ঢাকা ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

একঝাঁক তরুণের ব্যতিক্রমী আয়োজন

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০১:৩৬ পিএম
একঝাঁক তরুণের ব্যতিক্রমী আয়োজন
মাংস বিতরণের আগে

কেউ প্রবাসে কাঙ্ক্ষিত সফলতা না পেয়ে ফিরে এসেছেন দেশে, ব্যবসায় বিফল হয়ে কেউ আছেন আর্থিক সংকটে, কেউ কেউ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অল্প বেতনে কর্মরত, আছেন দিনমজুরসহ সমাজে বসবাস করা নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত অসংখ্য পরিবার; যারা আর্থিক সংকটের কারণে কোরবানি দিতে না পেরে বঞ্চিত হন মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহার আনন্দ থেকে। মুখ ফুটে প্রকাশ্যে সাহায্য চাইতে না পারা সমাজের নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত এসব মানুষের সঙ্গে কোরবানির আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার একঝাঁক তরুণ ও পাঁচটি সংগঠন কয়েক বছর ধরে চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যতিক্রমী একটি কার্যক্রম। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এসব তরুণের সম্মিলিত উদ্যোগে পশু কোরবানি দিয়ে মাংস গোপনে পৌঁছে দেওয়া হয় কোরবানি করতে না পারা পরিবারগুলোর কাছে। কার্যক্রমে অর্থের জোগান দেন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, বিশেষ করে প্রবাসীরা।

অসহায়ে চক্ষু মেলো পরিবার একটি সংগঠনের নাম। এবার ঈদুল আজহায় চতুর্থবারের মতো ৮৫টি পরিবারের মাঝে গোপনে কোরবানির মাংস পৌঁছে দিয়েছে সংগঠনটি। সংগঠনের সভাপতি শরীফ আল হাসান বলেন, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বিশেষ করে প্রবাসীদের কাছ থেকে পাওয়া অনুদানের অর্থে কোরবানির জন্য পশু কেনা হয়। সন্দ্বীপের প্রতিটি ইউনিয়নে সংগঠনের সদস্যদের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও পরিচিত লোকজন আছেন। মূলত তাদের মাধ্যমে আর্থিক সংকটের কারণে কোরবানি দিতে পারেননি এমন পরিবারগুলোর খোঁজ পাওয়ার পর একটি তালিকা তৈরি করে মাংস পৌঁছে দেওয়া হয়। মাংস পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে কাকে কাকে মাংস দেওয়া হয়েছে সেটা সংগঠনের সদস্যরা ছাড়া অন্য কেউ জানতে পারে না। যে যেভাবে মাংস নিতে চায়, সেভাবেই পৌঁছে দেওয়া হয়। কেউ বাড়িতে পৌঁছে দিতে বলেন, কেউ নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা দিলে, সদস্যরা শপিং ব্যাগে গোপনীয়তা রক্ষা করে মাংস পৌঁছে দেন।

রক্তদাতাদের সংগঠন সন্দ্বীপ ব্লাড ডোনার ফোরাম ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখে পঞ্চমবারের মতো এ বছর ১ লাখ ১৫ হাজার টাকায় কেনা গরু কোরবানি দিয়ে মাংস পৌঁছে দিয়েছে ১০১টি দুস্থ, অসহায় ও কোরবানি করতে না পারা নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারের মাঝে। সংগঠনের সভাপতি টিপু সুলতান বলেন, অনেক পরিবার আছে বিভিন্ন সমস্যার কারণে কোরবানি করতে পারেন না। সামাজিক অবস্থানগত কারণে এসব পরিবারের পক্ষে প্রকাশ্যে সাহায্য চাওয়াও সম্ভব নয়। পরিবারের বড়রা পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিলেও, ছোট সদস্যরা ঈদুল আজহায় কোরবানির মাংস খাওয়ার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়। এরকম পরিবারগুলো খুঁজে বের করে গোপনে মাংস পৌঁছে দেওয়া হয়। আমাদের কার্যক্রম সম্পর্কে যারা অবগত আছেন, ঈদুল আজহার আগে তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ও ফেসবুকের মাধ্যমে ফান্ড কালেকশন করা হয়।
আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশন এক যুগ ধরে নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে কোরবানির মাংস বিতরণ করছে। এ বছর ১২০টি পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে তিনটি গরুর মাংস। প্রতিটি পরিবার পেয়েছে চার কেজি করে মাংস। গরু কেনা থেকে শুরু মাংস পৌঁছে দেওয়ার কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন পারভেজ আলম রুস্তম, ফাহাদ চৌধুরী, মিলাদ আব্বাস, ফায়েল খান ও ওসামাসহ একঝাঁক তরুণ। কার্যক্রমের সমন্বয়কারী পারভেজ আলম রুস্তম বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল এমন সব মানুষকে খুঁজে বের করা যারা কোরবানি দিতে পারেননি, কিন্তু প্রকাশ্যে মাংসের চাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। সন্দ্বীপের বিভিন্ন এলাকা থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করে এমন পরিবারগুলো খুঁজে বের করে, গোপনে তাদের কাছে মাংস পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গরিব অসহায়দের মাঝেও মাংস বিতরণ করা হয়েছে।

