ঢাকা ২৩ কার্তিক ১৪৩১, শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪

অবশেষে বিশ্বকাপে লামিচানে

প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৪, ১২:৫৪ পিএম
অবশেষে বিশ্বকাপে লামিচানে
ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা না পাওয়ায় সন্দীপ লামিচানেকে বিশ্বকাপ দলের অংশ করতে না পারলেও এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজে তাকে পাঠানো হচ্ছে। গ্রুপপর্বে নিজেদের শেষ দুটি ম্যাচে নেপালের হয়ে মাঠে নামবেন তিনি। শেষ দুই ম্যাচে নেপালের প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। 

সোমবার (১০ জুন) এক সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে খবরটি নিশ্চিত করেছে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব নেপাল (সিএএন)।

চলমান বিশ্বকাপে নেপালয়ের প্রথম দুটি ম্যাচ যুক্তরাষ্ট্রে। সে দেশের ভিসা না পাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া হয়নি ধর্ষণ মামলা থেকে খালাস পাওয়া লামিচানেকে।  সরকারি পর্যায়ে চেষ্টা করেও সমাধান করা যায়নি বিষয়টির।

লামিচানেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজে পাঠানোর খবর নিশ্চিত করে সিএএন লিখেছে, ‘(যুক্তরাষ্ট্রের) ভিসা প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরও লামিচানে নেপালের দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে অংশগ্রহণ করবেন, যা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে হচ্ছে।’

কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, এ কয় দিন দলের সঙ্গে ট্রাভেলিং রিজার্ভ খেলোয়াড় হিসেবে থাকা প্রতিশ জিসির স্থলাভিষিক্ত হবেন লামিচানে।  

বিশ্বকাপে যোগ দিতে পারায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন লামিচানে। ২৩ বছর বয়সী এই লেগ স্পিনার এক্স পোস্টে স্বপ্নপূরণের কথা জানিয়েছেন এভাবে, ‘শেষ দুই ম্যাচের জন্য দলের সঙ্গে আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজে যোগ দিচ্ছি। আমার এবং সব ক্রিকেটপ্রেমীর স্বপ্নপূরণের অপেক্ষায়।’

যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা না পেলেও এর জন্য সহযোগিতা করায় নেপাল সরকার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এবং নেপাল ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ জানান।

অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কার গ্রুপে বাংলাদেশ

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৫ পিএম
আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কার গ্রুপে বাংলাদেশ
ছবি: সংগৃহীত

অনূর্ধ্ব-১৯ ওয়ানডে এশিয়া কাপে বি গ্রুপে খেলবে বাংলাদেশ। এই গ্রুপে বাকি তিন দল আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল। এ গ্রুপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে আছে জাপান ও স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাত। 

টুর্নামেন্ট শুরু হবে আগামী ২৯ নভেম্বর থেকে। উদ্বোধনী দিনেই বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান। ১ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ম্যাচে প্রতিপক্ষ নেপাল। ৩ ডিসেম্বর গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে জুনিয়র টাইগারদের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ তিনটি ম‍্যাচই খেলবে দুবাই।

‘বি’ গ্রুপের চার দল মাঠে নামবে ৩০ নভেম্বর। দুবাইয়ে মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান। শারজাহতে খেলবে জাপান ও আরব আমিরাত। ৬ ডিসেম্বর একই সময়ে হবে দুটি সেমি-ফাইনাল; একটি দুবাইয়ে, অন‍্যটি শারজাহতে। একদিন পর দুবাইয়ে হবে ফাইনাল।

অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে সিরিজে সমতা আনল পাকিস্তান

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৫ পিএম
অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে সিরিজে সমতা আনল পাকিস্তান
হেসেখেলেই অস্ট্রেলিয়াকে হারাল পাকিস্তান। ছবি : সংগৃহীত

মেলবোর্নে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে জয়ের প্রবল সম্ভাবনা জাগিয়েও জিততে পারেনি পাকিস্তান। প্যাট কামিন্সের দৃঢ়তায় অস্ট্রেলিয়া জেতে ২ উইকেটে। মেলবোর্নে না পারলেও অ্যাডিলেডে নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিয়েছে পাকিস্তান। স্বাগতিকদের রীতিমতো উড়িয়ে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে পাকিস্তান জিতেছে ৯ উইকেটে। 

