রাকিবা ইসলাম ঐশী। ২০১৭ সালে গানের রিয়েলিটি শো চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠের চ্যাম্পিয়ন তিনি। এরপর থেকেই গানের ভুবনে নিজেকে মেলে ধরেছেন এই শিল্পী। বর্তমানে গান নিয়ে তার ব্যস্ততা ও পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন খবরের কাগজকে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাহমুদ শাকিল
সেরা কণ্ঠ বিজয়ী হওয়ার পরও মিডিয়ায় আপনার ফোকাস কম। এটা কি স্বেচ্ছায় নাকি অনিচ্ছায়?
এটা স্বেচ্ছায়ই। আসলে ফোকাস হওয়ার চেয়েও শেখার প্রতি ভালো লাগাটা বেশি কাজ করেছে। এটা পারসোনাল চয়েস। গানটা আমার ভালোবাসার জায়গা, কাজের জায়গা। আর যেকোনো কাজের ক্ষেত্রেই অনেক ধরনের কমপ্লিকেশন্স, কমপ্রোমাইজের অনেক বিষয় থাকে। আমি সব সময় চেয়েছি ভালোমতো গানটা শিখতে ও গাইতে। নিজেকে খুব হাইলাইটেড করার চেয়ে এখনো শেখার প্রতি ফোকাসটা রাখতে চাই।
আপনার সমসাময়িক অনেকেই মিডিয়ায় নিয়মিত কাজ করছেন। সে তুলনায় আপনার কাজের সংখ্যা অনেক কম কেন?
যখন চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠে বিজয়ী হই, তখন আমি অনার্সে পড়ছিলাম। অনার্স শেষে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করতে ভারতের হায়দ্রাবাদে চলে গিয়েছিলাম। দুই বছরের পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন শেষে দেশে ফিরেছি। মূলত মাঝের এই সময়টা আমি পড়াশোনায় বেশি ফোকাস দিয়েছি। এ জন্যই তখন খুব কাজ করা হয়ে ওঠেনি। আবার আমার যেহেতু গান করার আলাদা একটা জোন আছে, সে জন্য অনেক ধরনের প্রোগ্রাম থেকে কল এলেও সব জায়গায় গান করতে পারি না। শ্রোতাদের সঙ্গে আমার নিজের পছন্দেরও একটা জায়গা আছে। এটাকেও আমি প্রায়োরিটি দিই।
আপনি ক্লাসিক-সেমি ক্লাসিকের পাশাপাশি নজরুলসংগীত এবং আধুনিক গানও করেন। কোন ধরনের গানে নিজের আইডেন্টিটি ধরে রাখতে চান?
সেমি ক্লাসিক্যাল গানে…। যদিও আমার অনার্স-মাস্টার্স পিউর ক্লাসিকালের ওপরে করেছি, কিন্তু ছোটবেলা থেকে মফস্বলে বড় হওয়ায় পিওর ক্লাসিকালের ওপর সেভাবে আমি তালিম পাইনি। হাতে ধরে শেখাটা আমার খুব কমই হয়েছে। হয়তো গানের টিচার এসে ভয়েস প্র্যাকটিস করাতেন। আমার ওস্তাদজি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গানের গলাটা কীভাবে তৈরি করতে হবে সেটা শিখিয়েছেন। পিউর ক্লাসিকের তালিমটা আমি নেওয়া শুরু করেছি অনার্সে ভর্তির পর থেকে। তাই এত কম সময়ের তালিমে পিউর ক্লাসিকাল আর্টিস্ট হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
স্টেজ শোতেও আপনাকে বেশি দেখা যায় না কেন?
আমার কাছে এ ধরনের শোগুলো একটু হ্যাসেল মনে হয়। তাই হয়তো এখানে আমি অতটা ফোকাসড না। আর আমি যে ধরনের গান করি প্রোগ্রামের ধারাটা সেরকম থাকে না। আমি যেহেতু সেমি ক্লাসিকাল গাই, ওপেন এয়ার কনসার্টে এ ধরনের গানের জন্য নয়। যারা রকিং পারফর্ম করেন, তাদের আমি ভীষণ পছন্দ করি, এই শোগুলো খুব উপভোগ করি। কিন্তু আমার অডিয়েন্স বা গানের ধরন আলাদা হওয়ায় এ ধরনের শো আমার কম করা হয়।
সিনেমার গান গাওয়ার প্রতি শিল্পীদের আলাদা একটা ঝোঁক থাকে। সেখানেও আপনি পিছিয়ে। এটার কারণ কী?
এখন তো টুকটাক কাজ করছি। তবে আমার মনে হয় এখনো হয়তো আমার কোনো কাজ সেভাবে কোনো ফিল্ম ডিরেক্টরের নজরে আসেনি। তাদের সঙ্গে কমিউনিকেট করার বিষয়টাও আমি এখনো বুঝে উঠতে পরিনি। সিনেমায় প্লেব্যাকের যেকোনো নতুন শিল্পীদেরই স্বপ্ন থাকে। আমারও ইচ্ছা আছে। সামনে সুযোগ এলে কাজ করতে চাই।
গান নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?
ঠিক পরিকল্পনা না, আমার প্রবল ইচ্ছা বা স্বপ্ন হলো নিজের অনেক গান হওয়া, ফিল্মে গান করা। পরিকল্পনা বলতে আরও ভালোভাবে গান শেখাটা কন্টিনিউ করতে চাই। গুরুর সান্নিধ্যে থাকা, নিজের গানে ভালো কিছু কম্পোজিশন থাকা, নিজের গান নিয়ে যেন গর্ব করতে পারি। ভালো ভালো মিউজিক ডিরেক্টরের সঙ্গে কাজ করতে চাই সামনে।
বর্তমান ব্যস্ততা কেমন?
এখন টুকটাক প্রোগ্রাম করছি। অটোমনাল মুন ভাইয়ের সঙ্গে একটা গান করেছি। সামনে আরও অনেক কাজ নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা চলছে। এখন নিজের গান নিয়েই আমি বেশি ব্যস্ত। আর এই ব্যস্ততাটা আমি সব সময় রাখতে চাই। নিজের গান যত সম্ভব বাড়াতে চাই, কারণ শিল্পী হিসেবে গানই আমার সম্পদ।
হাসান