নিজস্ব উদ্যোগে মাংস বিতরণের পাশাপাশি ইয়ুথ ক্লাব অব চিটাগং, সন্দ্বীপ নামের একটি সংগঠনকেও দুস্থ ও অসহায়ের জন্য গরু কোরবানির কার্যক্রমে ১ লাখ টাকা অর্থায়ন করছে আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশন। ইয়ুথ ক্লবাব অব চিটাগং, সন্দ্বীপ অন্যান্য সামাজিক কাজের পাশাপাশি কোরবানির মাংস বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে দীর্ঘ আট বছর। ইয়ুথ ক্লাব অব চিটাগাং, সন্দ্বীপের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান বলেন, প্রতি বছর আমাদের সংগঠনের সদস্যরা এবং আমাদের কিছু ডোনার অর্থায়ন করে থাকেন। এবার ৫০ জনকে আড়াই থেকে তিন কেজি করে মাংস বিতরণ করা হয়েছে। মাংস বিতরণের ক্ষেত্রে প্রতি বছরের মতো এবারও কোরবানি করতে না পারা মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো খুঁজে নেওয়া হয়েছে।

কোরবানির আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে মানুষ মানুষের জন্য নামের একটি সংগঠন তৃতীয়বারের মতো এবার ঈদুল আজহায় মাংস বিতরণ করছে ৮৯টি পরিবারের মাঝে এবং ইরামন ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে গরু ও ছাগল কোরবানি। মানুষ মানুষের জন্য সংগঠনের কোরবানি কার্যক্রমের অন্যতম উদ্যোক্তা মোহাম্মদ মেহেদী হাসান জানান, তৃতীয়বারের মতো আমরা এবার ৮৯টি পরিবারকে দিতে সক্ষম হয়েছি। গত কোরবানিতে ছিল ৪৭ পরিবার। আমাদের নির্দিষ্ট কিছু প্রতিনিধি গোপনীয়তার সঙ্গে উপহার পৌঁছে দিয়েছে যেন আমাদের উপহার পেয়ে কোনো পরিবারকে লজ্জিত হতে না হয়। গোপনীয়তাকে শতভাগ নিশ্চয়তার প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

সাংগঠিনক উদ্যোগের পাশাপাশি তরুণদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাস্তবায়িত হয়েছে নিম্নআয়ের সুবিধাবঞ্চিতদের মধ্যে মাংস বিতরণের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি। তৃতীয়বারের মতো এবার ঈদুল আজহায় বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া অনুদান থেকে ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকায় কেনা ৪টি গরু কোরবানি দিয়ে সুবিধাবঞ্চিতদের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে একঝাঁক তরুণ, যাদের মধ্যে জাহিদ হাসান শাকিল, মিজানুর রহমান মাহি, নজরুল মাহমুদ, আরিফুল ইসলাম, মোহাম্মদ হামিদ, মিলাদ আব্বাস, মহব্বত আলম, মোহাম্মদ মিকাত, মোহাম্মদ মেহরাজ, মোহাম্মদ মাসুদ রানা, জাহিদুর ইসলাম ও আমিনুল ইসলাম সবুজ অন্যতম।

