
চীনের বেইজিংভিত্তিক স্টার্টআপ নোয়েটিক্স রোবোটিকস সম্প্রতি একটি বাচ্চার আকারের রোবট উন্মোচন করেছে, যা একটানা ব্যাকফ্লিপ বা পেছন দিকে ডিগবাজি দিতে পারে। মানবাকৃতির রোবটটির নাম ‘এন২’। রোবটটি সাশ্রয়ী মূল্যের সহকারী রোবট হিসেবে কাজ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
চীনা মুদ্রায় এটির দাম পড়বে প্রায় ৩৯ হাজার ইউয়ান, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। নোয়েটিক্স রোবোটিকস দাবি করেছে, এই রোবট শক্তিশালী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে পরিচালিত, যা এটিকে বয়স্কদের যত্ন নেওয়ার মতো কাজে সক্ষম করে তুলেছে।
১.৩ মিটার উচ্চতার এই দুই পায়ের রোবটটি উঁচু-নিচু স্থানে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করতে পারে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, রোবটটিতে অত্যাধুনিক এনভিডিয়া জেটসন ওরিন চিপ ব্যবহার করা হয়েছে, যা এটিকে শক্তিশালী উপলব্ধি ও মিথস্ক্রিয়া করার সক্ষমতা দিয়েছে।
এর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটজিপিটির মতো চ্যাটবটের মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। এ ছাড়া আগের প্রশিক্ষিত মডেলগুলোর সাহায্যে এটি সহজ ও সাধারণ মানবিক কাজও সম্পন্ন করতে পারে। নোয়েটিক্স রোবোটিকসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, রোবটটির একটি সংস্করণ পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছে এবং বয়স্ক ব্যক্তিকে হুইলচেয়ারে করে নিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া রোবটটির ব্যাকফ্লিপ করার একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে, যা এর ভারসাম্য ও ক্ষিপ্রতা প্রদর্শনের জন্য তৈরি করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
নোয়েটিক্স রোবোটিকসের কারিগরি প্রধান জিয়াং ঝেউয়ান, যিনি রোবটটি উন্নত করতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি জানান, ‘সামনের পা লম্বা ও পেছনের পা ছোট হওয়ার কারণে এটি সহজে ব্যাকফ্লিপ করতে পারে। তবে ব্যাকফ্লিপের চেয়ে ফ্রন্টফ্লিপ বা সামনের দিকে ডিগবাজি দেওয়া এটির জন্য কিছুটা কঠিন হয়।’
নোয়েটিক্স রোবোটিকস সম্প্রতি এমন একটি রোবট মাথাও প্রদর্শন করেছে, যা ৩০টিরও বেশি মানবীয় অভিব্যক্তি নকল করতে পারে।
চীনা কোম্পানিগুলো গৃহস্থালির কাজ থেকে শুরু করে শিল্পকারখানায় ব্যবহারের জন্য ব্যাপক পরিমাণে রোবট তৈরি করছে। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রোবোটিক্সের (আইএফআর) তথ্য অনুযায়ী, চীন বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম শিল্প রোবট বাজার, যা বিশ্বব্যাপী মোট রোবট স্থাপনার অর্ধেকেরও বেশি। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফরচুন বিজনেস ইনসাইটসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর চীনের শিল্প রোবট বাজারের মূল্য ছিল ৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০৩২ সালের মধ্যে এটি ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
/আবরার জাহিন