ঢাকা ৪ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

হামজা হয়ে ওঠার গল্প

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০১ পিএম
আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০৪ পিএম
হামজা হয়ে ওঠার গল্প
ছবি: মামুন হোসেন

হামজা চৌধুরী আগেও বাংলাদেশে এসেছেন। তবে আগে এসেছিলেন নীরবে, একজন সাধারণ যুবক হিসেবে। এবার তিনি এসেছেন মহা ধুমধামে, তারকাখ্যাতি নিয়ে। তাকে বরণ করে নিতে সেকি তোড়জোড়! ঢাকঢোল বাজিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে তাকে স্বাগত জানানো হয় বাংলার জমিনে।

ইংল্যান্ডের লেস্টার সিটির এই তারকা ফুটবলার এবার পৈতৃক ভিটায় এসেছেন ২০১৩ সালের পর।

হামজা চৌধুরী এখনো জাতীয় দলের হয়ে খেলেননি। কিন্তু না খেলার আগেই তাকে নিয়ে যে রকম মাতামাতি আর হইচই হচ্ছে অতীতে আর কোনো ফুটবলারকে নিয়ে এ রকমটি হয়েছে কি না সন্দেহ। এর কারণ আর কিছুই নয়, একে তো বাংলাদেশের ফুটবলের ক্রমাবনতি, সেখানে ইংলিশ লিগে খেলা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হামজা চৌধুরীর বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খেলা যেন আঁধার ঘরে পূর্ণিমার চাঁদ। তাই তো তাকে বরণ করে নিতে এত সাজসাজ রব। উৎসবের আমেজ। ঢাকা থেকে বাফুফের কার্যনির্বাহী পরিষদের প্রতিনিধিদল সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়ে হাজির ফুলের তোড়া নিয়ে। শুধু কী তাই! ঢাকার প্রায় সব টিভি চ্যানেলের প্রতিনিধিরাও সেখানে গিয়ে উপস্থিত। সিলেট থেকে তারা সরাসরি সম্প্রচার করছেন। আবার আরেক প্রতিনিধিদল হামজার গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জের বাহুবলের স্নানঘাট গ্রামে গিয়ে হাজির। আর সাধারণ ক্রীড়ামোদীরা তো হামজাকে নিয়ে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট অবতরণের অনেক আগে থেকেই বিমানবন্দরে গিয়ে হাজির। সেখানে তারা হামজা-হামজা জয়ধ্বনি করেছেন। এভাবেই এখন বাংলাদেশ হামজাজ্বরে আক্রান্ত।

ইংল্যান্ডে বেড়ে ওঠা হামজা চৌধুরী স্নানঘাটের কাঁচা রাস্তা, পরিচিত মাঠ, আর শৈশবের স্মৃতিজড়ানো মাটিতে পা রাখতেই যেন পুরো গ্রাম তাকে বরণ করে নেয় রাজকীয় উপায়ে। ছোট-বড়, বৃদ্ধ-যুবক সবাই হামজাকে একনজর দেখতে ভিড় জমান। গ্রামের মানুষের উচ্ছ্বাস, বাঁশি-ঢোলের শব্দ আর ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হামজা যেন ফিরে পেলেন তার শিকড়ের টান।

ইংল্যান্ডে জন্ম এবং বেড়ে ওঠা হলেও হৃদয়ে বাংলাদেশকে ধারণ করেন হামজা। ছোটবেলা থেকেই দেশের মাটি, খেলার মাঠ ও সংস্কৃতির প্রতি তার ছিল গভীর টান। তাই তো তিনি এখন লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়ানোর অপেক্ষায়। ২৫ মার্চ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে অবসান হবে তার সেই চাওয়ার।

 হামজার জন্ম ১৯৯৭ সালের ১ অক্টোবর লেস্টারশায়ারের লফবোরোতে। ৭ বছর বয়সে তিনি লেস্টার সিটি একাডেমিতে অনুশীলন শুরু করেন। ফুটবলের প্রতি তার প্রতিভার বিকাশ সেই বয়সেই দেখা যায়। হামজা চৌধুরীর বাড়িতে ছোটবেলা থেকে নিয়মিত আসতেন দুলা মিয়া। তিনি বলেন, ‘হামজার বয়স ছিল তখন ৫ বছর, আর আমার ১৬-১৭। কিন্তু তখনই আমাদের চেয়ে তার কিকে গতি অনেক বেশি ছিল। আমরা তার ফুটবল খেলার স্টাইল দেখে আফসোস করতাম। তার কিকে প্রচণ্ড শব্দ হতো এবং টিনের বেড়ায় পড়লে চ্যাপ্টা হয়ে যেত।’ 

