ঢাকা ১৬ বৈশাখ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

ঘুরে আসুন গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত

প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৯ পিএম
আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২২ পিএম
ঘুরে আসুন গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত
গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত এখনও কিছুটা কম পরিচিত

গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় অবস্থিত। সীতাকুণ্ড মানেই একপাশে সাগর আর অন্যপাশে পাহাড়। সীতাকুণ্ড বাজার থেকে গুলিয়াখালী সি বিচের দূরত্ব ৫ কিলোমিটার। স্থানীয়দের কাছে এই সৈকত ‘মুরাদপুর সি বিচ’ নামে পরিচিত। গুলিয়াখালীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এখানকার পুরো সমুদ্রপাড় ঢেকে আছে গালিচার মতো সবুজ ঘাসে! সৈকতের তিন দিকে শোভাবর্ধন করছে ছোট ছোট ম্যানগ্রোভ বন। আর অন্যদিকে অসীম সমুদ্র।

বনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালার মধ্যে কেওড়া অন্যতম। ম্যানগ্রোভ বনের শ্বাসমূল ছড়িয়ে আছে সৈকতজুড়ে। তার মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে বড় ছোট অনেক খাল। জোয়ারের সময় খালগুলো পানিতে ভরে যায়। গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত কিছুটা কম পরিচিত হওয়ায় বেশিরভাগ সময়ই এখানে পর্যটক থাকে না। তাই আপনি সমুদ্রের বাতাসের সঙ্গে নীরবতা উপভোগ করতে পারবেন মন ভরে। গুলিয়াখালী সি বিচের কাছাকাছি জেলেপল্লী থাকায় সুনসান সৈকতও নিরাপদ। গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকতের কাছেই আছে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্রসৈকত।

যা দেখবেন
মূল সড়ক থেকে বেড়িবাঁধে নেমে কিছুদূর মাটির রাস্তা ধরে এগিয়ে যেতে হবে সমুদ্রপাড়ের দিকে। কিছুদূর এগিয়ে গেলেই হাতের ডান দিকে কয়েকটি ছোট টং দোকান ও হোটেলের দেখা পাবেন। এই স্থানে কিন্তু ভালো কোনো খাবার পাবেন না। তাই সেখানে যাওয়ার আগে সীতাকুণ্ড শহরের কোনো হোটেল থেকে খেয়ে নিন।
সামনে আরও কিছুক্ষণ এগিয়ে গেলেই চোখে পড়বে বিস্তৃত জলরাশি আর কেওড়া বন। দেখবেন আপনার সামনে অনেকগুলো নৌকা দাঁড়িয়ে আছে। ইঞ্জিনচালিত এই নৌকাগুলোতেই সোয়াম্প ফরেস্ট পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে। যেখানে ছোট ছোট সবুজ ঘাসে মোড়ানো টিলাগুলো দেখতে পারবেন।
শীতকালে অবশ্য সমুদ্রপাড়ের খালগুলোতে পানি কম থাকে। ওই সময় হেঁটেই পৌঁছানো যায় সেখানে। তবে বর্ষার এ সময় সমুদ্র থাকে উত্তাল। এ কারণে খালের পানিও বেড়ে যায়। নৌকায় চড়ে কিছুক্ষণ ঘুরে বেড়াতে পারবেন সমুদের কিনারা ধরে।
এরপর নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে নেমে পড়ুন ঘাষের টিলার ওপর। উপভোগ করুন গুলিয়াখালী সি বিচের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য। অনেকেই সৈকতে গোসল সেরে নেন। তবে সাঁতার না জানলে পানিতে না নামাই ভালো।
নিরিবিলি হলেও বিচের অদূরেই দেখা মিলবে ছোট ছোট জাহাজ। এগুলো সাধারণত মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত হয়। আবার এতে করে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায়ও যাওয়া যায়। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় নদীর মোহনায় অবস্থিত এই সৈকত। 
যদিও গুলিয়াখালী সৈকতটি এখনো সরকারিভাবে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেনি। তবে প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটে সেখানে। যা স্থানীয় মানুষদের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। এর আগে সৈকতে নৌকা ভাড়া বা গাড়ি পার্কিংয়ের কোনো সুব্যবস্থা ছিল না। বর্তমানে কর্তৃপক্ষ তা বেঁধে দিয়েছেন। তবে ট্যুরিস্ট পুলিশ না থাকায় রাতে সৈকতটি নিরাপদ নয়।

কীভাবে যাবেন
গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকতে যাওয়ার জন্য প্রথমে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় আসতে হবে। ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে সীতাকুণ্ড আসতে পারবেন। ঢাকার প্রায় সব বাসটার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী বাস ছাড়ে। তবে আরামবাগ সায়েদাবাদ বা ফকিরাপুল থেকে বেশি সুবিধাজনক। এসব টার্মিনাল থেকে সৌদিয়া, শ্যামলী, হানিফ, এস আলম, ইউনিক, সোহাগ, গ্রিন লাইনসহ সব বড় কোম্পানির বাস আছে এই রুটে। চট্টগ্রামগামী বাসে উঠে আপনাকে নামতে হবে সীতাকুণ্ড বাজারে। রাতের বাসে সায়েদাবাদ থেকে সীতাকুণ্ড পর্যন্ত যেতে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগে।

ট্রেনে সীতাকুণ্ড
ঢাকা থেকে গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত তথা সীতাকুণ্ডে সরাসরি একটি ট্রেন আছে চট্টলা একপ্রেস নামে। এ ছাড়া সুবর্ণ ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেস বাদে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী সব ট্রেন ফেনী স্টেশনে থামে। ফেনীতে নেমে রিকশা নিয়ে চলে যেতে হবে মহিপাল। সেখান থকে চট্টগ্রামগামী সব বাসে করেই সীতাকুণ্ড বাজারে যেতে পারবেন। 
যারা সিলেট থেকে আসবেন, তারাও চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেনে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে চট্টগ্রামের সব ট্রেন ফেনীতে থামে। ফেনী নেমে একইভাবে মহিপাল হয়ে সীতাকুণ্ড বাজারে আসা যাবে।