নিম্নআয়ের সুবিধাবঞ্চিতদের মাংস বিতরণ কর্মসূচির অন্যতম উদ্যোক্তা জাহিদ হাসান শাকিল বলেন, তৃতীয়বারের মতো এবারও আমরা নিম্নআয়ের সুবিধাবঞ্চিতদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিয়েছি। দুদিন সন্দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ২৬০টিরও বেশি পরিবারকে আমাদের টিমের সদস্যরা মাংস পৌঁছে দিয়েছে। আমাদের প্রথম শর্ত মাংসের প্যাকেটগুলো কাকে দিয়েছি কেউ জানবে না, সম্পূর্ণ গোপনীয়তা রক্ষা করে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

ফান্ড কালেকশন ও নিম্নআয়ের মানুষ নির্বাচনের পদ্ধতি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিন বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এই কার্যক্রম সম্পর্কে মানুষের মনে একটি ইতিবাচক ধারণা তৈরি হওয়ায় ঈদুল আজহার আগে অনেকে খোঁজখবর নেন। মূলত ফেসবুকের মাধ্যমে ফান্ড কালেকশন করা হয়। নিম্নআয়ের মানুষ নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের টিমের সদস্যরা সন্দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজখবর নিয়ে তালিকা তৈরি করেন। পাশাপাশি ফেসবুকের মাধ্যমে সাহায্যপ্রার্থীদের টিমের সদস্যদের ইনবক্সে যোগাযোগ করতে বলা হয়।

জাহ্নবী

এখন মায়ের বন্ধু হবার সময়

প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫, ১২:০৫ এএম
এখন মায়ের বন্ধু হবার সময়
মডেল: তাহিয়া ও তার মা রায়হান কাওসার। ছবি: খবরের কাগজ

নবজাতকের জন্মের সঙ্গে সঙ্গে জন্ম হয় একজন নতুন মায়ের। আবার সন্তান বড় হতে থাকার সঙ্গে সঙ্গে মায়েরও বয়স বাড়তে থাকে। আমরা যখন টিনএজার তখন সাধারণত মায়েদের জীবনে চলে মধ্যম পর্যায়। এসময় শারীরিক, মানসিক, হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে তারাও নানারকম ক্লান্তিকর অনুভূতি, একাকীত্ব বা নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন। এসময়টাই কিন্তু মায়ের বন্ধু হয়ে উঠার চমৎকার সময়।

মায়ের কর্মজীবন সহজ করা
সন্তান জন্মদান, লালন-পালনের মূল দায়িত্বটা থাকে মায়ের উপর। সন্তানকে শৈশবে দেখাশোনা করতে গিয়ে অনেকে চাকরি জীবনের অনেক সম্ভাবনা, অর্জন ছাড় দেন। কেউ কেউ আবার চাকরি ছেড়ে পুরো সময়টাই ব্যয় করেন সন্তানের জন্য। কৈশোরে এসে কিন্তু সেই ত্যাগের প্রতিদান দেওয়ার অনেকটাই সুযোগ পাওয়া যায়। একইসঙ্গে ঘর ও বাইরের কাজ সামলানো অনেকাংশেই কঠিন হয়ে পড়ে মায়েদের জন্য। তাই সন্তান ছেলে বা মেয়ে হোক বাড়ির কাজে সাহায্য করলে মায়ের জন্য কর্মস্থলে মনোযোগ দেওয়া কিংবা মেধা বিকাশের চর্চা করা অনেকটা সহজ হয়ে যায়।

কথা বলার সঙ্গী
বয়স বৃদ্ধি, সাংসারিক চাপ, ব্যস্ততা বিভিন্ন কারণে মধ্য বয়সে মায়েরা একা অনুভব করতে শুরু করেন। জীবনের এই পর্যায়ে পৌঁছাতে পৌঁছাতে মায়ের ঝুলিতে জমে যায় নানান সুখ-দুঃখের কথা, না বলা কথা, নানান অভিজ্ঞতা। শৈশবে মায়ের ব্যক্তিগত আলাপ বুঝার মতো হয়তো বয়স থাকে না। তবে কৈশোর থেকে আমরা যত বড় হতে থাকি ততই মায়ের সঙ্গে মানসিক যোগাযোগের বয়সের ব্যবধানটা কমে আসতে থাকে। তাই কৈশোর থেকেই মায়ের সঙ্গে গল্প করার ও কথা ভাগাভাগি করার সম্পর্ক গড়ে তুলো।

