ছবি : সংগৃহীত
কোচ-ফুটবলার দ্বন্দ্ব নিরসনে সমঝোতার দুয়ার বুঝি বন্ধই থাকছে। গতকাল পর্যন্ত যে চিত্র, তাতে বিদ্রোহী নারী ফুটবলাররা নিজেদের অবস্থানে দৃঢ় আছেন। বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের আহ্বানেও তারা অনুশীলনে যোগ দেননি। অন্যদিকে ইংলিশ কোচ পিটার বাটলারও বসে নেই। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করা ১৮ ফুটবলারকে ছাড়াই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। গতকাল তো দুই বেলা অনুশীলন করিয়েছেন মেয়েদের। ৩৭ জন ফুটবলার এখন বাটলারের অধীনে অনুশীলন করছেন। যাদের বেশির ভাগই অনূর্ধ্ব-২০ ও অনূর্ধ্ব-১৭ দলের ফুটবলার। সর্বশেষ সাফজয়ী দলের কয়েকজনও আছেন।
তাহলে সাবিনা-ঋতুপর্ণাদের কী হবে? অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বিষয়টি আরও কয়েক দিনের জন্য ঝুলেই থাকছে এবং সমাধান পুরোপুরি বাফুফে সভাপতির হাতে। সংকট নিরসনে বিশেষ কমিটির প্রতিবেদনের ওপর যার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা। গত বৃহস্পতিবার রাতে সাত সদস্যের বিশেষ কমিটি তাদের প্রতিবেদন বাফুফেতে জমা দিয়েছে। জানা গেছে, ওই দিন রাতেই বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বিদ্রোহী ফুটবলাদের সঙ্গে বসেছিলেন। তিনি মেয়েদের অভিযোগগুলো আমলে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। খেলোয়াড়দের প্রতি কোচের দৃষ্টিভঙ্গি যেন নম্র হয়, সেই বিষয়টিও দেখতে চেয়েছিলেন। সেই সঙ্গে সাবিনা-ঋতুপর্ণাদের অনুশীলনে যোগ দেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছিলেন। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতি সাবিনাদের নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকার কথাই জানান দিচ্ছে।
সাবিনাদের সঙ্গে তাবিথ আউয়াল বসেছিলেন বৃহস্পতিবার রাতে। পরের দিন শুক্রবার ছিল ছুটির দিন। এদিন মেয়েদের অনুশীলন ছিল না। বাফুফে সভাপতির আহ্বানের কারণে সংশ্লিষ্ট অনেকেই আশা করেছিলেন শনিবার সাবিনারা অনুশীলনে যোগ দেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা অনুশীলনে যোগ দেননি। সাবিনাসহ ১৮ বিদ্রোহী ফুটবলার বাদে বাকিদের নিয়ে গতকাল সকালে ব্রাদার্স ইউনিয়ন মাঠে অনুশীলন সেশন পরিচালনা করেন বাটলার। আর বিকেলে অনুশীলন করান বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। গ্যালারিতে বসে মিনিট ত্রিশেক মেয়েদের অনুশীলন দেখে মনে হলো, এই দলটিকে তৈরি করতে বেশ সময় লাগবে বাটলারের। কারণ এদের বেশির ভাগই অনভিজ্ঞ।
এদিকে বাংলাদেশের মেয়েদের সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর এ মাসেই। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি আরব আমিরাতে যাবে মেয়েরা। ২৬ ফেব্রুয়ারি স্বাগতিকদের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলবে, ২ মার্চ খেলবে আরও একটি। ম্যাচ দুটির জন্য ১৫ তারিখের পর দল ঘোষণা হবে। বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ এমনটিই জানিয়েছেন।
তিনি এখনো আশায় আছেন সাবিনারা অনুশীলনে যোগ দেবেন, ‘আমার বিশ্বাস এখনো পর্যন্ত ওরা অনুশীলনে যায়নি, তবে ওরা অনুশীলনে যাবে। কারণ তাদের দীর্ঘ একটা ক্যারিয়ার তারা এভাবে নষ্ট করতে পারে না। আর এটা আমি বিশ্বাস করি। আমি এখনো চেষ্টা করছি ওরা যেন ফিরে আসে। ওরা হয়তো একটা অভিমানে আছে। আশা করি ওরা ফিরে আসবে।’
সাবিনারা ট্রেনিংয়ে যোগ না দিলে বিকল্প কী হবে- এমনটা জানতে চাইলে কিরণ সরাসরি বলেছেন, ‘কোনো প্ল্যান ‘বি’ নেই। প্ল্যান ‘এ’তেই আছি আমরা।’ এদিকে কোচ পিটার বাটরারও বলেছেন বিদ্রোহীরা এলে তিনি তাদের স্বাগত জানাবেন এবং বল তাদের কোর্টে বলেও মন্তব্য করেছেন। আবার তিনি এমনও বলেছেন, ‘নতুন ভবিষ্যতের জন্য আমরা নতুন দল গঠন করছি।’
সব মিলিয়ে আসলে পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে, সেটি আঁচ করা মুশকিল। এদিকে বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল এ নিয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদমাধ্যমে কোনো কথা বলেননি। যদিও তার দিকেই তাকিয়ে সবাই।