ঢাকা ৩০ মাঘ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১

ভারতের মণিপুরে বিদ্রোহীদের স্টারলিংক ব্যবহার: উদ্বেগে নিরাপত্তা সংস্থা

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:২৫ পিএম
ভারতের মণিপুরে বিদ্রোহীদের স্টারলিংক ব্যবহার: উদ্বেগে নিরাপত্তা সংস্থা
ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মণিপুরের বিদ্রোহীরা ইন্টারনেট পরিষেবা স্টারলিংক ব্যবহার করছে। ছবি: সংগৃহীত

ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মণিপুরের বিদ্রোহীরা ইলন মাস্কের স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট পরিষেবা স্টারলিংক ব্যবহার করছে। নিরাপত্তা বাহিনী ও স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ভারতে স্টারলিংকের সেবা ব্যবহারে এখনও অনুমোদন নেই। তবে প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে এ পরিষেবা বৈধ, যা সীমান্তবর্তী মণিপুরেও ব্যবহারের সুযোগ করে দিচ্ছে।  

মণিপুরে মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাতের জেরে রাজ্যটিতে দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতা বিরাজ করছে। ২০২৩ সালের মে মাস থেকে প্রায় প্রতিদিন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে, যেখানে নিহতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ২৫০ ছাড়িয়েছে।  

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইন্টারনেট সেবা একাধিকবার বন্ধ করেছে দেয় রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার। তবে এর মধ্যেও সীমান্তবর্তী এলাকায় স্টারলিংক ডিভাইস ব্যবহার করে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ইন্টারনেট সংযোগ চালু রেখেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।  

মেইতেই বিদ্রোহী গোষ্ঠী পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) জানিয়েছে, তারা প্রথমে মিয়ানমারের স্টারলিংক ব্যবহার শুরু করে। পরে তাঁরা বুঝতে পারেন, এটি মণিপুরের সীমান্তেও কাজ করে।

মণিপুরের এক সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে আনা স্টারলিংক ডিভাইস সম্প্রতি উদ্ধার করা হয়েছে। ডিভাইসটি মূলত মিয়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি কিছু অঞ্চলে কাজ করছে। তবে বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি স্টারলিংক।

স্টারলিংক সেবা ভারতে চালু করতে ইলন মাস্ক দীর্ঘদিন ধরে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে ভারতের কঠোর টেলিযোগাযোগ নিয়ম এবং নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে এখনও অনুমোদন মেলেনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্টারলিংক ব্যবহারের ফলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।  

গত সাত বছরে ইন্টারনেট শাটডাউনের ক্ষেত্রে ভারত শীর্ষে রয়েছে। মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতিতে এ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কার্যকর হলেও স্টারলিংকের অবৈধ ব্যবহারের কারণে তা সম্পূর্ণ সফল হচ্ছে না।  

এর আগে ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে একটি নৌকায় স্টারলিংক ডিভাইস পাওয়া যায়, যা মাদকপাচারের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছিল। নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, ডিভাইসটি নেভিগেশন ও ইন্টারনেটের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছিল এবং তারা তদন্তে সহায়তার জন্য স্টারলিংকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

/আবরার জাহিন

মানব বুদ্ধিমত্তার সমপর্যায়ের এআই শিগগিরই আসছে স্যাম অল্টম্যান

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৪২ পিএম
মানব বুদ্ধিমত্তার সমপর্যায়ের এআই শিগগিরই আসছে স্যাম অল্টম্যান
শিগগিরই মানব বুদ্ধিমত্তার সমপর্যায়ে পৌঁছাতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। ছবি: সংগৃহীত

শিগগিরই মানব বুদ্ধিমত্তার সমপর্যায়ে পৌঁছাতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। এমনটাই মনে করছেন চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যাম অল্টম্যান। এটি সমাজ ও অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে বলে মনে করেন তিনি। 

আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইন্টেলিজেন্স (এজিআই) তৈরি করা ওপেনএআইয়ের মূল লক্ষ্য। তবে এই প্রযুক্তির অগ্রগতি মানবজাতির অস্তিত্বের জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে, এমন আশঙ্কাও রয়েছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত এক ব্লগ পোস্টে অল্টম্যান জানিয়েছে, আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইন্টেলিজেন্স (এজিআই) আগামী এক দশকের মধ্যে বাস্তবে পরিণত হতে পারে। তবে এই প্রযুক্তির সুফল সবার জন্য সমান হবে না। এটি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে মানবজাতির জন্য। 