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) আগে ব্যাট করতে নেমে হ্যারিস রউফ ও শাহিন শাহর বোলিং তোপে মাত্র ১৬৩ রানে অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ওভার খেলতে পেরেছে ৩৫। জবাবে পাকিস্তান এতটা ভালো করবে, তা হয়তো ভাবেনি কেউ। মাত্র এক উইকেট হারিয়ে ২৬.৩ ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছায় রিজওয়ান শিবির। ২৯ রানে পাঁচ উইকেটশিকারি পাকিস্তানের হ্যারিস রউফ জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। তিন ম্যাচ সিরিজে এখন ১-১ সমতা। 

অ্যাডিলেড ওভালের উইকেটে এ দিন ঘাসের ছোঁয়া ছিল বেশ। তবে উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হবে বলেই শুরুতে ধারাভাষ্যে বলা হয়। বল সেখানে ব্যাটে এসেছেও দারুণভাবে। তবে যথেষ্ট মুভমেন্ট ও বাউন্সও ছিল, যা কাজে লাগান পাকিস্তানি পেসাররা। গতি বরাবরই রউফের বড় অস্ত্র। 

পেস বলে শুরুটা করেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। তিনি ফেরান দুই ওপেনার ম্যাথু শর্ট (১৯) ও জ্যাক ফ্রেজারকে (১৩)। রউফ শুরু করেন জস ইংলিশকে (১৮) আউট করার মাধ্যমে। এরপর তিনি একে একে তুলে নেন লাবুশানে (৬), অ্যারন হার্ডি (১৪), গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (১৬) ও অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের (১৩) উইকেট। 

২ উইকেটে ৭৯ রান থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ইনিংসের ১৫ ওভার বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। তাদের ইনিংসে ৪০ রানের কোনো জুটিও হয়নি। সর্বোচ্চ ৩৮ রান আসে স্মিথ ও ইংলিসের জুটিতে। আর ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান স্মিথ। 

জবাবে পাকিস্তান উদ্বোধনী জুটিতেই পেয়ে যায় জয়ের মসৃণ রাস্তা। সায়েম আইয়ুব ও আব্দুল্লাহ শফিক করেন ১৩৭ রানের জুটি। ৭১ বলে ৮২ রানের দারুণ ইনিংস খেলা আইয়ুব জাম্পার শিকার হন। তার ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার ও ছয়টি ছক্কার মার। জয়ের জন্য বাকি রাস্তাটুকু বাবর আজমকে (১৫) সঙ্গে নিয়ে পাড়ি দেন শফিক (৬৪)। 

আগামী রবিবার (১০ নভেম্বর) পার্থে অনুষ্ঠিত হবে তৃতীয় ও সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ।

চঞ্চল/সালমান/

 

বাংলাদেশের সামর্থ্য, আফগানিস্তানের সক্ষমতা

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫১ পিএম
বাংলাদেশের সামর্থ্য, আফগানিস্তানের সক্ষমতা
প্রথম ওয়ানডে চলার সময় অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৌম্য সরকার। ছবি: বিবিসি

আফগনিস্তানের কাছে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশের হারকে অনেকেই অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয় এরকম নানা বিশেষণ ব্যবহার করে আখ্যায়িত করছেন। আফগানিস্তানের ২৩৫ রানের জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ একপর্যায়ে ২৫.৪ ওভারে ২ উইকেটে ১২০ রান করেছিল। জয়ের ভীত তৈরি হয়ে হেছে। এখন শুধু দেখার পালা সেই জয়টা আসে কীভাবে? হাতে ৮ উইকেট নিয়ে করতে হবে ১১৬ রান। ওভার বাকি ২৪.২টি। ওভারপ্রতি পাঁচের কম করে রান। সেখান থেকে বাংলাদেশের ছন্দপতন ঘটে। সেই ছন্দপতন ছিল খুবই দ্রুত। যা শেয়ারবাজারের পতনকেও হার মানাবে। ২২ গজে ব্যাটারদের অবস্থান হয়ে উঠে কচু পাতার পানি। শুরু হয় আসা-যাওয়ার মিছিল।

