২০২৪-২৫ মৌসুমে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগ সমাপ্ত। উত্থান-পতন, রেকর্ড ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়ে জমজমাট লড়াই হয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, লা লিগা, সিরি’আ, বুন্দেসলিগা এবং ফরাসি লিগ ওয়ানে। লিগ ওয়ানে দুর্ভাগ্যের অপর নাম ম্যাসন গ্রিনউড। টপ স্কোরার হয়েও ট্রফিলেস তিনি। তার সমান গোল করে উসমানে দেম্বেলে ক্যারিয়ার সেরা সাফল্য পেয়েছেন। ধারাবাহিক পাঁচ পর্বের শেষ পর্বে আজকে আয়োজন এই দুই ফুটবলারকে নিয়ে। লিখেছেন অনিক দাস।
* লিগ ওয়ানে ২১ গোল, ৬ অ্যাসিস্ট। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৮ গোল, ৬ অ্যাসিস্ট। সবমিলিয়ে ৩৩ গোল, ১৫ অ্যাসিস্ট। এমনই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে উসমানে দেম্বেলে এখন ব্যালন ডি’অরের রেসে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, তার মাথায় উঠবে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট
* ২০২৩-২৪ মৌসুমে ম্যাসন গ্রিনউড ছিলেন সেরাদের সেরা। দেম্বেলের সঙ্গে যৌথভাবে লিগ ওয়ানে টপ স্কোরার। অ্যাসিস্টও করেছেন পাঁচটিতে। ফ্রান্সের নিজের প্রথম মৌসুমে অভিযোগের সুযোগ না রাখলেও মার্শেইয়ের ফরোয়ার্ড ছিলেন ট্রফিলেস
‘আমার কাছে দেম্বেলেই ব্যালন ডি’অরজয়ী’- শিষ্যকে এভাবেই ভালোবাসা দিয়েছেন লুইস এনরিক। সবার জানা, ইউরোপের সেরা দল এখন পিএসজি। জিতেছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। অবিশ্বাস্য এই সাফল্যের পর উসমানে দেম্বেলের প্রশংসায় কথাটুকু বলেছিলেন কোচ এনরিক। ভুল কিছু বলেননি পিএসজি বস। কেননা, মৌসুমজুড়ে দেম্বেলে ছিলেন এক দানব। তার শক্তিতেই পিএসজি এখন চ্যাম্পিয়নস লিগ চ্যাম্পিয়ন। প্যারিসকে উৎসবের রঙে রাঙিয়ে এই ফরাসিম্যান এখন ব্যালন ডি’অরের রেসে।
২০২৪-২৫ মৌসুমে লিগ ওয়ানে ২১ করেছেন দেম্বেলে। সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন আরও ছয়টি গোল। তার উজ্জ্বল পারফরম্যান্সে ফ্রান্সের টপ-ফ্লাইটে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে ছিল পিএসজি। ৮৪ পয়েন্ট নিয়ে অক্ষুণ্ন রেখেছে লিগ শিরোপা, যেখানে দ্বিতীয় স্থানে থাকা অলিম্পিক মার্শেইয়ের পয়েন্ট ছিল ৬৫। দলকে ১৩তম লিগ শিরোপা জিতিয়ে এবং চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে তুলে ফ্রান্সে বর্ষসেরা খেলোয়াড় হন দেম্বেলে।
ইউরোপিয়ান মৌসুম শেষে দেম্বেলে এখন এই অঞ্চলের সেরা ফুটবলার। পিএসজির ঘরে সোনার হরিণ (চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি) তুলে ইউরোপে বর্ষসেরা ফুটবলার হয়েছেন। মর্যাদার ট্রফি জয়ের মিশনে আটটি গোল করেছেন ২৮ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। অ্যাসিস্ট ছিল ছয়টি। সবমিলিয়ে ৪৯ ম্যাচে তার গোল ৩৩টি এবং অ্যাসিস্ট ১৫টি। ফলস্বরূপ অনেকেই তার হাতে দেখছেন ২০২৫ ব্যালন ডি’অর। এমনটাই হবে বলে দৃঢ় বিশ্বাস এনরিকের।
পিএসজি কোচ এনরিক বলেছেন, ‘আমি ব্যালন ডি’অর উসমান দেম্বেলেকে দেব। (চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে) যেভাবে সে ডিফেন্স করেছে... শুধু এটুকুর জন্যই ব্যালন ডি’অরের যোগ্য। এভাবেই একজন লিডার দলকে এগিয়ে নেয়। গোল, শিরোপা, নেতৃত্ব, রক্ষণ, চাপ সৃষ্টি- সব দিক থেকেই সে অসাধারণ, অবিশ্বাস্য। আমার কাছে দেম্বেলেই ব্যালন ডি’অর জয়ী। কোনো সন্দেহ নেই।’ বলা বাহুল্য, উত্থান-পতনের ক্যারিয়ারের দীর্ঘ সময় পরই এমন প্রশংসায় ভাসছেন দেম্বেলে।
অন্যদিকে, লিগ ওয়ানে দুর্ভাগ্যের শিকার ম্যাসন গ্রিনউড। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ছয়টি মৌসুম পার করেও কোনো পাননি এই ইংলিশ ফরোয়ার্ড। সেখানে ৮৩ ম্যাচে তার গোল ছিল ২২টি। ছন্দহীন ফুটবলারকে প্রথমে গেতাফের কাছে ধারে দেয় ম্যানইউ। এরপর (২০২৪ সালে) স্থায়ীভাবে বিক্রি করে অলিম্পিক মার্শেইয়ের কাছে। দলবদলে গ্রিনউডের পারফরম্যান্সে ছন্দ ফিরেছে। লিগ ওয়ানে প্রথম মৌসুমেই করেছেন ২১ গোল। সেই সঙ্গে অ্যাসিস্ট ছিল পাঁচটিতে। কিন্তু নতুন ঠিকানায় শিরোপা ধরার সৌভাগ্য হয়নি তার, কারণ গ্রিনউডের সতীর্থরা ছিলেন ছায়া হয়ে।