ঢাকা ৩ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
English

উত্তরাঞ্চলে ঈদযাত্রায় ৫০ স্থানে যানজটের আশঙ্কা

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১০:৩১ এএম
আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ১১:০৫ এএম
উত্তরাঞ্চলে ঈদযাত্রায় ৫০ স্থানে যানজটের আশঙ্কা
ছবি : খবরের কাগজ

মহাসড়ক সরু ও ভাঙাচোরা, পাশে হাট-বাজারসহ ১১টি কারণে উত্তরাঞ্চলের ৫০টি পয়েন্টে এবার ঈদে যানজটের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। হাইওয়ে পুলিশ বলছে, যানজটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হতে পারে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ীতে। তবে সব ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকের প্রায় চার হাজার সদস্য।

হাইওয়ে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, যুমনা সেতুর পশ্চিম প্রান্তে বগুড়া রিজিয়নে অন্তত ৩৫টি পয়েন্টকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। রংপুর রিজিয়নে চিহ্নিত করা হয়েছে ১৫টি পয়েন্ট। তবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ীতে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভার এলাকা। 

হাইওয়ে পুলিশের বগুড়া রিজিয়ন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদ উল্লাহ জানান, সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল এলাকায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ আটটি পয়েন্ট রয়েছে। ওই থানা এলাকায় এবার যানজটের কারণ হতে পারে ভাঙাচোরা রাস্তা, হাট-বাজার ও অসমাপ্ত ফ্লাইওভার।  

তিনি বলেন, ‘সড়কে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হাইওয়ে পুলিশের সঙ্গে আর্মড পুলিশ সদস্যরাও কাজ করবেন। এ ছাড়া স্থায়ী এবং অস্থায়ী টিমের পাশাপাশি বিকল যানবাহন দ্রুত সরিয়ে নিতে রেকারও থাকবে।’

সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আলী আহমেদ হাসমী জানান, বগুড়া রিজিয়নের সাতটি থানা ও পুলিশ ক্যাম্প এলাকায় ৩৫টি পয়েন্টে এবার যানজটের পাশাপাশি সড়কে ডাকাতির বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আলী আহমেদ হাসমী বলেন, ‘চালকদের যানজট ও সড়ক ডাকাতি সম্পর্কে সতর্ক করতে লিফলেট দেওয়া হচ্ছে। জরুরি যোগাযোগের জন্য দেওয়া হচ্ছে কর্মকর্তা ও পুলিশ স্টেশনের সেল নম্বর।’ তিনি বলেন, সড়ককে শৃঙ্খলা ধরে রাখার পাশাপাশি চাঁদাবাজি বন্ধে বিভিন্ন জায়গায় মাইকে সতর্কবার্তা প্রচার করা হচ্ছে। 

হাইওয়ে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, যমুনা সেতুর পশ্চিম প্রান্তে হাটিকুমরুল গোলচত্তর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার পথকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ ওই পথে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের ২৩টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। এদিকে যুমনা সেতু কর্তৃপক্ষের হিসাবে বলা হয়েছে, স্বাভাবিক অবস্থায় দিনে গড়ে ২১ হাজার যানবাহন সেতু অতিক্রম করে। কিন্তু ঈদে তা বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হয়। গত ঈদের ছুটিতে এক দিনে ৫৬ হাজার যানবাহন পার হয় যমুনা সেতু। 

পুলিশের বিভিন্ন সূত্র জানায়, উত্তরাঞ্চলে ঈদের আগে-পরে সড়কে চলাচল নির্বিঘ্ন করতে হাইওয়ে পুলিশ, আমর্ড পুলিশ, জেলা পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবে প্রায় ৪ হাজার। এর মধ্যে শুধু সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের অন্তত ৪৫০ সদস্য মাঠে থাকবেন ২৪ ঘণ্টা। গত বছর ৭৭১ সদস্য কাজ করেন কিন্তু এবার কিছুটা কমানোর কারণ ঝাউল ব্রিজসহ যানজট প্রবণ কয়েকটি এলাকার পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। 

সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, যেসব এলাকায় ফ্লাইওভার নির্মাণসহ অন্যান্য সড়ক উন্নয়নের কাজ চলছে, সেসব এলাকায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ফ্লাইওভার নির্মাণকাজে পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন প্রকৌশলী হারুন-অর রশিদ। তিনি জানান, ফ্লাইওভার নির্মাণের জন্য রাস্তার যতটুকু জায়গা নেওয়া হয়েছে, তার চেয়ে প্রশস্ত করে দুই পাশে চারটি লেন তৈরি করা হয়েছে, এরপরও যানজট হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারলে ঈদে গোবিন্দগঞ্জে যানজট তীব্র হওয়ার আশঙ্কা নেই।’ 

তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ থ্রি-হুইলার চালকদের পাশাপাশি বাসচালকরা রাস্তার ওপরই যাত্রী ওঠা-নামা করেন, ফলে যানজট লেগেই থাকে সারাদিন। কথা হয় গোবিন্দগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী মো. মোহাই মিনুর সঙ্গে। তার ধারণা রাস্তার ওপরে থাকা থ্রি-হুইলার স্ট্যান্ড সরিয়ে নিলে যানজট কমে যাবে। তিনি বলেন, ‘এখন থেকে ব্যবস্থা না নিলে ঈদের সময় গোবিন্দগঞ্জ বাজার এলাকায় যাত্রীদের ভোগান্তি হবে বেশি।’ 

বগুড়ার বনানী এলাকায় ৪০ বছর ধরে ব্যবসা করছেন আব্দুস সালাম। তার অভিযোগ রাস্তা প্রশস্ত করার পরও যানজট পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না শুধু যানবাহনের বেপরোয়া চালকদের কারণে। তিনি বলেন, ‘বনানীতে রাস্তার মধ্যে যানবাহন চালকরা গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করেন, আবার থ্রি-হুইলার চালকরা উল্টো পথে চলেন, ফলে যানজট সৃষ্টি হয়। বগুড়া শহরের বনানী থেকে মাটিডালী পর্যন্ত অনেক স্থানেই এখন মেরামতের জন্য সড়কেই যানবাহন রাখা হয়। এমনকি ফ্লাইওভারও ব্যবহার করা হচ্ছে এ কাজে।’

বাংলাদেশি জেলেদের ওপর হামলা চালিয়ে ২টি নৌকা নিয়ে গেছে বিএসএফ

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩৮ পিএম
বাংলাদেশি জেলেদের ওপর হামলা চালিয়ে ২টি নৌকা নিয়ে গেছে বিএসএফ
সীমান্তবর্তী কৈখালীর পাঁচ নদীর মোহনা। ছবি: খবরের কাগজ

সাতক্ষীরার শ্যামনগরের কৈখালী সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে একদল জেলেকে মারধর করে নৌকা নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিরুদ্ধে। 
  
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে সীমান্তবর্তী কৈখালীর কালিন্দি নদীর বয়ারসিং সংলগ্ন উলোখালীর চর এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। এসময় জেলেদের মারধর করে তাদের দু’টি নৌকা বিএসএফ সদস্যরা ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী জেলেরা। 

হামলার সময় ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়া জেলেরা সুন্দরবনের মধ্যে দিয়ে পায়ে হেঁটে লোকালয়ের উদ্দেশে রওনা হন বলে দাবি তাদের স্বজন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির।

বিএসএফের হামলার শিকার জেলেরা হলেন- শ্যামনগর উপজেলার টেংরাখালী গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে রমজান আলী, শাহাজান আলী, ফরেজ গাজীর ছেলে শাহাদাৎ হোসেন, শাহাজান গাজী, আতাউর রহমান, সৈয়দ গাজীর ছেলে আব্দুল রহমান, মানিকপুর গ্রামের কেরামত আলী ও কৈখালীর নুর মোহাম্মদ। 

