ঢাকা ১৩ চৈত্র ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ১৩ চৈত্র ১৪৩১

২৯ বছর পর…

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:২৫ এএম
২৯ বছর পর…
ছবি : সংগৃহীত

১৯৯৬ সাল। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়াম। তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট বেনজির ভুট্টোর হাত থেকে বিশ্বকাপের ট্রফি নিচ্ছেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা। ছবিটি লঙ্কানদের কাছে অনেক গর্বের। সফল আয়োজক হিসেবে এই ছবির জন্য গর্বিত পাকিস্তানও। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে লাহোরের সেই ফাইনালের স্মৃতি বিষাদেরও জন্ম দেয় দেশটির জন্য। কারণ এরপর নানা কারণে বিশ্বকাপ দূরে থাক, আইসিসির কোনো ইভেন্টই আর আয়োজন করতে পারেনি পাকিস্তান। অবশেষে দীর্ঘ ২৯ বছর পর আইসিসির ক্রিকেট উৎসবের আবীর মাখতে চলেছে পাকিস্তান। আজ থেকে পাকিস্তানের মাটিতে শুরু হতে যাচ্ছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ধুন্ধুমার আসর।

১৯৯৬ থেকে ২০০৯, ১৩ বছরে আইসিসির মোট ১১টি ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছে (ওয়ানডে বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি)। অথচ এর মধ্যে একটিরও আয়োজক স্বত্ব পায়নি পাকিস্তান। অথচ এশিয়ার তিন দেশ ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ ঠিকই কোনো কোনো আসরের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। নিয়ম অনুযায়ী ২০০৮ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হওয়ার কথা ছিল পাকিস্তানে। কিন্তু নিরাপত্তা ইস্যুতে ছেদ পড়ে সবকিছু। একবছর পর ২০০৯ সালে সেই টুর্নামেন্ট আয়োজন করে দক্ষিণ আফ্রিকা। একই বছর পাকিস্তানের জন্য ছিল আরও ভয়াবহ। অনেকটা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো। এমনিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক স্বত্ব খোয়া গেছে, কোথায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার হবে, ঘটল উল্টো ঘটনা। লাহোরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটারদের বহনকারী বাসে হামলা চালায় বন্দুকধারী সন্ত্রাসীরা। যে ঘটনায় পাকিস্তানের ছয়জন পুলিশ ও দুই বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হন। আহত হন শ্রীলঙ্কার ছয় ক্রিকেটার। ন্যক্কারজনক এ ঘটনার পর বিশ্বক্রিকেট থেকে প্রায় এক ঘরে হয়ে যায় পাকিস্তান। সেই ঘটনার বরফ গলতে লেগে যায় প্রায় এক যুগের বেশি সময়। দীর্ঘদিন পর সব ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ পাকিস্তানের প্রতি সহানুভূতি দেখালেও ভারত রয়ে গেছে আগের অবস্থানেই। নিরাপত্তা ইস্যুতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই যেমন পাকিস্তানে যাচ্ছে না রোহিতরা। তারা সব ম্যাচ খেলবে দুবাইয়ে। তার মানে পাকিস্তানে দীর্ঘ তিন দশক পর ক্রিকেট উৎসবের আবহে ফিরলেও গলার কাঁটা হিসেবে রয়ে গেল ভারত। 

অথচ পাকিস্তানে ক্রিকেট শুধু একটি খেলা নয়, এটি একটি ঐতিহ্য, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম বয়ে চলেছে, যা জাতি, খেলোয়াড় ও ক্রিকেটভক্তদের মধ্যে এক অটুট সম্পর্ক তৈরি করেছে। করাচির ধোঁয়া-মাখা গলি থেকে শুরু করে লাহোরের ক্রিকেটীয় চর্চার নীরব শ্রদ্ধায়, ক্রিকেট দীর্ঘকাল ধরে জাতীয় পরিচয়ের একটি প্রকাশ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা সময়ের অবাধ দাপটে অপরিবর্তিত রয়েছে।

