ঢাকা ৪ ফাল্গুন ১৪৩১, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
English
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৪ ফাল্গুন ১৪৩১

পাবনা জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ

প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫২ পিএম
আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫২ পিএম
পাবনা জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ
তাড়াশ জমিদার ভবন। ছবি: সংগৃহীত

সুচিত্রা সেনের স্মৃতিবিজড়িত একটি জেলা পাবনা। এ জেলা আগে থেকেই বেশ সমৃদ্ধ। এখানে দেখার মতোও আছে অনেককিছু। পাবনা জেলার দর্শনীয় স্থান ও জনপ্রিয় খাবার সম্পর্কে জানাচ্ছেন মোহনা জাহ্নবী

সদর উপজেলা

-কাচারী পাড়া জামে মসজিদ
-দুবলিয়া মেলা
-কিংবদন্তী নায়িকা সুচিত্রা সেনের স্মৃতি সংগ্রহশালা
-কবি বন্দে আলী মিয়ার বাড়ি
-জোড় বাংলা মন্দির বা গোপীনাথ মন্দির
-তাড়াশ জমিদার ভবন
-পাবনা মানসিক হাসপাতাল
-শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের সৎসঙ্গ (আশ্রম-মন্দির)
-রত্নদ্বীপ রিসোর্ট
-রূপকথা ইকো রিসোর্ট
-এডরুক লিমিটেড

আটঘরিয়া উপজেলা

-চন্দ্রাবতীর ঘাট ও বংশীপাড়া স্মৃতিসৌধ
-বেরুয়ান জামে মসজিদ
-চাচকিয়ার তাঁত শিল্প
-চন্দ্রনাথ সেনের জমিদার বাড়ি

ঈশ্বরদী উপজেলা

-রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র
-রাশিয়ান সিটি
-ঈশ্বরদী রেল জংশন
-হার্ডিঞ্জ ব্রিজ
-লালন শাহ সেতু
-ঈশ্বরদী বিমানবন্দর
-রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল
-ফুরফুরা শরীফ
-বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্র
-চিনিকল

চাটমোহর উপজেলা

-শিতলাই জমিদার বাড়ি
-প্রমথ চৌধুরীর পৈতৃক নিবাস
-শাহী মসজিদ
-মথুরাপুর মিশন

ফরিদপুর উপজেলা

-রাজা রায় বাহাদুরের বাড়ি বা বনওয়ারী নগর রাজবাড়ি

বেড়া উপজেলা

-হাটুরিয়া জমিদার বাড়ি বা ১৩ জমিদার বাড়ি

সাঁথিয়া উপজেলা

-ক্ষেতুপাড়া জমিদার বাড়ি

সুজানগর উপজেলা

-গাজনার বিল
-তাঁতীবন্দ জমিদার বাড়ি
-পাবনার ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প (দোগাছি)
-আজিম চৌধুরী জমিদার বাড়ি

পাবনা জেলার জনপ্রিয় খাবার 

-ইন্দুবালা ভাতের হোটেল
-প্যারাডাইস সুইটস এর লুচি, সবজি এবং মিষ্টি
-জলযোগ হোটেলের খাবার
-সেতু হোটেলের গরুর বট ও কালাভুনা
-রাশিয়ান সিটির খাবার
-ঘি

জাহ্নবী

 

কুঠিবাড়ির পরতে পরতে বিশ্বকবির ছোঁয়া

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:১৫ পিএম
আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:১৭ পিএম
কুঠিবাড়ির পরতে পরতে বিশ্বকবির ছোঁয়া
কুঠিবাড়িতে বসেই কবি গীতাঞ্জলি কাব্যের ইংরেজি অনুবাদ শুরু করেন

সাহিত্য ও সংস্কৃতির রাজধানী হিসেবে পরিচিত কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার একটি গ্রাম শিলাইদহ। প্রমত্তা পদ্মা নদীর কোলঘেঁষে গড়ে ওঠা গ্রামটির পূর্ব নাম খোরশেদপুর। এখানেই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কুঠিবাড়ির অবস্থান। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনন্য সাহিত্যকর্ম সৃষ্টিতে কুঠিবাড়ির রয়েছে বিশেষ অবদান।

মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আবৃত এই কুঠিবাড়ি এবং পদ্মা নদী ও পদ্মার বুক থেকে বেরিয়ে আসা গড়াই নদীর বুকে রচিত হয়েছে বিশ্বনন্দিত কবির সাহিত্যকর্মের শ্রেষ্ঠাংশ। স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহকে তার ‘যৌবন ও পৌঢ় বয়সের সাহিত্যরস সাধনার তীর্থস্থান’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। শিলাইদহে বসবাস ও জমিদারি পরিচালনাকালে তিনি তার বিপুল সৃষ্টির দ্বারা বাংলা সাহিত্যভাণ্ডার সমৃদ্ধ করেন।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঠাকুরদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮০৭ সালে কুষ্টিয়া অঞ্চলের জমিদারি পান। পরে ১৮৮৯ সালে রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে আসেন। বন্যার সময় পদ্মার ভাঙনে পুরোনো কুঠিবাড়ির নিকটবর্তী এলাকা পর্যন্ত বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে এই পুরোনো কুঠিবাড়িটি ভেঙে ফেলা হয় এবং পুরোনো ভবনসামগ্রী দিয়েই নতুন কুঠিবাড়িটি নির্মাণ করা হয়। ১৯০১ সাল পর্যন্ত তিনি অনিয়মিত বিরতিতে এখানে জমিদারি পরিচালনা করেন। এই কুঠিবাড়ি থেকে তিনি নওগাঁর পতিসর ও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের জমিদারি দেখাশোনা করতেন। রবীন্দ্রনাথের অবস্থানকালে স্যার জগদীশচন্দ্র বসু (আচার্য), দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, প্রমথ চৌধুরী, মোহিতলাল মজুমদার, লোকেন্দ্রনাথ পালিতসহ তৎকালীন বঙ্গের অনেক খ্যাতনামা বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবী শিলাইদহে আসেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহে এসে জমিদারির পাশাপাশি মশগুল ছিলেন কাব্য ও সাহিত্য সাধনায়। এই কুঠিবাড়ি ও পদ্মার বুকেই রচিত হয় রবীন্দ্র-সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফসল সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালি, ক্ষণিকা, নৈবেদ্য ও খেয়ার বেশির ভাগ কবিতাসহ অনেক গল্প, নাটক, উপন্যাস, পত্রাবলী ও গীতিমাল্য। এখানে বসেই কবি গীতাঞ্জলি কাব্যের ইংরেজি অনুবাদ শুরু করেন। যা তাকে এনে দিয়েছে বিশ্বখ্যাতি এবং বাংলা সাহিত্যকে পৌঁছে দিয়েছে সুমহান উচ্চতায়। আর তিনি হয়েছেন বিশ্বকবি। কবি হিসেবেই ১৯১৩ সালে তাকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়, যা কবিগুরুর পর বাংলা সাহিত্যের আর কোনো কবি-সাহিত্যিকের ভাগ্যে জোটেনি!
১৯৫৮ সাল থেকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ব্যবস্থাপনায় শিলাইদহ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িটি গৌরবময় স্মৃতিরূপে সংরক্ষিত আছে। ৩২ বিঘা জায়গা ঘিরে পৌনে চার বিঘা জমির ওপর ঢেউ আকৃতির বেষ্টনী প্রাচীর দিয়ে ঘেরা বাড়িটির দক্ষিণ দিকে আছে একটি আকর্ষণীয় প্রবেশ তোরণ। তিনতলা বাড়িটির নিচ ও দ্বিতীয় তলায় ১৬টি কক্ষেই কবি রবীন্দ্রনাথ, শিল্পী রবীন্দ্রনাথ, জমিদার রবীন্দ্রনাথ, কৃষকবন্ধু রবীন্দ্রনাথ অর্থাৎ নানা বয়সের বিচিত্র ভঙ্গির রবীন্দ্রনাথের ছবি। বাল্যকাল থেকে মৃত্যুশয্যার ছবি পর্যন্ত সংরক্ষিত আছে। তা ছাড়াও রয়েছে শিল্পকর্ম এবং তার ব্যবহার্য আসবাবপত্র। কবিগুরুর ব্যবহার্য জিনিসপত্রগুলোর মধ্যে আছে চঞ্চলা ও চপলা নামের দুটো স্পিডবোট, আট বেহারার পালকি, কাঠের চেয়ার, টি-টেবিল, সোফা সেট, ইজিচেয়ার, পালংক ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিস।
মনোরম কুঠিবাড়িটিকে ঘিরে রয়েছে আম, কাঁঠাল ও অন্যান্য সবুজ বৃক্ষের সমারোহ। কুঠিবাড়ির পশ্চিম দিকে এগোলে দেখা মেলে শান বাঁধানো বকুলতলার পুকুর ঘাট। যেখানে বসে কবিগুরু লিখেছিলেন ‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন’ গানটি। পুকুর ধারে বসে এই গানটি গেয়ে কবিগুরুর সময়কার আবহ তৈরি করে আপনার ভ্রমণপিপাসু সত্তাকে দিতে পারবেন কবিগুরুর নিবিড় ছোঁয়া- যেন কুঠিবাড়ির পরতে পরতে বিশ্বকবির স্মৃতি নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। ভ্রমণপিপাসু যে কেউই মুহূর্তের জন্য ১৯ শতকের শেষদিকে ফিরে যেতে বাধ্য!