লেস্টার সিটির একাডেমিতে তালিম নিয়ে বেড়ে উঠতে থাকেন হামজা। ২০১৬ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি এক মাসের চুক্তিতে ঋণে তিনি লিগ ওয়ানে বার্টন আলবিয়নের হয়ে খেলেন। সে দিনই তার অভিষেক হয় পিরেলি স্টেডিয়ামে। ওয়ালসলের বিপক্ষে ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। তিনি নেমেছিলেন বদলি হিসেবে ম্যাচের ৭৭ মিনিটে। প্রিমিয়ার লিগেও তার অভিষেক হয় বদলি হিসেবে ২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর টটেনহ্যাম হটস্পায়ারের বিপক্ষে। কোচের ক্লোদি জ্যাক পুয়েলের তালিম নিয়ে খেলতে নেমে ম্যাচে হামজার দল জয়ী হয়েছিল ২-১ গোলে। প্রিমিয়ার লিগে ম্যাচের শুরু থেকে তিনি খেলেন পরের বছর। বার্নালির বিপক্ষে ১৪ এপ্রিল সেই ম্যাচ তার দল হেরেছিল ২-১ ব্যবধানে। ২০২০ সালে এই ক্লাবের হয়ে তিনি চার বছরের চুক্তি করেন। 

৫ ফুট ১০ ইঞ্চি উচ্চতার হামজা লেস্টার সিটির যুব দলে খেলেন ২০১৫ সাল পর্যন্ত। প্রতিভার জানান দিয়ে তিনি ইংল্যান্ড জাতীয় যুব (অনূর্ধ্ব-২১) দলে সুযোগ করে নেন ২০১৮ সালে। চীনের বিপক্ষে তার অভিষেক হয় বদলি হিসেবে। ইংল্যান্ড জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে। ২০১৯ সালে উয়েফা অনূর্ধ্ব-২৩ চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি ইংল্যান্ড দলে জায়গা করে নেন। কিন্তু এই আসরে তার যাত্রা বেশি দূর হয়নি। ফ্রান্সের বিপক্ষে ম্যাচে একটি বিপজ্জনক ফাউলের কারণে তাকে লাল কার্ড পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল। এ বছরই তিনি জানিয়েছিলেন ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে খেলতে চান। কিন্তু সেটি ছিল তার জন্য অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জ। ক্রমেই সেই আশা ফিকে হয়ে আসতে থাকে। এরই মাঝে তার পিতা দেওয়ান মুর্শেদ চৌধুরী তাকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে খেলার জন্য অনুপ্রাণিত করতে থাকেন। সময়ের পরিক্রমায় হামজাও ধীরে ধীরে নিজের মনস্থির করে নেন লাল-সবুজের জার্সি পরে খেলার। তারপর ফিফার দীর্ঘ নিয়ম-কানুন মেনে অবশেষে তিনি বাংলাদেশের হয়ে খেলার অপেক্ষায়। 

হামজার বেড়ে ওঠা নিয়ে তার পিতা দেওয়ান মুর্শেদ চৌধুরী বলেন, ‘হামজার জন্ম ও বেড়ে ওঠা লন্ডনে। তবে ছোটবেলা থেকে আমি তাকে দেশে নিয়ে আসতাম। সে এখানে এসে গ্রামের সাধারণ শিশু-কিশোদের সঙ্গে খেলাধুলা করত। এখন পর্যন্ত তাকে আমি ৮-১০ বার দেশে নিয়ে আসছি। তখন সে দীর্ঘদিন গ্রামে থেকেছে। গ্রামের পরিবেশে থাকতে সে খুব পছন্দ করত। হামজা ছোট থেকেই বেশ মেধাবী। আমরা তাকে ছোটবেলা থেকেই ইসলামী শিক্ষা ও নৈতিকতাসহ গড়ে তুলেছি। সে লন্ডনের একটি স্থানীয় মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছে। নিয়মিত নামাজ-রোজা পালন করে সে।’

