সদ্য শেষ হওয়া বিপিএলে ভিন্না মাত্রা পেয়েছে সাকিব-তামিম দ্বৈরথ। রংপুর বনাম বরিশালের প্রতিটি ম্যাচ রূপ নিয়েছিলন অঘোষিত ফাইনালে। দু দলের তিনবারের দেখায় দুবারই জয় পেয়েছে তামিমের নেতৃত্বাধীন ফরচুন বরিশাল। সবশেষে এলিমিনেটরে তামিমের কাছে গেরে বাদ পড়তে হয়েছে সাকিবের রংপুর রাইডার্সকে। মাঠে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতে ৪৯২ রান করে জিতেছেন ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট ও সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের পুরস্কারও। একইসাথে প্রশংসা করেছেন জাতীয় দলের সব সতীর্থদেরও। এ তালিকা থেকে বাদ যায়নি সাকিব আল হাসানের নামও।
বরিশালের প্রথম শিরোপা জেতার দিনে সংবাদ সম্মেলনে এসে প্রশংসায় ভাসান জাতীয় দলের তামিম দলের সতীর্থদের। অধিনায়ক হিসেবে ট্রফি গ্রহণ করতে গিয়ে তামিম ডেকে আনেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। এই শিরোপা তিনি উৎসর্গ করেন তাদের। এরপর সংবাদ সম্মেলনে এসে তামিম বলেন, ‘অবশ্যই যেকোনো শিরোপা জেতা দারুণ ব্যাপার। তবে এবার একটু ভিন্ন কারণ ছিল। কারণ, আমাদের দলে এমন কয়েকজন ছিল, তরুণদের মধ্যে মিরাজ, সৌম্য বা অভিজ্ঞদের মধ্যে রিয়াদ ভাই, মুশফিক — ওরা লম্বা সময় ধরে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করছে। কিন্তু ওরা এই ট্রফিটা কখনো পায়নি।’
মিরাজ ও সৌম্যদের প্রশংসা করার পাশাপাশি তামিম নাম নিয়েছেন ইনজুরি থেকে ফেরা পেস বোলিং অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনেরও। আসরের মাঝপথে দলের সাথে যোগ দিয়ে ব্যাটে-বলে দারুণ পারফর্ম করেছেন তিনি। ‘আমার মনে হয় সাইফউদ্দিনের ফেরাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিশেষ করে আজ শেষ ওভারে সে অসাধারণ বোলিং করেছে। যদি ১৫ রান হয়ে যেত, তাহলে ১৭০ রানে কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন ম্যাচ হতো। আমরা তাকে নিয়ে জুয়া খেলেছি। সেটা কাজেও লেগেছে।’
সাদা পোশাকে জাতীয় দলের পরিচিত মুখ স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ঘরের মাঠে সবশেষ নিউজিল্যান্ড সিরিজে যিনি ছিলেন টেস্ট জয়ের কারিগর। বরাবরই তিনি তামিমকে নিজের বড় ভাই হিসেবে মানেন। এমনটা জানিয়েছিলেন কিউইদের হারিয়ে। সেই তাইজুলকেও প্রশংসায় ভাসালেন অধিনায়ক তামিম, ‘তাইজুলকে নিয়ে একটা কথা বলা উচিত নয়। আমরা যদি ড্রাফট থেকে তাইজুলকে দলে নিই, তখন একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি হাসছিল। সে খুব ভালো করেছে। মিরাজ, সে অসাধারণ। সে হয়তো বেশি বোলিং করেনি। কিন্তু যখন করেছে, তখন খুব ভালো করেছে।’
এছাড়াও শিরোপা জেতার পেছনে বরিশালের বিদেশি খেলোয়াড়ডের অবদানের কথাও স্মরণ করেছেন তামিম সংবাদ সম্মেলনে। ‘বিদেশিদের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাইল মায়ার্সের পারফরম্যান্সের কথা না বললেই নয়। টুর্নামেন্টের মাঝপথে বরিশালে যোগ দিয়ে খেলেছেন ৬ ম্যাচ, এর মধ্যে ফাইনালসহ ম্যাচসেরা হয়েছেন ৩ ম্যাচে। বুঝতেই পারছেন, বরিশালের শিরোপা জয়ে তাঁর ভূমিকা কতটা ছিল। তামিমই বললেন, ‘প্রত্যেকটা ম্যাচে তাঁর ইমপ্যাক্ট ছিল ব্যাট আর বলে।’
তামিমকে প্রশ্ন করা হয় পুরো টুর্নামেন্টে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স প্রসঙ্গে। তখন আলাদাভাবে তিনি কুমিল্লার তাওহিদ হৃদয় ও ঢাকার শরিফুল ইসলামের নাম নেন। প্রশংসা করেছেন সাকিব আল হাসানেরও, ‘শরিফুল খুবই ভালো বোলিং করেছে। হৃদয় তো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেছেন। সে যখন রান করেছে, তখন দারুণ প্রভাববিস্তারী ছিল। সাকিব ভালো করেছে। ভালো শুরু হয়নি। তবে শেষের দিকে ভালো করেছে। তবে দুজনের নাম বললে হৃদয় আর শরিফুল।’