ইনফোস্টিলার ম্যালওয়্যার সাইবার অপরাধীদের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। ছবি: সংগৃহীত
সাইবার জগতে নতুন এক আতঙ্কের নাম ইনফোস্টিলার ম্যালওয়্যার। এই ক্ষতিকর সফটওয়্যারটি ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির জন্য তৈরি করা হয়েছে, যা নীরবে কাজ করে। ম্যালওয়্যার-অ্যাজ-এ-সার্ভিস মডেলে ছড়িয়ে পড়া এই ম্যালওয়্যার সাইবার অপরাধীদের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। সাইবার নিরাপত্তা গবেষণা প্রতিষ্ঠান কেলার ২০২৪ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর এই ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে ৩৯০ কোটি পাসওয়ার্ড ফাঁস হয়েছে। ৪৩ লাখেরও বেশি ডিভাইস এই ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এটিকে ‘গ্লোবাল ম্যালওয়্যার প্যানডেমিক’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।
সংবেদনশীল তথ্য চুরি
এই ম্যালওয়্যার ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য, ই-মেইল, ব্রাউজিং ডেটা, ব্যাংকিং তথ্য, ক্রেডিট কার্ড নম্বর ও ক্রিপ্টো অ্যাকাউন্টের মতো সংবেদনশীল তথ্য চুরি করতে সক্ষম। কিছু ম্যালওয়্যার কি-স্ট্রোক রেকর্ড করে, আবার কিছু ক্লিপবোর্ড হাইজ্যাকিং বা স্ক্রিনশট নেওয়ার মাধ্যমে তথ্য হাতিয়ে নেয়।
ফিশিং ও নন-ফিশিং উভয় পদ্ধতিতে এই ম্যালওয়্যার ছড়িয়ে পড়ছে। ইউটিউব, ফেসবুক, লিংকডইন ও ই-মেইলের মাধ্যমেও এটি ছড়ানো হচ্ছে। এমনকি বৈধ সাইটেও এই ম্যালওয়্যার পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি এক স্টিম প্ল্যাটফর্মে একটি গেমে ইনফোস্টিলার পাওয়া যায়, যা দ্রুত সরিয়ে ফেলা হলেও শত শত ডিভাইস আক্রান্ত হয়।
ইনফোস্টিলার ম্যালওয়্যার বড় ধরনের সাইবার আক্রমণের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এটি সাইবার অপরাধীদের জন্য তথ্য সংগ্রহের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। কর্মস্থলের ডিভাইসের লগইন তথ্য চুরি করে অপরাধীরা পুরো নেটওয়ার্কে প্রবেশ করে এবং র্যানসমওয়্যার ইনস্টল করে থাকে।
চেক পয়েন্ট-এর ২০২৫ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইনফোস্টিলার ম্যালওয়্যারের আক্রমণ ৫৮ শতাংশ বেড়েছে। ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, এশিয়া, উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপেও এই আক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে এই ম্যালওয়্যার প্রতিনিয়ত নতুন কৌশলে আক্রমণ চালাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামীতে এই ধরনের আক্রমণের পরিমাণ ও সক্ষমতা আরও বাড়বে। তাই এই ম্যালওয়্যার থেকে নিরাপদ থাকতে সতর্ক ও সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি।