
স্কুল ক্রিকেটে রীতিমতো অবিশ্বাস্যই এক ইনিংস খেলেছেন মুস্তাকিম হাওলাদার। ১০০ বা ২০০ নয় তিনি করেছেন ৪০৪ রান। তাও অপরাজিত। ১৭০ বলের ইনিংসে তিনি হাঁকিয়েছেন ৫০টি চার ও ২২টি ছক্কা। সঙ্গে ছিলেন সতীর্থ সোয়াদ পারভেজ। যিনি হাঁকিয়েছেন ডাবল সেঞ্চুরি। ১২৪ বলে তিনি অপরাজিত ২৫৬ রানে। ৩২টি চারের বিপরীতে ১৩টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আসে ৬৯৯ রান। তাতেই ইতিহাস গড়েছে ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের বিপক্ষে ক্যামব্রিয়ান স্কুল ৫০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে তোলে ৭৭০ রান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে গতকাল প্রাইম ব্যাংক স্কুল ক্রিকেট টুর্নামেন্টের বিভাগীয় পর্যায়ের খেলায় দেখা মেলে এমন অবিশ্বাস্য কীর্তি। স্বীকৃত ক্রিকেটে এমন কিছুর নজির নেই তো বটেই, দেশের যেকোনো পর্যায়ের ক্রিকেটেই ব্যক্তিগত ৪০০ বা দলীয় ৭০০ রান বিরল।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৫ ওভারের মধ্যে দুই উইকেট হারায় ক্যামব্রিয়ান। এরপর জুটি বাঁধেন মুস্তাকিম ও সোয়াদ। শেষ পর্যন্ত খেলে দলকে ৭৭০ রানে নিয়ে যান দুই ব্যাটসম্যান। ১৭০ বলের ইনিংসে মুস্তাকিমের স্ট্রাইক রেট ছিল ২৩৭.৬৪। অন্যদিকে আড়াই শ রানের ইনিংস খেলার পর বল হাতেও ৪ উইকেট নেন সোয়াদ। তার দলের হাসান হৃদয় পান ১১ রানে ৬ উইকেট। পাহাড়সম লক্ষ্যে মাত্র ১১.৪ ওভারে ৩২ রানে গুটিয়ে যায় সেন্ট গ্রেগরি। ৭৩৮ রানের জয় পায় ক্যামব্রিয়ান।
ম্যাচ শেষে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উপস্থিত হন মুস্তাকিম ও পারভেজ। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন মুস্তাকিম। তিনি বলেন, ‘দুজনেরই আজকে ভালো ব্যাটে লাগছিল বল। তাই দুজন মিলেই শেষ করার পরিকল্পনা ছিল। পঞ্চাশ রানে (আসলে ৭১) ২ উইকেট পড়ার পর একটু ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিলাম। তখন একদিকে আমি মেরে খেলছিলাম। আর ওকে বলেছিলাম ধরে খেলতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ও (সাদ পারভেজ) আর আমি অনেক ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে খেলছি। ও আমাকে অনেক সহায়তা করেছে। শেষ দিকে তো ওভার কম ছিল। ও আমাকে স্ট্রাইক দিয়ে দিয়ে রানটা বেশি করাতে সাহায্য করেছিল। তাই ওকে ধন্যবাদ।’
চলতি তৃতীয় বিভাগ বাছাই লিগে তেজকুনিপাড়া ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলছেন মুস্তাকিম। খেলেছে অনূর্ধ্ব-১৮ বিভাগীয় পর্যায়েও। এবার স্কুল ক্রিকেটে অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলার পর মুস্তাকিম বললেন, বড় কিছু করার বিশ্বাস ছিল তার। তিনি বলেন, ‘নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস ছিল আজকে কিছু একটা করার। ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক সংযোগ করার চেষ্টা করছিলাম। পরে দেখলাম যে ভালো লাগছে, তখন মনে হচ্ছিল পারব। আগে অনেক জায়গায়, অনেক টুর্নামেন্টে এমন বড় বড় ইনিংস খেলেছি। তাই বিশ্বাস ছিল যে পারব।’