সীতাকুণ্ড থেকে গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত
সীতাকুণ্ড বাজারের হাইওয়ে ওভারপাসের নিচ থেকে গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত যাওয়ার সিএনজি পাওয়া যায়। বাজার থেকে সমুদ্রের দূরত্ব পাঁচ কিলোমিটার। রিজার্ভ সিএনজিতে ভাড়া পড়বে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। যেতে সময় লাগে ২৫/৩০ মিনিট। সিএনজি নেওয়ার সময় ঠিকঠাক দরদাম করে নেবেন। চাইলে আপডাউন রিজার্ভও করতে পারেন। গুলিয়াখালীর কাছে বেড়িবাঁধে সিএনজি আপনাকে নামিয়ে দেবে। ওখান থেকে হেঁটে সমুদ্রপাড়ে গেলে ১০/১২ মিনিট লাগে। ঘুরতে গিয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলে অনেক সময় ফেরার সিএনজি পাওয়া যায় না। তাই নামার সময় ড্রাইভারের ফোন নাম্বার নিয়ে রাখুন।

কোথায় থাকবেন
সীতাকুণ্ড পৌরসভায় মোটামুটি মানের তিন-চারটি আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য। রুম ভাড়া ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকা। এটি পৌর বাজারের ডিটি রোডে। এ ছাড়া আছে হোটেল সাইমুন। রুম ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। আর আপনি বেশ ভালো মানের হোটেল চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে হবে। সীতাকুণ্ড থেকে চট্টগ্রাম শহরের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার।

কোথায় খাবেন
সীতাকুণ্ড বাজারে খাবারের অনেকগুলো দোকান আছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া, আল আমিন ও আপন রেস্টুরেন্ট উল্লেখযোগ্য। এখানে আপনি ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা, ডাল, সবজি ইত্যাদি মেন্যু হিসেবে পাবেন। খাবার খরচ পড়বে প্রতিবেলা ১২০ থেকে ২০০ টাকার মতো। রাতের বাসে গেলে সকালের ব্রেকফাস্টও এখানে সেরে নিতে পারেন।

ভ্রমণ টিপস ও সতর্কতা
গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত ভ্রমণে বিকেলে গেলে ভালো লাগবে। সীতাকুণ্ড থেকে ঘুরে আসতে সব মিলিয়ে দুই-তিন ঘণ্টা সময়ই যথেষ্ট। তাই সারা দিনের জন্য সীতাকুণ্ডের প্ল্যান থাকলে সকালটা আশপাশের অন্য কোনো দর্শনীয় স্থানে কাটাতে পারেন। ভ্রমণের সময় জোয়ার-ভাটার টাইম জেনে নিন। স্থানীয় জেলেরা এ ব্যাপারে ভালো ধারণা দিতে পারবে। জোয়ারের সময় সমুদ্রের কাছে না থাকাই ভালো। কারণ খালগুলো জোয়ারের পানিতে ভরে গেলে ফিরতে অসুবিধা হবে। সন্ধ্যার মধ্যেই সীতাকুণ্ড বাজারে ফিরে আসুন। যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলা যাবে না।
 
কাছাকাছি অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
পাশাপাশি দুই উপজেলা মিরসরাই ও সীতাকুণ্ডে অনেকগুলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থান রয়েছে। গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত গেলে একই দিন নিচের যেকোনো একটি দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন। পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার টাইম ম্যানেজমেন্টের ওপর। গুলিয়াখালী সি বিচের একদম কাছাকাছি আছে বাঁশবাড়িয়া সমুদ্রসৈকত আর চন্দ্রনাথ পাহাড়। কাছাকাছি আছে এই রুটের সবচেয়ে অ্যাডভেঞ্চারাস ট্রেইল সোনাইছড়ি। সীতাকুণ্ড ইকোপার্কের ভেতরে আছে সুপ্তধারা আর সহস্রধারা জলপ্রপাত। আর হাইওয়ে ধরে ঢাকার দিকে দশ কিলোমিটার এগোলে পাবেন কমলদহ ঝরনা। যদি বিশ কিলোমিটার যান, তা হলে খৈয়াছড়া ঝরনা আর নাপিত্তাছড়া ঝরনার ট্রেইল পড়বে।

চিকলি বিলে এক বিকেল

প্রকাশ: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:২৭ পিএম
চিকলি বিলে এক বিকেল
রংপুর বিভাগীয় শহরের হনুমনতলায় অবস্থিত চিকলি বিল।

