ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটানা একই রকম আক্রমণ করে গেছে লিভারপুল। ম্যানউ'র রক্ষণকে বোকা বানিয়ে তৈরি করেছিল একের পর এক সুযোগ তৈরি করেই চলেছিল দলটি। কিন্তু এত আক্রমণ করেও দেখা মেলেনি জালের। আক্রমণ সামলে দুর্দশাগ্রস্ত সময়ে এক স্বস্তির ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
রবিবার (১১ ডিসেম্বর) অ্যানফিল্ডে লিভারপুল ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রিমিয়ার লিগের হাইভোল্টেজ ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছে। গেল ২১ জানুয়ারির পর প্রথমবারের মতো ঘরের মাঠে কোনো লিগ ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ হতে হলো ইয়ুর্গেন ক্লপের দলকে। লিগ টেবিলে শীর্ষে ফিরতেও ব্যর্থ হলেন তারা।
অ্যানফিল্ডে এই ম্যাচের আগে ব্রাইটনকে ২-০ গোলে হারিয়ে শীর্ষে ওঠে আর্সেনাল। আরেক ম্যাচে আসরের চমক অ্যাস্টন ভিলা ব্রেন্টফোর্ডের মাঠে ২-১ ব্যবধানে জিতেছে।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণ সামলাতে ব্যস্ত থাকতে হয় ইউনাইটেডকে। প্রথম দুই মিনিটে দুটি সেটপিস আদায় করে নেয় লিভারপুল। এর দুই মিনিট পর আবারও তাদের আরেকটি আক্রমণ কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেয় ইউনাইটেড।
আক্রমণ চালিয়ে গেলেও গোল হওয়ার মতো নিশ্চিত সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না কেউই। ১৬তম মিনিটে ট্রেন্ট অ্যালেকজ্যান্ডার-আর্নল্ডের করা ক্রস ছয় গজ বক্সের মুখে পেয়ে গোলের উদ্দেশ্যে হেড করতে পারতেন দারউইন নুনেস। কিন্তু তিনি খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করেন সতীর্থদের। সেখানে মোহামেদ সালাহর টোকায় বল প্রতিপক্ষের গায়ে লেগে যায় বাইরে।
২৮তম মিনিটে জোরাল হেড করেন ভার্জিল ফন ডাউক অ্যালেকজ্যান্ডার-আর্নল্ডের কর্নারে। কোনোমতে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠান ইউনাইটেডের গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানা।
চাপ সামলে ৬৬তম মিনিটে আক্রমণে যায় ইউনাইটেড। গাসমুস হয়লুন প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ঢুকে একা পেয়েছিলেন; কিন্তু গোলরক্ষক আলিসন বরাবর শট নিয়ে তরুণ ডেনিশ স্ট্রাইকার হতাশ করেন।
৬৯তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে এগিয়ে যেতে পারতো লিভারপুল। কিন্তু সালাহর জোরাল কোনাকুনি শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান ওনানা।
নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট বাকি থাকতে ইউনাইটেডের ডি-বক্সে তাদের ডিফেন্ডার লু শয়ের হাতে বল লাগলে পেনাল্টির জোরাল আবেদন করে লিভারপুল, কিন্তু রেফারির সাড়া মেলেনি। পরের মিনিটে ফের ভীতি ছড়ায় তারা; এই দফায় পাশের জাল কাঁপান জো গোমেস।
ছয় মিনিট যোগ করা সময়ের শেষ দিকে কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে দুটি হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ইউনাইটেডের দিয়োগো দালোত। নিজেদের সীমানায় থ্রো-ইনের সিদ্ধান্ত বিপক্ষে যাওয়ার প্রতিবাদ করে প্রথম কার্ড দেখেন তিনি। আর তাতে মেজাজ হারিয়ে বহিষ্কার হন পর্তুগিজ ডিফেন্ডার।
ম্যাচে লিভারপুলের আধিপত্যের পরিষ্কার চিত্র পরিসংখ্যানেও ফুটে ওঠে। দুই-তৃতীয়াংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশ্যে ৩৪টি শট নেয় তারা, অবশ্য কেবল আটটিই লক্ষ্যে ছিল। লিভারপুল ১২টি কর্নারও আদায় করে নেয়। বিপরীতে, ইউনাইটেডের ৬ শটের মাত্র একটি ছিল লক্ষ্যে। একটিও কর্নার পায়নি তারা।