মেনোপজ সম্পর্কে সচেতন হওয়া
মায়ের পিরিয়ড বা মাসিক চক্রের সঙ্গে রয়েছে গর্ভধারণ, সন্তান জন্মদান তথা নাড়ির সম্পর্ক। আবার মধ্য বয়সেই যখন মায়ের মাসিক বন্ধ হয়ে যায় বা মেনোপজ ঘটে তখন শরীরে হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে মায়েদের মেজাজ খিটখিটে হওয়া, শরীর দূর্বল অনুভব করা, বিষণ্ন বোধ করার মতো সমস্যা দেখা দেয়। শৈশবে যেমন আমাদের সার্বক্ষণিক মায়ের সহাচার্য প্রয়োজন হয় তেমনি এসময়টাতেও মায়ের মানসিক মনোবল ও শরীরের প্রতি বেশি যত্নের প্রয়োজন হয়। এসময় মায়ের পছন্দ মতো খাবার খাওয়ানো, মন-মেজাজ খারাপ থাকলে পাশে থাকা, একসঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার মতো কাজ করলে তিনিও নতুন এই পরিস্থিতি সহজে সামাল দিতে পারেন।

শরীরের যত্ন নেওয়া
মধ্য বয়স থেকেই বেশিরভাগ মায়েরা হাড় ক্ষয়জনিত রোগে ভুগতে থাকেন। এজন্য শরীর ব্যাথা, ক্লান্ত অনুভব করা, চলাচলে কিছু সমস্যা তৈরি হতে পারে। জানো কি হাড় ক্ষয়ের এই রোগের সঙ্গেও রয়েছে সন্তান জন্মদানের সম্পর্ক? এসময় মায়ের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবান হওয়ার মধ্য দিয়েই জানানো যেতে পারে কৃতজ্ঞতা।

 

ছেলেবেলার মজার গল্প

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৫, ০৪:৪৩ পিএম
আপডেট: ০৮ মে ২০২৫, ০৪:৪৪ পিএম
ছেলেবেলার মজার গল্প
কৈশোরের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ছবি: সংগৃহীত

আজ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন। রবীন্দ্রনাথের নাম শুনলেই হয়তো তোমাদের চোখে ভাসে লম্বা সাদা দাঁড়ি, শান্ত চোখের এক আলোকজ্জ্বল মুখ। শৈশব-কৈশোরেও রবীন্দ্রনাথ দেখতে ছিলেন কিন্ত বেশ সুদর্শন। তবুও মা সারদা দেবী আক্ষেপ করে বলতেন, অন্যসব ছেলে-মেয়ে থেকে আমার রবি ই কেবল কালো হল! পনেরো জন ভাই-বোনের ভেতর রবীন্দ্রনাথ ছিলেন চৌদ্দতম। সবার ভেতর রবি কে আলাদা করা যেত তার ভাবুক স্বভাবের কারণে। শৈশবেও রবীন্দ্রনাথ ছিলেন কৌতুহলী, সৃজনশীল ও মুক্ত স্বভাবের। রবীন্দ্রনাথের শৈশব-কৈশোরের কিছু মজার গল্প নিয়ে আজকের লেখা।

বাড়ি থেকে পালিয়ে হিমালয়
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত জমিদার পরিবারের সন্তান। বাড়িতে ছিল পড়াশোনা আর জীবন যাপনের কঠোর নিয়ম। স্বাধীনচেতা রবির মোটেই ভালো লাগত না এমন ধরাবাঁধা নিয়ম। ১২ বছর বয়সে একবার ঠিক করলেন বাড়ি থেকে পালিয়ে সোজা চলে যাবেন হিমালয়। সাধু-সন্ন্যাসীদের মতো প্রকৃতির মাঝে শান্তির জীবন কাটাবেন সেখানে। তবে কিভাবে যাবেন এতদূর পথ? ঠিক করলেন বাড়ি থেকে হেঁটে হেঁটেই পৌঁছে যাবেন হিমালয়। যেমন ভাবা তেমন কাজ। কিছু জমানো টাকা-পয়সা, শুকনো খাবার নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন হিমালয়ের উদ্দেশ্যে। তবে কিছু পথ যেতেই গঙ্গার ঘাটে তাকে দেখে ফেলেন ঠাকুর বাড়ির দারোয়ান। অগত্যা সে যাত্রায় আর হিমালয় পৌঁছানো হয়নি বালক রবির!