যেভাবে যাবেন কুঠিবাড়ি
ঢাকা থেকে সরাসরি বাস ও ট্রেনযোগে কুষ্টিয়া যাওয়া যায়। বাসে গেলে কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে নিউ এসবি সুপার ডিলাক্স, শ্যামলী, হানিফ বাসে কুষ্টিয়ার মজমপুর গেটে নেমে যেতে হবে। অন্যদিকে ট্রেনে যেতে চাইলে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চিত্রা ও বেনাপোল এক্সপ্রেসে যেতে পারবেন। কুষ্টিয়া শহর থেকে অটোরিকশা, সিএনজি, ইজিবাইক ও অন্যান্য বাহনযোগে সহজে এবং কম খরচে কুঠিবাড়ি যাওয়া যায়।

টিকিটের মূল্য ও প্রবেশের সময়সূচি
গ্রীষ্মকালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি জাদুঘর প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। আর শীতকালে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে। তবে প্রতিদিন বেলা ১টা থেকে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত জাদুঘর সাময়িক বিরতিতে বন্ধ থাকে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি জাদুঘরটি সপ্তাহের প্রতি রবিবার পূর্ণ দিন বন্ধ থাকে এবং সোমবার বেলা ২টা থেকে খোলা থাকে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি জাদুঘরের প্রবেশ টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ৩০ টাকা এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রবেশ টিকিটের মূল্য ৫ টাকা। সার্কভুক্ত দেশের দর্শনার্থীদের ৫০ টাকা এবং অন্যান্য বিদেশি পর্যটকের জন্য টিকিটের মূল্য ১০০ টাকা।

কোথায় থাকবেন
কুষ্টিয়া শহরে মোটামুটি মানের বেশকিছু আবাসিক হোটেল আছে। আপনার পছন্দমতো যেকোনো হোটেল ঠিক করে নিতে পারবেন। একটু ভালো মানের মধ্যে রয়েছে হোটেল রিভার ভিউ, হোটেল নূর ইন্টারন্যাশনাল। এ ছাড়া মজমপুর ও এনএস রোডে বেশকিছু মধ্যম মানের হোটেল রয়েছে।

কোথায় খাবেন
খাওয়া-দাওয়ার জন্য বেশকিছু ভালো মানের হোটেল-রেস্টুরেন্ট আছে। কোর্ট স্টেশন এলাকার হোটেল শফিতে খেয়ে দেখতে পারেন। এ ছাড়া জাহাঙ্গীর হোটেল, শিল্পী হোটেল, খাওয়া-দাওয়া হোটেলগুলোতে খেতে পারেন। আর কুষ্টিয়ার বিখ্যাত তিলের খাজা ও কুলফি মালাই অবশ্যই খাবেন।