হামজা চৌধুরীর চাচা দেওয়ান গোলাম মাসুদ বলেন, ‘পরিবার তাকে দেশ সম্পর্কে অনেক বেশি ধারণা দিয়েছে। যে কারণে ছোটবেলা থেকেই সে বাংলাদেশি যুবকদের মতো জীবনযাপন করত, পোশাক পরত। গ্রামে এলে এখানকার ছেলেদের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে মিলেমিশে ঘোরাফিরা, খেলাধুলা করত। যে কারণে এত বছর পর দেশে ফিরেই সে প্রথমে গ্রামে আসছে।’ তিনি বলেন, ‘দেশীয় মাছ, মাংস এবং শাকসবজি খেতে পছন্দ করে। যে কারণে সে দেশে এলে বাড়িতে এসব খাবার রান্না হতো।’

হামজা চৌধুরীর বাড়িতে ছোটবেলা থেকে নিয়মিত আসতেন দুলা মিয়া। তিনি বলেন, ‘আমি তার সঙ্গে খুব দুষ্টুমি করতাম। ছোটবেলাতেই তার মাথায় ঝাঁকড়া চুল ছিল। চুলে ধরে ওপরে তুলে ফেলতাম। তখন সে চেয়ে থাকত, আর হাসত। শেষে আমরা একসঙ্গে বাড়ির পুকুরে গোসল করতাম। আমাদের সঙ্গে হামজা এমনভাবে চলত, মনেই হতো না লন্ডনে সে বসবাস করে।’

হামজার ফুফাতো ভাই রাসেল চৌধুরী বলেন, ‘হামজা ছোটবেলা বাড়িতে এলে আমাদের বাসায় বেড়াতে আসত। আমি তাকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে হবিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছি। ছোটবেলায় সে বেশ শান্ত ছিল। তবে দৌড়ে প্রচণ্ড গতি ছিল। তখনই আমাদের মনে হতো সে বড় হলে ভালো ফুটবল খেলতে পারবে।’

ইংল্যান্ডের ফুটবল তারকা হামজা চৌধুরী, যিনি লেস্টার সিটির জার্সি গায়ে বিশ্বমঞ্চে আলো ছড়িয়েছেন। দীর্ঘ এক দশক পর ফিরলেন নিজের পৈতৃক ভিটায়। তবে এবার আর সেই সাধারণ গ্রাম্য যুবক নন, এলেন এক নতুন পরিচয়ে- সাফল্যের শীর্ষে থাকা একজন কিংবদন্তি ফুটবলার হিসেবে।

বাংলাদেশের বোর্ডে ২২৭

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০২ পিএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০২:১৪ পিএম
বাংলাদেশের বোর্ডে ২২৭
ছবি : ফাইল

নারী বিশ্বকাপ বাছাইয়ে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৭ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) লাহোর সিটি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন গ্রাউন্ডে টস জিতে আগে ব্যাটিং করে শারমিন আক্তারের সর্বোচ্চ ৬৭ ও ফারজানা হক পিংকির ৪২ রানের সুবাদে এই সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশের মেয়েরা।

১৬ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙে সোবহানা মোস্তারি ৬ রান করে আউট হলে। সেখান থেকে ১১৮ রানের জুটি গড়েন ফারজানা হক ও শারমিন আক্তার। যা কিনা যেকোনো উইকেটে উইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি।

এক বলের ব্যবধানে অবশ্য দুজনই আউট হলে ১৩৫ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ নারী দল। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি মাত্র ৫ রান করে দলীয় ১৪২ রানে ধরেন সাজঘরের পথ।

১৩৪ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানোর পর পর ৪৯ রানের মধ্যে আরও ৭ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রানে ৮ উইকেটের দলের পরিণত হয় নিগাররা। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের নায়ক রিতু মনি এই ম্যাচে করেন ১৫ রান।

