
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় পারিবারিক সম্পত্তি ও অর্থ লেনদেনের জের ধরেই সেবাইত বুদ্ধিমন্ত সরকারকে হত্যা করেছে তারই আপন ভাতিজা লিংকন সরকার (১৮)।
গত সোমবার (২ জুন) সন্ধ্যায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ড. মো. রুহুল আমিন সরকার।
তিনি জানান, উপজেলার পূর্ব নেয়ারবাড়ী গ্রামের সদাচার সেবাশ্রমের সেবাইত বুদ্ধিমন্ত সরকারের নামে পৈত্রিক সম্পত্তির ২০ শতাংশ জমি বেশি রেকর্ড হয়। এ নিয়ে পরিবারিকভাবে তিন ভাইয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। এছাড়া ছোট ভাই বিনয় সরকারের কাছ থেকে বুদ্ধিমন্ত সরকার ২০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। অতিরিক্ত জমি ও ধারের টাকা চাইতে গেলে বুদ্ধিমন্ত সরকারের সঙ্গে ছোট ভাই বিনয় সরকারের ছেলে লিংকন সরকারের মনোমালিন্য হয়।
গত ২৯ মে রাত ১০টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে নিজেদের বাড়ির পাশে ধানের গোলা পাহারা দিতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন বুদ্ধিমন্ত। এই সুযোগে ঘুমন্ত বুদ্ধিমন্তর মাথায় বাঁশ দিয়ে আঘাত করে মুখে গামছা চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন ভাতিজা লিংকন। এরপর দেহটি টেনে পাশের পাটখেতে নিয়ে দা দিয়ে দুই পা কেটে ফেলেন। এরপর দুই পা ও শরীরের বাকি অংশ বস্তায় ভরে উপজেলার রামশীল বাজারের একটি খালের স্লুইস গেটের পাশে ফেলে দেন।
পরে রবিবার (১ জুন) গোপন সংবাদে লিংকন সরকারকে (১৮) এলাকা থেকে আটক করা হয়। পরের দিন সোমবার তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভিকটিমের জুতা, পাঞ্জাবি, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা ও গামছা জব্দ করে পুলিশ।
পরে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কথা পুলিশের কাছে ও আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকার করেন লিংকন।
তিনি আরও বলেন, সদাচার সেবাশ্রমের সেবাইত বুদ্ধিমন্ত সরকার একজন সাধক ছিলেন। ফলে তার হত্যাকাণ্ড এক ধরনের সাম্প্রদায়িক সংঘাত বলে অপ্রপচার চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল। বিভিন্ন মহল এই হত্যাকাণ্ডকে পুঁজি করে সামাজিক স্থীতিশীলতা বিনষ্টের প্রয়াস নিচ্ছিল।
এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী লক্ষ্মী রানী সরকার বাদী হয়ে কোটালীপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
বাদল সাহা/অমিয়/