আকাশের তারা নিয়ে পরীক্ষা
শৈশবে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বেশ শান্ত স্বভাবের। তবে কৌতুহলী স্বভাবের কারণে কখনো কখনো দূর্ঘটনা ঘটিয়ে দুশ্চিন্তায় ফেলতেন বাড়ির বড়দের। রবির বয়স তখন ৮ কি ১০ বছর। তখন থেকেই আকাশের তারা-নক্ষত্রের সঙ্গে তার গভীর বন্ধুত্ব। একদিন রাতের আকাশের তারা দেখতে দেখতে তার মনে পড়ল পাঠ্যবইয়ে পড়েছিলেন, ‘তারা আগুনে পুড়ে না, জলে ডুবে না।’ রবির মনে প্রশ্ন এল, সবকিছুই তো আগুনে পুড়ে তাহলে তারা কেন নয়? এর উত্তর জানতে চাইলে হাতের মুঠোয় চাই আকাশের তারা। তা তো আর সম্ভব নয়। তাই তারার মতো দেখতে ছোট কাচের টুকরোতে আগুন ধরিয়ে শুরু করলেন পরীক্ষা। কাচ পোড়ার শব্দে ছুটে এসেছিলেন বাড়ির সবাই।

স্কুল ফাঁকির গল্প
স্কুল পালালেই রবীন্দ্রনাথ হওয়া যায় না এই প্রবাদটি তোমরা শুনেছ নিশ্চই। একথা যেমন সত্যি তেমনি রবির স্কুল পালানোর গল্পও মিথ্যে নয়। শৈশবে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় একদম আগ্রহ ছিল না রবীন্দ্রনাথের। তবুও বাবার আদেশে স্কুলে যেতে শুরু করেন তিনি। তবে স্কুল ফাঁকি দিতে তাঁর ছিল নানা উপায়। কখনো স্কুলের পুকুরে জুতা ভিজিয়ে রাখতেন তারপর সেই জুতা সারাদিন পায়ে রেখে জ্বর বাঁধাতেন। কখনো বদহজম এর ভান করে পড়ে থাকতেন বিছানায়। কখনো নানা ছুঁতো ধরে স্কুলে যাবার আগে লুকিয়ে পরতেন মায়ের আঁচলের নিচে। অগত্যা স্কুল থেকে ছুটি দিয়ে বাড়িতেই পড়াশোনার ব্যবস্থা করতে হয় তাঁর জন্য! 

/ তাসনিম তাজিন

 

 

আইপিএলে বৈভবের বাজিমাত

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৮ পিএম
আপডেট: ০৬ মে ২০২৫, ০৬:৪২ পিএম
আইপিএলে বৈভবের বাজিমাত
ছবি: সংগৃহীত

আইপিএল এর সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার বৈভব সূর্যবংশী। এবছর আইপিএলে বৈভব খেলছেন রাজস্থান রয়্যালস দলের হয়ে। ইতিমধ্যেই আইপিএলে একের পর এক রেকর্ড গড়েছেন এই কিশোর তারকা ক্রিকেটার। ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে বৈভবের কথা অজানা নয়। চলো দেখে নেই এবারের আইপিএল এ তার চমকগুলো।

• আইপিএলে শুরুতে চমক দেখাতে বৈভব সূর্যবংশীর বয়সটাই যথেষ্ট। এখনো স্কুলের গন্ডি না পেরুনো বৈভবের বয়স মাত্র ১৪ বছর। আর তাতেই ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ আইপিএল প্লেয়ার হিসেবে রেকর্ড গড়ল সে। এর আগে এই টুর্নামেন্ট এর সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার ১৬ বছর বয়সী রয় বর্মণ।

