
নরসিংদী ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং প্রাকৃতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ একটি জেলা। এখানে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে যেগুলো পরিবার, বন্ধু কিংবা একাকী ভ্রমণকারীদের জন্য উপযুক্ত। এখানে নরসিংদী জেলার ২৫টি উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান এবং তাদের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়া হলো—
১. ড্রিম হলিডে পার্ক (পলাশ)
থিম পার্ক, ওয়াটার ওয়ার্ল্ড, রিসোর্টসহ পূর্ণাঙ্গ বিনোদন কেন্দ্র। পরিবার ও শিশুদের জন্য জনপ্রিয়।
২. ওয়াদুদ রিসোর্ট (নরসিংদী সদর)
প্রাকৃতিক পরিবেশে আধুনিক রিসোর্ট, পিকনিক ও বিশ্রামের জন্য আকর্ষণীয় স্থান।
৩. বেলাবো মুঘল মসজিদ
প্রাচীন মুঘল স্থাপত্যশৈলীর মসজিদ। ইতিহাসপ্রেমীদের আকর্ষণ করে।
৪. গ্রিন ভ্যালি রিসোর্ট (শিবপুর)
পরিবারসহ পিকনিক ও অবকাশ যাপনের জন্য আধুনিক রিসোর্ট।
৫. বাবুরহাট জমিদার বাড়ি (শিবপুর)
একটি বিলুপ্তপ্রায় জমিদারবাড়ি, স্থাপত্যশৈলীতে অনন্য।
৬. ওয়াপদা গার্ডেন
নরসিংদী শহরে একটি প্রশান্তিপূর্ণ উদ্যান, বিশ্রাম ও হাঁটার জন্য উপযোগী।
৭. চরসিন্দুর নদীর পাড়
মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত, নৌকাবিহার ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের স্থান।
৮. ব্লু ওয়াটার পার্ক (শিবপুর)
ওয়াটার পার্ক ও অ্যামিউজমেন্ট পার্ক। পরিবারসহ আনন্দের জন্য আদর্শ।

৯. বেলাবো নদীর পাড়
সন্ধ্যায় নদীর পাড়ে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
১০. লতাপাড়া জামে মসজিদ
ঐতিহাসিক একটি মসজিদ, স্থাপত্যে বৈচিত্র্য রয়েছে।
১১. পলাশ বনাঞ্চল
গ্রীষ্মকালে রক্তরাঙা পলাশ ফুলে ঢাকা হয়ে যায় — দৃষ্টিনন্দন স্থান।
১২. বড়চর বায়তুল আমান জামে মসজিদ
নান্দনিক স্থাপত্যবিশিষ্ট মসজিদ, ধর্মপ্রাণ মানুষদের পাশাপাশি পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
১৩. ঘোড়াশাল রেলওয়ে জংশন
ঐতিহাসিক রেলওয়ে স্টেশন; রেলপথ ও স্থাপত্যে আগ্রহীদের জন্য আকর্ষণীয়।
১৪. পাঁচআনি জমিদার বাড়ি (মনোহরদী)
ঐতিহাসিক জমিদারদের স্থাপত্য নিদর্শন।
১৫. রায়পুরা জমিদার বাড়ি
ঐতিহাসিক জমিদারি বাড়ি, যা বাংলার জমিদার ঐতিহ্যকে ধারণ করে।

