নেপাল থেকে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয় করে ফেরার পর বাংলাদেশের যুবারা এখন প্রস্তুত হচ্ছে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের জন্য। ২০২৫ এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ রয়েছে ‘এ’ গ্রুপে। ২১ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর এই গ্রুপের ম্যাচগুলো হবে ভিয়েতনামে।
গত মাসের শেষ দিকে সাফ জয় করে ফেরার পর দিন তিনেকের বিশ্রাম শেষে ফের অনুশীলন শুরু করে যুবারা। তবে একজন পুরোপুরি ব্যতিক্রম। তিনি মেহেদী হাসান শ্রাবণ।সাফজয়ী দলটির অধিনায়ক ছিলেন তিনি। চোটের কারণে বয়সভিত্তিক আসরটির ফাইনালে খেলা হয়নি বসুন্ধরা কিংসের এই গোলরক্ষকের। পরে জাতীয় দলের হয়ে ভুটান সফরও মিস করেছেন। এবার যুব দলের হয়ে ভিয়েতনামেও যাওয়া হচ্ছে না তার। এমনকি অক্টোবরের শেষ দিকে বসুন্ধরা কিংসের হয়ে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে খেলতে পারবেন কি না, এ নিয়েও যথেষ্ট সংশয়ে রয়েছেন শ্রাবণ।
খবরের কাগজকে ১৯ বছর বয়সী গোলরক্ষক বলেন, ‘ইনজুরি থেকে এসেই তো আর মাঠে নামা যায় না। (চ্যালেঞ্জ লিগে) যদি পারি খেলব। তবে আমার মনে হয় না খেলতে পারব।’
অনূর্ধ্ব-২০ সাফে ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালে ৬৯ মিনিটে চোখে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন শ্রাবণ। আঘাত এতটা গুরুতর ছিল যে, তাৎক্ষণিক হাসপাতালে নিতে হয় তাকে। তার জায়গায় বদলি হিসেবে নেমেছিলেন মোহাম্মদ আসিফ। ভারত ম্যাচটা টাইব্রেকারে গড়ালে দুটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে তিনি দলকে জয় উপহার দেন। পরে শ্রাবণের অনুপস্থিতিতে ফাইনালেও খেলেন তিনি।
যুবারা নেপাল থেকে শিরোপা জয় করে আসার দিনই ভুটান সফরের জন্য জাতীয় দল ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। সেখানে যুব সাফজয়ী দলের চারজনের জায়গা হলেও শ্রাবণের হয়নি। সর্বশেষ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের স্কোয়াডে যিনি নিয়মিত সদস্য ছিলেন। গত বছরের নভেম্বরে অভিষেকের পর দুটি ম্যাচও খেলেছেন। গত মৌসুমে বসুন্ধরা কিংসের জার্সিতে ব্যস্ত সময় কেটেছে শ্রাবণের। আনিসুর রহমান জিকো নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ায় কিংসের পোস্ট সামলানোর দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। যদিও পরে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরেছিলেন জিকো, কিন্তু মৌসুমজুড়ে সিংহভাগ ম্যাচে শ্রাবণেই আস্থা রেখেছিল কিংস।
কিংসের হয়ে গত মৌসুমে ট্রেবল জয়ের স্বাদও পেয়েছেন শ্রাবণ। জাতীয় দল ও ক্লাব মিলিয়ে তার জন্য সর্বশেষ মৌসুমটা ছিল স্বপ্নের মতো। কিন্তু নতুন মৌসুমের আগে অন্য বাস্তবতার মুখোমুখি তিনি। তবে বিষয়টি পুরোপুরি পেশাদারিত্বের সঙ্গেই দেখতে চান শ্রাবণ, ‘ইনজুরি পেশাদার খেলোয়াড়দের জীবনের একটা পার্ট। এর সঙ্গে মানিয়ে নিতেই হবে।’
চোটের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে শ্রাবণ বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ এখন ভালো আছি। চোখের নিচে চিকন একটা হাড় থাকে, সেটা ভেঙে গিয়েছিল। তবে চোখের ফোলা এবং ব্যথা এখন কম। ডাক্তার বিশ্রামে থাকতে বলেছেন। তিন সপ্তাহ বিশ্রাম দিয়েছেন ডাক্তার। প্রথমে সার্জারির কথা বলেছিলেন। পরে এভারকেয়ার এবং ঢাকা মেডিকেলের দুজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখে বলেছেন, সার্জারি ছাড়াই ঠিক হবে। ওনাদের কথা অনুযায়ী সার্জারি না করানোর সিদ্ধান্ত হয়। এখন বিশ্রামের সময়টা শেষ হলে ডাক্তার দেখানোর পর বোঝা যাবে সর্বশেষ কি অবস্থা।’
এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে খেলা নিয়ে কেন সংশয়, এ বিষয়ে শ্রাবণ বলেন, ‘ডাক্তার আমাকে তিন সপ্তাহ বিশ্রাম দিয়েছে ইনজুরি ঠিক হতে। এরপর রিহ্যাব করতে হবে, ফিটনেসসহ অনেক বিষয় আছে। এগুলো ঠিক করে মাঠে ফিরতে আরেকটু সময় লাগবে।’ এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের আগে ঘরোয়া ফুটবলও মাঠে গড়ানোর কথা। ফেরার বিষয়ে শ্রাবণের নিজের লক্ষ্য কি? জানতে চাইলে তরুণ এই গোলরক্ষক বলেন, ‘আমার লক্ষ্য আগে সুস্থ হওয়া। তারপর দেখা যাক কি হয়। সুস্থ হওয়ার পর ইনশা আল্লাহ ভালোভাবে ফেরার চেষ্টা করব।’