অল্টম্যানের মতে, এআই প্রযুক্তির অগ্রগতি পুঁজি ও শ্রমের ভারসাম্যে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে, যা বৈষম্য আরও বাড়াতে পারে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলো এআই ব্যবহার করে জনসাধারণের ওপর নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারে, যা মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা হ্রাসের ঝুঁকি তৈরি করবে। তবে তিনি মনে করেন, বিজ্ঞান ও গবেষণার ক্ষেত্রে এজিআই যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে। 

তিনি ব্লগ পোস্টে লিখেছেন, ‘সম্ভবত এজিআইয়ের প্রভাব অসম হবে। কিছু শিল্প খুব কম পরিবর্তিত হলেও, বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি সম্ভবত আজকের চেয়ে অনেক দ্রুত হবে। এজিআইয়ের এই প্রভাব অন্য সবকিছুকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।’

অল্টম্যানের ব্লগ পোস্টটি এমন সময় প্রকাশ হয়েছে, যখন এজিআই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ওপেনএআইয়ের সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা স্টিভেন অ্যাডলার। তিনি এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে জানিয়েছেন, আমি এআইয়ের বর্তমান অগ্রগতি দেখে বেশ আতঙ্কিত। অ্যাডলারের মতে, এআই সুরক্ষা নিয়ে এখনো কার্যকর সমাধান পাওয়া যায়নি। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতার কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থাগুলো উপেক্ষিত হচ্ছে। 

এআই ফিচার নিয়ে ফায়ারফক্সের নতুন সংস্করণ

প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:১৫ পিএম
এআই ফিচার নিয়ে ফায়ারফক্সের নতুন সংস্করণ
জনপ্রিয় ফায়ারফক্স ব্রাউজারের নতুন সংস্করণ ‘ফায়ারফক্স ১৩৫.০’ উন্মোচন। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী ব্যবহারকারীদের জন্য জনপ্রিয় ফায়ারফক্স ব্রাউজারের নতুন সংস্করণ ‘ফায়ারফক্স ১৩৫.০’ উন্মোচন করেছে মজিলা। নতুন এই সংস্করণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চালিত নতুন ফিচার, উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও শক্তিশালী প্রাইভেসি ফিচার যোগ করা হয়েছে। ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা উন্নত করার পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তার দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে এই আপডেটে। 

নতুন ফিচার 
নতুন আপডেটে ‘ফায়ারফক্স ট্রান্সলেশন’ ফিচার আরও উন্নত করা হয়েছে। যেখানে চীনা, জাপানি ও কোরিয়ান ভাষার সরলীকৃত অনুবাদ-সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে। রুশ ভাষাও অনূদিত ভাষার তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।

এ ছাড়া এআই-চালিত চ্যাটবট যুক্ত করা হয়েছে, যা সাইডবার বা ফায়ারফক্স ল্যাবসের মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে। এটি বিশ্বব্যাপী চালু হচ্ছে, তবে ব্যবহারকারীদের চ্যাটবট ব্যবহার করতে হলে নির্দিষ্ট সার্ভিস প্রদানকারী নির্বাচন করতে হবে। ক্রেডিট কার্ড অটোফিল সুবিধাও এখন আরও ভালোভাবে উপভোগ করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা।

নিরাপত্তা আপডেট
ফায়ারফক্স ১৩৫.০ সংস্করণে সার্টিফিকেট ট্রান্সপারেন্সি ব্যবস্থা আরও কঠোর করা হয়েছে। নতুন সিআরলাইট রিভোকেশন সিস্টেম দ্রুততার সঙ্গে সার্টিফিকেট যাচাই করতে পারে। এ ছাড়া নেভিগেশন সমস্যার সমাধান করতে ব্রাউজারের হিস্ট্রি স্প্যামিং ব্লক করার নতুন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।

ইন্টারফেস পরিবর্তন 
ট্যাব লেআউট পুনরায় ডিজাইন করা হয়েছে। যেখানে স্টোরি কার্ড, সুবিন্যস্ত লোগো প্লেসমেন্ট ও বড় স্ক্রিনের জন্য চারটি পর্যন্ত কলাম যুক্ত করা হয়েছে। এখন একাধিক ট্যাব খোলা থাকলে লিনাক্স ও ম্যাকওএস ব্যবহারকারীরা কুইট শর্টকাট ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট ট্যাব বন্ধ করতে পারবেন।  

গোপনীয়তা সুরক্ষায় পরিবর্তন
ফায়ারফক্সের পুরাতন ‘ডু নট ট্র্যাক’ চেকবক্সটি সরিয়ে গ্লোবাল প্রাইভেসি কন্ট্রোল (জিপিসি) চালু করা হয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার জন্য আরও কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। ‘কপি ক্লিন লিঙ্ক’ নামের নতুন ফিচারটি ইউআরএল থেকে ট্র্যাকিং প্যারামিটার সরিয়ে দেয়, এমনকি প্লেইন টেক্সট লিংকেও কাজ করবে।

