প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগলকে সবচেয়ে বড় অঙ্কের জরিমানা করেছে রাশিয়া। এই জারিমানার পরিমাণ ২ দশমিক ৫ ডেসিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২,৫০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ ডলার, যা ২৫ এর পরে ৩৫টি শূন্য। এই জরিমানা ২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলারের সমতুল্য। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের মতে, যা বিশ্বের মোট জিডিপির চেয়েও অনেক বেশি। ইউটিউবে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ও সরকার সমর্থিত অ্যাকাউন্টগুলো ব্লক করায় অভিযোগে রাশিয়ার এক আদালত গুগলকে এ জরিমানা করেছে।
মূলত ২০২০ সালে রুশ টিভি চ্যানেল ‘সারগ্রাদ’ ও ‘আরআইএ ফ্যান’ তাদের ইউটিউব চ্যানেলে গুগলের বিধিনিষেধ সম্পর্কিত মামলায় জয়ী হয়। এতে গুগলকে এক লাখ রুবল জরিমানা করে রাশিয়ার আদালতটি। গত চার বছর ধরে জমা হওয়া এই জরিমানা রাশিয়ান আইনে প্রতি সপ্তাহে দ্বিগুণ হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরবিসি প্রথম এই বিশাল জরিমানার তথ্য প্রকাশ করেছে। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের সমর্থনকারী সংবাদমাধ্যমগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার পর, গুগলের বিরুদ্ধে আরও জরিমানা ধার্য করা হয়।
আরবিসির তথ্যমতে, গুগল এখনও ১৭টি রাশিয়ান টিভি চ্যানেলের ইউটিউব অ্যাকাউন্ট ফিরিয়ে দেয়নি। ২৮ অক্টোবর দেশটির এক বিচারক শুনানির সময় বলেন, তিনি এমন একটি কেস নিয়ে বিচার করছেন, যেখানে অনেক অনেক শূন্য রয়েছে।
গত বছর গুগলের আয় ছিল ৩০৬ বিলিয়ন ডলার। হয়তো এ কারণে এই বিশাল জরিমানা পরিশোধ করবে না গুগল। গত মাসে গুগল রাশিয়ান ব্যবহারকারীদের জন্য নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরির সীমিত করেছে। একই সঙ্গে চলতি বছরের আগস্টে দেশটিতে অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে কোম্পানিটি। ২০২২ সালের মার্চ থেকে দেশটিতে গুগলের বিজ্ঞাপন পরিষেবাও বন্ধ রয়েছে, যা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞার অংশ।
এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ গুগলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে, যার ফলে গুগলের রাশিয়ার শাখা দেউলিয়া ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। তবে ইউটিউব ও সার্চসহ গুগলের ফ্রি সেবা রাশিয়ায় চালু রয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রকাশিত সর্বশেষ ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে গুগল তাদের রাশিয়ায় চলমান আইনি সমস্যার কথা স্বীকার করেছে। সংস্থাটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ‘রাশিয়া সম্পর্কিত আইনি বিষয় চলমান রয়েছে। অ্যাকাউন্ট বন্ধ সংক্রান্ত বিতর্কে সম্মিলিত জরিমানাসহ আরও নানা সিদ্ধান্ত উপর আরোপিত হয়েছে। মনে হয় না, আমাদের উপর এই চলমান আইনি বিষয়গুলোর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’ সূত্র: দ্য ইনডিপেনডেন্ট