শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের সর্বত্র পরিবর্তনের ঢেউ লাগে। কিন্তু ক্রীড়াঙ্গনে এই ঢেউ একটু বিলম্বেই লাগে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সব কিছু অবগত হয়ে সংস্কারে হাত দেন। যদিও তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই ১১তম কর্মদিবসেই আইসিসির নিয়ম মেনেই বিসিবির সভাপতি পদে পরিবর্তনের ব্যবস্থা করেছিলেন। এরপর একটু ধীরে চলা নীতি শুরু করেন। প্রায় এক মাসের মাথায় তিনি দেশের ৫৫টি ফেডারেশন-অ্যাসোসিয়শনের মাঝে দুই দফায় ৪৫টিরই সভাপতি পদে পরিবর্তন নিয়ে আসেন।
এসব ফেডারেশনে তিনি অবশ্য নতুন করে কাউকে নিয়োগ দেননি। শুধুমাত্র বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি), বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ও বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) সভাপতি নির্বাচিত হয়ে আসেন। বাকি সবাই সরকার কর্তৃক মনোনীত। এবার যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা হাত দিয়েছেন তার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে। ক্রীড়া পরিষদের বিভিন্ন কর্মকর্তা বিভিন্ন ফেডারেশনের নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটি কিংবা অ্যাডহক কমিটিতে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গতকাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাদের অপসারণ করার কথা জানানো হয়েছে। তাদের সংখ্যা ১৬। যেখানে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক থেকে শুরু করে মাঠকর্মী পর্যন্ত আছেন। তাদের অনেকেই যেমন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে কর্মরত আছেন, তেমনি কেউ গিয়েছেন অবসরে, কেউবা হয়েছেন অন্যত্র বদলি।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যানের (পদাধিকার বলে ক্রীড়া উপদেষ্টা চেয়ারম্যান) একান্ত সচিব রশিদুজ্জামান সেরনিয়াবাত ছিলেন তিনটি ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনে। তিনি ছিলেন আর্চারি ফেডারেশন সহ-সাধারণ সম্পাদক, সদস্য ভারোত্তোলন ফেডারেশন ও সহ-সভাপতি সেপাক টাকরো অ্যাসোসিয়েশন। তাকে ৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে বান্দরবান জেলা স্টেডিয়ামের প্রশাসক হিসেবে বদলি করা হয়েছে। ইয়োগা ও আন্তর্জাতিক তায়াকোয়ান্দো এই দুটি অ্যাসোসিয়েশেনের সদস্য ছিলেন সচিবের ব্যক্তিগত সহকারী জিল্লুর রহমান। এ ছাড়া আরও যাদের অপসারণ করা হয়েছে তারা হলেন শরীর গঠনের ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সাবেক পরিচালক (প্রশাসন) শেখ হামিম হাসান, বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সাবেক পরিচালক (ক্রীড়া) শাহ আলম সরদা, শরীর গঠন ফেডারেশনের সদস্য, পাক্ষিক ক্রীড়াজগতের সম্পাদক মাহমুদ হোসেন খান দুলাল, বক্সিংয়ের সহ-সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত উপপরিচালক সৈয়দা তাছলিমা আক্তার, মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য অবসরপ্রাপ্ত উপপরিচালক আয়েশা বেগম ও প্রাক্তন জুডো প্রশিক্ষক কামরুন নাহার হিরু, সাইক্লিং ফেডারেশনের সদস্য সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মাসুদুর রহমান, উশু ফেডারেশনের সদস্য সহকারী পরিচালক মো. নিয়াজুল হাসান খান, সাইক্লিং ফেডারেশনের ট্রেজারার সাইক্লিং প্রশিক্ষক মো. শাহিদুর রহমান, ভারোত্তোলন ফেডারেশনের ট্রেজারার ভারোত্তোলন কোচ ফারুক আহমেদ সরকার কাজল, আরচারি ফেডারেশনের সহকারী সাধারণ সম্পাদক হ্যান্ডবল প্রশিক্ষক কামরুল ইসলাম কিরণ, চুকবল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য উপসহকারী প্রকৌশলী মো. জাহিদ হোসেন, জুডো ফেডারেশনের সদস্য ক্রীড়া কর্মকর্তা মো. মাকসুদ উল হক ভূঁইয়া, ও বক্সিং ফেডারেশনের সদস্য মাঠকর্মী মো. সেলিম মিয়া।