রংপুর নগরের উত্তর প্রান্ত দিয়ে বয়ে গেছে চিকলি বিল। এটি এক সময় অনাদরে, অবহেলায় পড়ে ছিল। বিলটি ঘিরে মহাপরিকল্পনা হাতে নেয় রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক)। এর একপাশে নিজেরাই গড়ে তোলে সিটি পার্ক। অন্যপাশ বরাদ্দ দেয় বেসরকারি কোম্পানিকে। সে পাশে গড়ে তোলা হয়েছে আলো ঝলমল ওয়াটার পার্ক।
রংপুর নগরের হনুমানতলা এলাকায় প্রায় ১০০ একর জায়গা নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে ওই বিনোদনকেন্দ্র। এর সিটি করপোরেশন নিয়ন্ত্রিত অংশের নাম চিকলি সিটি পার্ক। আর বেসরকারি কোম্পানি নিয়ন্ত্রিত অংশের নাম চিকলি ওয়াটার পার্ক। ২০১৫ সালে বিনোদনকেন্দ্রটি দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেয় সিটি করপোরেশন।
চিকলি সিটি পার্কে প্রবেশ ফি ২০ টাকা। সম্প্রতি এই অংশ দিয়ে ঢুকে দেখা যায়, ভেতরে কংক্রিটে ঢালাই করা পাড়। বিলে চলা স্পিডবোটের ঢেউ আছড়ে পড়ে যেন চুমু খাচ্ছে কিনারে। পাড়ে নানা জীবজন্তুর ভাস্কর্য। জিরাফের একটি ভাস্কর্যের ওপর উঠে খেলা করছে এক শিশু। শিশুটির বাবা-মা বললেন, বিকেলে ঘোরার জন্য জায়গাটি মন্দ নয়। শিশুরাও মজা পায়। বিলের পাড় ধরে পূর্ব দিকে গেলে দেখা যায়, হাতের বাম পাশে সুন্দর ছাউনিঘেরা বসার বেঞ্চ। মাঝে মধ্যে দোকানঘর। সেসব দোকানে মেলে চায়ের সঙ্গে টাও।
এক দোকানি বললেন, ছাউনিঘেরা বেঞ্চগুলো ভালো। তবে কিছু তরুণ-তরুণী এগুলোর অপব্যবহার করেন। এতে পরিবার নিয়ে যারা আসেন, তারা বিব্রত হতে পারেন। এদিকে করপোরেশনের নজর দেওয়া দরকার।
পাড় ধরে আরও পুবে গেলে দেখা মিলবে বটপাকুড়ের ছায়ার- যেন বাংলার যেকোনো চিরচেনা বিল। এর ডানপাশে হয়তো দেখা যাবে, টাগ-জাল ফেলে মাছ ধরছে জেলে। তারা স্থানীয় বাসিন্দা।
একজন জেলে জানালেন, আগে বিলে মাছ বেশি পাওয়া যেত। আস্তেধীরে মাছ কমছে।
বিলের এপার থেকেই দেখা যায়, উত্তর পারে আলো ঝলমল পরিবেশ। সেখান থেকে ভেসে আসছে সুর-ছন্দও। ওই পারে গিয়ে দেখা মেলে আরেকটি প্রবেশপথের। টিকিটও কিনতে হয় আরেকটি। হ্যাঁ, এটিই চিকলি ওয়াটার পার্ক।
এই পার্কে ঢুকে দেখা যাবে, মনোরম পরিবেশ। মৃদুমন্দ ছন্দে কোথাও গান বাজছে। হাতের বামে স্পিডবোটে ওঠার ঘাট। এসব বোটের ঢেউই আছড়ে পড়ে বিলের পাড়ে।
ঘাট থেকে বের হয়ে সামনে গেলে হাতের ডানপাশে পড়বে কৃত্রিম পাহাড়। সেই পাহাড় চিড়ে ঝরছে ঝরনাও। কোথাও দেখা যাবে, গলা-উঁচু সাদা বক, যেন এখনই দেবে উড়াল। কিন্তু উড়তে পারবে না, এগুলো কৃত্রিম। এখানে ইউনিফর্ম পরে দায়িত্ব পালন করছিলেন এক ব্যক্তি। তিনি বললেন, পাহাড়ে ওঠা নিষেধ। পিছলে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। পাহাড়-ঝরনা পেরিয়ে সাদা কাশফুলের সমারোহ। সেই সমরোহ পেরিয়ে সামনে গেলে দেখা যাবে ইয়া বড় নাগরদোলার, শিশুদের অন্যতম আকর্ষণ। রয়েছে শিশুদের উপযোগী আরও নানা রাইড।
এক শিশুর মন্তব্য, এখানে এলেই তার মন ভালো হয়ে যায়।
এই পাড়ের পথজুড়ে বিলের ধারঘেঁষে তৈরি করা হয়েছে বসে থাকার বেঞ্চ ও মাচাংঘর। এসব বেঞ্চ ও ঘরে বসে উপভোগ করা যায় বিলের সৌন্দর্য। শেষ বিকেলের রোদ, গোধূলির লালচে আভা আর রাতে রংবেরঙের কৃত্রিম আলোয় বিলের পানি যেন ঝিলমিল করে ওঠে।
এমনি একটি মাচাংঘরের পাশে দেখা হয় শাহীন আলম নামের এক দর্শনার্থীর সঙ্গে। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। এসেছেন কুমিল্লা থেকে। শাহীন বললেন, রংপুরে এত সুন্দর একটি বেড়ানোর জায়গা আছে, না দেখলে বিশ্বাসই হতো না। রাতেই ঢাকায় ফিরব। ট্রেনের টিকিট কাটা আছে, হাতে সময়ও আছে। তাই এখানে বেড়াতে এসেছি। এসে দারুণ লাগল!
এই পর্যটকের ভাষ্য, রংপুরের বাইরের অনেকে বিলটি সম্পর্কে তেমন জানেন না। তাই বিলটি ঘিরে প্রচার বাড়ালে এখানে পর্যটকের আনাগোনা আরও বাড়বে।
জানা যায়, চিকলি নিয়ে আরও বড় পরিকল্পনা আছে কর্তৃপক্ষের। পার্ক আরও বড় করা হবে। তখন দর্শনার্থীরা আরও বিনোদন পাবেন। আর তেমন কোনো প্রচার না করলেও চিকলি ওয়াটার পার্কে ভিড় লেগেই থাকে। ভালো জিনিস হলে তার নাম এমনিতেই ছড়িয়ে পড়ে।

চিকলির বিলের অবস্থান

শত বছরের প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা বিলটি রংপুর বিভাগীয় শহরের হনুমনতলা এলাকায় অবস্থিত। হালের বিখ্যাত বিলের স্থানটি এককালে সি-প্লেনের ল্যান্ডিং স্টেশন হিসেবে ব্যবহৃত হতো। বেসরকারি উদ্যোগে ২০১৮ সালে চিকলি ওয়াটার পার্কের নির্মাণকাজ শুরু হয়। 