৮.৫ ওভারে ১৬ রানে পড়ে ৮ উইকেট। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তার গতি বাড়তে থাকে। ৩.৫ ওভারে ১১ রানে পড়ে ৭ উইকেট। ২.৫ ওভারে ৮ রানে পড়ে ৬ উইকেট। ২.২ ওভারে ৭ রানে পড়ে ৫ উইকেট। ১.৫ ওভারে ৫ রানে পড়ে ৪ উইকেট। ১ বল পড়ে আরও ১ উইকেট। এভাবেই শেষ হয় ১০ উইকেটের পতন। যখন বাংলাদেশের স্কোর বোর্ডে রান শোভা পাচ্ছে মাত্র ১৪৩। 

সাম্প্রতিক সময় বাংলাদেশ ওয়ানডে ছাড়া টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি যত ম্যাচ খেলেছে, সেখানে শুধু পাকিস্তানের বিপক্ষে ২ টেস্টের সিরিজ বাদ দিলে সর্বত্রই ছিল ব্যাটারদের হতাশার চিত্র। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার ১১৩ রান তাড়া করতে পারেনি। ব্যাটিং ব্যর্থতায় হেরেছিল ৪ রানে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১২৪ রান পাড়ি দিতে যার পরনাই কষ্ট করতে হয়েছিল। নেপালের বিপক্ষে মাত্র ১০৬ রান করে আবার ম্যাচ জিতেছিল বোলারদের দাপটে। সুপার এইটে আফগানিস্তানের করা ১১৫ রান টপকাতে পারেনি। হোঁচট খেয়েছিল ১০৫ রানে অলআউট হয়ে। সুপার এইটে অপর দুই ম্যাচে হেরেছিল ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে বড় ব্যবধানে।

টেস্ট ক্রিকেটে সম্প্রতি ঘরের মাঠে দুই টেস্টের চার ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ১০৬ ও ৩০৭ এবং ১৫৯ ও ১৪৩। ভারত সফরেও দুই টেস্টের চার ইনিংসে বাংলাদেশ করেছিল ১৪৯ ও ২৩৪ এবং ২৩৩ ও ১৪৬। এই সফরে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশের রান ছিল যথাক্রমে ১২৭. ১৩৫/৯ ও ১৬৪/৭। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ব্যাটিং ব্যর্থতা সংক্রামিত হয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটেও এসে ভর করেছে। যার প্রমাণ আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে।

পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জেতার পর বাংলাদেশ দল তিন ফরম্যাটে কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি। এমনকি ন্যূনতম কোনো লড়াইও করতে পারেনি। ব্যাটারদের এ রকম অমাজর্নীয় ব্যর্থতায় ম্লান হয়ে যাচ্ছে বোলারদের বিশেষ কীর্তি। ব্যাটারদের এ রকম ধারাবাহিক ব্যর্থতায় স্পষ্ট হয়ে উঠছে এটাই বাংলাদেশের ব্যাটিং সামর্থ্য। বর্তমান দলের কাছে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা বাতুলতা মাত্র। 

ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট সংস্করণ টি-টোয়েন্টি। কিন্তু সেই খেলাও ফুটবল, হকি ভলিবল, কাবাডি, বাস্কেটবলের চেয়ে দ্বিগুণ সময় বেশি লাগে শেষ হতে। যে কারণে ক্রিকেটে যেকোনো সময় বিপর্যয় আসতেই পারে। তা আবার সামাল দিয়ে উঠার সক্ষমতাও থাকতে হবে। অব্যাহত ব্যর্থতার মাঝে বাংলাদেশ দল হঠাৎ করে কোনো ম্যাচে রান করে ফেলে। কিন্তু পরের ম্যাচে গিয়ে আবার মুখ থুবড়ে পড়ে। এটা সামর্থ্যের বহিঃপ্রকাশ! কিন্তু সামর্থ্য যদি এর থেকে বেশি থাকত, তাহলে ব্যর্থতার জাল ছিন্ন করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারত। যেটা আবার করে দেখিয়েছে আফগানিস্তান। ৩৫ রানে ৪, ৭১ রানে ৫ উইকেট হারানোর পরও তারা নিজেদের সক্ষমতা বা যোগ্যতা দেখিয়েছে। যে কারণে শেষ পর্যন্ত ২ বল বাকি থাকতে অলআউট হওয়ার আগে ভাণ্ডারে যোগ করে ২৩৫ রান। এটা তাদের সক্ষমতা। বাংলাদেশ দলে একবার মড়ক লাগলে, ঘুরে দাঁড়ানোর নজির কম। ২ উইকেটে ১২০ রান থেকে ১৪৩ রানে অলআউট। 

