
একটি দল ছুটছে জয়ের ধারায়। আর অন্যটি শুধু ঘুরপাক খাচ্ছে হারের বৃত্তে। মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও চট্টগ্রাম আবাহনীর মধ্যকার লড়াইয়ে তাই পরিষ্কার ফেবারিট ছিল মোহামেডানই। প্রিমিয়ার লিগের ষষ্ঠ রাউন্ডের ম্যাচটিতে ঘটেছে অনুমিত ঘটনাই। জয়ের হাসি হেসেছে আলফাজ আহমেদের দল। তবে ম্যাচের বেশির ভাগ সময় একজন কম নিয়ে খেলেও যে দাপট দেখিয়েছে সাদা-কালোরা, তা আবারও সেই প্রশ্নটাই সামনে এনেছে। এই মোহামেডানকে রুখবে কে?
গতকাল শনিবার ময়মনসিংহের রফিকউদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে ১০ জন নিয়ে খেলেও চট্টগ্রাম আবাহনীকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে মোহামেডান। সাদা-কালোরা এবারের লিগে এ নিয়ে ৬ ম্যাচের ৬টিতেই জিতল। তারাই একমাত্র দল যারা ষষ্ঠ রাউন্ড শেষে পূর্ণ ১৮ পয়েন্ট আদায় করেছে। স্বাভাবিকভাবেই টেবিলের শীর্ষ দলটির নামও মোহামেডান।
১৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস অ্যান্ড সোসাইটি। গতকাল দিনের অন্য ম্যাচে যারা ঢাকা ওয়ান্ডারার্সকে ৬-১ গোলে হারিয়েছে। ম্যাচটিতে একাই ৬ গোল করেছেন স্যামুয়েল বোয়াটেং।
গত পাঁচ আসরের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস এরই মধ্যে শীর্ষে থাকা মোহামেডানের চেয়ে ৮ পয়েন্ট পিছিয়ে পড়েছে। ১০ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে পঞ্চম স্থানে। আর মোহামেডানের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেড পিছিয়ে আছে ৫ পয়েন্টে। ১৩ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে তৃতীয় স্থানে। লিগের যদিও এখনো অনেকটা পথ বাকি। প্রথম পর্বে তিন রাউন্ড তো রয়েছেই, সঙ্গে দ্বিতীয় পর্ব পুরোটা। এই সময়ে ঘটতে পারে অনেক কিছুই। তবে কিংসের জন্য ৮ পয়েন্ট ও আবাহনীর জন্য ৫ পয়েন্টের ব্যবধান ঘোচানো সহজ হওয়ার কথা নয়। এই জায়গাটায় বরং রহমতগঞ্জ এগিয়ে আছে অনেকটাই। ৬ ম্যাচের মধ্যে শুধু একটিতে হারা রহমতগঞ্জ মোহামেডানের ঘাড়ে গরম নিশ্বাস রেখেই এগিয়ে চলেছে।
গতকাল ২২ মিনিটে শাকিল আহাদ তপু দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে ১০ জনে পরিণত হয় মোহামেডান। একদিকে চোটের কারণে সুলেমান দিয়াবাতে নেই। তার ওপর শুরুর দিকেই ১০ জনে পরিণত হওয়া। মোহামেডানের খেলার ধার তাতে কমারই কথা। কিন্তু ঘটেছে উল্টো ঘটনা। যদিও প্রথমার্ধে দলটি কোনো গোল আদায় করতে পারেনি মতিঝিলের দলটি। তবে দ্বিতীয়ার্ধে একের পর এক গোল করতে থাকে তারা। ৪৭ মিনিটে যার শুরুটা মনজির কুলদিয়াতির মাধ্যমে। মোজাফ্ফরভের নেওয়া কর্নার কিক থেকে হেডে গোলটি করেন তিনি। ৫৫ মিনিটে ইমানুয়েল সানডে ব্যবধান ২-০ করে ফেলেন। ডানপ্রান্ত থেকে আরিফ হোসেনের কাটব্যাক গোলমুখে অনেকটা ফাঁকায় থাকা সানডেকে খুঁজে নেয়। নাইজেরিয়ান এই ফরোয়ার্ড বলে আলতো ছোঁয়ায় তা জালে জড়িয়ে দেন।
৬৩ মিনিটে সৌরভ দেওয়ান মোহামেডানকে ৩-০ গোলে এগিয়ে দেন। সেন্টার সার্কেল থেকে সানডে বল বাড়িয়ে ছিলেন আর্নেস বোয়াটেংকে। তার বাঁ পায়ের শট পোস্টে লেগে ফিরলে ফিরতি বল ডান পায়ের শটে জালে জড়িয়ে দেন সৌরভ। ৯০ মিনিটে এই ফরোয়ার্ড নিজের দ্বিতীয় গোল আদায় করেন। তার আগে ৮৫ মিনিটে মোহামেডান আত্মঘাতী থেকে আরও একটি গোল পায়; চট্টগ্রামের সেলিম রেজা নিজের জালেই বল ঠেলে দেন। ৫ মিনিটের যোগ করা সময়ে শেষ মিনিটে স্পট কিক থেকে চট্টগ্রাম আবাহনীর পক্ষে ব্যবধান কমান (৫-১) ইমতিয়াজ সুলতান জিতু। এবারের লিগে ৬ ম্যাচে সব কটিতে হারা দলটির এটিই প্রথম গোল। এক গোল করার বিপরীতে তারা হজম করেছে ১৯টি। এখন পর্যন্ত তারাই একমাত্র দল হিসেবে পয়েন্ট শূন্য। স্বাভাবিকভাবেই টেবিলে সবার তলানিতে তারা।