ঘটনার শিকার শাহাদাৎ হোসেন জানান, পশ্চিম সুন্দরবনের কৈখালী ষ্টেশন থেকে পাস (অনুমতিপত্র) নিয়ে চারদিন আগে তারা সুন্দরবনে যান। তিনটি নৌকার ১২ জন জেলে দু’দিন ধরে বাংলাদেশের সীমানাভুক্ত উলোখালীর চরে পাটা জাল পেতে মাছ ধরছিলেন। একপর্যায়ে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দু’টি স্পিডবোট নিয়ে বিএসএফ সদস্যরা আকস্মিকভাবে সেখানে উপস্থিত হয়ে তাদের মারধর শুরু করেন।

তিনি আরও বলেন, এসময় তারা পেতে রাখা জাল ও সেখানে থাকা নৌকা ফেলে বনের মধ্যে ঢুকে আত্মরক্ষার চেষ্টা করে। এসময় জাল একইভাবে পাতা থাকলেও নৌকা দু’টি নিয়ে হামলার সঙ্গে জড়িত বিএসএফ সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। বর্ডার এলাকায় মাছ ধরতে যাওয়ার কারণে তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে বলে জানান এই জেলে।

স্থানীয় রমজাননগর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ লাল্টু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিএসএফের মারধরের শিকার আট জেলের মধ্যে ছয়জন তার এলাকার। বিএসএফ নৌকা নিয়ে উলোখালীর চর থেকে তাড়িয়ে দেওয়ায় তারা উপায়ন্তর না পেয়ে পায়ে হেঁটে বনের মধ্য দিয়ে ও নদী সাঁতরে লোকালয়ে ফিরছেন। ভারতীয় বিএসএফ অন্যায়ভাবে তাদের ওপর এ কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি এই জনপ্রতিনিধির।

পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন কৈখালী ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) আব্দুস সালাম বলেন, অনুমতিপত্র নিয়ে জেলেরা পাটা জাল দিয়ে মাছ ধরছিলেন। সেখান থেকে বিএসএফ দুইটি নৌকা নিয়ে গেছে বলে জানতে পেরেছি। জেলেদের অফিসে আসতে বলা হয়েছে। আসলে বিস্তারিত জানা যাবে।

এ বিষয়ে সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. মশিউর রহমান জানান, এ বিষয়ে এখনো কেউ তাদের অবহিত করেনি। খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

এ ঘটনায় বিজিবি কৈখালী ক্যাম্পের সুবেদার আবু বক্কার জানান, স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বিষয়টি তাদের অবহিত করেছেন। ঘটনাটি বয়ারসিং এলাকার হওয়ায় ভুক্তভোগীদের অভিযোগ জানাতে সেখানকার বিজিবি (রিভারাইন) ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, এ বিষয় নিয়ে সীমান্তবর্তী কৈখালী, রমজাননগর ও টেংরাখালী এলাকার কিছু মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভারতীয় অবৈধ পণ্য চোরাচালানের অন্যতম রুটের একটি অংশ সীমান্তবর্তী কৈখালীর সুন্দরবনের ওই (কালিন্দি নদীর বয়ারসিং) এলাকা। কালিন্দি নদী পাড়ি দিয়ে মাদক, ভারতীয় গরু, ক্যান্সার প্রতিরোধক কেমোসহ ভারতীয় অবৈধ পণ্যের চালান এ রুট হয়ে দেশে ঢোকার পর সর্বত্র ছড়িয়ে যায়। এর আগে বিভিন্ন সময়ে বিজিবি, কোস্টগার্ড ও পুলিশের হাতে বড় বড় পণ্যের চালান ধরা পড়তো। তবে বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে কখনো কখনো ছোট ছোট চালান ধরা পড়লেও বড় চালানের হদিস মিলছে না। কারণ মাদক ও চোরাকারবারীরা কৌশল পাল্টে ফেলেছে। তারা জেলেদের ছদ্মবেশে এসব পণ্য চোরাচালান করছে। কালিন্দি নদী ও সুন্দরবনে মাছ ধরার অজুহাতে মাদক ও চোরাকারবারীরা অবৈধভাবে ভারত থেকে ভারতীয় গরু, মাদক, ক্যান্সার প্রতিরোধক কেমোসহ বিভিন্ন ভারতীয় অবৈধ পণ্য বাংলাদেশ নিয়ে আসছে। এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে ভারতে অবৈধ পথে ধুড় (মানুষ) ও বিভিন্ন পণ্য পার করছে।

সুলতান শাহাজান/মাহফুজ


 

 

ইটনায় ‘সমন্বয়কের’ চাপে ওসি বদলি, পুনর্বহালের দাবিতে থানা ঘেরাও

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১৯ পিএম
ইটনায় ‘সমন্বয়কের’ চাপে ওসি বদলি, পুনর্বহালের দাবিতে থানা ঘেরাও
ছবি : খবরের কাগজ

কিশোরগঞ্জের ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনোয়ার হোসেনকে প্রত্যাহারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মি‌ছিল ও থানা ঘেরাও করেছে স্থানীয় লোকজন।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে এ কর্মসূ‌চিতে কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেন। 

দুপুরে ইটনা মধ্যবাজার থেকে বিক্ষোভ মি‌ছিল‌টি শুরু হয়। পরে থানা ঘেরাও করেন নেতা-কর্মীরা। সেখানে আধাঘণ্টা ঘেরাও কর্মসূ‌চি চলে। সেখান থেকে মি‌ছিল‌টি উপজেলা প‌রিষদের সামনে গিয়ে অবস্থান করে। 

বেলা ২টার দিকে মু‌ক্তিযোদ্ধা সংসদের সামনে সমাবেশ অনু‌ষ্ঠিত হয়।

ইটনার বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার ব্যানারে এ বিক্ষোভ অনু‌ষ্ঠিত হলেও এতে উপজেলা বিএন‌পি এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ বে‌শি ছিল।

সেখা‌নে বক্তব্য রাখেন, ইটনা উপজেলা বিএন‌পির সভাপ‌তি এসএম কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সি‌দ্দিকুজ্জামান ঠাকুর স্বপন, জয়‌সি‌দ্ধি ইউপি চেয়ারম্যান ম‌নি‌র উদ্দিন, ইটনা উপজেলা বিএন‌পির যুগ্ম সম্পাদক পলাশ রহমান ও উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আজাদুর রহমান সুমন।

জানা গেছে, সম্প্রতি ওসি ও স্থানীয় এক ‘সমন্বয়কের’ ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হয়। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ইটনা থানার ওসি মনোয়ার হোসেনকে বদলি করেন পুলিশ সুপার। ওই ফোনালাপে সমন্বয়কের কাছে ওসি পাবলিককে জিলাপি খাওয়ানোর আবদার করতে শোনা যায়।

বিক্ষোভকারীদের অ‌ভিযোগ, ‘আওয়ামী লীগ ও এর দোসরদের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন ও ষড়যন্ত্রে ও‌সিকে বদলি করা হয়েছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে প‌রি‌চিত ছাত্রলীগ করা ক‌থিত এক সমম্বয়কের ষড়যন্ত্র ও প‌রিক‌ল্পিত ফোনালাপের অ‌ডিও সামাজিক মাধ্যমে ফাঁস করে ও‌সিকে বদ‌লি ক‌রা হয়। তাকে দ্রুতপুনর্বহাল করতে হবে।

ইটনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস এম কামাল উদ্দিন বলেন, ‘৫ আগস্টের পর ওসি হিসেবে ইটনা থানায় যোগ দেন মনোয়ার হোসেন। এর পর থেকে তিনি নানা অপরাধে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারে তৎপর হন। কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করেন। এসব কারণে আওয়ামী লীগের লোকজন কথিত সমন্বয়ক শান্তর মাধ্যমে ওসিকে সরানোর ষড়যন্ত্র করতে থাকেন। ওসির ফোনালাপের অডিও ফাঁস করা এই ষড়যন্ত্রেরই অংশ।’