যা যা দেখবেন

বিল পাড়ে বসে থেকে মনোরম পরিবেশ উপভোগ করার জন্য দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে সুব্যবস্থা। শিশু ও সব বয়সী দর্শনার্থীর বিনোদনের জন্য স্থাপিত হয়েছে মিনি রেলগাড়ি, জেট স্কি, আর্টিফিশিয়াল ওয়াটার ফলস, টয় ট্রেন, বিশালাকার চরকিসহ আরও অনেক মজার মজার রাইড। চরকিতে চড়লেই রংপুর শহরের বার্ডস আই ভিউ পাওয়া যাবে। প্রিয় শহরকে আবিষ্কার করা যাবে নতুন রূপে, নতুন আঙ্গিকে। এখানে কয়েকটি ক্যানেল আছে। সেখানে রাখা হয়েছে দেশি-বিদেশি রঙিন মাছ। পড়ন্ত বিকেলে মাছের খেলা দেখতে কার না ভালো লাগে বলুন! মন চাইলে স্পিডবোটেও ঘুরতে পারবেন এই পার্কে।
মূলত বিলের মূল আকর্ষণ হলো কৃত্রিম ঝরনা। দিনে তো বটে, সন্ধ্যার পর এই ঝরনা দেখতে বেশি আরাম লাগে। নানা রঙের আলোর ঝলকানিতে চোখ যেমন ভরে, তেমনি মনও। এ ছাড়া প্রাণ খুলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দেওয়ার জন্য চেয়ার বা বেঞ্চ তো রয়েছেই।

খাবারের ব্যবস্থা

পার্কের ভেতর আলাদা করে পাঁচটি সিটিং এরিয়ার রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এ ছাড়া বাইরে আছে মুখরোচক খাবারের ব্যবস্থাও। চটপটি, ফুচকা থেকে শুরু করে আরও খেতে পারবেন নানা স্বাদের খাবার।

কেনাকাটা

যারা কেনাকাটা করতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য আছে সুখবর। পার্কে ঘুরতে এসে করতে পারবেন কেনাকাটাও। কারণ এর ভেতরে আছে আধুনিক পোশাকের দোকান। শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সীর জন্য রয়েছে নানা রঙের, নানা ঢঙের পোশাক। ছোটদের বাহারি ডিজাইনের পোশাক, নারীর সালোয়ার-কামিজ, লেহেঙ্গাসহ পাবেন শাড়ি। আছে পুরুষের টি-শার্ট, পাঞ্জাবিও।

যেভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে বাসে যেতে পারেন রংপুর। ঢাকা থেকে রংপুর এসি ও নন-এসি বাসের ভাড়া হতে পারে ৫০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা। ট্রেন ও লোকাল বাসে করেও যাওয়া যাবে। এতে ভাড়া তুলনামূলক কম পড়বে।
রংপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রেই হনুমানতলা অবস্থিত। শহর থেকে দুটি পথে এই বিলে আসা যায়। একটি পথে, বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্রের পাশ থেকে সাগরপাড়া হয়ে আসতে হয়। এই পথে এলে সিটি চিকলি পার্কে আসা যাবে আগে।
অন্যদিকে, শহরের পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে দিয়ে হনুমানতলা বাজার পার হয়ে একটু সামনেই হাতের বামে পড়বে চিকলি ওয়াটার পার্কে ঢোকার প্রবেশ পথ। শহর থেকে রিকশা কিংবা অটো দিয়ে বিলে সহজেই ঘুরে আসা যায়। ভাড়া জনপ্রতি পড়বে ১০ টাকা। পার্কে পর্যাপ্ত পার্কিংয়ের জায়গাও রয়েছে। তাই প্রাইভেট কিংবা ভাড়া করা গাড়িও নিয়ে আসতে পারবেন।

স্বাধীনতার স্মৃতিচিহ্ন জল্লাদখানা বধ্যভূমি

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৩৪ পিএম
স্বাধীনতার স্মৃতিচিহ্ন জল্লাদখানা বধ্যভূমি
জল্লাদখানা বধ্যভূমি

