। 

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানায়, অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে উপদেষ্টা, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত থাকবেন। সম্মেলন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনাররা লিখিতভাবে মাঠ প্রশাসনের সমস্যাগুলো সমাধানের লক্ষ্যে প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন। অধিবেশনের সময় এগুলো ছাড়াও ডিসিরা তাৎক্ষণিক বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরবেন। 

মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ কার্য অধিবেশনগুলোতে সভাপতিত্ব করবেন। 

মাঠ প্রশাসন সরকারের নীতি ও উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তাবায়ন করে থাকেন। এ জন্য প্রতিবছর ডিসি সম্মেলনকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে থাকে সরকার। এ বছর ভিন্ন প্রেক্ষাপটে তাই ডিসি সম্মেলন আলাদা গুরুত্ব বহন করছে। মাঠপর্যায়ে সরাসরি সরকারের প্রতিনিধি এবং নীতিনির্ধারক হিসেবে ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনাররা কাজ করে থাকেন। তাই ডিসি সম্মেলনের মাধ্যমে মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময়সহ প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়ে থাকে।

রাজনৈতিক সরকার নয়, বিশেষ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে এবারের ডিসি সম্মেলনের পরিবেশ কেমন হতে পারে, জানতে চাইলে ঢাকার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর আহমেদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমাদের কাছে রাজনৈতিক সরকার বা অন্তর্বর্তী সরকারে অধীনে ডিসি সম্মেলন ঘিরে আলাদা কিছু মনে হচ্ছে না। তবে এই সরকার দায়িত্ব নিয়ে যেহেতু রাষ্ট্রের বেশ কিছু ক্ষেত্রে সংস্কার করার উদ্যোগ নিয়েছে, সেই হিসেবে আমাদের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাবগুলো আছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনায় বিশেষ কোনো গুরুত্ব থাকতে পারে বলে অনুমান করছি। যেহেতু সংস্কারের দিকে সরকারের বিশেষ কিছু মনোযোগ আছে এবং সরকার গঠিত বিভিন্ন কমিশনের সংস্কারের প্রস্তাবগুলোও আসছে, তাই সেই বিবেচনায় কিছু ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা আসতে পারে। এর বাইরে আর কিছু মনে হচ্ছে না আমার।’

চট্টগ্রামে অমর একুশে বইমেলা পাইরেটেড বইয়ের দৌরাত্ম্য, বিপাকে প্রকৃত প্রকাশকরা

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪০ এএম
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৪ এএম
পাইরেটেড বইয়ের দৌরাত্ম্য, বিপাকে প্রকৃত প্রকাশকরা
চট্টগ্রাম অমর একুশে বইমেলা। ছবি: খবরের কাগজ

একদিকে কাগজের দাম এবং ছাপা খরচ বেড়েছে। অন্যদিকে মেলায় পাইরেসি বইয়ের আধিপত্য। দুইয়ে মিলে চরম বিপাকে পড়েছেন চট্টগ্রাম অমর একুশে বইমেলায় স্টল নেওয়া প্রকৃত প্রকাশকরা। পাইরেসি বই মূল দামের অর্ধেকেরও বেশি কমিশনে বিক্রি হচ্ছে, যা মেলায় অসম প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করেছে। 

মেলায় ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, মেলায় সাধারণত ইংরেজি বই এবং বিদেশি লেখকের বইগুলোর পাইরেসি করে বিক্রি করা হচ্ছে। অনেক নামি-দামি লেখকের বই অনেক কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। সাধারণ প্রকাশকদের এখানেই আপত্তি। ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা এ ধরনের বইয়ের ক্রেতা। তা ছাড়া প্রখ্যাত লেখকদের বইয়ের অনুবাদও পাইরেসি করে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় প্রকাশকদের অভিযোগ, মেলায় এসে যখন কেউ কম দামে বড় একটি পাইরেসি বই কেনার সুযোগ পান, তখন অন্য বইগুলো তার কাছে বেশি দামি মনে হয়। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অন্য বই না কিনে ক্রেতারা ফিরে যান।  