নাহিদা ও রাবেয়ার ব্যাট থেকে আসে ২৫ ও ২৩ রান। ১১ ব্যাটারের মধ্যে পাঁচজন কেবল ছুঁতে পেরেছেন দুই অঙ্কের ঘরের রান। বাকি ৬ ব্যাটার আউট হয়েছেন এক অঙ্কের ঘরেই। এরমধ্যে একজন মেরেছেন ডাক। 

অতিরিক্ত রানের সংখ্যা ২৪ না হলে ২০০ পার হতেই থেমে যেতো বাংলাদেশের ইনিংস। অলআউট না হলেও ৫০ ওভার ব্যাটিং করে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৭ রান করে বাংলাদেশের মেয়েরা। ২৫০ এর বেশি দলীয় সংগ্রহ দাঁড় করানো সম্ভাবনা জাগিয়েও মাঝে ধস নামায় তা আর সম্ভব হয়নি।

আলিয়া অ্যালিন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন উইন্ডিজের হয়ে। জোড়া উইকেট শিকার করেন অ্যাফি ফ্লেচার ও হ্যালেই ম্যাথিউস। ১ উইকেট শিকার করেন কিনেল্লে হেনরি।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালে কে কার মুখোমুখি?

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩০ পিএম
সেমিফাইনালে কে কার মুখোমুখি?
ছবি : সংগৃহীত

নতুন সংস্করণে হওয়া উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ প্রায় শেষদিকে। টিকে আছে এখন মাত্র সেমিফাইনালের ৪ দল। কোয়ার্টার ফাইনালের দুই লেগ শেষে সেমিতে জায়গা করে নিয়েছে বার্সেলোনা, পিএসজি, আর্সেনাল ও ইন্টার মিলান। 

গতকাল রাতে রিয়াল মাদ্রিদের মাঠে দ্বিতীয় জয় পেয়ে ১৬ বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে আর্সেনাল। প্রথম লেগে ৩-০ ব্যবধানে জেতার পর দ্বিতীয় লেগে এসে জয়টা ২-১ ব্যবধানে। দুই লেগ মিলিয়ে তাদের জয় ৫-১ ব্যবধানে।

আর্সেনাল প্রতিপক্ষ হিসেবে পেতে যাচ্ছে পিএসজিকে। যারা কিনা অ্যাস্টন ভিলাকে হারিয়ে জায়গা নিশ্চিত করেছে সেমিফাইনালে। এই দুই দলের প্রথম লেগ অনুষ্ঠিত হবে ৩০ এপ্রিল রাত ১টায়, আর্সেনালের এমিরেটস স্টেডিয়ামে। ফিরতি লেগে ৮ মে একই পিএসজির ঘরের মাঠ পার্ক দে প্রিন্সে।

অন্যদিকে ৬ বছর পর সেমিফাইনালে উঠেছে বার্সেলোনা। কোয়ার্টারে তারা হারিয়েছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে। গতরাতে শেষ চার নিশ্চিত করা ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলান খেলবে বার্সার বিপক্ষে সেমিতে।

দুই লেগের সেমির প্রথম ম্যাচটি হবে ১ মে রাত ১টায়, বার্সার ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে। ফিরতি লেগে ৭ মে একই সময়ে সান সিরোতে লড়বে এই দুই ক্লাব। 

সব উত্তেজনার শেষ হবে ১ জুন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এবারের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে জার্মানির বায়ার্ন মিউনিখের ঘরের মাঠ আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায়।

ফের চোটে পড়ে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়লেন নেইমার

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২২ পিএম
ফের চোটে পড়ে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়লেন নেইমার
ছবি : সংগৃহীত

চোট নেইমারের নিত্যসঙ্গী। এই কথাটি সম্ভবত নেইমার নিজেও মানেন। ক্যারিয়ারের একের পর এক চোটে পড়ে নিজের ক্যারিয়ারের সোনালি সময় একটা বড় অংশ পার করে দিয়েছেন মাঠের বাইরে।