মিরপুর-১০, ডি ব্লক, মাঝখান দিয়ে প্রশস্ত রাস্তা চলে গেছে কালশীর দিকে। রাস্তার দুই পাশে ঝুটের (গার্মেন্টস কাটপিস) বাজার। ছোট ছোট টিনের দোকান তাতে ঝুটভর্তি, কোলাহল, দরদাম চলছে হরদম। এ পথে সোজা চলে গেলে, রাস্তার শেষ মাথায় একটি স্থাপনা পত পত করে উড়ছে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। তোরণের দুই দিকে লাল জমিনে সাদা রঙ্গে লেখা ‘একাত্তরের গণহত্যা ও শহিদদের কথা বলবে শতকণ্ঠে জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠ’ ও ‘কান পেতে শুনি কী বলিতে চাইছে জল্লাদখানা বধ্যভূমি’।
একটা সিঁড়ি নেমে গেছে মূল স্থাপনার দিকে, সিঁড়ি ভেঙে ভেতরে ঢুকতেই কানে এল ঘণ্টার ধ্বনি। তিন থেকে চারজন স্কুলপড়ুয়া ছেলে ঘণ্টা বাজাচ্ছে। হাতের ডান দিকে প্রথমেই চোখে পড়বে একটা খোলামেলা ঘর। ঘরের মাঝখানে দুটি সিমেন্টের বেঞ্চ ও একটা টেবিল। চারকোনায় আরও চারটি টেবিল। কর্নার টেবিলগুলোতে বিভিন্ন ফাইলে লিপিবদ্ধ হয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বাঙালি হত্যার কালো ইতিহাস। মূল টেবিলে মন্তব্য খাতা।
দুজন লোককে বসে থাকতে দেখে তাদের পরিচয় জানতে চাইলাম। একজন এখানকার গার্ড আর অন্যজন মালি। তাদেরই পরম মমতায় বেড়ে উঠেছে এখানকার প্রত্যেকটি গাছ ও লতাপাতা।
জানতে চাইলাম, ‘এখানে ঘণ্টা কেন? ঘণ্টা দিয়ে কী বোঝায়?’
‘ঘণ্টা বাজিয়ে শহিদদের স্মরণ করা হয়, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত করা হয়। প্রকাশ পায় সত্য ও ন্যায়ের বাণী, চেতনার ঘণ্টা বলতে পারেন’, গার্ড উত্তর দিলেন।
তিনিই জাদুঘরটি ঘুরিয়ে দেখাতে লাগলেন। ভেতরের দেয়ালের চারপাশের বেদিতে মর্মর পাথরে খোদাই করা হয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন বধ্যভূমির নাম। ছয়টি কাচের বক্সে রাখা আছে ছয়টি বিভাগের সবচেয়ে বড় বধ্যভূমিগুলোর মাটি। মাঝখানের দেয়ালে রফিকুন নবী ও মুনিরুজ্জামানের তৈরি ভাস্কর্য ‘জীবন অবিনশ্বর’ এতে মৃত্যু ও ভীতির অমানিশা থেকে নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ব্যাপারটিকে তারা ফুটিয়ে তুলেছেন দক্ষ হাতে, পরম আবেগে।
ডানে শেষ কোনায় কাচে ঘেরা একটি ২০ ফিট প্রশস্ত স্তূপ। এটিই সেই এককালের অত্যন্ত প্রশস্ত ভয়াল মৃত্যুকূপ- পাকিস্তান আমলের ওয়াটার সেপটিক ট্যাংক! মুক্তিযুদ্ধকালীন পুরো ৯ মাস এখানে ধরে এনে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে অসংখ্য অসহায় মানুষকে।
১৫ নভেম্বর, ১৯৯১ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৪৬ পদাতিক ব্রিগেডের সহযোগিতায় এর খনন কাজ শুরু হয়। ২৩ নভেম্বর খনন কাজ শেষ হওয়ার পর এখান থেকে তিন ট্রাক হাড়গোড় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। উদ্ধার করা হয় ৭০টি মাথার খুলি ও ৫ হাজার ৩৯২টি অস্থি। এই হাড়গুলোর মালিকদের এই জল্লাদখানায় এনে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধকালে। 
পাশের ঘরটির সামনে লেখা ‘জুতা খুলে প্রবেশ করুন’। ভেতরে আরেকটি কাচে ঢাকা কূপ, ভয়াবহ ‘ওয়াটার সেফটি ট্যাঙ্ক’টির আরেকটি অংশ। কাচে ঢাকা একটি শোকেসে সাজানো আছে জামা, তসবিহ, স্যান্ডেলসহ কিছু নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র। এগুলো সেসব হতভাগ্য মানুষের ব্যবহার্য জিনিসপত্র যাদের ধরে আনা হতো ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে। হয়তো গভীর রাতে ঘুমন্ত কোনো শিশুর আলিঙ্গন থেকে ছাড়িয়ে আনা হয়েছিল তার বাবা কিংবা মাকে, হয়তোবা তাকেও। ভারী মন নিয়ে বাইরে আঙিনায় বের হয়ে আসলাম, তখনো দিনের আলো নেভেনি।

ইতিহাস
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মিরপুরের বিহারি অধ্যুষিত এলাকাগুলো সাধারণত বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছিল। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাঙালিদের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর বিহারি, রাজাকার, আলবদর, আল-শামস, তাদের ট্রেনিংপ্রাপ্ত জল্লাদ দিয়ে গলা কেটে বড় বড় সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে ফেলে রাখত।
এ বধ্যভূমি থেকে ৭০টি মাথার খুলি, ৫ হাজার ৩৯২টি অস্থিখণ্ড, মেয়েদের শাড়ি, ফ্রক, ওড়না, অলংকার, জুতা, তসবিসহ শহিদদের ব্যবহার্য নানা জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়েছিল।

বর্তমান অবস্থা
১৯৯৮ সালে তৎকালীন সরকার দেশের বধ্যভূমিগুলো চিহ্নিতকরণ ও সংস্কারের প্রকল্প গ্রহণ করে এবং ১৯৯৯ সালের ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের সহযোগিতায় মিরপুরের দুটি জায়গায় খননকাজ চালায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। আবিষ্কৃত হয় দুটি বধ্যভূমি। এরপর এ দুটিসহ পুরো মিরপুরে মোট চারটি বধ্যভূমি চিহ্নিত করা হয়।
২০০৮ সালে তৎকালীন সরকার পুনরায় জল্লাদখানা কর্মসূচি শুরু করে এবং স্থপতি ও কবি রবিউল হুসাইনের সার্বিক পরিকল্পনায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রচেষ্টায় তৈরি করা হয় জল্লাদখানা বধ্যভূমি স্মৃতিপীঠ। এর পূর্বপাশে রয়েছে টেরাকোটা ইট ও লোহার সমন্বয়ে তৈরি শিল্পী রফিকুন নবী ও মুনিরুজ্জামানের যুগ্মভাবে করা একটি ভাস্কর্য ‘জীবন অবিনশ্বর’। ২০০৭ সালের ২১ জুন এই স্থাপনাটির দ্বার উন্মোচন করা হয়।
প্রতিদিন গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ দর্শনার্থী এই স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শন করেন। উদ্বোধনের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৮ লাখ মানুষ এখানে এসেছেন। নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে এবং সেই সময়ের বর্বরতার সাক্ষ্য প্রত্যক্ষ করতে সবার, বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের এই বধ্যভূমি পরিদর্শন করা উচিত। এই বধ্যভূমি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় স্বাধীনতার মূল্য কত বড় এবং এই স্বাধীনতা রক্ষা করা আমাদের পবিত্র কর্তব্য।