কুষ্টিয়া জেলার আরও দর্শনীয় স্থান
কুষ্টিয়া জেলার দর্শনীয় স্থান ও ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে অন্যতম হলো- ফকির লালন সাঁইজির মাজার, মীর মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটা, লালন শাহ সেতু, জিউর মন্দির ইত্যাদি।

বান্দরবানে দেবতাখুম ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৩ এএম
আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:১১ এএম
বান্দরবানে দেবতাখুম ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
ছবি : খবরের কাগজ

বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার অন্যতম পর্যটন স্পট দেবতাখুম দেশি-বিদেশি সব পর্যটকের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার থেকে পর্যটকরা দেবতাখুম পরিদর্শনে যেতে পারবেন।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আর রিনির স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জেলা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও সমন্বয়সংক্রান্ত কোর কমিটির গত ১৬ জানুয়ারি সভার সিদ্ধান্ত এবং রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত ৪ ফেব্রুয়ারির একটি পত্রের আলোকে বিষয়টি বিবেচনাপূর্বক মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) থেকে দেবতাখুম পর্যটনকেন্দ্র সব পর্যটকের জন্য উন্মুক্ত করা হলো।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আর রিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে বান্দরবানে সন্ত্রাসীদের ধরতে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান। যে কারণে রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচি উপজেলা নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল।

তবে পরিস্থিতি উন্নতি হওয়া ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকায় শুধু রোয়াংছড়ি উপজেলার দেবতাখুমে ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে সব পর্যটক ভ্রমণ করতে পারবেন।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসের দিকে জেলার দুর্গম এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বেড়ে যায়।

সন্ত্রাসীদের ধরতে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হয়। তাই পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কয়েক দফায় জেলার থানচি, রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় দেশি-বিদেশি সব পর্যটকের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে জেলা প্রশাসন। দেবতাখুম উন্মুক্ত হলেও রুমা ও থানচি উপজেলায় নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল।

রিজভী রাহাত/জোবাইদা/ 

‘মেঘের সমুদ্র’ সাজেকে পর্যটকের ঢল

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:১৪ এএম
আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৬ এএম
‘মেঘের সমুদ্র’ সাজেকে পর্যটকের ঢল
রাঙামাটির সাজেক ভ্যালিতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। ছবি : খবরের কাগজ

পর্যটকদের নিত্য পদচারণায় মুখর থাকে ‘মেঘের সমুদ্র’ খ্যাত রাঙামাটির সাজেক ভ্যালি। বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি পর্যটক আসেন এখানে। ছুটির দিন হওয়ায় গত শুক্রবারও সাজেকে নানা বয়সী পর্যটকের ঢল নামে। তবে আবাসনের সীমাবদ্ধতা থাকায় এবং আগাম কক্ষ বুকিং না দেওয়ায় বিনোদনপ্রিয় অনেক পর্যটকই পড়েন বিপাকে।

শুক্রবার সাজেক ভ্যালিতে প্রায় ছয় হাজার পর্যটক ভ্রমণে যান, যা ধারণক্ষমতার তুলনায় অনেক বেশি। পর্যটকদের এই অতিরিক্ত ভিড় থাকার জায়গার সংকট দেখা দেয়। অনেক পর্যটক বাধ্য হয়ে সাজেক থেকে ফিরে যান। আবার কেউ কেউ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য থেকে যান রিসোর্ট ও কটেজের বারান্দায়, স্থানীয়দের বাড়িঘরে।

মূলত নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার, মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশ, উন্নত খাবার ও পানীয় ব্যবস্থার কারণে সাজেক পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। সাজেকে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত কংলাক পাহাড়, ঐতিহ্যবাহী লুসাই ভিলেজ এবং পাহাড়ের ভাজে ভাজে লুকানো সাদা মেঘের মিতালি। আর তাই একটু সুযোগ পেলে দর্শনার্থীরা ছুটে আসেন এখানে।