ডেভেলপার টুলস 
ফায়ারফক্স ১৩৫.০ সংস্করণে অপ্রাসঙ্গিক কনটেন্ট ভিজিবিলিটি ব্যবহারসংক্রান্ত সতর্কতা যুক্ত করা হয়েছে। নতুন  কনসোল কমান্ড ব্যবহার করে ‘শ্যাডো রুট’ সহজে সার্চ করা যাবে। এ ছাড়া ওয়েবএক্সটেনস ডিবাগিং উন্নত করা হয়েছে, বিশেষ করে কনটেন্ট স্ক্রিপ্টের ক্ষেত্রে।  

ওয়েব প্ল্যাটফর্ম আপডেট 
নতুন সংস্করণে ‘এইচটিটিপি/৩’ প্রটোকলের জন্য পোস্ট-কোয়ান্টাম এনক্রিপশন যুক্ত করা হয়েছে।

ফায়ারফক্স ১৩৫.০ সংস্করণের নতুন আপডেট এআই ফিচার ও উন্নত গোপনীয়তা নীতির সমন্বয় ব্যবহারকারীদের আরও নিরাপদ ও আধুনিক ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করবে। প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাউজারগুলোর সঙ্গে টিকে থাকতে ফায়ারফক্সের এই নতুন উদ্যোগ প্রযুক্তি বাজারে কতটা প্রভাব ফেলবে, সেটি এখন দেখার বিষয়। তথ্যসূত্র: গিজমোচায়না

ফ্রান্সের এআই খাতে ১০৯ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের ঘোষণা

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৬ পিএম
ফ্রান্সের এআই খাতে ১০৯ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের ঘোষণা
এআই খাতে ১০৯ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে  ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। ছবি: সংগৃহীত

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) খাতে ফ্রান্সকে আরও শক্তিশালী করতে ১০৯ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে  ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। প্যারিসে আজ থেকে শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অ্যাকশন সামিট’-এর প্রথম দিনে এই ঘোষণা দেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এআই সামিটের মূল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল।

এই বিনিয়োগের মধ্যে কানাডার বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ব্রুকফিল্ড ফ্রান্সে এআই প্রকল্পে ২০ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে। এ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) দীর্ঘমেয়াদে ৫০ বিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারে বলে জানানো হয়েছে। 

ফরাসি প্রেসিডেন্টের দপ্তর এলিসি প্যালেস জানিয়েছে, ইউএই-এর বিনিয়োগের একটি বড় অংশ ব্যয় করা হবে ১ গিগাওয়াট ক্ষমতার ডেটা সেন্টার নির্মাণে। ফরাসি এক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ব্রুকফিল্ডের বিনিয়োগের প্রধান অংশও ডেটা সেন্টার নির্মাণে ব্যয় হবে। 

এআই প্রযুক্তির বিকাশে প্রয়োজন হয় শক্তিশালী ডেটা সেন্টার, যাতে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহৃত হয়। ইউরোপ বর্তমানে এআইচালিত ডেটা সেন্টারের বিদ্যুৎ  চাহিদা মেটাতে কিছুটা হিমশিম খাচ্ছে। 

প্যারিসে আয়োজিত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অ্যাকশন সামিট বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি খাতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সামিটে উপস্থিত বিভিন্ন দেশের নেতারা এআই প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ ও নিরাপদ ব্যবহারের নীতিমালা নিয়েও আলোচনা করবেন।  তথ্যসূত্র: রয়টার্স

প্যারিসে এআই সম্মেলনে বিশ্বনেতা ও প্রযুক্তিবিদরা

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩৫ এএম
আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৮ পিএম
প্যারিসে এআই সম্মেলনে বিশ্বনেতা ও প্রযুক্তিবিদরা
প্যারিসে অনুষ্ঠিত ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অ্যাকশন সামিট’-এ বিশ্বনেতা ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা একত্রিত হয়েছেন। ছবি: সংগৃহীত

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) নিরাপদ ব্যবহার ও নীতিমালা নির্ধারণে প্যারিসে অনুষ্ঠিত ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অ্যাকশন সামিট’-এ বিশ্বনেতা ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা একত্রিত হয়েছেন। গতকাল সোমবার থেকে শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী এআই সামিটের মূল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে আজ।

এ সম্মেলনে একদিকে যেমন এআই প্রযুক্তির বিকাশে বাধা হতে পারে এমন কঠোর নীতিমালা আরোপ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে, তেমনি বিশ্ব নেতা ও প্রযুক্তিবিদদের মধ্যে এআই প্রযুক্তির অগ্রগতির ঢেউকে আলিঙ্গন করার আগ্রহও দেখা যাচ্ছে।

২০২২ সালে ওপেনএআইয়ের চ্যাটবট ‘চ্যাটজিপিটি’ প্রকাশের পর আগের ব্রিটেন ও দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত এআই শীর্ষ সম্মেলনগুলোতে বিশ্বশক্তির মনোযোগ প্রযুক্তির ঝুঁকির দিকে কেন্দ্রীভূত হলেও, বর্তমানে এআইকে নিয়ন্ত্রণে আনার আগ্রহ কিছুটা কমেছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রশাসনের এআই নীতিমালা বাতিল করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যা দেশটির প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানকে এগিয়ে নিতে সহায়ক বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নও এআই নিয়ে নমনীয় নীতি গ্রহণের পথে হাঁটছে।

ইইউ সম্প্রতি ‘এআই অ্যাক্ট’ নামে নীতিমালা অনুমোদন করেছে, যা বিশ্বের প্রথম এআই বিধিমালা। তবে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো ও কয়েকটি দেশ এর কঠোর প্রয়োগ চায় না। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ মনে করেন, অত্যধিক নিয়মনীতি ইউরোপীয় স্টার্টআপগুলোর বিকাশ বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

এক সাক্ষাৎকারে মাখোঁ বলেন, ‘কিছু দেশ কোনো নিয়ম মানতে চায় না, যা বিপজ্জনক। আবার ইউরোপ যদি অতিরিক্ত নিয়ম তৈরি করে, তবে সেটিও সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। উদ্ভাবনকে ভয় পাওয়া উচিত নয়।’

এআই নীতির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ইউরোপের মধ্যে বড় ধরনের পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। চীনের এআই প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডিপসিক সম্প্রতি এমন এক এআই চ্যাটবট উন্মোচন করেছে, যা এআই প্রযুক্তির বাজারে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।

লন্ডনভিত্তিক থিংকট্যাংক চ্যাথাম হাউস জানিয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র এআই নীতিতে অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, অন্যদিকে চীন নতুন সক্ষমতা প্রদর্শন করছে। ফলে বিশ্বজুড়ে একটি অনিশ্চিত প্রতিযোগিতা চলছে।’

তবে যুক্তরাষ্ট্র এবারের সম্মেলনে ‘এআই সেফটি ইনস্টিটিউট’ পাঠাচ্ছে না, যা বৈশ্বিক এআই ঝুঁকি মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী নীতিমালা তৈরির আশা কমিয়ে দিয়েছে।

প্যারিস সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, চীনের ভাইস প্রিমিয়ার ঝাং গুওকিংসহ শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা এই সম্মেলনে যোগ দেবেন। অন্যদের মধ্যে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোটাকিসও উপস্থিত থাকবেন।

প্রযুক্তি জগতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও অংশ নিচ্ছেন এ সম্মেলনে, যাদের মধ্যে রয়েছেন গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই ও ওপেনএআইয়ের সিইও স্যাম অল্টম্যান। তারা প্রযুক্তির সম্ভাবনা ও ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা করবেন।

এআইয়ের জন্য বিশাল জ্বালানি চাহিদা ও পরিবেশগত প্রভাব নিয়েও সম্মেলনে আলোচনা হবে। বিশ্বের ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এআই প্রযুক্তিকে কীভাবে টেকসই রাখা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হবে।

ফ্রান্স ইতোমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে একটি বড় এআই ডেটা সেন্টার নির্মাণের জন্য চুক্তি করেছে, যেখানে ৫০ বিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত বিনিয়োগ করা হবে। নতুন এআই অ্যাপ চালুর সময় ফরাসি স্টার্টআপ মিস্ট্রালের সিইও বলেছেন, ‘এখন বিশ্ব বুঝতে পারছে, ইউরোপীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোও এআই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এখন এআইয়ের বিপজ্জনক দিকগুলো নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ভাবনকে এগিয়ে নেওয়ার মধ্যে ভারসাম্য খুঁজছে। এআইয়ের নীতিনির্ধারণে কঠোরতা নাকি নমনীয়তা প্রয়োজন, এ নিয়ে চলছে বিতর্ক। প্যারিস সম্মেলন কি নতুন কোনো দিকনির্দেশনা দিতে পারবে? সেটাই দেখার বিষয়। তথ্যসূত্র: রয়টার্স 