• এক, দুই…তিন নম্বর ম্যাচেই মাঠ কাঁপিয়ে খেলার রেকর্ড করেছে বৈভব। মাত্র ৩৫ বলেই সেঞ্চুরি করেছে সে। আইপিএলে ভারতীয়দের মধ্যে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড এবার তার ঝুলিতে। এছাড়াও আইপিএলের সব ক্রিকেটারদের মধ্যেও দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান বৈভব।

• বলা বাহুল্য আইপিএল এর সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ানও এখন বৈভব। তবে শুধু মাত্র এই টুর্নামেন্টেই নয়। টি-টুয়েন্টি খেলার সবচেয়ে কম বয়সী সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে নাম লিখিয়েছে এই টিনএজার প্লেয়ার।

• ১০১ রান করতে বৈভবের লেগেছে ১১ টি ছক্কা ও ৭ টি চার। একের পর এক ছক্কার খেলা দেখতে দেখতে অনেকটা হতম্ভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন এবারের আইপিএল এর বাঘা বাঘা খেলোয়াড়। শার্দুল ঠাকুরের বিপরীতে প্রথম বলেই ছক্কা মারে বৈভব। সর্বকনিষ্ঠ প্লেয়ার হিসেবে প্রথম বলে ছক্কা মারার রেকর্ডটাও এবার তার ঝুলিতে।

• ১ কোটি ১০ লাখ রুপিতে এবার আইপিএল খেলছে এই কিশোর ক্রিকেটার। এছাড়াও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমারের পক্ষ থেকে পেতে যাচ্ছে ১০ লাখ রুপি। কানাঘুষা চলছে বৈভবের খেলায় মুগ্ধ হয়ে রাজস্থান রয়্যালস এর মালিক  তাকে উপহার দিয়েছেন ব্র্যান্ড নিউ মার্সিডিজ বেঞ্জ।

 

আজ বিশ্ব ইচ্ছা দিবস

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৫২ পিএম
আজ বিশ্ব ইচ্ছা দিবস

ইচ্ছা কিংবা স্বপ্ন নেই এমন মানুষ হয়তো পৃথিবীতে একজনও খুঁজে পাওয়া যাবে না। মনের ভেতরের ইতিবাচক ইচ্ছাগুলোই আমাদের জীবনে গতি এনে দেয়। আর শিশু-কিশোরদের কল্পনাপ্রবণ উচ্ছ্বল মনের স্বপ্নের সীমানা যেন আকাশ পর্যন্ত। ২৯ এপ্রিল বিশ্ব ইচ্ছা দিবস। ‘মেক এ উইশ’ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে দিনটি পালন করা হয় বিশেষত শিশু-কিশোরদের জন্য। বিশেষ এই দিবসের শুরুও এক বালকের ইচ্ছা পূরণের মধ্য দিয়ে। চলো জেনে নেই এই দিবসের আদ্যোপান্ত।

২০১০ সাল থেকে প্রতি বছর ২৯ এপ্রিল পালন করা হয় বিশ্ব ইচ্ছা দিবস। তবে কিভাবে এই দিন উদযাপনের শুরু হল সেটি জানতে ফিরে যেতে হবে বছর তিরিশ পেছনের গল্পে। সময় ১৯৮০ সাল। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনার বাসিন্দা ৭ বছর বয়সী ক্রিস্টোফার জেমস গ্রিসিয়াস লড়াই করছিল দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধি লিউকেমিয়ার সঙ্গে। বড় হয়ে নিজেকে পুলিশ অফিসার হিসেবে দেখতে চাইত গ্রিসিয়াস। কিন্তু শরীরে রোগ বাসা বাঁধায় তার বড় হয়ে উঠাই ছিল অনিশ্চিত। কোনো এক ভাবে গ্রিসিয়াসের ইচ্ছার কথা পৌঁছে যায় অ্যারিজেনোর পুলিশ বিভাগের কানে। তার স্বপ্ন পূরণ করতে এগিয়ে আসে অ্যারিজোনার পুলিশ বিভাগ, শুভাকাঙ্ক্ষী ও বন্ধুরা। ১৯৮০ সালের ২৯ শে এপ্রিল এই দিনটির জন্য অ্যারিজেনোর ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট পুলিশ হিসেবে দায়িত্ব পায় গ্রিসিয়াস। সেদিন রোগাক্রান্ত গ্রিসিয়াসের মনের অফুরন্ত আনন্দ চোখ এড়ায়নি কারো। তার মতোই দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত শিশু-কিশোরদের মনের ইচ্ছা পূরণের মধ্য দিয়ে তাদের মনে সাহস আনন্দ বাড়াতে এক হতে থাকে চিকিতসক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শিশু-কিশোরদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী মানুষ। এই থেকেই গড়ে উঠে শিশু-কিশোরদের ইচ্ছা পূরণের আমেরিকান অলাভজনক সংগঠন ‘মেক এ উইশ।’ 