সাজেকে বর্তমানে ১১৬টি রিসোর্ট ও কটেজ রয়েছে। যেখানে সর্বোচ্চ ৪ হাজার পর্যটক রাত্রিযাপন করতে পারেন। এসব রিসোর্ট-কটেজ এখন পুরোদস্তুর ভরপুর। বর্তমানে ধারণ ক্ষমতার চেয়েও বেশি পর্যটক অবস্থান করছেন এখানে। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় সবকটি রিসোর্ট আগাম বুকিং হয়ে আছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সাজেক জিপ সমিতির তথ্য বলছে, সাজেকে শুক্রবার সকালে ও বিকেলে দুই দফায় জিপ, পিকআপ ভ্যান, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল নিয়ে প্রায় ছয় হাজার পর্যটক প্রবেশ করেন। পর্যটকের বিশাল সমাগমের কারণে অনেকেই রিসোর্ট-কটেজ পাননি। যাদের থাকার জায়গা হয়নি, তাদের জন্য সমিতির পক্ষ থেকে সাজেকের স্কুল, ক্লাবঘরসহ অন্য জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়। আবার অনেক পর্যটক গাড়িতেই রাত কাটিয়েছেন।

সাজেকের অবকাশ ইমানুয়েল ইকো রিসোর্টের ব্যবস্থাপক নাজমুল ইসলাম আসিফ বলেন, ‘শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সাজেকে প্রচুরসংখ্যক পর্যটকের উপস্থিতি ছিল। যারা অগ্রিম বুকিং দিয়ে আসেননি তারা রুম পাননি। তবে আমরা রিসোর্টের বারান্দায় ও ছাদে পর্যটকদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। পাশাপাশি কটেজ মালিক সমিতির পক্ষ থেকে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে আমাদের শতভাগ বুকিং রয়েছে।’

সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মণ বলেন, ‘শুক্রবার সাজেকে পর্যটকের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক অনেক বেশি। তাই আমরা অনেক পর্যটককে কক্ষ ভাড়া দিতে পারিনি। আগাম বুকিং না নিয়ে আসায় অনেকেই ফিরে গেছেন। আর যারা থেকে গেছেন তারা মানুষের বাড়িঘরে, হোটেলের বারান্দায়-যে যেভাবে পেরেছেন রাত কাটিয়েছেন।’

এদিকে সাজেকের মতো শুক্রবার রাঙামাটি শহর, কাপ্তাইসহ জেলার বিনোদন কেন্দ্রগুলোতেও পর্যটকের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে রাঙামাটি শহর, ঝুলন্ত সেতু, কাপ্তাই হ্রদে নৌভ্রমণ, পলওয়েল পার্ক, আরণ্যক, আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়ক, কাপ্তাইয়ের বিনোদনকেন্দ্রে পর্যটকের ভিড় ছিল বেশি। এতে শহর ও আশপাশের হোটেল, রিসোর্টেও বুকিং ছিল ৮০ থেকে শতভাগ পর্যন্ত।

রাঙামাটি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তফা কামাল উদ্দিন বলেন, ‘রাঙামাটি শহরে সব হোটেল, রিসোর্টে ৮০ থেকে শতভাগ বুকিং হয়েছে। পর্যটকদের সেবা দিতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। রোজার আগে পর্যটকদের উপস্থিতি ভালো থাকবে আশা করছি।’

রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, ‘শুক্রবার পর্যটকদের ভালো উপস্থিতি ছিল। পর্যটন মোটেলে শুক্র ও শনিবার ৮০ শতাংশ আগাম বুকিং হয়ে আছে। আর ছয় হাজারের বেশি পর্যটক শুক্রবার ঝুলন্ত সেতু ভ্রমণ করেছেন।’ 

হেঁটে টেকনাফ-তেঁতুলিয়া ভ্রমণ করলেন তাহুরা সুলতানা

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:২৪ পিএম
আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:৩৩ পিএম
হেঁটে টেকনাফ-তেঁতুলিয়া ভ্রমণ করলেন তাহুরা সুলতানা
তাহুরা সুলতানা

হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া ভ্রমণ করেছেন তাহুরা সুলতানা নামের ২৫ বছরের এক তরুণী। 

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টে গিয়ে তার ভ্রমণযাত্রা শেষ হয়। 