এভাবে একটি করে ম্যাচ আসে, ভরাডুবির মাধ্যমে শেষ হয়। আর ম্যাচ শেষে অধিনায়ক, কোচ কিংবা দলের প্রতিনিধি হয়ে কথা বলতে আসা ক্রিকেটারের কণ্ঠ থেকে বের হয়ে আসে আগামীতে ভালো করার প্রত্যয়। ভুল সংশোধনের প্রতিশ্রুতি। কিন্তু এ সবই কথার কথা হয়ে থাকে। পরের ম্যাচে এসে আবারও একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি দেখা যায়। আবারও ম্যাচ শেষে শুনা যায় পুরোনো রেকর্ড। কিন্তু পরিবর্তনের ছাপ আর চোখে পড়ে না। এবার আফগানিস্তানের কাছে এভাবে জেতা ম্যাচ হাতছাড়া হওয়ার পর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কণ্ঠ দিয়ে বের হয়েছে সেই পুরোনো রেকর্ড, ‘আমাদের প্রস্তুতি ভালো ছিল। কিন্তু আজ আমাদের দিন ছিল। না। আশা করি আমরা ঘুরে দাঁড়াব।’ 

সাক্ষাৎকারে মারিয়া মান্দা দেশকে যেন আরও এগিয়ে নিতে পারি

প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৫ পিএম
আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২২ পিএম
দেশকে যেন আরও এগিয়ে নিতে পারি
মারিয়া মান্দা

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের মধ্যমাঠের কাণ্ডারি মারিয়া মান্দা। সিনিয়র ও বয়সভিত্তিক মিলিয়ে দেশের অনেক সাফল্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তার নাম। সদ্য সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপাজয়ী দলের সহঅধিনায়কের দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। খবরের কাগজের মুখোমুখি হয়ে মারিয়া কথা বলেছেন সাম্প্রতিক সাফল্য ও প্রাসঙ্গিক নানা বিষয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ক্রীড়া প্রতিবেদক তোফায়েল আহমেদ

খবরের কাগজ: সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে পর পর দুই আসরে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। দুই বারই দলের সারথি আপনি। এই সাফল্যের অনুভূতি কেমন?
মারিয়া মান্দা: আমরা ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হই। প্রথমবার জেতায় খুব ভালো লেগেছিল। দ্বিতীয়বারের মতো আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। খুব ভালো লাগছে যে, দেশের জন্য কিছু করতে পেরেছি। এটাই আসলে নিজের কাছে স্বার্থকতা। আর আমাদের যে এত এত পরিশ্রম, সেটা কাজে দিয়েছে। এ জন্য আমরা খুবই আনন্দিত।

খবরের কাগজ: এবারের চ্যাম্পিয়নশিপটা নিশ্চয়ই অনেক কঠিন ছিল?
মারিয়া মান্দা: অবশ্যই। কারণ এবার সব দলই অনেক উন্নতি করে এসেছিল। আগে যখন আমরা খেলেছিলাম, তখন মালদ্বীপ, ভুটান একটু অন্য রকম (কম শক্তির) দল ছিল। মানুষ আগে থেকেই বুঝতে পারত যে তাদের বিপক্ষে জয় সম্ভব। এবার কিন্তু সেটা ছিল না। এবার সব দল খুব ভালো প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল। সবাই চেয়েছে চ্যাম্পিয়ন হতে। সব দলের মধ্যে এই লক্ষ্যটা ছিল যে, কেউ কাউকে ট্রফি নিয়ে যেতে দিবে না। আমরা নিজেদের ওপর বিশ্বাস রেখেছিলাম। নিজেদের শতভাগ যদি দিতে পারি, তাহলে কোনো না কোনো ভাবে রেজাল্ট বেরিয়ে আসবে, এই বিশ্বাস আমাদের ছিল। বাকিটা ছিল সৃষ্টিকর্তার ওপরে বিশ্বাস।  সৃষ্টিকর্তা চাইলে সবকিছু হবে। আমাদের মনোবল হারানো যাবে না। সেভাবে আমরা লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি এবং প্রত্যেকটি ম্যাচ খেলেছি। ঈশ্বরের আশীর্বাদে ফলাফলও পেয়েছি। শুধু পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটা একটু অন্য রকম হয়েছিল। ১-০ গোলে পিছিয়ে ছিলাম আমরা। হেরে যাওয়ার মতো অবস্থাও তৈরি হয়েছিল। এর পরও ১-১ ড্র করতে পেরেছি আমরা। এ ছাড়া প্রত্যেকটি ম্যাচ আমরা ভালো ব্যবধানে জিতেছি।