জল্লাদখানা বধ্যভূমি যাওয়ার উপায়
ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত জল্লাদখানা বধ্যভূমি যাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে। মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর থেকে সহজেই এই স্থানে যাওয়া যায়। গোলচত্বর থেকে ১১ নম্বর সেকশনের দিকে যেতে বেনারসি পল্লির পাশেই এর অবস্থান। আপনি বাস, রিকশা, অটোরিকশা অথবা ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন। মিরপুর ১০ নম্বর থেকে যেকোনো রিকশা বা অটোরিকশাওয়ালাকে জল্লাদখানা বধ্যভূমি বললেই তারা আপনাকে সেখানে নিয়ে যাবে। বাসে করে যেতে চাইলে, মিরপুর ১০ নম্বর থেকে যেসব বাস ১১, ১২ নম্বর সেকশনের দিকে যায় সেগুলোতে উঠতে পারেন। বেনারসি পল্লিতে নেমে কিছুটা হাঁটলেই জল্লাদখানা বধ্যভূমি পৌঁছে যাবেন। গাড়িতে করে গেলে, মিরপুর ১০ নম্বর থেকে ১১ নম্বরের দিকে রাস্তা ধরে কিছুটা এগোলেই বেনারসি পল্লির পাশে জল্লাদখানা বধ্যভূমি দেখতে পাবেন।

ঢাকায় আরও দর্শনীয় স্থান
ঢাকা জেলা বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের প্রাণকেন্দ্র এবং দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রবিন্দু। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত এই জেলা তার ঐতিহাসিক স্থাপনা, আধুনিক স্থাপত্য এবং শহুরে জীবনের বৈচিত্র্যের জন্য পরিচিত। ঢাকার সেরা দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে লালবাগ কেল্লা, যা মুঘল স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন; জাতীয় সংসদ ভবন, টাকা জাদুঘর, চিড়িয়াখানা এবং আহসান মঞ্জিল, যা ঢাকার জমিদার আমলের স্মৃতিচিহ্ন। এছাড়া, সদরঘাট, ঢাকেশ্বরী মন্দির এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধ ঢাকার ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিলিত রূপকে তুলে ধরে।

ঘুরে আসুন দার্জিলিং টিলা

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩৪ পিএম
ঘুরে আসুন দার্জিলিং টিলা
ছবি সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের একেক চা বাগানের সৌন্দর্য একেক রকম। নয়নাভিরাম সেই সৌন্দর্যের টানে বছরজুড়েই পর্যটকদের আনাগোনা লেগে থাকে এই চায়ের রাজধানীতে। সম্প্রতি শ্রীমঙ্গলে পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে এমআর খান চা বাগানের ‘দার্জিলিং টিলা’।
শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে এমআর খান চা বাগানের অবস্থান। বাগানের ৭ নম্বর সেকশনটি অনেকটাই ভারতের দার্জিলিংয়ে অবস্থিত চা বাগানের মতো। সাজানো-গোছানো জায়গাটি তাই সবার কাছে পরিচিতি পাচ্ছে দার্জিলিং টিলা নামে। 
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমের কারণে কয়েক মাস ধরে পর্যটকদের কাছে জায়গাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ছুটির দিনগুলোয় এই জায়গায় স্থানীয় লোকজন ও পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। একসময় জায়গাটিতে যেতে অনুমতির প্রয়োজন হলেও এখন লোকজন বেশি হওয়ায় চা বাগান কর্তৃপক্ষও জায়গাটি প্রায় উন্মুক্ত করে দিয়েছে। চা বাগানে প্রবেশের সময় নাম-ঠিকানা লিখে ভেতরে যেতে পারবেন দর্শনার্থীরা।
এমআর খান চা বাগানের দার্জিলিং টিলায় গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ঘুরতে এসেছেন পর্যটকরা। কেউ এসেছেন পরিবার নিয়ে, কেউ বন্ধুদের সঙ্গে। ছবির মতো সাজানো চা বাগানে ঘুরে ঘুরে মুঠোফোনে ছবি তুলছেন তারা। শ্রীমঙ্গলের অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রের চেয়ে এখন এই জায়গায় ভিড় একটু বেশিই দেখা যায়। মোটরসাইকেল, জিপ ও অন্যান্য যানবাহনে করে লোকজন বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানে যাওয়া-আসা করছেন।
খুলনা থেকে আসা এক পর্যটক বলেন, ‘শ্রীমঙ্গলে এর আগেও কয়েকবার এসেছি। এই জায়গার খোঁজ পাইনি। এবার আসার সময় ফেসবুকে দেখে এসেছি দার্জিলিং টিলাটি। শ্রীমঙ্গল এসেই এখানে এলাম। বেশ মনোমুগ্ধ কর জায়গা। চা গাছগুলো খুবই সুন্দর করে লাগানো। টিলার ওপর থেকে দেখতে খুব ভালো লাগে।’ এদিকে ঘুরতে আসা মানুষের অনেকেই প্লাস্টিকের বোতল, খাবারের প্যাকেটের মতো ময়লা-আবর্জনা ফেলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ চা গাছের পাতা ছিঁড়ে জায়গাটি নষ্ট করছেন।
এমআর খান চা বাগানের স্বত্বাধিকারী সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, বাগানের মধ্যবর্তী স্থানের ৭ নম্বর সেকশনটি দেখার জন্য আগেও বিভিন্ন সময় মানুষ আসতেন। এখন কয়েক মাস ধরে প্রচুর মানুষের ভিড় হচ্ছে। স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি দেশ-বিদেশের পর্যটকরা আসছেন। এখানে লোকজন আসাতে ভালো লাগছে, আবার ক্ষতিও হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, অনেকে ময়লা ফেলে যাচ্ছেন। গাছের পাতা তুলে নিচ্ছেন। ক্ষতি হলেও কাউকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। সবাই ইচ্ছেমতো আসছেন, দেখছেন, ছবি তুলছেন। এই জায়গায় পর্যটকদের জন্য কিছু স্থাপনাও করা হয়েছে। যারা এখানে আসছেন, তাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে, জায়গাটা নষ্ট করতে কেউ আসবেন না।