‘শিশু প্রকাশ’র স্বত্বাধিকারী আরিফ রায়হান খবরের কাগজকে বলেন, ‘দুঃখজনক বিষয় হলো, মেলায় বেশ কিছু পাইরেসি বই আছে। কিছু আছে বই বিক্রেতা। তারা প্রকাশক নন। তারা কোনো বই প্রকাশ করেন না। কিন্তু তারা প্রকাশকদের স্বকীয়তাকে খর্ব করছেন। পাইরেসি বই ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন দিতে পারেন। কারণ পাইরেসি বই বিক্রি করে লেখককে কোনো রয়েলিটি দিতে হয় না। এটা একজন প্রকাশকের পক্ষে কোনোভাবেই এত বেশি কমিশন দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ একজন প্রকাশককে বইয়ের ছাপার খরচের পাশাপাশি লেখকের রয়েলিটি দিতে হয়।

অন্যদিকে গত বছরের তুলনায় বইয়ের ছাপা খরচ প্রায় ২০ শতাংশ বেড়েছে। বইমেলায় পাইরেসি বই রোধ করা যায়নি।

তিনি জানান, অভিভাবকরা মেলা থেকে কম দামে পাইরেসি বই কিনে দিচ্ছেন। কিন্তু ওই বইয়ের মানটা যাচাই করে দেখছেন না। পাইরেসি বা নকল সংস্করণে অনেক ধরনের ভুলভ্রান্তি থাকে। এটা একজন সচেতন পাঠকই ধরতে পারেন। শিশুদের যদি সেই ধরনের বই কিনে দেওয়া হয়, তাদের কাছে ভুল ভ্রান্তি ধরা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তারা ভুলটাই শিখবে।’

‘হরিৎপত্র’ প্রকাশনার নূর উদ্দিনেরও অভিযোগ প্রায় একই রকম। তিনি বলেন, ‘পাইরেসি রোধ করতে না পারলে প্রকৃত প্রকাশকদের লোকসান গুনতে হবে। এ বিষয়ে আয়োজকদের তৎপর হওয়া উচিত।’

জানতে চাইলে মেলার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ও সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন হাসান বাবু খবরের কাগজকে বলেন, ‘বইমেলায় পাইরেসি বই বিক্রির কোনো অভিযোগ এখনো কমিটি পায়নি। এখন থেকে তারা নিজেরাও কোনো স্টলে পাইরেসি বই আছে কিনা খোঁজ নেবেন উল্লেখ করে জানান, তারাও চান প্রকৃত প্রকাশকরাই টিকে থাকুক।

পিছিয়ে গেছেন বাসমালিকরা

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:০০ এএম
আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৮ পিএম
পিছিয়ে গেছেন বাসমালিকরা
খবরের কাগজ ইনফোগ্রাফিকস

ঢাকার বিভিন্ন সড়কে সরকার নির্ধারিত কোনো বাস কোম্পানির অধীনে বাস পরিচালনা করতে এই বছরের শুরুতে বেশ আগ্রহ দেখালেও এখন আর তাতে রাজি নয় ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। তাতে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) আর দুই সিটি করপোরেশনের বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন প্রকল্পটি নিয়ে তাই এখন অনেক প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এই প্রকল্প আদৌ বাস্তবায়ন করা যাবে কি না তা নিয়েও নানা সংশয় দেখা দিয়েছে। প্রকল্পটি ভেস্তে গেলে সরকারের ২৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা গচ্চা যাবে।

