
ব্রাজিলের তারকা রাফিনিয়া ম্যাচের আগে আর্জেন্টিনাকে হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন। নিজে গোল করার পাশাপাশি ব্রাজিলের জয় নিয়ে শতভাগ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তিনি। কিন্তু তার এমন হুমকির কোনো বাস্তব দৃশ্য ফুটে ওঠেনি।
আর্জেন্টিনার জালে ব্রাজিল একটি গোল দিয়েছে ঠিকই। তবে এর বিপরীতে হজম করেছে আরও চার গোল। ম্যাচটাও শেষ হয়েছে আর্জেন্টিনা ৪ ও ব্রাজিল ১ ব্যবধানে।
বুধবার (২৬ মার্চ) ভোরে এস্তাদিও মনুমেন্টালে কেবল রাফিনিয়া নয়, আলবিসেলেস্তেদের দাপুটে ফুটবলের সামনে দাঁড়াতে পারেনি ব্রাজিলের কোনো ফুটবলারই।
ম্যাচের শুরুর ১২ মিনিটেই লিওনেল স্কালোনির শীষ্যরা দুই গোল হজম করায় ব্রাজিলকে। যার সূচনা করেন হুলিয়ান আলভারেজ। তার পা থেকে প্রথম গোলটি আসে ম্যাচের মাত্র ৪ মিনিটে। গোলটিতে সহায়তা করেন ছন্দে থাকা তরুণ মিডফিল্ডার থিয়েগো আলমাদা।
১২তম মিনিটে আবারও ব্রাজিলের জালে গোল। এবারের গোলটি আসে এনজো ফার্নাদেজের পা থেকে। আলভারেজের কাছ থেকে নাহুলে মলিনা বল পেয়ে যান। তার ক্রসকে কাজে লাগিয়ে ব্রাজিলের জাল কাঁপান এনজো ফার্নান্দেজ।
আর্জেন্টিনা মাঠে নেমেছিল ২০২৬ বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করে ফেলার খবর নিশ্চিত হওয়ার মাধ্যমে। সুখবরের প্রভাব ছিল মাঠের ফুটবলেও। যা তাদের করেছে আরোবেশি উজ্জীবিত চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিদের বিপক্ষে লড়াইয়ে।
দুই গোল হজম করা ব্রাজিলের ব্যবধান কমান ম্যাথিয়াস কুনহা। ২৬ মিনিটে তার গোলে ম্যাচে ফেরার স্বপ্ন দেখতে থাকে দরিভালের শীষ্যরা। ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো বল পায়ে পজিশন হারান কুনহার প্রেসিংয়ের কাছে। সেখান থেকে ঠান্ডা মাথায় ফিনিশিং।
তবে ৩৭ মিনিটে আবারও ব্রাজিলকে হতাশ করে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। প্রতিপক্ষের রক্ষণে ফাটল ধরিয়ে আরও একটি গোল করে ব্যবধান গড়ে তোলে ৩-১। এবার এনজোর চিপ থেকে গোল করেন আর্জেন্টাইন অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার।
প্রথমার্ধের খেলা ৩-১ ব্যবধানে শেষ হলেও খেলার ধরনে আর্জেন্টিনার জয়ের বার্তাটা পরিষ্কার ছিল। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ম্যাচের ৪৯ মিনিটে আরও একটি সুযোগ পেলেও সেটি হাতছাড়া হয়। ডি পলের চিপ ফিরিয়ে দেন ব্রাজিল গোলকিপার।
ব্রাজিলের ক্ষতটা আরেকটু বাড়িয়ে দেন বদলি নামা গুইলিয়ানো সিমিওনে। তিনি আলমাদার পরিবর্তে মাঠে নামেন ৬৮ মিনিটে। মাঠে নেমে মাত্র ৩ মিনিটেই করেন গোল।
ম্যাচের ৭১ মিনিটে নিজেদের অর্ধ থেকে এনজো ফার্নান্দেজের তড়িৎগতির ফ্রি-কিক খুঁজে নেয় টালিয়াফিকোকে। সেখান থেকে বক্সে পাস ছিল ম্যাক অ্যালিস্টারের দিকে। আর্জেন্টাইন এই মিডফিল্ডার মিস করলেও বল যায় সিমিওনের দিকে। দূরহ কোণ থেকে তার নেয়া শট ঠেকাবার কোনো উপায় ছিল না বেন্তোর সামনে।
ম্যাচের স্কোর তখন ৪-১। ২০১২ সালে লিওনেল মেসির হ্যাটট্রিকে আর্জেন্টিনার জয়ের ম্যাচের পর আজ আবারও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিদের কাছে একহালি গোল হজম করল ব্রাজিল।
৭৭ মিনিটে গোলের কাছাকাছি গিয়েছিলেন রাফিনিয়া। তার ফ্রিকিক গোলবার স্পর্শ করে বেরিয়ে যায়। খানিক পরেই পারেদেসের দূরপাল্লার শট দক্ষতার সাথে ফিরিয়ে দেন বেন্তো। শেষ পর্যন্ত আর কোনো দলই বল জালে না জড়ালে ৪-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা।