
জনপ্রিয় ভিডিও গেম তৈরি করতে এখন অনেক কোম্পানির শতকোটি টাকা ব্যয় করে যাচ্ছে। প্রশ্ন হলো, কেন ভিডিও গেম নির্মাণে এত টাকা খরচ হচ্ছে? সম্প্রতি আমেরিকার দৈনিক পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভিডিও গেমগুলোতে আরও বেশি ফটো-রিয়ালিস্টিক বা বাস্তবসম্মত গ্রাফিক্স দেওয়ার প্রচেষ্টার ফলে এই খরচ বাড়ছে। তবে এতে বিনিয়োগের তুলনায় প্রত্যাশিত মুনাফা কমে আসছে। ফলে এ খাতে কর্মী ছাঁটাই ও স্টুডিও বন্ধ হওয়ার ঘটনা বাড়ছে।
তবে ব্লুমবার্গের প্রতিবেদক জেসন শ্রায়ার এই বিশ্লেষণকে পুরোপুরি সঠিক বলে মনে করেন না। তিনি অবশ্য স্বীকার করেন, গেম তৈরির খরচ নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। ২০০৯ সালে ‘নটি ডগ’ স্টুডিওর ‘আনচার্টেড-২’ তৈরি করতে খরচ হয়েছিল ২ কোটি মার্কিন ডলার। অথচ ২০২০ সালে তাদের ‘দ্য লাস্ট অব আস পার্ট-২’ গেমটির বাজেট ছিল ২২ কোটি ডলার।
শ্রায়ারের ভাষ্যমতে, গ্রাফিক্সের উন্নতির জন্য খরচ বাড়ে। তবে আরও বড় কারণ হলো, গেমগুলোর আকার ও জটিলতা বাড়ার কারণে দীর্ঘ সময়ের জন্য আরও বেশি লোকবলের প্রয়োজন হয়। বড় দল দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে, ফলে ব্যয় বেড়ে যায়।
গেম শিল্পে যারা কয়েক বছর কাজ করেছেন, তাদের প্রত্যেকের ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত নেতিবাচক অভিজ্ঞতা রয়েছে বলে শ্রায়ার মন্তব্য করেন। যেমন- কোনো ফিচার বাতিল হয়ে যায়, শুধু একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সন্তানের পছন্দ না হওয়ার কারণে। আবার গেমটির ‘কোর লুপ’ বা মূল কাঠামো নিয়ে অনিশ্চয়তায় মাসের পর মাস সময় নষ্ট হয়। এ ধরনের দুর্বল ব্যবস্থাপনা শুধু কর্মীদের সময় ও শ্রম নষ্ট করে না, বরং প্রকল্পের সামগ্রিক ব্যয়ও বাড়িয়ে দেয়।
শ্রায়ার মনে করেন, ভিডিও গেম কোম্পানিগুলোর যদি সত্যিই বাজেটের লাগাম টানার প্রয়োজন হয়, তবে তাদের ম্যানেজমেন্টের দিকে নজর দেওয়া উচিত। সঠিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার অভাবে কর্মী এবং সময়ের অপচয় ঘটে, যা খরচ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। ভিডিও গেম শিল্পে সফল হতে হলে কোম্পানিগুলোকে গ্রাফিক্সের মান উন্নত করার পাশাপাশি দক্ষ ব্যবস্থাপনার গুরুত্বও অনুধাবন করতে হবে। সূত্র: টেকক্রাঞ্চ