দার্জিলিং টিলার অবস্থান এবং বিশেষত্ব
দার্জিলিং টিলা শ্রীমঙ্গলের এমআর খান চা বাগানের ৭ নম্বর সেকশনে অবস্থিত। এটি শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে রাধানগর এলাকায়। এলাকাটি চা বাগানের সবুজ সমারোহে ঘেরা এবং টিলাটি দার্জিলিংয়ের চা বাগানের আদলে তৈরি। স্থানীয়রা তাই একে দার্জিলিং টিলা নামে ডাকে। দার্জিলিং টিলায় প্রকৃতির অপূর্ব মেলবন্ধন। চারদিকে সবুজ চা গাছের সারি, উঁচু-নিচু টিলা এবং আঁকাবাঁকা পথ এক নজরেই মন জয় করে। স্থানটির পরিবেশ অত্যন্ত শান্ত, যেখানে পর্যটকরা প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্য অনুভব করতে পারেন। শীতল বাতাস, পাখির কিচিরমিচির এবং টিলার ওপরে দাঁড়িয়ে চা বাগানের চমৎকার দৃশ্য পর্যটকদের স্মৃতির পাতায় অমলিন হয়ে থাকবে।

দার্জিলিং টিলায় করণীয়
টিলার সৌন্দর্য উপভোগ: টিলার ওপরে উঠে চারপাশের সবুজ চা বাগান এবং পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হোন।
ছবি তোলা: সবুজ চা বাগান এবং আঁকাবাঁকা পথের পাশে দাঁড়িয়ে স্মৃতির ফ্রেমে ধরে রাখুন আপনার মুহূর্তগুলো।
হাঁটাহাঁটি: টিলার আঁকাবাঁকা পথ ধরে হাঁটুন এবং প্রকৃতির সৌন্দর্যে হারিয়ে যান।
পিকনিক: পরিবার এবং বন্ধুবান্ধব নিয়ে দিন কাটানোর জন্য এটি একটি আদর্শ স্থান।
চা বাগানের জীবনধারা পর্যবেক্ষণ: স্থানীয় চা শ্রমিকদের জীবনযাত্রা কাছ থেকে দেখুন এবং তাদের সঙ্গে আলোচনা করুন।

দার্জিলিং টিলা যাওয়ার উপায়
দার্জিলিং টিলায় যেতে হলে প্রথমে আপনাকে শ্রীমঙ্গলে পৌঁছাতে হবে। ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল যাওয়ার জন্য ট্রেন, বাস বা ব্যক্তিগত যানবাহন ব্যবহার করা যায়।
ট্রেন: ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলের জন্য পারাবত এক্সপ্রেস এবং উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন সহজলভ্য। ট্রেনে ভ্রমণ করলে সময় লাগে প্রায় ৪-৫ ঘণ্টা।
বাস: ঢাকার সায়েদাবাদ বা মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে শ্রীমঙ্গলের উদ্দেশে বাস ছেড়ে যায়। জনপ্রিয় বাস সার্ভিসের মধ্যে রয়েছে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন এবং সৌদিয়া। ভ্রমণের সময় লাগে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা।
শ্রীমঙ্গল শহরে পৌঁছানোর পর স্টেশন রোড থেকে পেট্রল পাম্প এলাকায় যেতে হবে।
সিএনজি অটোরিকশা: পেট্রল পাম্প এলাকা থেকে মোহাজেরাবাদগামী সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে এমআর খান চা বাগানের প্রবেশপথে নামতে হবে। সেখান থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার হেঁটে অথবা রিজার্ভ সিএনজি বা মোটরসাইকেলে সরাসরি দার্জিলিং টিলায় পৌঁছানো যায়।
ব্যক্তিগত যানবাহন: প্রাইভেট গাড়ি বা মোটরসাইকেল ব্যবহার করলে সরাসরি টিলার চেকপোস্ট পর্যন্ত পৌঁছানো যাবে। তবে চা বাগানে প্রবেশের জন্য পরিচয় লিপিবদ্ধ করতে হতে পারে।

শ্রীমঙ্গলে কোথায় থাকবেন
শ্রীমঙ্গলে পর্যটকদের থাকার জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরনের আবাসনের ব্যবস্থা। এখানে আপনি বাজেট-বান্ধব হোটেল থেকে শুরু করে বিলাসবহুল রিসোর্ট পর্যন্ত সবই পাবেন।

কক্সবাজারে ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ভিড়

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০১:২৬ পিএম
কক্সবাজারে ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ভিড়
ছবি : খবরের কাগজ

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পুরো রমজান মাস ছিল প্রায় সুনসান। হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউস ও রিসোর্টগুলো ছাড় দিয়েও অতিথি পায়নি। বন্ধ ছিল পর্যটক-নির্ভর রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য ব্যবসা। সেই নীরবতা ভেঙেছে ঈদুল ফিতরের ছুটি। এই ছুটিতে মানুষের ভিড় বেড়েছে। ছুটি উপলক্ষে কক্সবাজারের ৫১৬টি হোটেল-মোটেলের ৮০ শতাংশই অগ্রিম বুকিং হয়ে যায়।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) দুপুরে সৈকতের লাবনী, কলাতলী ও সুগন্ধা পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, চারদিকে মানুষ আর মানুষ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভ্রমণে এসেছেন সবাই। কেউ সমুদ্রে স্নানে ব্যস্ত আবার কেউ ছাতার নিচে নেচে-গেয়ে উদযাপন করছেন ঈদের আনন্দ।

পর্যটন ব্যবসায়ীরা ধারণা করছেন, এই পাঁচ দিনে গড়ে দেড় লাখ করে সাড়ে সাত লাখ পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

তারা বলছেন, এবারের ঈদে ৯ দিনের ছুটিতে চাকরিজীবীদের বড় একটি অংশ সপরিবারে বেড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন। আর লম্বা ছুটি বা বিশেষ দিনে ভ্রমণপিপাসুদের বরাবরই পছন্দের জায়গা কক্সবাজার। এখানে সমুদ্র সৈকত ছাড়াও পাহাড়, নদী, ছড়া, ঝিরি-ঝরণাসহ প্রকৃতির অপরূপ সব সৌন্দর্য দেখার সুযোগ রয়েছে।