খবরের কাগজ: ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় এবার কি বাড়তি চাপ কাজ করেছে?
মারিয়া মান্দা: চাপ বলতে আমরা যেহেতু গতবার চ্যাম্পিয়ন ছিলাম, এবারও চ্যাম্পিয়ন হব, সবাই এই প্রত্যাশা নিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিল। দেশবাসীকে এবারও যেন আমরা চ্যাম্পিয়নশিপ উপহার দিতে পারি, এটা আমাদের মনের মধ্যেও ছিল। চেষ্টা করেছি যে বিগত দিনের সাফল্য যেন আমরা ধরে রাখতে পারি।   মনের মধ্যে শুধু এটা ছিল যে, ভালো কিছু করতে হবে।

খবরের কাগজ: শিরোপা ধরে রাখার ব্যাপারে আপনি নিজে কতটা বিশ্বাসী ছিলেন?
মারিয়া মান্দা: আমাদের কাছে আসলে টিম বন্ডিংটাই মুখ্য। টিম বন্ডিং ছাড়া কখনো কোনো রেজাল্ট হয় না। দলের মধ্যে সব সময় আমাদের আলোচনা হয়। কার কি সমস্যা, সবকিছু নিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে কথা বলি। এবারের আসর নিয়ে যখন আমরা কথা বলেছি, তখন এই জিনিসটিই আমরা ফিল করতে পেরেছি, আমরা যদি একসঙ্গে শতভাগ দিয়ে খেলি, তাহলে অবশ্যই আমরা পারব। এই বিশ্বাসটা আমাদের সবার মধ্যে ছিল।

খবরের কাগজ: এবার তো টুর্নামেন্ট চলাকালে নানা বিষয়ে অনেক সমালোচনাও হচ্ছিল। এগুলো সামলানো কতটা কঠিন ছিল?
মারিয়া মান্দা: আসল কথা কি, খেলা চলাকালে আমাদের সব মনোযোগ খেলার মধ্যেই থাকে। বাকি যেগুলো আছে, সেগুলো আমাদের নিজেদের ভালো থাকার জন্য, খুশি থাকার জন্য। অনেকে আছে না, ঘুরতে পছন্দ করে, খেতে পছন্দ করে, ওই রকম একটা জিনিস। আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও করি, টিকটক করি, এসব বিষয় নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু ভিডিও বলেন, টিকটক বলেন, ঘুরতে যাওয়া বলেন, খেলাধুলার বাইরে মন ভালো রাখার জন্য এগুলো তো থাকেই। সেগুলো ধরে যদি খেলোয়াড়দের ওপর নানা দায় চাপানো হয়, তাহলে কেমন না? আপনি দেখেন, পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা থাকা উচিত, এরকম কথা বলি আমরা। আমরা খেলোয়াড়দেরও খেলার পাশাপাশি মন ভালো রাখার জন্য কিছু করে থাকি। এখানে তো দোষের কিছু থাকার কথা নয়। একটা কথা- জাতীয় দলে খেলার মধ্যে আমরা এসব বিষয়ে অ্যাফোর্ড দেই না। খেলার দিকেই আমাদের সব মনোযোগ থাকে।

