মোহাম্মদ রিজওয়ানের অধিনায়কত্ব ও প্রায় এক বছর পর ওয়ানডে ক্রিকেটে মাঠে নামাটা রাঙাতে পারলো না পাকিস্তান। জয়ের আশা জাগিয়েও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারতে হয়েছে ২ উইকেটের ব্যবধানে। ফলে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া।
পাকিস্তানের ২০৪ রানের লক্ষ্য টপকাতে গিয়ে ঝোড়ো ব্যাটিং করলেও উইকেট হারিয়েছে অজিরা ৮টি। তাতে পাকিস্তান জয়ের কাছাকাছি চলে গেলেও শেষ পর্যন্ত আর সম্ভব হয়নি জয় ছিনিয়ে আনা।
বোলিংয়ে পাকিস্তানের হয়ে দারুণ শুরু করেন শাহিন শাহ আফ্রিদি ও নাসিম শাহ। ২৮ রানের মধ্যেইউ সাজঘরে ফিরিয়ে দেন স্বাগতিকদের দুই উদ্বোধনী ব্যাটার ম্যাথু শর্ট (১) ও ম্যাকগার্ক (১৬)।
শুরুর সেই ধাক্কা সামলে ৮৫ রানের জুটি গড়েন স্টিভেন স্মিথ ও জস ইংলিশ। সেই জুটি ভাঙেন হারিস রউফ। স্মিথকে ৪৪ রানে ফেরালে ১১৩ রানে ৩ উইকেটের পতন ঘটে। আরেকবার আফ্রিদি আঘাত হানলে ৪৯ রান করে আউট হন ইংলিশ। ১৩৯ রানে ৪ উইকেট হারানো অজিরা ৬ উইকেট হারিয়ে বসে ১৩৯ রানেই।
মারনাস লাবুশেন ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে ম্যাচে ফেরান হারিস। ম্যাক্সওয়েল ০ এবং লাবুশান করেন ১৬ রান। এরপর মোহাম্মদ হাসনাইন উইকেট নেন অ্যারন হার্ডির। ফলে ১৫৫ রানে ৭ উইকেটের পতন ঘটে স্বাগতিকদের।
প্যাট কামিন্সের সঙ্গে শেন অ্যাবট ৩০ রানের জুটি গড়লে আবারও ম্যাচ জয়ের দিকে এগোতে থাকে পাকিস্তান। তখনই শেন অ্যাবট অপ্রত্যাশিত রানআউট হলে আবারও ম্যাচ জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে পাকিস্তান।
যদিও সেখান থেকে আর ভুল করেনি অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়ক প্যাট কামিন্স অপরাজিত ৩২ ও মিচেল স্টার্ক অপরাজিত ছিলেন ২ রানে। মাত্র ৩৩.৩ ওভারে জয় তুলে নিলেও কষ্টার্জিত জয়ও বলা চলে অস্ট্রেলিয়ার জন্য। মারকুটে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি দ্রুত উইকেট হারিয়ে ভুগতেও হয়েছে অজিদের।
পাকিস্তানের হয়ে হারিস রউফ সর্বোচ্চ ৩টি, শাহিন শাহ আফ্রিদি ২টি এবং ১টি করে উইকেট পেয়েছেন মোহাম্মদ হাসনাইন ও নাসিম শাহ।
এর আগে, প্রায় একবছর বিরতি দিয়ে ওয়ানডে খেলতে নেমে শুরুটাও সুখকর হয়নি পাকিস্তানের জন্য। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২০৩ রানে অল আউট হয় পাকিস্তান।
মেলবোর্নে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের সামনে সুবিধা করতে পারেনি পাকিস্তানের ব্যাটাররা। ২৪ রানের ভেতরেই দুই ওপেনার সাইম আইয়ুব (১) ও আব্দুল্লাহ শফিকের (১২) উইকেট হারিয়ে বসে তারা। দুইজনই সাজঘরের পথ ধরেন মিচেল স্টার্কের।
টেস্ট দল থেকে বাদ পড়া সাবেক অধিনায়ক বাবর আজম ভালো শুরু করলেও থেমেছেন ৩৭ রান করে অ্যাডাম জাম্পার বলে বোল্ড হয়ে। ৬৩ রানে ৩ উইকেট হারানো পাকিস্তান ৭০ রানে হারিয়ে বসে চতুর্থ উইকেটও। কামিন্সের বলে কামরান গুলাম ক্যাচ জন জস ইংলিশের গ্লাভসে ৫ রান করে।
ভালো করতে পারেননি সালমান আলী আঘাও। মাত্র ১২ রান করেছেন শেন অ্যাবোটের বলে শর্টকে ক্যাচ দিয়ে। একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন এই ম্যাচ দিয়ে অধিনায়কত্বের অভিষেক হওয়া মোহাম্মদ রিজওয়ান। দলের হয়ে ৪৪ রান আসে তার ব্যাট থেকেই। যদিও তাকে থামিয়েছেন পার্ট টাইমার লাবুশানে। তিনি ক্যাচ দেন উইকেটকিপারের হাতে।
তিন ৪ ও ১ ছয়ে ১৯ বলে ২৪ রান আসে শাহিন শাহ আফ্রিদির ব্যাট থেকে। স্টার্কের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন দলীয় ১৪৮ রানে। ৭ উইকেট হারানো পাকিস্তান তখন দুশো ছুঁতে না পারার শঙ্কায়। সেই শঙ্কা অবশ্য শেষ পর্যন্ত কাটলেও বেশিদূর যেতে পারেনি দলটি।
২০৩ রানে অলআউট হওয়ার আগে লড়াইটা চালিয়েছেন নাসিম শাহ। দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪০ রান এসেছে তার ব্যাটে। এই ইনিংসে ৪টি ছয় হাঁকান তিনি, চার মেরেছেন ১টি। শেষ উইকেট হিসেবে আউট হয়েছেন তিনি কামিন্সের বলে স্টার্ককে ক্যাচ দিয়ে।
মাঝে অভিষিক্ত ইরফান খান রানআউট হয়েছেন ২২ এবং হারিফ রউফ রানের খাতা খোলার আগেই বোল্ড হয়েছেন জাম্পার বলে। অজিদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন মিচেল স্টার্ক, দুটি করে উইকেট নেন প্যাট কামিন্স ও অ্যাডাম জাম্পা। ১টি করে উইকেট পেয়েছে শেন অ্যাবোট ও মারনাস লাবুশানে।