ছবি : সংগৃহীত
তিন বছরেরও বেশি সময় পর আবারও মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ইউরোপের দুই শক্তিশালী ক্লাব পিএসজি ও রিয়াল মাদ্রিদ। যুক্তরাষ্ট্রের মেটলাইফ স্টেডিয়ামে ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আজ মুখোমুখি দুই ইউরোপিয়ান জায়ান্ট। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বর্তমান শিরোপাধারী পিএসজি। অন্যদিকে একই আসরে রেকর্ড ১৫ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল। ক্লাব বিশ্বকাপে দুই লড়াই আজ তাই রূপ নেবে মহারণে, তা অনুমেয়।
কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়াল ও পিএসজি দুই দলই হারিয়ে এসেছে জার্মানির দুই ক্লাবকে। যেখানে বেশি পরীক্ষা দিতে হয়েছে পিএসজিকে। ফরাসি ক্লাবটি ২-০ গোলে হারায় বায়ার্ন মিউনিখকে। অন্যদিকে রিয়ালের তুলনায় বরুসিয়া ডর্টমুন্ড ছিল অপেক্ষাকৃত দুর্বল। কিন্তু সেই দলের বিপক্ষেও কোয়ার্টার ফাইনালে (৩-২) জিততে রীতিমতো ঘাম ঝড়াতে হয়েছিল লস ব্লাঙ্কোসদের।
তীব্র লড়াইয়ের ঝাঁজ
গত এক দশকে পিএসজির কাতারি মালিকানায় অর্থবলের ছোঁয়ায় ইউরোপে তাদের উত্থান চোখে পড়ার মতো। তবে ইউরোপিয়ান মঞ্চে ‘লস ব্লাঙ্কোস’ নামেই পরিচিত রিয়াল মাদ্রিদই বরাবর তাদের ছাপিয়ে গেছে। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়নস লিগে।
দুই দলের সবচেয়ে স্মরণীয় লড়াইগুলো হয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগেই। সর্বশেষ মুখোমুখি লড়াইটা ছিল ২০২২ সালের শেষ ষোলোতে। দুই লেগেই কিলিয়ান এমবাপ্পে গোল করলেও দ্বিতীয় লেগে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত হেরে যায় পিএসজি। করিম বেনজেমার দ্বিতীয়ার্ধে করা দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক, গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মার ভুল এবং বার্নাব্যুতে রিয়ালের দুরন্ত প্রত্যাবর্তন। সব মিলিয়ে রাতটি রূপ নেয় পিএসজির দুঃস্বপ্নে।
২০১৭-১৮ মৌসুমের একই পর্বে আবারও মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। তবে সে যাত্রায় অনেক কম নাটকীয়তা। রোনালদো ঝলকে দুই লেগেই জয় তুলে নিয়ে ৫-২ ব্যবধানে এগিয়ে যায় রিয়াল। দুই দলের প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ সাক্ষাৎ ২০১৪-১৫ মৌসুমে। গ্রুপপর্বের সেই লড়াইয়ে নাচো ফার্নান্দেজের একমাত্র গোলে বার্নাব্যুতে জয় তুলে নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। ২০১৯ সালে আবার একই গ্রুপে পড়েছিল তারা। সেইবার আনহেল দি মারিয়ার জোড়া গোলে পিএসজি ঘরের মাঠে ৩-০ ব্যবধানে জয় পায়, আর বার্নাব্যুতে ২-২ ড্র করে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় ফরাসিরা।
ঐতিহাসিক দ্বৈরথ
দুই দল নব্বই দশকেও একাধিকবার ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় মুখোমুখি হয়েছে। ১৯৯৩ সালের ইউরোপা কাপ (তৎকালীন ইউইএফএ কাপ)-এর কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়াল প্রথম লেগে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও, দ্বিতীয় লেগে পিএসজির ৪-১ গোলের অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন হয়ে যায় ইতিহাসের সেরা ম্যাচগুলোর একটি।
এর পরের বছর কাপ উইনার্স কাপে আবারও মুখোমুখি হয় দল দুটি। বার্নাব্যুতে জর্জ উইয়াহর একমাত্র গোলে জয় পাওয়া পিএসজি ঘরের মাঠে ১-১ ড্র করে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয়।
পিএসজির তারকায় ঠাসা স্কোয়াড, আর রিয়ালের ঐতিহ্য ও ইউরোপিয়ান অভিজ্ঞতা। আজকের ম্যাচে দুই ভিন্ন ধারার ক্লাব মুখোমুখি হতে যাচ্ছে এক ঐতিহাসিক লড়াইয়ে। প্রতিশোধের আশায় উন্মুখ পিএসজি, আর বড় ম্যাচে আত্মবিশ্বাসী রিয়াল। কে হাসবে শেষ হাসি, তা সময়ই বলে দেবে।