ইনিংসের শেষ বলে মাহমুদউল্লাহর শতকের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩ রান। বড় শট খেলতে ব্যর্থ হয়ে লেগ সাইডে ঠেলে দিয়ে দ্বিতীয় রান নেওয়ার প্রচেষ্টায় আউট হয়েছেন ৯৮ রানে। তার এই ইনিংসেই বাংলাদেশ পেয়েছে ২৪৪ রানের লড়াকু পুঁজি।
৫৩ রানের উদ্বোধনী জুটির পর ১১ বলের মধ্যে ৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে ৭২ রানে ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের ১৪৫ রানের জুটিতে। মিরাজ আউট হয়েছেব ৬৬ রানের ইনিংস খেলে। এই দুই ব্যাটারের ব্যাটিংয়েই মাঝপথে খেই হারানো বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে ম্যাচে।
সোমবার (১১ নভেম্বর) শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মেহেদী হাসান মিরাজের শততম ওয়ানডে ও অধিনায়কত্বের অভিষেক দুটোই ঘটে একই দিনে। নেতৃত্বের ভার পেয়েই টস জিতেন তিনি। সিদ্ধান্ত নেন আগে ব্যাটিং করার।
মিরাজের সিদ্ধান্ত যথার্থ প্রমাণ করেন দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও সৌম্য সরকার। ৫৩ রানের জুটি গড়েন তারা। এরপরই দ্রুত ৩ উইকেটের পতন ৫ রান ও ১১ বলের ভেতর।
যার শুরুটা হয় আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে সৌম্য ২৪ রান করে বোল্ড হলে। এরপর মোহাম্মদ নবীকে কাভারের ওপর দিয়ে খেলতে দিয়ে হাসমতউল্লাহ শহীদির হাতে ক্যাচ দেন ১৯ রান করা তামিম। আগে দুইবার জীবন পেলেও এবার আর পাননি। অধিনায়ক মিরাজের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে ৪ রান করে রান আউট হয়ে জাকির হাসান সাজঘরে ফিরলে ৫৮ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
ভালো করতে পারেননি তাওহিদ হৃদয়ও। মাত্র ৭ রান করে রশিদ খানের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন দলীয় ৭২ রানে। ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশের হাল ধরতে মাঠে আসেন সবশেষ চার ম্যাচে ব্যর্থ হওয়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মাঠে এসেই পায়ে চোট পান তিনি। এরপরও অধিনায়ক মিরাজকে নিয়ে চালিয়ে গেছেন লড়াই।
মিরাজের সঙ্গে জুটি গড়েন ১৪৫ রানের। এই জুটিতে রিয়াদ তুলে নেন ক্যারিয়ারের ২৯তম অর্ধশতক তুলে মাংসপেশিতে টান নিয়েও। তাকে সঙ্গ দেওয়া মিরাজ কায়রিয়ারের চতুর্থ অর্ধশতক তুলে নিলেও খেলেছেন খুবই ধীরগতির ইনিংস। আউট হওয়ার আগে করেন ১১৯ বলে ৬৬ রান। ১০৬ বলে পান অর্ধশতকের দেখা। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পঞ্চম অধিনায়ক হিসেবে অভিষেকে ফিফটি পেলেন মিরাজ। বাংলাদেশের তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে নিজের শততম ওয়ানডেতেও ফিফটি পেলেন তিনি। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে বড় শট খেলতে গিয়ে গুলবাদিন নাইবকে ক্যাচ দেন তিনি দলীয় ২১৭ রানে।
এরপর জাকের আর নাসুম করেন কেবল ১ ও ৫ রান। শরিফুল অপরাজিত ছিলেন ২ রানে। শেষদিকে মিরাজের উইকেটের পর জাকের ও নাসুমের উইকেটও বাংলাদেশ দ্রুত হারালে খুব একটা স্ট্রাইক না পেয়ে রিয়াদের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায় শতক তোলার সমীকরণ। শেষ বলে তার শতকের জন্য দরকার ছিল ৩ রান। খোঁড়ানো মাহমুদউল্লাহ তখন টাইমিংয়ের গড়বড় করে শেষ বলে নিতে পেরেছেন মাত্র ১ রান। দ্বিতীয় রান নেওয়ার প্রচেষ্টায় পায়ের চোটে অপরপ্রান্তে পৌঁছাতে না পারায় ৯৮ রানে আউট হন তিনি। তার আউটে ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৪৪ রানের লড়াকু পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
আফগানিস্তানের হয়ে আজমতউল্লাহ ওমরজাই নেন সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট আর ১টি করে উইকেট পান মোহাম্মদ নবী ও রশিদ খান আর দুটি হয় রান আউট।