খবরের কাগজ: এসব সমালোচনাকে একপাশে রেখেই তো চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। নেপাল থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফেরার পর কেমন লাগছে?
মারিয়া মান্দা: চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফেরার পর তো বাফুফে ভবনেই আছি। এখনো বাসায় যেতে পারিনি। বুধবার নতুন সভাপতি আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। সব মিলিয়ে ভালোই কাটছে সময়।

খবরের কাগজ: বাড়ি যাওয়ার জন্য কি মন ব্যাকুল হয়ে আছে?
মারিয়া মান্দা: ব্যাকুল বলতে কি, যেহেতু চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আমাদের তো এখন আরও ভালো কিছু করার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। এগুলোই টার্গেট। সামনে ক্রিসমাস আসছে। তখন তো বাড়ি যাবই।

খবরের কাগজ: এবারের ক্রিসমাসের আনন্দ নিশ্চয়ই অন্য রমম হবে? সাফে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন বলে কথা?
মারিয়া মান্দা: হ্যাঁ, সেটা তো হবেই… (হাসি)।

খবরের কাগজ: এখন আগামী আসরে নিশ্চয়ই হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়নশিপে চোখ থাকব? আর এ জন্য কি প্রয়োজন বলে মনে করেন?
মারিয়া মান্দা: ভালো কিছু করতে গেলে তো অবশ্যই ভালো কিছু প্রয়োজন। যেমন প্র্যাকটিসের জন্য আমাদের ভালো ভেন্যু দরকার। এবার যেমন ঘাসের মাঠে খেলা ছিল। তাই আমরা বসুন্ধরা কিংসে গিয়ে ঘাসের মাঠে প্র্যাকটিস করতাম। বাফুফে থেকে সেটা অনেক দূর ছিল। ধারে-কাছে আমাদের এ ধরনের মাঠ দরকার। যে ধরনের ভেন্যুতে খেলা থাকে, সেই ভেন্যু অনুযায়ী যদি আমরা প্র্যাকটিস করতে পারি, তাহলে আমাদের জন্য ভালো। আর প্রত্যেকবারই ফ্রেন্ডলি ম্যাচ হবে-হবে করে বাতিল হয়ে যায়। যদি ঘন ঘন ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলা হয়, তাহলে আমাদের উন্নতির জন্য ভালো হবে। কারণ আমাদের অনেক ভুল-ভ্রান্তি থাকে। ফ্রেন্ডলি ম্যাচ হলে সেগুলো আমরা বুঝতে পারি। কীভাবে সেখান থেকে আমরা বের হতে পারি, নিজেরা সেই চেষ্টাটা তখন করতে পারি। প্রীতি ম্যাচ না হলে সেগুলো আমরা ধরতে পারি না। নিজেরা-নিজেরা খেলা হলে অতটা ভুল-ত্রুটি বের হয় না। একসঙ্গে ক্যাম্পিং করা, প্রীতি ম্যাচ খেলা, এগুলো খুবই জরুরি। এর সঙ্গে আরও কিছু বিষয় আছে। যেমন- জিমের কথা বলবেন। আমাদের জিমে কিন্তু অনেক কিছুই নেই। দুয়েকটা যা আছে, সেগুলো আসলে কাজে দেয় না। খুব গুরুত্বপূর্ণ যেগুলো, অন্তত সেগুলো যদি থাকে, সেটা আমাদের খেলার জন্য আরও শক্তিশালী করে তুলবে।

খবরের কাগজ: মেয়েদের লিগটা ভালোভাবে আয়োজিত হোক, এটাও নিশ্চয়ই চাইবেন?
মারিয়া মান্দা: লিগ নিয়মিত হলে তো সেটা আমাদের জন্য অনেক ভালো। বয়সভিত্তিক বলেন, সিনিয়র পর্যায় বলেন, অনেক ভালো খেলোয়াড় এর মাধ্যমে উঠে আসবে।

খবরের কাগজ: নিয়মিত বেতন না হওয়াটাও তো আপনাদের বড় একটি সমস্যা…
মারিয়া মান্দা: আমাদের যে সমস্যাগুলো ছিল, আমাদের সভাপতি চেষ্টা করবেন সমাধানের। যেগুলো প্রয়োজনীয় সেগুলো নিশ্চয়ই তারা দেবেন।