কিছুদিন আগেই চোটের কারণে সৌদি ক্লাব আল হিলাল ছেড়ে দিয়েছেন সমঝোতায়। সৌদি থেকে ফিরে গেছেন নিজের শৈশবের ক্লাব সান্তোসে। সেখানে গিয়েও আবদ্ধ হলেন চোটের গেড়াকলে।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) আতলেতিকো মিনেইরোর বিপক্ষে সান্তোসের ম্যাচে খেলার মাত্র ৩০ মিনিটের মাথায় তিনি চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন। ধারণা করা হচ্ছে, এবার তার হ্যামস্ট্রিংয়ে সমস্যা হয়েছে।

মাঠ ছাড়ার আগে ব্রাজিলের এই তারকা আবেগ ধরে রাখতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্ট্রেচারে করে তাকে মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। নেইমার যখন মাঠ ছাড়েন তখন সান্তোস ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল। ৩৪ মিনিটে তাকে বদলি করা হয়।

গেল মার্চে ব্রাজিলের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচে এবং সান্তোসের হয়ে পাউলিস্তা সেমিফাইনালে করিন্থিয়ানসের বিপক্ষে খেলা হয়নি নেইমারের। বাঁ ঊরুতে চোটের কারণে সেবার মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি। সেই চোট কাটিয়ে ফেরার ৩০ মিনিটের মধ্যেই আবারও পড়লেন চোটে।

ক্যারিয়ারের বিভিন্ন সময় চোটের কারণে লম্বা সময় ভুগেছিলেন নেইমার। পিএসজি ছেড়ে ২০২৩ সালের আগস্টে যোগ দেন সৌদি ক্লাব আল হিলালে। সে বছরের  অক্টোবরেই এসিএল আর মেনিসকাস ছিঁড়ে গিয়েছিল তার। এরপর একবছর মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি।

মাঠে ফিরলেও হিলালের সঙ্গে তার যাত্রা ছিল সবমিলিয়ে মাত্র ৭ ম্যাচের। এরপর সমঝোতায় আল হিলাল ক্লাবের সঙ্গে চুক্তির অবসান ঘটান নেইমার। কিন্তু সান্তোসে যোগ দেওয়ার পরও চোট যেন পিছুই ছাড়ছে না তার।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ড্রয়ের হতাশায় বিদায় বায়ার্নের, সেমিতে ইন্টার

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪২ এএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৪২ এএম
ড্রয়ের হতাশায় বিদায় বায়ার্নের, সেমিতে ইন্টার
ছবি : সংগৃহীত

কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে কেউই হারেনি। ম্যাচ ড্র হয়েছে ২-২ ব্যবধানে। কিন্তু দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের টিকিট কেটেছে ইন্টার মিলান। 

প্রথম লেগের ফলাফলেই সেমিফাইনালে ওঠা হলো না বায়ার্ন মিউনিখের। আর তাতেই সেমিফাইনালে পা রেখেছে ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলান।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাতে মিলানের সান সিরোতে কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের শুরুর ৪৫ মিনিটে অবশ্য দুই দলের কেউই পায়নি কোনো গোলের দেখা। 

জয়ের বিকল্প না থাকা বায়ার্ন দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এগিয়ে যায় ম্যাচে। ৫২ মিনিটে হ্যারি কেইনের গোলে ম্যাচে এগিয়ে নেন মিউনিখকে। এই গোলে দুই লেগে সমতা আনে জার্মান ক্লাবটি।

তবে মাত্র ৬ মিনিটের মাথায় ম্যাচের ৫৮ মিনিটে লাউতারো মার্তিনেজ গোল করলে আবারও দুই লেগ মিলিয়ে এগিয়ে যায় ইন্টার মিলান। ইন্টারের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা পাঁচ ম্যাচে গোলের কীর্তি গড়লেন মার্তিনেজ।

বায়ার্নের সাবেক ডিফেন্ডার বেঞ্জামিন পাভার মিনিট তিনেক পর আরেকবার এগিয়ে নেন ইন্টার মিলানকে। ৬১ মিনিটের এই গোল হতাশ করে দেয় বায়ার্নকে।