তবুও প্রায় ৩০ বছর ধরে পাকিস্তান ক্রিকেটের বৃহৎ মঞ্চ থেকে বঞ্চিত। ১৯৯৬ সালের উইলস ওয়ার্ল্ড কাপের পর থেকে দেশটি আর কখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বিশ্বকে তার হৃদয়গ্রাহী ভূখণ্ডে স্বাগত জানাতে পারেনি। অপেক্ষাটা ছিল দীর্ঘ। কখনো রাজনৈতিক অস্থিরতা, কখনো খেলার বাইরের পরিস্থিতি দ্বারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর তাই আজ থেকে শুরু হওয়া চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি কেবল একটি টুর্নামেন্টই নয় বরং একটি হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারের সুযোগ। 

ভারত তাদের ম্যাচ অন্যত্র খেলার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় হাইব্রিড তকমা পাচ্ছে টুর্নামেন্টটি। যার পেছনে দায়ী আসলে দুই দেশের বিরূপ কূটনৈতিক সম্পর্ক। এটি স্বাগতিক পাকিস্তানের জন্য তীব্র হতাশার। ক্রিকেট তার অপরিবর্তিত রূপে, রাজনীতি এবং কূটনীতির চেয়েও বড়। কিন্তু ক্রিকেট আজ কূটনৈতিক সরঞ্জাম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে এমন বিভাজন অবশ্যম্ভাবী। ক্রিকেট হোক উপভোগের, বিবাদ বা দ্বন্দ্বের নয়, এমন রীতিতেই হাঁটতে চায় দেশটি। 

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। নিরাপত্তা থেকে শুরু করে প্রতিটি জায়গায় সজাগ দৃষ্টি রয়েছে তাদের। আজ থেকে করাচির জাতীয় স্টেডিয়াম আবারও ক্রিকেটের উন্মাদনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে। পাকিস্তান এখন একটি নতুন রূপে রূপান্তরিত। অবকাঠামো পুনর্নির্মাণে স্টেডিয়ামগুলো সেজেছে নতুন সাজে। সব মিলিয়ে করাচি, লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডি শহরগুলোতে এক নতুন আশার বাতাস বইছে। একটি জাতি আবারও তার ক্রিকেটের গল্প ফিরে পাচ্ছে ক্রমশ। 

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মহসিন রাজা নাকভি নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তান এই টুর্নামেন্টের জন্য কতটা প্রস্তুত এবং রোমাঞ্চিত। এটিকে জাতির জন্য এবং তাদের ক্রিকেটপ্রেমী জনগণের জন্য ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ পাকিস্তানে ২৯ বছর পর ফিরছে। এই টুর্নামেন্ট শুধু ক্রিকেট নয়, এটি পাকিস্তানের আতিথেয়তা এবং আবেগের এক অভূতপূর্ব প্রদর্শনী।’

লাহোর কেল্লাকে নির্বাচন করা হয়েছে টুর্নামেন্টের মশাল প্রজ্জ্বলিত করার জন্য। যার মাধ্যমে দেশের সাংস্কৃতিক এবং ক্রিকেটীয় রূপের ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হবে। এ প্রসঙ্গে নাকভি বলেন, ‘এই জায়গা শুধু পাকিস্তানের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকেই প্রতিনিধিত্ব করে না বরং দেশের ক্রিকেটের ঐতিহ্যকেও প্রতিফলিত করে। প্রতিটি স্টেডিয়াম কানায় কানায় পরিপূর্ণ থাকবে দর্শকে, এই দায়িত্ব পাকিস্তানের জনগণের। ক্রিকেট হোক উপভোগের মন্ত্র।’

২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোচ সিমন্স

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৪:০০ পিএম
২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোচ সিমন্স
ছবি : সংগৃহীত

চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। তার সঙ্গে মেয়াদ ছিল ২০২৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ ভালো করতে না পারলেও ফিল সিমন্সের মেয়াদ বাড়ার গুঞ্জন ছিল।