বিষয়টি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন এ ভ্রমণকন্যা।

জানা যায়, তাহুরা সুলতানা গত বছর ২৯ নভেম্বর সকাল ৬টায় টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জিরো পয়েন্ট থেকে যাত্রা শুরু করেন। ৫১ দিন হেঁটে হেঁটে তেঁতুলিয়ায় এসে শেষ করেন ভ্রমণ। এ যাত্রায় তিনি পাড়ি দিয়েছেন ১ হাজার ১ কিলোমিটার। একা হাঁটা শুরু করলেও ফেসবুকের কল্যাণে পথে পথে তাকে সঙ্গ দিয়েছেন পরিচিত-অপরিচিত অনেকেই।

তাহুরা সুলতানা চট্টগ্রামের বাঁশখালী গন্ডামারা ইউনিয়নের রশিদ আহমেদ ও তৈয়বা খাতুন দম্পতির মেয়ে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট তিনি। চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন।

তাহুরা সুলতানা বলেন, ‘পরিবারে আমি সবার ছোট। ছোট থেকেই ঘোরাঘুরি পছন্দ করি। চ্যালেঞ্জিং কোনো বিষয় গ্রহণ করতে আমার ভালো লাগে। এসব কারণেই হেঁটে দেশ ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়ে যাত্রা শুরু করি। এ যাত্রায় যেখানে বিরতি নিয়েছি, সেখানে মানুষের ভালোবাসা ও স্বতঃস্ফূর্ত সাড়ায় আমি অভিভূত।’

হেঁটে ভ্রমণের বিষয়ে জানতে চাইলে তাহুরা বলেন, ‘সুস্বাস্থ্যের জন্য হাঁটা জরুরি। তাই এই পদযাত্রার মাধ্যমে মানুষও যেন হাঁটায় উদ্বুদ্ধ হয়, সেটি আমি চাই। একই সঙ্গে হেঁটে হেঁটে আমার প্রিয় জন্মভূমির সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি মানুষকে হাঁটায় উদ্বুদ্ধ করতেই আমার এই যাত্রা। দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে এ জার্নির খরচ আমার নিজেরই। বিশেষ করে zoom wild নামে ট্রাভেল অ্যাজেন্সির সঙ্গে ট্রাভেলিংয়ের প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী নিয়ে দোকান আছে। সেখান থেকে অর্জিত টাকা জমিয়ে আমি এ জার্নি করেছি।’

বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টের জিরোফলকে পৌঁছেই তাহুরা বলেন, ‘১ হাজার কিলোমিটার মাইলফলক শেষ হলো, তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টে এসে। আমি স্পেশাল ধন্যবাদ জানাতে চাই বিজিবিকে, বর্ডার গার্ডকে। আমি আসলে খুব লেটে চলে আসছি, আসলে আমারই এটা মিসটেক। কারণ আজকে (শুক্রবার) শেষ করতে গিয়ে আমার সন্ধ্যা ৫টা বা ৬টা হয়ে যায়। সময় শেষ হয়ে  যাওয়ার পরেও আমাকে এখানে আসতে দেওয়া হয়েছে। এটার জন্য আমি খুবই কৃতজ্ঞ ও ধন্যবাদ।’

এ দীর্ঘ জার্নিতে যারা পাশে ছিলেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমার এ জার্নির সঙ্গে এই মুহুর্তে যারা জড়িত আছেন তাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সেই সঙ্গে যারা আমার এ জার্নির সঙ্গে ছিল সবার প্রতি আমি খুবই কৃতজ্ঞ ও ভালবাসা সবাইকে। আর আমার পুরো জার্নিতে পুরো বাংলাদেশের ১ হাজার কিলোমিটার হাইকিং, সঙ্গে যমুনা নদী সাতরানো, সঙ্গে হিমালয়ের তিনটা পাহাড়ের যে অর্জনগুলো ছিল এই জায়গায় শেষ হলো। জার্নিটা শেষ করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।’

রনি/পপি/

ঘুরে আসুন চাঁদপুরের মিনি কক্সবাজার

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:২৩ পিএম
আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:২৬ পিএম
ঘুরে আসুন চাঁদপুরের মিনি কক্সবাজার
মিনি কক্সবাজারে প্রতিদিন ভিড় করে শত শত দর্শনার্থী