তবে ৭৬তম মিনিটে আবারও উত্তেজনা ফিরে আসে ম্যাচে। কর্নারে হেডে ম্যাচে ২-২ সমতা টানেন এরিক ডায়ার। বায়ার্ন তখন এক গোলের ঘাটতিতে ছিল। একটি গোল পেতে তারা একের পর এক আক্রমণ চালায়। শেষ দিকে তো খেলা হয় ইন্টারের অর্ধেই। কিন্তু কিছুতেই কাজ হয়নি। ২-২ ড্র নিয়েই হতাশায় পুড়তে হয় বায়ার্নকে।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বার্নাব্যু বাধা টপকে ১৬ বছর পর সেমিফাইনালে আর্সেনাল

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৫৮ এএম
বার্নাব্যু বাধা টপকে ১৬ বছর পর সেমিফাইনালে আর্সেনাল
ছবি : সংগৃহীত

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ৯০ মিনিট অনেকবড় সময়। যেকোনো কিছু ঘটে যেতে পারে এই দেড় ঘণ্টায়। বিশেষ করে রিয়াল মাদ্রিদ তাদের ঘরের মাঠে পিছিয়ে পড়েও ফিরে আসার গল্প বারবার লিখতে অভ্যস্ত এই মাঠেই। গতকাল রাতেও তেমন কিছুরই আশা করেছিল সমর্থকরা। কিন্তু এবার আর সেটি হয়নি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে আর্সেনালের কাছে ২-১ ব্যবধানে হেরে দুই লেগে মিলিয়ে ৫-১ ব্যবধানে হেরে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে স্বাগতিকদের।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ২-১ গোলে আর্সেনালের কাছে পরাজিত হয়ে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে রিয়াল মাদ্রিদের। আগের লেগে আর্সেনালের ঘরের মাঠে ৩-০ ব্যবধানে হারায় দুই লেগ মিলিয়ে ব্যবধান দাঁড়ায় ৫-১।

এই জয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে পা রেখেছে গানার্সরা। যেখানে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে প্যারিস সেন্ট-জার্মেই।

বার্নাব্যুতে শুরু থেকেই অবশ্য আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে লস ব্লাঙ্কোসরা। একটি গোলও তারা পেয়ে গিয়েছিল কিলিয়ান এমবাপ্পে ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের দুর্দান্ত কম্বিনেশন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটি বাতিল হয়ে যায় অফসাইডে। 

মিনিট দশেক পর মিকেল মেরিনোকে কর্নারকে ফাউল করেন রিয়ালের ডিফেন্ডার রাউল আসেনসিও। পেনাল্টি পেয়ে যায় আর্সেনাল। কিন্তু বুকায়ো সাকার শট ঠেকিয়ে দিয়ে বার্নাব্যুতে নিজেদের শক্তিমত্তা জানান দেন থিবো কোর্তোয়া। উজ্জীবিত করে দেন সতীর্থ ও গ্যালারির সমর্থকদের। 

তবে গোলের সহজ সুযোগ মিস হওয়ার পরও হতাশ হয়নি গানার্সরা। এরপর ২৭ মিনিটে রিয়াল একবার পেনাল্টি পেলেও সেটি বাতিল হয় ভিএআর দেখার পর। প্রথমার্ধ শেষে গোলশূন্য সমতায় থেকেই বিরতিতে যায় দুই দল।

বিরতির পর দাপটের সঙ্গে মাঠে ফিরে অতিথিরা। ৫০ মিনিটে পেয়ে যায় গোলও। ডেক্লান রাইস, মার্টিন ওডেগার্ড এবং মিকেল মেরিনোর চমৎকার সমন্বয়ে বল পেয়ে যান বুকায়ো সাকা। দারুণ ড্রিবলের পর একা দাঁড়িয়ে থাকা কোর্তোয়ার মাথার ওপর দিয়ে চিপ করে অসাধারণ এক গোল করেন তিনি। 

অবশ্য গোল হজমের পরের মুহূর্তেই প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার উইলিয়াম সালিবার ভুল পাস কেড়ে নিয়ে গোল করেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। এতে করে ম্যাচে ফেরে সমতা।

এই গোলে কেবল ম্যাচে সমতা এনেছে। এরচেয়ে বড় কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি ম্যাচে। উল্টো ৯০ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে দৌড়ে গিয়ে গোল করেন গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি। আর তাতেই দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে গানার্সরা।

দুই দশকেরও বেশি সময় পর চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে পা রাখলো আর্সেনাল।