শেষ পর্যন্ত সেটাই সত্য হয়েছে। সিমন্সের সঙ্গে ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত মেয়াদ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। 

গতকাল  (২৫ মার্চ) রাতে বিসিবির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানা গেছে।

বিসিবির পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে ফিল সিমন্স বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদে কাজ করার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। এই দলের মধ্যে যে প্রতিভা রয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না এবং আমি বিশ্বাস করি আমরা একসঙ্গে দারুণ কিছু অর্জন করতে সক্ষম হব। আমি সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’

বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের প্রশংসা করে সিমন্স বলেন, ‘ইতোমধ্যে কিছু অসাধারণ খেলোয়াড়ের সঙ্গে কাজ করে, আমি এই দলের মধ্যে অপরিসীম প্রতিশ্রুতি দেখতে পাচ্ছি। তাদের দক্ষতা এবং খেলার প্রতি আবেগ আমাকে প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত করে। একসঙ্গে আমরা বাংলাদেশ ক্রিকেটকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে এবং আমরা সত্যিই বিশেষ কিছু তৈরি করতে পারি।’

গেল বছর অক্টোবর বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয় টেস্ট সিরিজে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও পরাজিত হয়। ক্যারিবীয়দের মাটিতে টেস্ট সিরিজ ড্র করে, ওয়ানডেতে হার এবং টি-টোয়েন্টি জিতে বাংলাদেশ।

বিশ্বকাপজয়ী তিন গোলরক্ষকের এক কীর্তি

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৩:২০ পিএম
আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৩:২০ পিএম
বিশ্বকাপজয়ী তিন গোলরক্ষকের এক কীর্তি
ছবি : সংগৃহীত

গোলপোস্টের নিচে তারা অতন্দ্রী প্রহরী। কেউ বা বনে যান চীনের প্রাচীর। যে যত গোল রুখে দিতে পারেন, তাদের নামের পাশে যোগ হয় নানা বিশেষণ। ফুটবল বিশ্বে তিন গোলরক্ষক আছেন যারা একই কীর্তি গড়ে এখনো স্বমহিমায় ভাস্বর। বিশ্বকাপ ফুটবলে এই তিন গোলরক্ষক জিতেছেন সোনালি ট্রফি, কিন্তু বিশ্বকাপের গোটা আসরে গোল হজম করেছেন মাত্র দুটি। তারা হলেন ফাবিয়েন বার্তেজ (ফ্রান্স), জিয়ানলুইজি বুফন (ইতালি) ও ইকার ক্যাসিয়াস (স্পেন)। বিশ্বকাপজয়ী দলের হয়ে সবচেয়ে কম, মাত্র দুটি গোল হজম করার গৌরব শুধ এই তিনজনেরই। 

ফাবিয়েন বার্তেজ (ফ্রান্স ১৯৯৮)

টাক মাথার গোলরক্ষক বার্তেজের সৌভাগ্যের গল্পে বিশেষ এক অধ্যায় আছে। প্রতিটি ম্যাচের আগে তার মাথায় চুমু খেতেন ফরাসি ডিফেন্ডার লরেন্ট ব্লাঁ। সৌভাগ্যের এই রীতিটি দারুণ কাজে দেয়। বার্তেজের অসাধারণ পারফরম্যান্সে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতে ফ্রান্স।

গ্রুপ পর্বে ডেনমার্কের বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে গোল হজম করেন বার্তেজ, গোলদাতা ছিলেন মাইকেল লাউড্রুপ। তবে ফ্রান্স ম্যাচটি ২-১ ব্যবধানে জিতে চলে যায় দ্বিতীয় রাউন্ডে। সেমিফাইনালে ডেভর সুকারের গোলে ক্রোয়েশিয়া এগিয়ে গেলেও লিলিয়ান থুরামের জোড়া গোলে জয় নিশ্চিত করে ফরাসিরা।

