
লিগ শিরোপা লড়াইয়ের অলিখিত ফাইনালে চির প্রতিদ্বন্দ্বি আবাহনীর কাছে ৬ উইকেটে হেরে মোহামেডানকে রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। খেলা শেষে মোহামেডানের খেলোয়াড়রা ড্রেসিংরুমে ফিরে আসার সময় ভিআইপি গ্যালারিতে থাকা মোহামেডানের নাদিম নামে এক সমর্থককে মারতে তেড়ে যান অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পরে অন্যদের হস্তক্ষেপে তিনি সেই দর্শককে আর লাঞ্চিত করতে পারেননি। পরে এই ঘটনার জন্য মাহমুদউল্লাহ দুঃখ প্রকাশ করেন।
ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান ক্লাব ২০০৯ সালের পর ঢাকা প্রিমিয়ার বিভাগ ক্রিকেট লিগে আর চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে তারা প্রায় জাতীয় দলই গঠন করেছিল। কিন্তু অধিনায়ক তামিম ইকবালের অসুস্থতা, ইনজুরি, নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের জন্য চারজন ক্রিকেটারকে হারাতে হয়। সব মিলিয়ে সেরা একাদশের সাতজনই ছিলেন না। অবস্থা সামাল দিতে তারা অন্য ক্লাবের না খেলা কয়েকজন ক্রিকেটারকে নিয়ে খেলতে নামে। একপ্রকার ভাঙাচোরা দল নিয়েই তারা শেষ ম্যাচ পযন্ত শিরোপা লড়াইয়ে ছিল।
ভাঙাচোরা দল হলেও মোহামেডানের সমর্থকদের আশা ছিল আবাহনীকে হারিয়ে তারা দীর্ঘদিনের শিরোপা খরা কাটাতে পারবে। যে কারণ সকাল থেকেই বেশ কিছু সমর্থক মোহামেডানের ড্রেসিংরুমের পাশে গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে বসে খেলা দেখছিলেন। শেষ বিকেলে হেরে যাওয়ার পর, মোহামেডানের খেলোয়াড়রা যখন ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন, তখন সমর্থকরা নিজেদের ক্ষোভ মেটাতে তাদের উদ্দেশে বিদ্রুপ করে কথা বলছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণে জানা যায় শক্তিশালী দল গড়ার পরও ব্যাকআপ খেলোয়াড় না থাকাতে সমর্থকরা মোহামেডানের ম্যানেজার সাবেক ক্রিকেটার সাজ্জাদ আহমেদ শিপনকে উদ্দেশ্য করে ভুয়া ভুয়া বলার পাশাপাশি কিছু বাজে শব্দ উচ্চারণ করছিলেন।
এ সময় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এসব কথা শুনে ড্রেসিংরুমে প্রবেশ না করে প্রাচীর টপকে লাফ দিয়ে গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে উঠে খুবই উত্তেজিত হয়ে নাদিম নামের সেই দর্শককে মারতে তেড়ে যান। তার পিছু পিছু মোহামেডানের দুইজন বয় ছুটে গিয়ে মাহমুদউল্লাহকে নিবৃত করার চেষ্টা করেন। মোহামেডানের অন্য সমর্থকরাও এগিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন। পরে এক ফেসবুক পোস্টে নাদিম নামের সেই দর্শক ঘটনার বর্ননা দিয়ে মাহমুদউল্লাহকে উদ্দেশ্য করে তিনি কিছু বলেননি বলে উল্লেখ করেন। তিনি দলের ম্যানেজারকে উদ্দেশ্য করে কিছু কথা বলেছিলেন।
এ ব্যাপারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ কোনও শাস্তি পাবেন কি না জানতে চাওয়া হলে খবরের কাগজকে ম্যাচ রেফারি সেলিম শাহেদ বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানিনা। আমাকে কেউ জানায়ওনি। তা ছাড়া ম্যাচ শেষে হওয়াতে এটি এখন শৃঙ্খলা কমিটি দেখবে। এদিকে মিরপুর স্টেডিয়াম ছেড়ে যাওয়ার সময় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ গাড়ী থামিয়ে মোহামেডানের একজন সমর্থকের কাছে ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন বলে জানা গেছে।
সিফাত/