এখন পর্যন্ত ‘মেক এ উইশ’ এর উদ্যোগে পূরণ হয়েছে বিভিন্ন দেশের ৫ লক্ষ্য দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত শিশু-কিশোরদের ছোট-বড় স্বপ্ন। শুধুমাত্র আমেরিকাতেই নয়। বিশ্বের ৪৫ টি দেশে এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ৪০ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবক। শিশু-কিশোরদের মনের ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষাগুলোই তাদের শক্তির উৎস। তাদের স্বপ্ন ও ইচ্ছাকে উদযাপন করতেই গ্রিসিয়াস এর পুলিশ অফিসার হবার দিনটিকে কেন্দ্র করে সংস্থাটি ২৯ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত করে বিশ্ব ইচ্ছা দিবস। স্বপ্ন আর ইচ্ছা শক্তির মধ্য দিয়ে শিশু-কিশোররা আনন্দে বাঁচুক এটাই আজকের দিনের কামনা।

 

 

 

টিন ফ্যাক্ট

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১৫ পিএম
টিন ফ্যাক্ট
ছবি: সংগৃহীত
  • টিনএজ মন মানেই অ্যাডভেঞ্চার-প্রিয় প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের তুলনায় ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে বেশি আগ্রহী থাকে টিনএজাররা বিপদের আশঙ্কার চেয়ে এর মধ্য দিয়ে তারা বেশি আনন্দই খুঁজে পায়
  • টিনএজাররা স্বভাবতই আবেগপ্রবণ তবে সময় মস্তিষ্ক যুক্তিনির্ভর চিন্তার জন্য খুব একটা প্রস্তুত থাকে না তাই মনকে মস্তিষ্ক দিয়ে পড়তে অনেকটাই অপারগ তারা
  • শুধু শৈশবেই নয় কৈশোরেও বাবা-মা পরিবারের সংস্পর্শ গুরুত্বপূর্ণ দেখা গেছে, পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব থাকলে ওই কিশোর-কিশোরীদের বিষণ্নতা, দুশ্চিন্তা মাদকাসক্তির হার বেশি থাকে
  • মানুষের জীবনের প্রায় ৫০ ভাগ মানসিক অসুস্থতাই শুরু হয় টিনএজ বয়স থেকে তাই সময় মানসিক বিকাশে প্রয়োজন বড়দের সহযোগিতা, সুস্থ পরিবেশ বিশেষ যত্ন
  • অন্যান্য বয়সী মানুষের তুলনায় টিনএজারদের সিনেমা, টিভি সিরিজ-জাতীয় বিনোদনে আসক্তি বেশি পর্দার সুপার হিরো বা চরিত্রদের নিয়ে আগ্রহ, ভালোবাসাও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ সুনির্দিষ্ট শারীরিক গড়ন ধরে রাখা বেশির ভাগ কিশোর-কিশোরীর কাছেই এখন সৌন্দর্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৪৪ ভাগ কিশোরী ১২ ভাগ কিশোর টিনএজ বয়সে নিজেদের ওজন কমাতে চায়
  • আবার টিনএজ বয়সে পেশি গঠন নিয়ে ছেলেদের মধ্যে দেখা যায় বাড়তি আগ্রহ প্রায় ৪০ ভাগ কিশোর বয়সে পেশি বাড়াতে নিয়মিত শরীরচর্চা করে
  • কিশোরদের তুলনায় বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে বেশি হীনম্মন্যতায় ভুগতে দেখা যায় কিশোরীদের গবেষণা জানায়, প্রতি ১০ জনে জন কিশোরীই তাদের বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে অসন্তুষ্ট