ফাইনালে নিষিদ্ধ ব্লাঁকে ছাড়াই খেলতে নামে ফ্রান্স, তবে রীতি ভাঙেননি তিনি- আগেভাগেই চুমু দিয়ে শুভকামনা জানিয়ে গিয়েছিলেন! আর বার্তেজও ছিলেন দুর্দান্ত, রোনালদোর ব্রাজিলকে হতাশায় ডুবিয়ে ৩-০ ব্যবধানে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতে ফ্রান্স। গোলপোস্টে বার্তেজ যেন ছিলেন দেবদূত। 

জিয়ানলুইজি বুফন (জার্মানি ২০০৬)

বার্তেজের এই কীর্তির সমতাই গড়েছিলেন ইতালির লিজেন্ডারি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফন। তবে তার রেকর্ড আরও বিস্ময়কর, কারণ ওপেন প্লেতে প্রতিপক্ষের কোনো খেলোয়াড় তাকে পরাস্ত করতে পারেনি!

গ্রুপ পর্বে একমাত্র গোলটি হজম করেন নিজেদের খেলোয়াড়ের ভুলে। ডিফেন্ডার ক্রিশ্চিয়ান জাকার্দো বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের জালেই জড়িয়ে ফেলেন। এরপর ফাইনালে জিনেদিন জিদান তাকে পরাস্ত করেন পেনাল্টি থেকে, যা এক আশ্চর্য চিপ শটে ক্রসবারে লেগে গোললাইনের ওপারে পড়ে।

সেই ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে জিদানের হেড অবিশ্বাস্যভাবে আটকে দেন বুফন, ম্যাচ নিয়ে যান টাইব্রেকারে। এরপর পেনাল্টি শুটআউটে ফ্রান্সকে ৫-৩ ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপের ট্রফি উঁচিয়ে ধরে ইতালি। গোলপোস্টের নিচে অবিশ্বাস্য সব সেভ করা বুফন পরিচিত পান সুপারম্যান হিসেবে। 

ইকার ক্যাসিয়াস (দক্ষিণ আফ্রিকা ২০১০) 

রিয়াল মাদ্রিদ কিংবদন্তি ইকার ক্যাসিয়াস ২০১০ বিশ্বকাপে জয়ের নায়ক ছিলেন স্পেনের। ফাইনালে ডাচ ফরোয়ার্ড আরিয়েন রোবেনের শট পায়ের টোকায় দারুণভাবে রুখে দিয়ে দলের বিশ্বকাপ জয়ের পথ নিশ্চিত করেন।

এর আগেই ক্যাসিয়াস নিজের যোগ্যতার প্রমাণ রেখেছিলেন। কোয়ার্টার ফাইনালে গোলশুন্য অবস্থায় প্যারাগুয়ের অস্কার কারদোসোর পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেন। পরে ১-০ গোলে জিতে সেমিফাইনালে যায় স্পেন। এভাবে ক্যাসিয়াস বিশ্বকাপের দুই আসরে পেনাল্টি সেভ করা প্রথম গোলরক্ষক বনে যান (টাইব্রেকার বাদে)।

স্পেন পুরো টুর্নামেন্টে দুটি গোল হজম করে, দুটিই গ্রুপ পর্বে। সুইজারল্যান্ডের হয়ে প্রাপ্ত সুযোগ কাজে লাগান গেলসন ফার্নান্দেজ। আর চিলির হয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে এক ডিপ্লেক্টেট শটে গোল করেন রদ্রিগো মিলার। শেষ পর্যন্ত স্পেন ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো জেতে বিশ্বকাপ। আর ক্যাসিয়াস ছিলেন সেই দলের অপরিহার্য অংশ। শুধু তাই নয়, তিনি ছিলেন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কও। 

এই ভালোবাসা তামিমের প্রাপ্য

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০১:৫৬ পিএম
আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০১:৫৯ পিএম
এই ভালোবাসা তামিমের প্রাপ্য
ছবি : সংগৃহীত