রাজধানীর সড়ক ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে ৪২টি রুট পুনর্বিন্যাসের কথা বলা হয়েছিল বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন প্রকল্পে। ঢাকার ৩৮৮টি রুটকে সমন্বয় করে প্রাথমিকভাবে ৪২টি রুটে পুনর্বিন্যাস করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। বাস মালিকদের চরম অসহযোগিতায় এই প্রকল্পটি আর আলোর মুখ দেখবে না বলেও মনে করছেন গণপরিবহন বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকার সড়ক পরিবহন খাতকে শৃঙ্খলায় আনতে বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন বা ঢাকা নগর পরিবহন প্রকল্প শুরুতে প্রশংসা কুড়ায় নগরবাসীর। নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে ওঠানামা করার সুবিধার পাশাপাশি বাসে বাসে রেষারেষি বন্ধ, যাত্রী নেওয়ার প্রতিযোগিতা বন্ধ হওয়ায় এ প্রকল্প নিয়ে উচ্চাশা প্রকাশ করেছিলেন বাসযাত্রীরা।

বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাজধানীর বিভিন্ন বাস রুটকে ৯টি ক্লাস্টারে (৯টি ভিন্ন ভিন্ন রঙের) বিভক্ত করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ২২টি কোম্পানি গঠনের প্রস্তাবও এসেছিল। গোলাপি রঙের গুচ্ছে চারটি, নীল গুচ্ছে চারটি, লাল গুচ্ছে পাঁচটি, কমলা গুচ্ছে ছয়টি, সবুজ গুচ্ছে আটটি, বেগুনি গুচ্ছে ছয়টি, নর্থ গুচ্ছে তিনটি, নর্থ ওয়েস্ট গ্রুপে তিনটি, সাউথ গুচ্ছে দুটি রুট পরিচালনার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

কিন্তু ২০১৯ সালে এসে সেই প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়ে। এই প্রকল্পের মডেল রুটগুলোতে বিভিন্ন কোম্পানির বাস চলাচল করায় ঢাকা নগর পরিবহন ক্রমাগত লোকসানে পড়ে। এখন ঢাকা নগর পরিবহনে খোদ বিআরটিসিই বাস পরিচালনা করছে না।

গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ‘সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ, ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসন এবং বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ’ সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন প্রকল্পের আওতায় গ্রিন ক্লাস্টারের ৯টি রুটে বাস চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন। নগরের পরিবহন খাতকে শৃঙ্খলায় আনতে এ প্রকল্পের গুরুত্বারোপ করেন সড়ক খাত সংশ্লিষ্টরা।

এরপর গত ১২ নভেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন কমিটির ২৮তম সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ডিটিসিএ ২৪, ২৫, ২৭ এবং ২৮ নং রুটে নতুন করে বাস পরিচালনায় আগ্রহী মালিকদের কাছ থেকে আবেদন নেবে। পাশাপাশি ঢাকার অন্য ৩৮টি রুটেও নির্দিষ্ট বাস কোম্পানির অধীনে বাস পরিচালনা করতে আগ্রহী মালিকদের আবেদনপত্র জমা দিতে নির্দেশনা আসে ওই সভা থেকে।

বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, ঢাকার ৪২টি রুটে ২৫০টিরও বেশি কোম্পানি থেকে বাস পরিচালনার আবেদন পাওয়া গেছে। সম্মিলিতভাবে এসব বাসের সংখ্যা ৩ হাজারের বেশি। এরপর গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে এসব বাসের মালিকদের সঙ্গে তিন দফায় সভা করেছে ডিটিসিএ। ডিসেম্বর মাসে একটি গণশুনানিরও আয়োজন করা হয়। গত ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত বাস মালিকরা বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন প্রকল্পে বাস চালাতে দারুণ আগ্রহ দেখিয়েছিলেন।

কিন্তু দৃশ্যপট বদলে যায় ১৫ জানুয়ারির পরে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে যে বাস মালিকরা যেসব বাসের আবেদন করেছিলেন, সেসব বাসের অধিকাংশের ফিটনেস সনদ ও রুট পারমিট নেই। রুট পারমিট ও ফিটনেস সনদবিহীন এই সব বাস নিয়ে যখন আপত্তি উঠে প্রকল্পের সভায়, তখন বাস মালিকরাও বেঁকে বসেন। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সভায় ২০ বছরের বেশি বয়সী বাসগুলো ঢাকার সড়ক থেকে তুলে নেওয়ার কথা বলা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাস মালিকরা বলেন, হুট করে বললেই এসব বাস সড়ক থেকে তুলে নিলে সড়কে গণপরিবহন সংকট শুরু হবে। আর ঢাকার সড়কে বাস চলাচলের জন্য তারা ঢাকা মেট্রো যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটির (আরটিসি) অনুমোদন নিয়েছেন।