খবরের কাগজ: দেশে ফেরার পর প্রধান উপদেষ্টা আপনাদের সংবর্ধনা দিয়েছেন। শুনেছি, আপনারা নিজেদের জন্য ঢাকায় একটি করে ফ্ল্যাট চেয়েছেন?
মারিয়া মান্দা: আমাদের সবার চাওয়া এটি। কারণ যখন আমাদের পরিবারকে ঢাকায় নিয়ে আসতে চাই, তখন পরিবারকে রাখার জন্য কোনো জায়গা থাকে না। ঢাকার শহরে তো এরকম পরিস্থিতি নেই যে, আমাদের পরিবারকে রাখব। সেই হিসেবে যদি সরকার আমাদের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জন্য একটি করে ফ্ল্যাট দেয় তাহলে আমাদের জন্য খুব ভালো হয়।

খবরের কাগজ: আপনার মার তো অনেক অবদান। অনেক ত্যাগ তার। মা কতটা খুশি এবারের সাফল্যে?
মারিয়া মান্দা: মা তো অনেক বেশি খুশি। শুধু সফল হয়েছি বলেই না, মা সব সময়ই খুশি থাকে আমাকে নিয়ে। মা সব সময় বলে, খেলার মাঠে নামার আগে ঈশ্বরের কথা মনে করবি। প্রার্থনা করে মাঠে নামবি। আমি সেই চেষ্টাটা সব সময় করি।

খবরের কাগজ: নিজের কাছে কি চাওয়া আপনার? মারিয়া ভবিষ্যতে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
মারিয়া মান্দা: আমরা যেন দেশের জন্য আরও ভালো কিছু করতে পারি। আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে বলি, আমারও ইচ্ছে দেশের বাইরে লিগ খেলার। ভুটানের ক্লাবের হয়ে একবার খেলেছিও। যেন দেশের বাইরে লিগ আরও বেশি খেলতে পারি এবং দেশকে যেন আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।

আসছে জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট

প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০০ পিএম
আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৯ পিএম
আসছে জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট
ছবি: সংগৃহীত

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সংশ্লিষ্ট ক্রীড়া সংগঠকরা।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে টুর্নামেন্টটির বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে বিস্তারিত অবহিত করেন আয়োজকরা। টুর্নামেন্টটির নাম হবে- ‘জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট’, যা শুরু হবে ১০ নভেম্বর।

বিএনপির সাংগঠনিক ১০টি বিভাগ- রাজশাহী, ফরিদপুর, বরিশাল, খুলনা, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, ঢাকা, রংপুর ও সিলেট। এই ১০টি বিভাগের লাল ও সবুজ নামে দুটি করে দল টুর্নামেন্টের প্রথম পর্বে অংশ নেবে।

প্রতিটি বিভাগের দুটি দল নিজেদের মধ্যে একটি করে ম্যাচ খেলবে। ১০ ম্যাচের ১০ জয়ী দল উঠে আসবে মূল পর্বে। তাদের সঙ্গে যোগ হবে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ দল। সবমিলিয়ে ২২টি দলের অংশ গ্রহণ থাকবে প্রতিযোগিতায়।

এই প্রতিযোগিতায় অনেক জাতীয় ক্রিকেটার ও জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটাররা খেলবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। ১০ নভেম্বর বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে রাজশাহী বিভাগের দুই দল রাজশাহী লাল ও রাজশাহী সবুজের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে টুর্নামেন্ট।

বিভাগীয় পর্যায়ের খেলাগুলো বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে হলেও ১৬ জানুয়ারি থেকে মূল পর্ব হবে ঢাকায়। ফাইনাল হবে জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী ১৯ জানুয়ারি।

ফাইনাল ম্যাচটি বিসিবির সহযোগিতায় মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আয়োজন করা যাবে বলে আশাবাদী আয়োজকেরা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক ও জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। তিনি জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উপদেষ্টা। উপস্থিত ছিলেন বিসিবির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। যিনি জিয়া ক্রিকেট টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক।

সংবাদসম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ স্কোরার্স ও আম্পায়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী ইউশা মিশু, ক্রিকেটারদের সংগঠন কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল, ক্রিকেট সংগঠক তারিকুল ইসলামসহ অনেকেই।