একটাই অনুরোধ করব সবাইকে, ‘আমাকে মনে রাইখেন মানে ভুলে যাইয়েন না।’ এই ছোট্ট কথাটা নিশ্চয়ই সবাই মনে করতে পারছেন। ২০২৩ বিশ্বকাপের দলে নিজের নাম প্রত্যাহারের কারণ জানাতে করা তামিম ইকবালের ভিডিওবার্তার শেষ কথা এটা।

১২ মিনিট ১০ সেকেন্ডের সেই ভিডিওবার্তা তামিমের ফেসবুকে প্রকাশিত হয় বাংলাদেশ দল ভারতের প্লেন ধরার পরই। তামিম নিজেকে বাকিদের মনে জায়গা করানোর যেই আকুতিটা জানিয়েছিলেন তা নিয়ে সমালোচনা কম হয়নি। কিন্তু সেই সমালোচকরাই শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েছেন তামিমের অনুরোধ মেটাতে।

হার্ট অ্যাটাক থেকে লাইফ সাপোর্ট, বিকেএসপির আকাশের কালো মেঘ এসে ভর করে ক্রিকেটপাগল দেশটার কোটি মানুষের মনেও। জীবন ও যমের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা তামিমের জন্য গণমানুষের হৃদয়ের আকুতিতেই হয়তো সৃষ্টিকর্তা এই যাত্রায় ফিরিয়ে দিয়েছেন ওয়ানডে দলের সাবেক অধিনায়ককে। তীব্র সমালোচকদের মনটাও ভারী হয়েছে সাবেক অধিনায়কের অসুস্থতার খবরে।

পেশাদার ক্রিকেটার তামিম ইকবালের জনপ্রিয়তা ও অর্থের ঘাটতি নেই। সবচেয়ে বেশি যেটা দরকার, মনুষ্যত্ব। সেটিও তার মাঝে আছে ঢের বেশি। এই তো তামিমের লাইফ সাপোর্টের খবরেই একে-একে সেই মনুষ্যত্বের খবর সামনে আসতে শুরু করে। কবে কার হার্টে রিং পরানো ব্যয়ভার তামিম বহন করেছেন। কিছুদিন আগে দাবার প্রয়াত গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়ার ছেলের পাশে দাঁড়ানো, জাতীয় দলের লেগস্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বাবার হৃদরোগের চিকিৎসায়ও ছিল তামিমের অবদান। করোনাকালীন সময়ে যখন কোনো হাসপাতালে সিট পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন সহযোগিতার হাতটা এই তামিমই বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।

জনপ্রিয়তায় আড়াল হয় মানুষের মানবিক গুণাবলি, এমন একটা অভিযোগ সমাজে প্রচলিত আছে। তামিম যেন বাস্তব জীবনে ঠিক তার উল্টো। শত জনপ্রিয়তাও তার বিনয়ে চিড় ধরাতে পারেনি একটুও। এই বিনয়টাই বোধহয় তামিমের প্রতি মানুষের উদ্বেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। যে উদ্বেগ এসেছে দেশ ছাড়িয়ে সীমানার ওপার থেকেও।

দেশসেরা ওপেনারের দুঃসময়ে শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গা, দিমুথ করুণারত্নে ভারতের দুই সাবেক যুবরাজ সিং ও মনোজ তিওয়ারি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এই তালিকায় আছেন দেশটির ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলেও। এসেক্স কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব ও আইপিএলের কলকাতা নাইট রাইডার্স ফ্র্যাঞ্চাইজিও সুস্থতা কামনা করে তামিমের।

মাঠে ও মাঠে বাইরে যেকোনো ক্রিকেটার আলোচিত ও সমালোচিত দুটোই হয়ে থাকেন। শুধু ক্রিকেটার নন, যেকোনো পেশার মানুষই এমনটার আওতাভুক্ত। এটি তো পেশাগত জীবনেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। এসবকে মিলিয়ে জীবনের ভারসাম্য রক্ষা করতে হয়। ভারসাম্য বজায়ে কিছুটা এদিক-ওদিক হলেই অনেক উজ্জ্বল সম্পর্কই হয়ে পড়ে মলিন।

সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের সম্পর্কটার কথাই ভাবুন। সবচেয়ে ভালো বন্ধুত্বটাও ফিকে হয়ে গিয়েছিল সময়ের পরিক্রমায়। যেই সাকিব বিশ্বকাপের আগে তামিমের উন্মুক্ত সমালোচনা করেছিলেন টিভিপর্দায়, তিনিই নিজের জন্মদিনের সেরা উপহার হিসেবে তামিমের জন্য সবার কাছে দোয়া চাইলেন। আর তাতেই সাকিব প্রমাণ করলেন বন্ধুত্ব কখনোই ফুরায় না। বিপদেই তো বন্ধুর পরিচয়। কলকাতা নাইট রাইডার্স ও ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে খেলার সময় তো একাধিকবার সাকিব ‘বেস্টফ্রেন্ড’ হিসেবেই উল্লেখ করেছিলেন।

হার্ট অ্যাটাকের ঘটনায় তামিম শুধু জীবন নয়, ফিরে পেয়েছেন নিজের হারিয়ে ফেলা বন্ধুত্বটাও। বন্ধুহীন জীবনের কোনো অর্থ নেই। সবকিছুই ভালোর জন্য হয়- কথাটা মিলে যাচ্ছে তামিমের বেলায়। হাসপাতাল থেকে মাঠের ক্রিকেটে তামিম ফিরুক আর নাই ফিরুক, নিজের হারিয়ে ফেলা বন্ধুত্বটা ফিরে পাওয়া নিয়ে তামিম নিশ্চিতভাবেই পুলকিত হবেন। সব খারাপেরও তো কিছু ভালো আছে। তাকে নিয়ে বন্ধু সাকিবের উদ্বেগ তো সেটারই ইঙ্গিত করে।

তামিম সুস্থভাবে ফিরে আসুক। এসে জানুক তার কথা সবাই রেখেছে। সবাই তাকে মনে রেখেছিল নিজ নিজ প্রার্থনায়। লর্ডসের শতক উদযাপনের চেয়েও মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা ও সর্বস্তরের মানুষের ভালোবাসার এই মুহূর্তটাই হয়তো তামিমের জীবনের বিশেষ প্রাপ্তি হয়ে থাকবে।

রাফিনিয়াকে স্কালোনির ক্ষমা

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০১:০০ পিএম
রাফিনিয়াকে স্কালোনির ক্ষমা
ছবি : সংগৃহীত

আর্জেন্টিনাকে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন ব্রাজিলের রাফিনিয়া। ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি নিজেও গোল করার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। কিন্তু মাঠে ঘটেছে পুরোপুরো তার উল্টো। ৪-১ গোলে লিওনেল স্কালোনির শীষ্যদের কাছে বিধ্বস্ত হতে হয়েছে রাফিনিয়ার ব্রাজিলকে।

ক্লাব ফুটবলে বার্সেলোনার জার্সি গায়ে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন রাফিনিয়া তাই স্বাভাবিকভাবেই আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে ছিলেন তিনি। তবে জাতীয় দলের অবস্থা অনেকটাই দুর্বল। ফলে সুবিধা করতে পারেনি হলুদ জার্সিধারিরা।

সবশেষ ২০১২ সালের পর আজ আবারও ৪ গোল হজম করে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেল দরিভালের শীষ্যরা। এমনকি ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলের হারের পর এবারই প্রথম ৪ গোল হজম করেছে ব্রাজিল। 

দারুণ এই জয়ের পরও তেমন উল্লাস করতে দেখা যায়নি আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনিকে। ম্যাচশেষে ছিলেন অনেকবেশি শান্ত । তাকে প্রশ্ন করা হয় রাফিনিয়াকে নিয়ে। সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, তাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। 

স্কালোনির ভাষ্য, ‘এটা ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা, এই ম্যাচ নিয়ে এমন সব কথা বলার দরকার নেই। আমরা সে জন্য এভাবে খেলিনি। আমি রাফিনিয়াকে ক্ষমা করে দিয়েছি। কারণ, আমি জানি সে ইচ্ছা করে এটা বলেনি; সে তার দলের হয়ে বলেছে।’