হোটেল-মোটেল মালিকরা জানান, রমজান মাসের আগের চার মাসে বিপুলসংখ্যক পর্যটক কক্সবাজার ঘুরতে এসেছেন। প্রতি সপ্তাহে গড়ে আড়াই থেকে তিন লাখ পর্যটক এসেছিলেন। আর গত বছর ঈদুল ফিতরের ছুটিতে অন্তত ১০ লাখ পর্যটকের সমাগম হয়েছিল। এবার অনেকেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে অনলাইন বা ফোনে যোগাযোগ করে কক্ষ বুকিং দিয়েছেন। ২ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৮০ শতাংশ কক্ষ বুকিং রয়েছে। কক্সবাজার শহর ও মেরিন ড্রাইভের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস ও রিসোর্টে প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার পর্যটক থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।

কক্সবাজার হোটেল ও গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, আবহাওয়া যেমনই থাকুক, ঈদুল ফিতরে পর্যটন আবারও চাঙা হবে। তবে, বন্ধের ১১ দিনই ব্যবসা জমলে ব্যবসায়ীরা আরও লাভবান হতো। 

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট ক্লাব ও ট্যুরস অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (টুয়াক) সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, পরিচ্ছন্ন ভ্রমণপিপাসুরা ভোগান্তি এড়িয়ে নিরাপদ অবকাশ যাপনে পছন্দের হোটেল-মোটেল-কটেজে এরইমধ্যে বুকিং দিয়েছেন। এতে গরমেও পর্যটন ব্যবসা চাঙা হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ২৬ মার্চের পর বন্ধে রমজানেরও কিছু বুকিং আছে জেনেছি, তবে তা উল্লেখ করার মতো নয়। কিন্তু ১ থেকে ৫ এপ্রিলের জন্য বুকিং তুলনামূলক ভালো হয়েছে।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী বলেন, অতীতেও ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে কক্সবাজারে। এবারও এমনটি হতে পারে। এই সময়ে বৃষ্টি হলে সৈকতের চিত্র আরও মোহনীয় হয়ে উঠবে। ঈদ উপলক্ষে পর্যটকের ঢল নামবে এই বেলাভূমিতে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। 

সি সেফ লাইফগার্ডের সিনিয়র লাইফগার্ড জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘রমজানে কক্সবাজারে পর্যটক ছিল না বলেই চলে। এ সুযোগে লাইফগার্ড কর্মীরা দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজেদের ট্রেনিং কার্যক্রমও চালিয়েছেন। এখন ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের সেবা দিতে সবাই প্রস্তুত।’

টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, পর্যটকদের অতিরিক্ত চাপ বাড়ার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সমুদ্র সৈকত ও পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষণিক টুরিস্ট পুলিশের টহল রয়েছে। টুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তৎপর রয়েছে।

মুহিববুল্লাহ মুহিব/অমিয়/

দিনাজপুরের পর্যটনকেন্দ্র দর্শনার্থীর অপেক্ষায়

প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৫, ০১:১৫ পিএম
দিনাজপুরের পর্যটনকেন্দ্র দর্শনার্থীর অপেক্ষায়
দিনাজপুর রাজবাড়ি। ছবি: সংগৃহীত

ঈদ-পরবর্তী দিনাজপুরের বিনোদন কেন্দ্রগুলোকে দর্শনার্থীদের জন্য নানা সাজে সজ্জিত করা হয়েছে। দিনাজপুরের উল্লেখযোগ্য বিনোদন স্পটের মধ্যে রয়েছে স্বপ্নপুরী, দ্য গ্র্যান্ড দাদুবাড়ি রিসোর্ট, চঞ্চল রিসোর্ট, রামসাগর, সুখসাগর, মাতাসাগরের বিশাল জলরাশির মতো বিনোদন কেন্দ্র। এ ছাড়া দিনাজপুরের সিটি পার্কসহ বেশ কিছু বিনোদন কেন্দ্র দর্শনার্থীদের আগমন ঘিরে অপেক্ষার প্রহর গুনছে।

নবাবগঞ্জের আফতাবগঞ্জে জেলার সবচেয়ে বৃহত্তম পিকনিক বা বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘেরা স্বপ্নপুরী। স্বপ্নপুরীর ভেতর দর্শনার্থীদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে দ্য গ্র্যান্ড দাদুবাড়ি রিসোর্ট। রিসোর্টটি নিজস্ব মহিমা ও প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত বলে সেখানে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক দর্শনার্থীর আগমন ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে। দর্শনার্থীদের থাকার জন্য এখানে রয়েছে আবাসিক হোটেল। 

একইভাবে দিনাজপুরের বিরলের চঞ্চল রিসোর্টটি দর্শনার্থীদের আগমনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া দিনাজপুরের উল্লেখযোগ্য পর্যটন এলাকার মধ্যে রয়েছে রামসাগরের বিশাল পুকুর, রাজবাড়ী, সুখসাগর, মাতাসাগরের মতো বিনোদনপিপাসুদের ঐতিহাসিক স্থান। কান্তজির মন্দির ও নয়াবাদ মসজিদও আকর্ষণীয় বিনোদন এলাকা হিসেবে খ্যাত। এখানে ছুটির সময়ে অনেকেই বেড়াতে আসেন এবং সে উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় বিনোদন স্পটগুলো সাজানো হয়েছে। দিনাজপুরের সবগুলো পর্যটন কেন্দ্র ও স্থান এখন দর্শনার্থীদের অপেক্ষায় রয়েছে।

দিনাজপুর পুলিশ সুপার মারাফাত হোসেন মারুফ বলেন, দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে দর্শনার্থীরা যাতে নির্ভয়ে-নিরাপদে বেড়াতে পারেন সে ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।