জয়সিদ্ধি ইউপি চেয়ারম্যান ম‌নির উদ্দিন বলেন, ‘১২৮ বস্তা ভিজিএফের চাল উদ্ধারের ঘটনায় গত ২০ মার্চ রাতে ইটনা উপজেলার বাদলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আদিলুজ্জামান ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করেন। তার এই গ্রেপ্তারের পর আওয়ামী দোসররা ইটনা থানার ওসি মো. মনোয়ার হোসেনকে সরাতে নানাভাবে তৎপর হয়ে ওঠে। এই তৎপরতার অংশ হিসেবে সমন্বয়ক দাবিদার আফজাল হোসেন শান্ত নিজে থেকে ওসি মনোয়ার হোসেনকে ফোন করে কলরেকর্ড ফাঁসের নাটক সাজান। আমরা ইটনা থানায় এই ওসির পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছি।’

এ প্রসঙ্গে ওসি মনোয়ার বলেন, ‘সরকারি চাকরি বদলির চাকরি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বদলির আদেশ দিয়েছেন, সে অনুযায়ী আমি দায়িত্ব হস্তান্তর করেছি। আমি ইটনাতে থাকা অবস্থায় চেষ্টা করেছি মানুষকে সেবা দিতে। কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত হইনি।’

তাসলিমা আক্তার/অমিয়/

রংপুরে পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:২৬ পিএম
রংপুরে পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতি বাতিলসহ ৬ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। ছবি: খবরের কাগজ

জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতি বাতিলসহ ৬ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকালে বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে জড়ো হতে থাকেন। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শাপলা চত্বরে গিয়ে জমায়েত হয়।সেখানে দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা।

এ সময় রংপুরের ইমেজ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, আইডিয়াল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, রিট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, আইইটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট রংপুরের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

তাদের ছয় দফা দাবিগুলো হলো-

হাইকোর্টের রায়ে অবৈধভাবে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে পদোন্নতি পাওয়া ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের রায় বাতিল করতে হবে। সেইসঙ্গে পদবি পরিবর্তন ও মামলার সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে।

ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যে কোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করে উন্নতমানের চার বছর মেয়াদি কারিকুলাম চালু করতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে তা সম্পূর্ণ ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।

সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিচু পদে নিয়োগ বন্ধ করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

কারিগরি শিক্ষা বহির্ভূত জনবলকে নিষিদ্ধ করে পরিচালক, উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ বিভিন্ন পদে কারিগরি শিক্ষিত জনবল নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

পৃথক ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ প্রতিষ্ঠা ও কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।

টেকনিকাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে।

পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রমিজ আলম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলার আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ ও অন্যান্য সমন্বয়কদের আশ্বাসে বিক্ষোভ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।

রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ফারহান নাজিব বলেন, ‘আমাদের দাবি মানতে হবে, না মানলে আমরা পরবর্তীতে কঠোর আন্দোলনে যাব। রংপুরে যত পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট আছে সবাই একসঙ্গে এই আন্দোলন গড়ে তুলেছি। এই ক্ষোভ আমাদের দীর্ঘদিনের। 

রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী জান্নাতুল বলেন, ‘ যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি আদায় না হয় ততক্ষণ রাজপথে থাকব আমরা।’ 

সেলিম/পপি/

নরসিংদীতে মিলের বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৫৭ পিএম
নরসিংদীতে মিলের বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র
ছবি: খবরের কাগজ

এককালের প্রমত্ত ব্রহ্মপুত্র নদ আজ দখলে-দূষণে জীর্ণ-সংকীর্ণ। কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য আর মানুষের ব্যবহৃত মলমূত্র দিনের পর দিন একে দূষিত করে চলেছে। অথচ এসব দেখার কেউ নেই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শুধু দায়সারা ভূমিকা পালন করছে।

পরিবেশ কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি মিলগুলোর পরিবেশ দূষণের দায়কে গুজব বলে উড়িয়ে দিলেন। তবে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সাপেক্ষে দূষণকারীদের সম্পর্কে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেন তিনি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নরসিংদীতে বয়ে যাওয়া নদ-নদীর মধ্যে সবচেয়ে বিপদগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদ। নদটি যেন এখন দূষণকারীদের জীবিকা নির্বাহের উপায় হয়ে উঠেছে। এই নদের পাড়ে অবস্থিত কারখানাগুলো এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) রাখলেও তারাই আবার মিলের বিষাক্ত তরল বর্জ্য নদে ফেলছে। প্রতিবাদ করেও কোনো ফল হয়নি। এমনটাই জানালেন পাড়ের বাসিন্দারা।