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিদের বিপক্ষে জয় পেলে স্বাভাবিকভাবেই আনন্দটা বেড়ে যায়। দলের সবাই হয়ে পড়ে উজ্জীবিত। অনেক খেলোয়াড়ের কাছে এটি সেরা ম্যাচ হলেও স্কালোনির ক্ষেত্রে তা ব্যতিক্রম, ‘এটা দলীয় জয়। আমরা দল হিসেবে খেলেছি বলেই ব্রাজিলকে হারাতে পেরেছি। এমন খেলোয়াড়দের হারানোর এটাই উপায় দলগত খেলা। তবে বলতে পারব না, এটাই সেরা জয় কি না। দারুণ একটা ম্যাচ আমরা খেলেছি।’

এই জয়ের আগেই ২০২৬ বিশ্বকাপে নিজেদের জায়গা পাকা করে নিয়েছে আর্জেন্টিনা। কনমেবল অঞ্চল থেকে সবার আগে তারাই গিয়েছে বিশ্বকাপে। 

রাফিনিয়াকে কথা কমাতে বললেন ওতামেন্দি

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ পিএম
রাফিনিয়াকে কথা কমাতে বললেন ওতামেন্দি
ছবি : সংগৃহীত

দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের লড়াইকে কেন্দ্র করে মাঠে ও মাঠের বাইরে কথা চালাচালি হওয়াটাই স্বাভাবিক। যেমনটা ব্রাজিলের ফরোয়ার্ড রাফিনিয়া করেছিলেন। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের গুঁড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি।

কিন্তু ঘরের মাঠে ব্রাজিলকে ৪-১ ব্যধানে বিধ্বস্ত করে রাফিনিয়ার মুখ বন্ধ করে দিয়েছে আর্জেন্টাইনরা। ম্যাচশেষে তো আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার নিকোলাস ওতামেন্দি মুখ বন্ধ রাখার কথা আলাদাভাবে বলেই দিলেন রাফিনিয়াকে।

আগেরদিন আলবিসেলেস্তেদের হুমকি দেওয়া ব্রাজিলের রাফিনিয়ান আজকের ম্যাচের পুরো সময়জুড়ে কেবল শুনে গেছে দুয়োধ্বনি। 

২০২৩ সালের নভেম্বরে মারাকানা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে জাতীয় সঙ্গীতের সময় আর্জেন্টিনার সমর্থকদের ব্রাজিলের সমর্থকরা দুয়ো দিলে দু পক্ষের মধ্যে দাঙ্গা বেঁধে যায়। পরে আর্জেন্টিনার সমর্থকদের লাঠিপেটা করেন এবং সফরকারী সমর্থকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে চেয়ার ছুঁড়ে মারে। সেই ঘটনার পর আজই প্রথমবার মুখোমুখি হলো দুই দল।

ম্যাচের ৩৮ মিনিটে রাফিনিয়া তালিয়াফিকোকে ফাউল করলে। ওতামেন্দি, পারদেস, রদ্রিগো ডি পলরা রাফিনিয়ার দিকে তেড়ে যান। তখনই রাফিনিয়াকে ওতামেন্দি বলেছেন, ‘কথা কম বলো’।

রাফিনিয়ার মন্তব্য ভালোভাবে নেয়নি আর্জেন্টাইন সমর্থকেরাও। ম্যাচ শেষে টিওয়াইসি স্পোর্টস রাফিনিয়ার মন্তব্য নিয়ে অনেকের সঙ্গে কথা বলেছেন। আর্জেন্টাইন সমর্থকেরা রাফিনিয়াকে নিম্নমানের ভীত ফুটবলার বলেছেন। পুরো ম্যাচেও আর্জেন্টাইন সমর্থকদের কাছ থেকে দুয়োধ্বনি শুনেছেন এই ব্রাজিলিয়ান।