ভ্রমণ সব সময়ের জন্য আনন্দের। সেটা যেখানেই হোক। জীবনকে উপভোগ করতে হলে মাঝে মধ্যে ভ্রমণ করা অনেক জরুরি। অন্যথায় জীবনে চলার ক্ষেত্রে জীবনের মানে হারিয়ে ফেলবে। আপনি যদি কোথাও ভ্রমণ করার উদ্দেশে রওনা হন-তাহলে দেখবেন, ভ্রমণের সময় অনেক ছোট ছোট বিষয় আপনার কাছে আনন্দদায়ক মনে হবে। ভ্রমণ করলে আপনি একটি আলাদা অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন। কারণ, ভ্রমণ করলে আপনি যে দৈনিক রুটিনের মধ্যে চলাফেরা করেন, তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন।
ভ্রমণটা হতে পারে আপনার আশপাশে অথবা দেশ ও দেশের বাইরে যেকোনো জায়গায়। নিজেকে সবার মাঝে খুঁজে পেতে ঘুরে আসতে পারেন দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে। এর মধ্যে রয়েছে ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরের মিনি কক্সবাজারে। বালুচরে খেলাধুলা, নদীর পানিতে পা ভিজিয়ে হাঁটা এবং প্রকৃতির সান্নিধ্য উপভোগ করতে পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে মিনি কক্সবাজার। যেন সেই ডাকে সাড়া দিয়েই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সেখানে থাকছে বিনোদনপ্রেমীদের ভিড়।
বাংলাদেশে পদ্মা-মেঘনার একমাত্র মিলনস্থল চাঁদপুরে। এই নদীর বুকে জেগে উঠেছে মিনি কক্সবাজারখ্যাত বালুর চর। পদ্মা-মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীকে ঘিরে নাম দেওয়া হয় চাঁদপুর বড়স্টেশন মোলহেড। আর এই তিন নদীর মোহনা থেকে খুব সহজই যাওয়া যায় দৃষ্টিনন্দন মিনি কক্সবাজারে।
মেঘনার চর বাংলাদেশের চাঁদপুরের রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত মিনি কক্সবাজার পর্যটনকেন্দ্রটি। এটি নদীকেন্দ্রিক বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্যটনকেন্দ্র। এর চারদিকে নদী হওয়ায় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের মতো দেখায়। তাই পর্যটকরা এই নাম দিয়েছেন। স্থানীয়ভাবে বালু চর, পদ্মার চর ও মেঘনার চর নামেও এর পরিচিতি রয়েছে। বেসরকারিভাবে ‘স্বপ্ন ট্যুরিজম’ নামক প্রতিষ্ঠান পর্যটনকেন্দ্রটি পরিচালনা করে।


মিনি কক্সবাজারে প্রতিদিন ভিড় করে শত শত দর্শনার্থী। ডিসেম্বর থেকে চলমান এই সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা এই স্থানে ঘুরতে আসেন। এমনকি পরিবার-পরিজন নিয়ে কক্সবাজারের ফিল পেতে চাঁদপুরের মানুষের একমাত্র জায়গা এটি। অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়ন না থাকলেও স্বল্প খরচ আর কম সময়ের মধ্যে ঘুরে দেখা যায় এ স্থানটি। চাঁদপুর বড় স্টেশন থেকে জনপ্রতি ১০০ টাকার মধ্যে ট্রলার নিয়ে ঘুরে আসা যায় মিনি কক্সবাজারখ্যাত পদ্মার বালুর চর থেকে। জানুয়ারিতে এখানে রয়েছে আরও একটি সৌন্দর্য। স্থানীয় কৃষকরা এই চরে সরিষার চাষ করেন। হলুদের সমারোহে সরিষা ফুলে মন জুড়িয়ে যায় যেকোনো পর্যটকের। দলবেঁধে কিংবা পিকনিক স্পটের জন্য খোলামেলা এ স্থানটি হতে পারে বিনোদন স্পট।
এক দিনে চাঁদপুর মিনি কক্সবাজার ঘুরে দেখা ছাড়াও রয়েছে পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া- এই তিন নদীর মিলনস্থল দেখার সৌন্দর্য। রয়েছে পদ্মা-মেঘনার ভিন্ন রঙের পানি ও সূর্যাস্ত দেখার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। এর পাশেই রয়েছে মাছঘাট। এখানে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাইকারি ও খুচরা মূল্যে কেনা যায়। এ ছাড়া ভ্রমণের তালিকায় এই চাঁদপুরে রয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, ফরিদগঞ্জের রূপসা জমিদারবাড়ি ও লোহাগড়া মঠ, দেশের সর্ববৃহৎ মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম দৃষ্টিনন্দন হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদ, চাঁদপুর সদরের ফারিসা হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট, মতলব উত্তরের মোহনপুর পর্যটনকেন্দ্র, চাঁদপুর শহরে রয়েছে অঙ্গীকার ভাস্কর্য, বড় স্টেশন মোলহেডে রয়েছে শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত রক্তধারা ভাস্কর্য ও জাতীয় মাছ ইলিশের আদলে নির্মিত ইলিশ ভাস্কর্য। যদিও শহরের প্রবেশদ্বার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রয়েছে ইলিশ চত্বর।