প্রশান্তির ঘুমের জন্য দরকার প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৪৮ পিএম
প্রশান্তির ঘুমের জন্য দরকার প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার
প্রযুক্তির সঠিক ও পরিমিত ব্যবহার ঘুমের মানোন্নয়নে সাহায্য করতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

আধুনিক জীবনে প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। তবে প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহার ঘুমের মানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। রাত জেগে স্মার্টফোন ও ল্যাপটপ ব্যবহারের কারণে ঘুমের স্বাভাবিক ছন্দ হারিয়ে যায়। তবে প্রযুক্তির সঠিক ও পরিমিত ব্যবহার ঘুমের মানোন্নয়নে সাহায্য করতে পারে। স্লিপ-ট্র্যাকিং অ্যাপ থেকে শুরু করে আধুনিক স্মার্ট ডিভাইসের মতো নানা প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার হতে পারে ঘুমের সমস্যা সমাধান। 

সানরাইজ অ্যালার্ম ঘড়ি 
স্মার্টফোনের প্রচলিত অ্যালার্ম অনেকের ঘুমের জন্য অস্বস্তির কারণ হতে পারে। তবে সানরাইজ অ্যালার্ম ক্লক এমন একটি ডিভাইস, যা ধীরে ধীরে কৃত্রিম সূর্যালোক ছড়িয়ে ব্যবহারকারীকে ঘুম থেকে স্বাভাবিকভাবে জাগিয়ে তোলে। অ্যালার্ম বাজার ৩০ মিনিট আগে থেকে আলো বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে ঘুম হালকা হয় ও আকস্মিক জেগে ওঠার বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা কমে যায়। বিশেষ করে শীতের দিনে যখন সূর্য দেরিতে ওঠে তখন এটি অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে।

স্লিপ মোড
রাতে ঘুমানোর আগে স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট ব্যবহারের অভ্যাস অনেকেরই রয়েছে। তবে অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম ঘুমের চক্রকে ব্যাহত করতে পারে। স্লিপ মোড চালু করলে নির্ধারিত সময়ের পর ফোনের নোটিফিকেশন বন্ধ হয়ে যায়, যা ঘুমের প্রস্তুতিতে সহায়ক হতে পারে। আইফোন ব্যবহারকারীরা ফোকাস মোডস ব্যবহার করে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সব অ্যাপ ও নোটিফিকেশন বন্ধ রাখতে পারেন।

কনটেন্ট ব্যবহারের সময়সীমা নির্ধারণ
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট বা ভিডিও মানসিক চাপ বাড়িয়ে দিতে পারে, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। গবেষণা বলছে, রাতে উত্তেজনাপূর্ণ বা মানসিকভাবে ক্লান্তিকর কনটেন্ট দেখলে ঘুমের গুণগত মান কমে যায়। তাই ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে থেকে ভিডিও দেখা বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের সীমা নির্ধারণ করা উচিত। ওপাল অ্যাপ ব্যবহার করে ইউটিউব ও ইনস্টাগ্রামের স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

‘গেট ইনটু বেড’ অ্যালার্ম
প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া স্বাস্থ্যকর ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ‘গেট ইনটু বেড’ অ্যালার্ম সেট করলে নির্দিষ্ট সময়ের আগে থেকে ঘুমের প্রস্তুতি নিতে মনে করিয়ে দেয়। এটি মূলত অ্যাপল ডিভাইস ব্যবহারকারীদের জন্য কার্যকর, যারা প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানোর রুটিন গড়ে তুলতে চান।

ব্লু লাইট ফিল্টার
ডিজিটাল ডিভাইসের স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলো (ব্লু লাইট) মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদন কমিয়ে ঘুমের চক্রকে ব্যাহত করে। নাইট শিফট মোড চালু করলে স্ক্রিনের আলো হলুদ বা কমলা হয়ে যায়, যা ঘুমের জন্য সহায়ক হতে পারে। এটি সানসেট টু সানরাইজ মোডে সেট করলে সূর্যাস্তের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয় এবং সূর্যোদয়ের পর বন্ধ হয়ে যায়।

প্রযুক্তি যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, তাহলে এটি ঘুমের জন্য সহায়ক হতে পারে। সানরাইজ অ্যালার্ম, স্লিপ মোড, ব্লু লাইট ফিল্টার ও স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণের মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ঘুমের মান উন্নত করা সম্ভব। তাই প্রযুক্তিকে শুধু সমস্যার উৎস হিসেবে না দেখে, বরং এর ইতিবাচক দিকগুলো কাজে লাগানোর দিকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তথ্যসূত্র: মেকইউজঅব

/আবরার জাহিন