ছবি : সংগৃহীত
২০১৮ সালের স্মৃতি ফিরিয়ে আনলো জিম্বাবুয়ে। এই সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামেই বাংলাদেশকে ১৫১ রানে হারিয়েছিল সেবার হ্যামিল্টন মাসাকাদজার নেতৃত্বাধীন জিম্বাবুয়ে। এবার হারাল ক্রেইগ আরভিনের নেতৃত্বে ৩ উইকেটের ব্যবধানে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টের চতুর্থ দিনের বাংলাদেশের দেওয়া ১৭৪ রানের লক্ষ্য ৩ উইকেট হাতে রেখে জিতে নিয়েছে জিম্বাবুয়ে।
মেহেদী হাসান মিরাজের বলে মাধেভেরে রিভার্স সুইপে চার মেরে জয় নিশ্চিত করেছেন। তার রিভার্স সুইপে বিফলে মিরাজের দ্বিতীয় ইনিংসেও ৫ এবং দুই ইনিংস মিলিয়ে পাওয়া ১০ উইকেট।
ব্যটাররা দুই ইনিংসেই ব্যর্থ হলেও লড়াই চালিয়েছেন বল হাতে বোলাররা। বিশেষ করে দুই ইনিংসেই মিরাজের অসাধারণ বোলিংটাই বাংলাদেশের একমাত্র প্রাপ্তি। তবুও দিনশেষে মিরাজ কিংবা বাংলাদেশের কপালে জুটেছে একরাশ হতাশা।
বাংলাদেশ ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ব্রায়ান বেনেট ও বেন কারানের ৯৫ রানের উদ্বোধনী জুটিতেই। মাত্র ১৭৪ রানের লক্ষ্য মাথায় রেখে এই জুটি সারিয়ে দিয়েছে জিম্বাবুয়ের অর্ধেকের বেশি কাজ। বেন কারানকে (৪৪) মিরাজই ফিরিয়েছেন খালেদ আহমেদের ক্যাচ বানিয়ে।
তিনে নামা নিক ওয়েলচকে ফেরান তাইজুল ইসলাম লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে দলীয় ১১২ রানে। তিনি করেন মাত্র ১০ রান।
পরের দুই উইকেট আবার মিরাজের দখলে। জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক শন উইলিয়ামস (৯) মিরাজের লাফিয়ে ওঠা বলের উত্তর খুঁজে না পেয়ে ক্যাচ দিয়ে দেন নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে। একপ্রান্ত আগলে রাখা ওপেনার ব্রায়ান বেনেট তুলে নেন অর্ধশতক। ৫৪ রানে থাকার সময় মিরাজকে উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে ছয় হাঁকানোর প্রচেষ্টায় লং অনে মুশফিকুর রহিমের হাতে আটকা পড়েন। উইকেটে থিতু হওয়া এই ব্যাটারের বিদায়ে ১২৮ রানে ৪ উইকেট হারায় সফরকারীরা।
তাইজুল আরও একটি উইকেট শিকার করেন জিম্বাবুয়ের স্কোরবোর্ডে যখন রান ১৪৪। তার অফস্টাম্পে পিচ করা বল টার্ন করে চলে যায় লেগ স্টাম্পের বাইরে। ফ্লিক করার প্রচেষ্টায় ব্যাট আগালেও সফল হননি জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সফল হননি। বল চলে যায় উইকেটকিপার জাকের আলি অনিকের হাতে। তিনিসহ বাকি ফিল্ডাররা আগ্রহী হলে রিভিউ নেন শান্ত। সেই রিভিউ সফল হয়ে ১৪৪ রানে পঞ্চম উইকেটের পতন হলে উল্লাস দেখা যায় বাংলাদেশ অধিনায়কের মাঝে।
সেই উল্লাস আরেকটু বৃদ্ধি পায় ১৪৫ রানে নিয়াশা মায়াভোকে মিরাজ বোল্ড করলে। খুব কাছে এসেও ষষ্ঠ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ে কিছুটা শঙ্কায় পড়ে যায় আর জয়ের কিছুটা আশা দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। জয় থেকে জিম্বাবুয়ে যখন ১৩ রান দূরে তখন ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে বোল্ড করে দ্বিতীয় ইনিংসেও নিজের ফাইফার এবং চলমান টেস্টে ১০ উইকেট শিকার করেন। এটি তার টেস্ট ক্যারিয়ারের উইকেটটি ছিল আবার মিরাজের ২০০তম টেস্ট উইকেট এবং মিরপুরের বাইরে প্রথম ১০ উইকেট।
এত কম লক্ষ্য নিয়ে যে আশা করাটা কঠিন, সেটি প্রমাণ হয়ে যায় ১০ বলের মধ্যেই। সেই ওভারের শেষ বলে রিচার্ড এনগারাবা মিরাজকে চার হাঁকান। এরপর তাইজুলের ওভারে চার মারেন মাধেভেরে। আর ৫০তম ওভারের শেষ বলে ১০ উইকেট পাওয়া মিরাজকেই রিভার্স সুইপ করে জয় নিশ্চিত করেন মাধেভেরে।