কীভাবে যাবেন
দেশের যেকোনো স্থান থেকে সড়ক, রেল ও নৌপথে খুব সহজেই যাওয়া যায় চাঁদপুরে। সড়কপথে যেতে হলে কুমিল্লা হয়ে চাঁদপুর জেলা শহরে আসা যায়। এ ক্ষেত্রে রাজধানী ঢাকা থেকে বিআরটিসি ও পদ্মা বাস পাওয়া যায়। ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। এ ছাড়া স্বল্প সময়ে আসতে চাইলে ঢাকা থেকে গৌরীপুর বা শ্রী রায়েরচর থেকে মতলব হয়ে বাবুরহাট দিয়েও চাঁদপুর জেলা শহরে আসা যায়। নৌপথে আসতে চাইলে ঢাকা সদরঘাট থেকে সকাল ৬টা থেকেই চাঁদপুরের উদ্দেশে বিভিন্ন লঞ্চ ছেড়ে যায়। জনপ্রতি ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে আসনভেদে বিভিন্ন ভাড়ায় চাঁদপুর লঞ্চঘাটে পৌঁছানোর পর সেখান থেকে অটোরিকশায় ১০ টাকায় বড় স্টেশনে আসতে পারবেন। তা ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের লাকসাম রেলওয়ে জংশন থেকেও বেলা ১১টায় সাগরিকা এবং রাত ৮টায় আন্তঃনগর মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনে করে জনপ্রতি ৫০ টাকা ভাড়ায় চাঁদপুর বড় স্টেশনে এসে নামা যায়।


কোথায় থাকবেন
শহরে রয়েছে চাঁদপুর সার্কিট হাউস, হোটেল হিলশাসহ বিভিন্ন বাজেটের আবাসিক হোটেল। প্রয়োজনে স্থানীয় প্রশাসন কিংবা গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে অন্যান্য হোটেলের বিষয়ে জানা যাবে। 


কোথায় খাবেন
চাঁদপুর লঞ্চঘাট কিংবা চাঁদপুর মাছঘাটে রয়েছে তাজা ইলিশ ভেজে ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা। এ ছাড়া চাঁদপুর শহরের কালীবাড়ি এলাকায় রয়েছে অসংখ্য চাইনিজ রেস্টুরেন্ট এবং হোটেল। 


সতর্কতা
চাঁদপুর ভ্রমণে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তাদের কথাকে গুরুত্ব দিয়ে আপনার সিদ্ধান্ত নিয়ে চলতে হবে। ব্যতিক্রম কিছু দেখলে বা অনুভব করলে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা নিতে পারেন। 
সাঁতার না জানলে গোসলের সময় নদীর বেশি গভীরে যাবেন না। ট্রলার চলাকালে ট্রলার এর কিনারে বসবেন না। ট্রলারে ওঠার সময় সাবধানে মই ব্যবহার করে উঠবেন। বেশি সময় থাকার পরিকল্পনা করলে সঙ্গে শুকনো খাবার, মিনারেল ওয়াটার, সানগ্লাস, টুপি নিয়ে আসবেন।