এই জেলায় আছে সুতা প্রসেসিং মিল, ডাইং মিল, কাপড় রঙের কারখানা, জিগার মেশিন, স্পিনিং মিল, গার্মেন্টসসহ বহু শিল্পপ্রতিষ্ঠান। এসব কারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত তরল বর্জ্য পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদসহ বিভিন্ন ফসলি জমিতে পড়ছে। পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এই নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভ বলেন, ‘নদটির ওই পাড়ে কুড়েরপাড় এলাকা; সেখানে কাপড় রং করায় নদটি মৃতপ্রায়। আমরা ছোটবেলায় এই নদীতে গোসল করতাম, মাছ ধরতাম; এখন দূষণের কারণে এর পাড়ে দাঁড়িয়ে কথা বলা যায় না। আমরা স্থানীয়ভাবে অনেক প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাইনি।’

সরেজমিনে শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং নামে একটি মিল থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। সাংবাদিক হিসেবে ভিডিও করতে দেখে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়। মিলগেটে গিয়ে খোঁজ করলে ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেডের ইটিপি ইনচার্জ জানান, তারা নদ দূষণ করেন না। সাংবাদিকরা ভুল দেখছেন।

ইটিপি ইনচার্জ মো. রেজাউল জানালেন, মিল মালিকের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। তিনি মিলে সপ্তাহে এক দিন আসেন। বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সর্ম্পক রেখে তারা এ এলাকায় প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘এখানে আমরা দূষণ করি না, সামনে গিয়ে দেখেন, সরাসরি বর্জ্য ফেলছে অনেকে। এসময় এগিয়ে গিয়ে দেখা গেল, ওই এলাকার ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা মিলগুলো থেকে পানির স্রোতের মতো বর্জ্য এসে নদীতে পড়ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব মিলের কেউ কথা বলতে রাজি হলেন না। 

নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী পরিচালক মো. কামরুজ্জামান সরকার বলেন, আমি গত জুলাইয়ে যোগদান করেই পুরাতন ব্রহ্মপুত্র পরিদর্শন করেছি। নদের স্বাভাবিক পানিপ্রবাহের কিছুই নেই। নেই স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশ। তিনি জানান, তীরের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো বর্জ্য শোধন করে নদে পানি ছাড়ে।

কিন্তু বাস্তবের সঙ্গে তার কথার কোনো মিল পাওয়া গেল না। অনেকটা দায়সারা কথা বললেন পরিবেশ অধিদপ্তরের এ কর্মকর্তা। এ সময় তিনি দাবি করেন, নরসিংদীতে ১২৯টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ১১৮টি প্রতিষ্ঠানের পানি শোধন করার ইটিপি রয়েছে। তবে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানালেন। কিন্তু এর পরও কী করে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি দূষিত হচ্ছে তার কোনো জবাব তার কথায় পাওয়া গেল না।

সিরাজগঞ্জে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম
সিরাজগঞ্জে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা। ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ফুসলিয়ে ১০ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী ধর্ষণ  করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে ওই কিশোর এবং অজ্ঞাত এক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত কিশোর পলাতক রয়েছেন।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ধর্ষণের অভিযোগ এনে ছাত্রীর বাবা মামলা করেছেন। আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ধর্ষণের শিকার স্কুল ছাত্রী সলঙ্গা থানার আলোক দিয়ার গ্রামে নানার বাড়িতে থেকে পাঁচলিয়া বদরুল আলম উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। একই বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী গত ১৩ এপ্রিল ওই ছাত্রীকে ফুসলিয়ে পাঁচলিয়া বাজার সংলগ্ন জহুরুলের মার্কেটে নিয়ে যায় এবং মার্কেটের ভিতরের একটি কক্ষে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। অতিরক্ত রক্ত ক্ষরণে ভুক্তভোগী অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তাকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাত ৩টার দিকে শহিদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। 

শহিদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাক্তার রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রীর পরিবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে সুস্থ আছেন।’

সিরাজুল/তাওফিক/