১৬. শালিধা শাহী জামে মসজিদ
ঐতিহাসিক এবং স্থাপত্যশৈলীতে সমৃদ্ধ একটি মসজিদ।
১৭. এভারগ্রীন রিসোর্ট (পলাশ)
পর্যটন ও অবকাশ যাপনের জন্য পরিচিত স্থান।
১৮. আড়াইহাজার চরাঞ্চল (মেঘনার তীর)
নৌবিহার ও পাখি দেখার জন্য দারুণ এক জায়গা।
১৯. চন্দনবাড়ি জমিদার বাড়ি
ঐতিহাসিক নিদর্শন ও স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত।
২০. পলাশের গার্ডেন হাউজ
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও প্রাচীন স্থাপনা একত্রে উপভোগ করা যায়।
২১. চিনিশপুরের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ
১৯৭১ সালের স্মৃতিতে নির্মিত, ইতিহাসভিত্তিক পর্যটনের উপযোগী।
২২. নরসিংদী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার
ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে নির্মিত; সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এখানে হয়।
২৩. মেঘনা নদীর চর (রায়পুরা)
নদীপাড়ের প্রাকৃতিক দৃশ্য, পিকনিক ও ক্যাম্পিং উপযোগী।
২৪. কিশোরগঞ্জ পিকনিক স্পট (রায়পুরা সীমানা ঘেঁষা)
পিকনিক ও পারিবারিক আনন্দ আয়োজনে ব্যবহৃত জনপ্রিয় স্থান।
২৫. দিঘীরপাড় রিসোর্ট
স্বল্প ব্যয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে বিশ্রাম ও ঘোরাঘুরির জন্য পরিচিত।

ভ্রমণ সতর্কতা
নরসিংদী ভ্রমণের সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খেয়াল রাখা উচিত যাতে আপনার ভ্রমণ নিরাপদ, আরামদায়ক এবং আনন্দদায়ক হয়। যেমন—
• রুট জেনে নিন: কোথা থেকে কোথায় যাবেন, সেই অনুযায়ী Google Maps বা স্থানীয় রুট ম্যাপ দেখে নিন।
• পরিবহন ব্যবস্থা: ট্রেন, বাস বা প্রাইভেট গাড়ি কোনটি সুবিধাজনক তা আগেই নির্ধারণ করুন।
• ভিড় এড়াতে: শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিনে জনপ্রিয় স্পটগুলোতে অতিরিক্ত ভিড় থাকে। আগেভাগে পৌঁছান বা বিকল্প সময় বেছে নিন।
• বিশ্বস্ত গাইড নিন: যদি কম পরিচিত এলাকায় যান, তাহলে স্থানীয় একজন গাইড নিতে পারেন।
• প্রাথমিক চিকিৎসা: সাথে ফার্স্ট এইড কিট ও প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখুন।
• মশার প্রতিরোধ: বিশেষ করে নদী বা চরাঞ্চলে গেলে মশা থেকে বাঁচার জন্য প্রয়োজনে মশার লোশন বা স্প্রে নিন।
• বিশুদ্ধ পানি: বোতলজাত পানি ব্যবহার করুন।
• পরিচ্ছন্ন খাবার: পরিচিত বা ভালো মানের রেস্টুরেন্টে খাওয়ার চেষ্টা করুন।
• নিজস্ব খাবার: পিকনিক বা লম্বা ভ্রমণের সময় নিজেরা খাবার বহন করাও ভালো।
• আবহাওয়া অনুযায়ী প্রস্তুতি: গ্রীষ্মকালে হালকা জামাকাপড়, ছাতা ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। বর্ষাকালে রেইনকোট বা ছাতা রাখুন এবং স্লিপ রোধী জুতা ব্যবহার করুন। শীতকালে হালকা গরম জামা এবং শুকনো খাবার নিয়ে বের হন।
• আবর্জনা ফেলবেন না: যেখানেই যান, পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখুন।
• প্রাকৃতিক জায়গায় শব্দদূষণ করবেন না: নদী, চর, বাগান বা রিসোর্টে উচ্চ শব্দে গান বাজানো এড়িয়ে চলুন।
• মসজিদ বা পবিত্র স্থানে সম্মান বজায় রাখুন।
• স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে সদাচরণ করুন।
• নিকটস্থ থানা, হাসপাতাল ও প্রিয়জনের নম্বর সহজে পাওয়ার মতো জায়গায় লিখে রাখুন।
• মোবাইল ফোন সম্পূর্ণ চার্জ করে নিন এবং প্রয়োজনীয় অ্যাপ (ম্যাপ, ট্রেন-বাস সিডিউল, যোগাযোগ অ্যাপ) ইনস্টল রাখুন।