গত ২১ জানুয়ারি ঢাকা মেট্রো যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমিটির (আরটিসি) সভা শেষে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা সিদ্ধান্ত নেন, ঢাকার বাস মালিকরা কোনো রুটে কোনো নির্দিষ্ট কোম্পানির অধীনে বাস চালাবেন না। ঢাকা সড়ক পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে। সেই ডিটিসিএর কোনো সিদ্ধান্ত মেনে নিতে অস্বীকৃতিও জানিয়েছেন বাস মালিকরা।

এরপর বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন প্রকল্পটি যেন ভেস্তে না যায়, সেজন্য জোর চেষ্টা করছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। এই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে একাধিক সভায় আহ্বান জানানোর পরেও বাস মালিকদের কেউ আসেননি। কয়েকজন বাস ব্যবসায়ী ব্যক্তিগতভাবে বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন প্রকল্পের কর্মকর্তাদের বলেন, ‘বাস মালিক সমিতি থেকে আমাদের এখানে আসতে নিষেধ করে দিয়েছে।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ মো. হাদিউজ্জামান খবরের কাগজকে বলেন, ‘ঢাকার বাস রুটকে শৃঙ্খলায় আনতে এলে কোনো প্রকল্প নয়, দরকার একটি সরকারি গণপরিবহন কর্তৃপক্ষ। ঢাকার সব বাস নির্দিষ্ট রুটে পরিচালনা করা ডিটিসির কাজ নয়। তারা গণপরিবহ5ন চলাচলে যেসব কর্তৃপক্ষ কাজ করে তাদের মধ্যে সমন্বয় ধরে রাখবে। তাদের এত জনবল নেই যে বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।’ তিনি বলেন, ‘ঢাকার গণপরিবহনকে শৃঙ্খলায় আনার কাজটি পুরোপুরি রাজনৈতিক। এখানে একটি নতুন বিজনেস মডেল তৈরি করতে হবে; যেখানে বাস মালিকদের লাভ দেখতে হবে।’

ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ-ডিটিসির নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার বলেন, ‘বাস মালিকরা ডিটিসির অধীনে বাস রুট পরিচালনা করতে দেবেন না, ভালো কথা। নিজেরা করতে চাইছেন; তো করুক। তাতে সমস্যা নেই। তবে একটা শৃঙ্খলায় তো আসতে হবে তাদের।’

বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন প্রকল্পে বাস চালাতে গেলে ভর্তুকির দাবি জানিয়েছেন বাস মালিকরা। এ বিষয়ে নীলিমা আখতার বলেন, ‘প্রকল্পে আমরা সাবসিডির বিষয়টি উল্লেখ করি নাই। সেখানে ব্যাংক লোনের কথা বলা আছে। তবে বাস মালিকদের সরকারের পক্ষ থেকে কীভাবে সাবসিডি দেওয়া যায়, সেটার জন্য একটা আলাদা পরিকল্পনা নিতে হবে।’

প্রকল্পটি যেন ভেস্তে না যায় সে লক্ষ্যে বেসরকারি বাস মালিকদের কাছ থেকে অর্থনৈতিক মেয়াদকাল রয়েছে, এমন সব বাস চাওয়া হচ্ছে বলেও জানান ডিটিসির নির্বাহী পরিচালক। তিনি আশা করছেন, বাস মালিকদের পাশাপাশি এখন বৃহৎ কোনো দাতা প্রতিষ্ঠান এ খাতে যুক্ত হবেন।